কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমার এই পোষ্টের আলস্য বিষয় হচ্ছে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন, কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ ইত্যাদি সম্পর্কে আরো জানা-অজানা তথ্য। এছাড়াও আপনারা এই পোষ্টের মধ্য থেকে জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক কত টাকা লোন দিয়ে থাকে, সুবিধা কি কি, কি কি ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র দরকার হয় এছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক।
কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন
প্রথমে আপনাদের এই পোস্টটি সম্পন্ন করার অনুরোধ করছি কারণ আপনারা এই পোষ্টের মধ্যে থেকে জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন এই বিষয় ছাড়াও কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ, কৃষি ব্যাংক কত টাকা লোন দেয় কৃষি ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা এবং লোন মওকুফের আবেদন ইত্যাদি বিষয়গুলো। এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা এই সকল বিষয় ছাড়া আরো অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এজন্য আপনাদেরকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি।

ভূমিকা-কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন 

আমাদের বাংলাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক আছে তার মধ্যে কৃষি ব্যাংক হচ্ছে একটা ব্যাংক। এই ব্যাংক কৃষি এবং গ্রামীন উন্নয়নের জন্য অনেক ধরনের ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। যেটা কৃষি উৎপাদন, গবাদি পশুপালন এবং মৎস্য চাষ ইত্যাদি এ সকল কাজগুলো করার জন্য আপনারা কৃষি ব্যাংক থেকে সহায়তা বা লোন নিতে পারবেন। আর এ সকল ঋণের সুদের হার পরিবর্তন হয়ে থাকে আপনাদের ঋণের ধরন অনুসারে। আপনারা এই কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য আপনাদেরকে 
নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে এবং আপনাদেরকে কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস অথবা কাগজপত্র জমা দিতে হবে। এই ব্যাংকের সুদের হার সাধারণত কম হয়ে থাকে এবং এটা ব্যাংকের নীতিমালা এবং আপনাদের ঋণের সময়সীমা এবং ঋণের ধরন এর ওপর নির্ভর করে থাকে। আপনারা আজকে আমার এই পোস্ট থেকে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এবং সুদের হার কত এ বিষয়ে ছাড়াও কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ, ঋণ পরিশোধের নিয়ম, কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা এবং লোন আবেদন 

করতে হলে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন এছাড়াও ঋণ মওকুফের আবেদন ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং আপনারা অনেক উপকৃত হবেন আশা করি।

কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন 

আজকে আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব কৃষকদের অতি নির্ভরযোগ্য ব্যাংক কৃষি ব্যাংক সম্পর্কে এবং আপনারা কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিবেন কিভাবে অর্থাৎ কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এবং সুদের হার কত এ বিষয়ে। কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য আপনাদের কিছু নিয়ম ও শর্তাবলী আছে যেগুলো ঋণ গ্রহণের আগে জেনে নেওয়া আপনাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষকদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। যেমন 

ধরুন ফসল চাষ, মাছ চাষ, গবাদি পশুপালন এছাড়াও আরো অনেক কৃষি সম্পর্কিত কার্যক্রমের জন্য এই কৃষি ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। আর এ সকল ঋণের সুদের হার সাধারণত সরকারি নীতিমালার ওপরে ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয় এবং এগুলো সময়ের সাথে পরিবর্তন হতে পারে। ঋণের ধরন ও মেয়াদের ওপরে নির্ভর করে সুদের হার ও ভিন্ন হয় বা হতে পারে। এছাড়াও ও রিয়েল গ্রহণের আগে আবেদনকারীকে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা 

দিতে হয়। আপনারা নিচের আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত এ বিষয়ে এজন্য আপনারা নিজের আলোচনা মনোযোগ সহকারে পড়বেন তাহলে এ সকল বিষয়ে বুঝতে পারবেন।

কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম

বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কৃষি ব্যাংক। আর এই কৃষি ব্যাংক মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন খাতে ১৮ মাস মেয়াদে লোন সেবা প্রদান করে থাকে। আমার এই লেখাটিতে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে এজন্য আপনারা মনোযোগ সহকারে এই লেখাটি অথবা পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন। কৃষি ব্যাংক থেকে লোন অথবা ঋণ নেওয়ার বা প্রদানের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের 
জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন সহ গ্রামের অর্থনীতিকে আরো দ্বিগুণ পরিমাণে শক্তিশালী করার রূপ প্রকাশ করা ও খাদ্যের স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন। কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষকদের বেশি সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে থাকে তারা বিভিন্ন খাতে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারে। তাহলে চলুন জানা যাক কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম এবং আরো অনেক কৃষি ব্যাংক সম্পর্কিত তথ্য বিস্তারিত তথ্য

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য বা গ্রহণের জন্য প্রথমে আপনাদেরকে গুগল প্লে স্টোর থেকে BKB-Janala মোবাইল অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিতে হবে এবং এই এস এর মাধ্যমে লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন আপনারা। এর মাধ্যম ছাড়াও আপনারা সরাসরি নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করার মাধ্যমেও অথবা কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করে আপনারা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কৃষকদের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন খাতে 

লোন সেবা প্রদান করে থাকে। আমাদের দেশ অর্থাৎ বাংলাদেশের কৃষকদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন প্রাপ্ত আর্থিক সেবা প্রদানকারী ব্যাংক হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এছাড়াও রাজশাহী এবং রংপুরের বৃহত্তম শহরগুলোতেও কৃষি উন্নয়ন করার জন্য আরও একটা বিশেষিত ব্যাংক আছে সেটা হচ্ছে রাজশাহী উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেড। আপনারা কৃষি ব্যাংক থেকে সহজেই লোন গ্রহণের জন্য আপনাদের নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করার মাধ্যমে ঋণ 

আবেদন ফরম পূরণ করে সেটা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।BKB-Janala বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের অফিসিয়াল অ্যাপস আর এই অ্যাপসের সাহায্যে আপনারা কৃষি ব্যাংক সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পারবেন এছাড়াও লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন আপনারা খুব সহজেই। আপনারা এই অ্যাপ্লিকেশন টি সরাসরি গুগল প্লে স্টোর থেকে সম্পূর্ণ ফ্রিতেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আপনারা এই BKB-Janala মোবাইল apps এর সাহায্যে খুব সহজেই আপনারা ঘরে বসে কৃষি 

ব্যাংক লোন সম্পর্কিত সকল বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন খুব সহজেই। এছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাদেরকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে আর এই ধাপগুলো নিজে বর্ণনা করা হলো

যোগ্যতা যাচাইঃ প্রথমে আপনাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে যে আপনারা কৃষি ব্যাংকের লোনের জন্য যোগ্য কিনা সেটা। সাধারণত কৃষক, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও কৃষি বা কৃষি সম্পর্কিত কার্যক্রমে জড়িত আছে এমন ব্যক্তি এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

লোনের ধরন নির্বাচনঃ কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন অনেক ধরনের লোন সেবা প্রদান করে থাকে। আপনারা আপনাদের প্রয়োজন অনুসারে নিচের দেওয়া লোনের ধরন গুলোর মধ্য থেকে যেকোনো একটা নির্বাচন করতে পারেন।

  • ফসল উৎপাদন লোন
  • গবাদি পশু পালন লোন
  • মৎস্য চাষ লোন
  • গ্রামীণ শিল্প লোন
  • গৃহ নির্মাণ বা পুনঃনির্মাণ লোন
প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহঃ আপনারা লোনের জন্য যে আবেদন করবেন তার জন্য কিছু দরকারী নথিপত্র আপনাদেরকে সংগ্রহ করতে হবে আর সেগুলো হচ্ছে

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
  • আপনার জমির দলিল অথবা খতিয়ানের ফটোকপি
  • কৃষি কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রমাণপত্র
  • আপনার দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • এছাড়াও আরো অন্যান্য নথিপত্র যেটা ব্যাংক প্রয়োজন মনে করবে সেগুলো।
ব্যাংকে আবেদন পত্র জমাঃ আপনি আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে আপনি আপনার লোন আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিবেন বা জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রের সাথে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় সকল নথিপত্র গুলো জমা দিতে হবে।

লোন মূল্যায়ন ও যাচাই প্রক্রিয়াঃ আবেদন পত্র জমা দেওয়ার পরে ব্যাংকের কর্মকর্তারা আপনার দেওয়া সকল তথ্য এবং নথিপত্র যাচাই করবে। তারা আপনার জমির পরিমাণ ফসলের সম্ভাবনা ও ব্যবসার ধরন ইত্যাদি বিষয়গুলো পরীক্ষা করবে।

লোন অনুমোদনঃ যদি আপনার আবেদন ঠিক হয় এবং আপনার সমস্ত নথিপত্রগুলো যথাযথভাবে আপনি জমা দেন তাহলে বা জমা দেওয়া হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোন অনুমোদন দেবে। এটা ছাড়াও ব্যাংক আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনার লোনের পরিমাণ নির্ধারণ করে থাকবে।

লোনের অর্থ প্রদানঃ আপনার লোন অনুমোদনের পরে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত অনুসারে আপনার ব্যাংক একাউন্টে লোনের অর্থ প্রদান করা হবে আর আপনি সেখান থেকে আপনার লোনের অর্থ তুলে নিতে পারবেন।

লোনের কিস্তি পরিশোধঃ আপনি আপনার লোনের অর্থ গ্রহণ করার পর আপনাকে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আপনার কিস্তি অনুসারে এর টাকা পরিষদ করতে হবে। আপনি যদি সময় মত ঠিকঠাক কিস্তি পরিষদ না করতে পারেন তাহলে ব্যাংক আপনাকে জরিমানা আরো করতে পারবে এছাড়াও আপনার ক্রেডিট রেকর্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পরামর্শ এবং সহায়তাঃ যদি আপনাদের অর্থাৎ আপনার লোন পাওয়ার বিষয়ে কোনো প্রক্রিয়া নিয়ে আপনার যদি কোন প্রশ্ন অথবা আপনার কোন অসুবিধা থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করতে পারেন। তারা আপনাকে এ সকল বিষয়ে বুঝিয়ে দিবে এছাড়াও আপনারা স্থানীয় কৃষি অফিস অথবা এনজিও থেকে সাহায্য নিতে পারেন।

আপনারা যদি ওপরের এই ধাপগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে লোন নেওয়ার জন্য আবেদন করেন তাহলে আপনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে সহজেই লোন নিতে পারবেন অথবা লোন পাবেন।

কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন করার জন্য এবং কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য কৃষি ব্যাংকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কৃষি ব্যাংকের নাম শুনা মাত্র আমাদের মাথায় আসে প্রথমে কৃষকদের কথা। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রায় ৫০ টি জেলায় কৃষি ব্যাংকের এই সেবা চালু রয়েছে। বর্তমানে আপনারা কৃষি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন উপায়ে অনেকগুলো লোন গ্রহণ করতে পারবেন। তবে এই লোনগুলো আপনাদেরকে ১৮ মাসের মধ্যে পরিশোধ করে দিতে হবে। এগুলো ছাড়াও এই 

কৃষি ব্যাংকটি বিভিন্ন সময়ে কৃষকদেরকে বিভিন্ন খাতে তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য পাঁচ বছর মেয়াদে লোন সেবা প্রদান করে থাকে।

কৃষি ব্যাংক এর সুদের হার কত

আপনারা উপরের আলোচনা থেকে জানতে বা বুঝতে পেরেছেন কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবার আমি আপনাদের মাঝে আলোচনা করব কৃষি ব্যাংক এর সুদের হার কত এ বিষয়ে। তাহলে আপনারা এখন জেনে নিন কৃষি ব্যাংক এর সুদের হার কত এ সম্পর্কে। কৃষি ব্যাংক সাধারণত কৃষি এবং কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য অনেক ধরনের ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে আর যেখানে সুদের হার সরকারি নীতিমালা অনুসারে নির্ধারিত করা হয়। সুদের 

হার সময়ের সাথে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে ও এটা আপনাদের লোনের ধরন ও লোনের মেয়াদের ওপরে নির্ভর করে থাকে।কিছু সাধারণ সুদের হার নিচে বলা হলো

  • ফসল উৎপাদন লোনঃ ৯ পার্সেন্ট থেকে ১১ পারসেন্ট এর মধ্যে হতে পারে।
  • গবাদি পশু পালন লোনঃ ১০% থেকে ১২% এর মধ্যে হতে পারে।
  • মৎস্য চাষ লোনঃ ৯% থেকে ১১% এর মধ্যে।
  • ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের লোনঃ১১% থেকে ১৪% এর মধ্যে।
  • গৃহ নির্মাণ লোনঃ ১০% থেকে ১২% এর মধ্যে।
উপরের যে সুদের হারগুলো দেওয়া হয়েছে এগুলো কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে এবং এটা নির্ভর করবে ব্যাংকের নীতিমালা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা এর ওপরে। আপনারা যদি সুনির্দিষ্ট সুদের হার জানতে চান তাহলে আপনারা আপনাদের নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে যোগাযোগ করলে সবচেয়ে ভালো হবে তাহলে এ বিষয়ে সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন।

কৃষি ব্যাংক কত টাকা লোন দেয়

কৃষি ব্যাংক সাধারণত ভাবে কৃষি এবং গ্রামীণ উন্নয়ন এর জন্য বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন মেয়াদের ঋণ প্রদান সুবিধা গুলো দিয়ে থাকে। আর এই ঋণের পরিমাণ নির্ধারিত করা হয়ে থাকে আবেদনকারীর অর্থাৎ আপনাদের চাহিদা আপনাদের প্রকল্পের ধরন ও আপনাদের অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে। বিভিন্ন প্রকল্প অথবা কার্যক্রম এর জন্য ঋণের পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে যেটা নির্দিষ্ট শর্তাবলির ওপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকে। নিচে কৃষি ব্যাংক কত টাকা লোন দেয় এ সম্পর্কে কিছু বলা হলো

ফসল উৎপাদন লোনঃ সাধারণত ভাবে একজন কৃষক ফসল উৎপাদন লোন এর জন্য সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারে।

গবাদি পশুপালন এবং মৎস্য চাষ লোনঃ এই লোনের জন্য আবেদনকারী লোন পেতে পারে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত।

ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের জন্য ঋণঃ এই ঋণের জন্য লোন নিতে পারেন দশ লাখ টাকা অথবা তারও বেশি যেটা আপনাদের প্রকল্পের আকার ও গুরুত্ব অনুসারে নির্ধারিত করা হয়।

বিশেষ প্রণোদনা প্রকল্পঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি প্রণোদনা প্রকল্প এর আওতায় ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে।

কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ

আজকে আপনারা আমার এই আলোচনার মাধ্যমে জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ সম্পর্কে অর্থাৎ কৃষি ব্যাংক কোন কোন খাতে কি ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে এ সকল বিষয়ে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক দেশের কৃষি ও কৃষকদের এবং গ্রামীন অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন প্রকারের ঋণ সুবিধা প্রদান করে থাকে। আর এই সকল ঋণসমূহ কৃষক, উদ্যোক্তা ও সাধারণ মানুষের অনেক প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে থাকে। নিচে কৃষি ব্যাংকের প্রকারভেদ সম্পর্কে কিছু বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হল
ফসল উৎপাদন ঋণঃ মৌসুমী এবং বার্ষিক অনেক ধরনের ফসল উৎপাদন এর জন্য দরকারী অর্থায়ন নিশ্চিত করা। ধান, গম, পাট, ডাল, তেল বীজ এবং শাকসবজি ইত্যাদি ফসলের জন্য এই সকল ঋণ সেবা প্রদান করা হয়। সাধারণত স্বল্প মেয়াদী ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে সুদের হার তুলনামূলকভাবে অল্প ও পরিষদের সময়সীমা ফসলের উৎপাদন চক্রের সঙ্গে মিলিয়ে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

গবাদি পশু পালন ঋণঃ গরু, ছাগল, ভেড়া এবং মহিষ ইত্যাদি গবাদি পশু পালন এবং সকল পশুর খাদ্য ও স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চিত করা। দুগ্ধ উৎপাদন, মাংস উৎপাদন ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নের জন্য সহায়ক এই ঋণ। এই ধরনের ঋণে স্বল্প মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী উভয় ধরনের ঋণ সেবা পাওয়া যায়। এগুলো ছাড়াও এই ঋণের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ সেবা ও প্রদান করা হয়ে থাকে।

মৎস্য চাষ ঋণঃ মৎস্য অর্থাৎ মাছ চাষ এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করা। কুকুর এবং জলাশয়ে মাছ চাষের জন্য এই ধরনের ঋণ সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের মাছ যেমন রুই, কাতলা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ও চিংড়ি ইত্যাদি মাছ চাষের জন্য অর্থায়ন করা হয়ে থাকে। জলাশয় নির্মাণ, সংস্কার এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য এই ঋণ সুবিধা প্রদান করা হয়। পরিশোধের সময়সীমা মৎস্য চাষের চক্র অনুসারে নির্ধারিত করা হয়।

কৃষি যন্ত্রপাতি ঋণঃ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কেনা এবং ব্যবহারের জন্য অর্থাৎ এসকল আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা। ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, হারভেস্টার এবং শেষ যন্ত্রপাতি ইত্যাদি কেনার জন্য ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে প্রদান করা হয়ে থাকে এগুলো সহজ কিস্তিতে পরিশোধের ব্যবস্থা আছে।

কৃষি ভিত্তিক ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প ঋণঃ কৃষিভিত্তিক শিল্প যেমন ধরুন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, গবাদি পশু খাদ্য উৎপাদন ও কৃষিজ পণ্য সংরক্ষণ ইত্যাদি এগুলোর উন্নয়ন এবং সম্প্রসারণ করার জন্য এই ঋণ সেবা দেওয়া হয়। এছাড়াও উদ্যোক্তাদের ব্যবসা শুরু করা অথবা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য অর্থ অর্থাৎ ঋণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সাহায্য প্রদান করাও হতে পারে। প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার এছাড়া দীর্ঘমেয়াদী পরিশোধের সুবিধা ব্যবস্থা আছে।

নারীদের জন্য বিশেষ ঋণঃ গ্রামীণ এবং শহরে নারীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়ন এবং উদ্যোক্তা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে এই দিন সেবা প্রদান করা হয়। অর্থাৎ নারীদের নেতৃত্বে পরিচালিত কৃষি এবং কৃষিভিত্তিক প্রকল্পগুলার জন্য ঋণ দেওয়া হয়। এ সকল ঋণের জন্য সুদের হার এবং শর্তাবলী সহজ করা হয়ে থাকে প্রশিক্ষণ এবং ব্যবসায়িক পরামর্শ সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে।

গ্রামীন গৃহ নির্মাণ ঋণঃ গ্রামীণ এলাকায় নিরাপদ এবং টেকসই বসবাসের জন্য পরিবেশ নিশ্চিত করা। নতুন বাড়ি নির্মাণ অথবা পুরাতন বাড়ি সংস্কারের জন্য অর্থায়ন দেওয়া হয়ে থাকে। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং সহজ কিস্তিতে পরিষদের সুব্যবস্থা আছে এ সকল ঋণে এছাড়াও সুদের হার বাজার মূল্যের তুলনায় কম হয়ে থাকে।

পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ঋণঃ গ্রামীন এলাকায় সৌরশক্তি এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে এ সকল ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে। সৌর প্যানেল এবং বায়োগ্যাস ইউনিট ইত্যাদি এগুলো স্থাপনের জন্য ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। সরকারি প্রণোদনার আওতায় সুদের হার এবং শর্তাবলী সহজ হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়।

শিক্ষার্থী ঋণঃ কৃষক পরিবারের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। টিউশন ফি, বই কেনা এবং হোস্টেল খরচ ইত্যাদির জন্য অর্থায়ন দেওয়া হয়ে থাকে। সুদের হার কম এবং পরিশোধনের সময়সীমা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে। আর এই ঋণের কিস্তি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে শিক্ষা সমাপনের পরে আয়ের ওপর ভিত্তি বা নির্ভর করে।

বিশেষ প্রণোদনা এবং পুনর্বাসন ঋণঃ প্রাকৃতিক দুর্যোগ অথবা অন্যান্য বিপর্যয়ের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এবং উদ্যোগ তাদের পুনর্বাসন ছাড়াও পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা করা হয়। এই ঋণে ক্ষয় ক্ষতির মাত্রা অনুযায়ী ঋণ সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে আর সুদের হার কম আবার অনেক ক্ষেত্রে সুদ মুক্ত ঋণ প্রদান করা হয়। এ সকল ঋণ পরিশোধের সময়সীমা এবং শর্তাবলী সহজ।

কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা

কৃষকেরা সবথেকে বেশি কৃষি ব্যাংক থেকেই সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করতে পারবে। এই ব্যাংকটা গরিব এবং দারিদ্র্য কৃষকদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য ক্ষুদ্র এবং বড় ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। এগুলো ছাড়াও কৃষকেরা কৃষি ব্যাংক থেকে স্বল্প মেয়াদে এবং স্বল্প সুদে লোন গ্রহণ করতে পারবে এবং এই লোন গ্রহণ করার পাশাপাশি তারা নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে। নিচে কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা গুলো বলা হলো

  • ডিপিএস সেবা।
  • আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য লোন।
  • কৃষি ব্যাংক থেকে শস্য ঋণ নেওয়ার সুযোগ।
  • বিভিন্ন খাতে কৃষকদের ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের সুবিধা।
  • মাছ চাষ করার জন্য ঋণ নেওয়ার সুযোগ।
  • কৃষি ব্যাংক থেকে প্রাণী সম্পদ খাতে লোন নেওয়ার সুযোগ।

কৃষি ব্যাংক লোন মওকুফের আবেদন

কৃষি ব্যাংক লোন মওকুফের আবেদন সম্পর্কে আপনারা এবার জানতে পারবেন অর্থাৎ আপনাদের কোন সমস্যা হলে আপনারা কিভাবে কৃষি ব্যাংকের লোন মওকুফের আবেদন করবেন সে সম্পর্কে এবার আপনাদের জানানো হবে। কৃষি ব্যাংকের আবেদনের জন্য অর্থাৎ আবেদন করার জন্য সাধারণত কয়েকটি পদক্ষেপ অনুসরণ করা হয়। প্রথমে একটা লিখিত আবেদন পত্র প্রস্তুত করতে হবে যেখানে আপনি লোন মওকুফের জন্য আপনার কারণ গুলো অর্থাৎ আপনার কারণটি উল্লেখ করবেন। 
অর্থাৎ আপনি কি কারনে জন্য আপনার কৃষি ব্যাংকের লোন মওকুফ করার আবেদনকরতে চাচ্ছেন সে বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনপত্রে আপনার নাম, আপনার লোন নম্বর এছাড়াও অন্যান্য সকল প্রয়োজনীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আপনাদের আবেদন পত্র এর সঙ্গে সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্রগুলো সংযুক্ত করতে হবে। এগুলোর মধ্যে আপনাদের লোনের মূল কপি, আপনার পরিচয় পত্র ও লোন মওকুফের কারণ সম্পর্কিত যেকোনো সাপোর্টিং ডকুমেন্ট গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে 

বা থাকতে পারে। আপনাদের আবেদন পত্র ও নথিপত্র সহ আপনার স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের শাখায় আপনাকে এগুলো জমা দিতে হবে। ব্যাংক আপনাদের অর্থাৎ আপনার আবেদন পর্যালোচনার করবে ও প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো যাচাই করবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা অতিরিক্ত তথ্য অথবা নথি চেয়ে পাঠাতে পারে আবেদন পর্যালোচনার পরে আপনাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লোন মওকুফের সিদ্ধান্ত জানাবে। যদি আপনার আবেদনটি গৃহীত হয় তবে আপনাকে লোন মওকুফের শর্তাবলী জানানো হবে। 

সাধারণত লোন মওকুফের আবেদন করার জন্য বা করতে হলে একটা বৈধ কারণ থাকা দরকার বা একটা বৈধ কারণ দেখাতে বা প্রদান করতে হবে আপনাকে। যেমন ধরুন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আপনার আর্থিক সংকট এছাড়াও আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বিশেষ যদি কোন প্রক্রিয়া অথবা নিয়ম থাকে সেটা আপনাকে স্থানীয় কৃষি ব্যাংকের শাখা সঠিক তথ্য দিতে পারবে অথবা আপনি সেখানে গিয়ে যোগাযোগ করার মাধ্যমেও এ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।

কৃষি ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম

এবার আপনারা জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম সম্পর্কে অর্থাৎ অপর্ণারা কিভাবে কোন উপায়ে বা নিয়মে কৃষি ব্যাংকের লোন পরিশোধ করতে পারবেন এগুলোর নিয়ম কি কি এ বিষয়ে। কৃষি ব্যাংক লোন পরিষদের নিয়ম সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয় সেগুলো নিচে বলা হলো

  • লোন এর মেয়াদ অনুযায়ী পরিষদের সময়সীমা নির্ধারিত হয়ে থাকে। আর এটা সাধারণত নির্ধারিত কিস্তিতে পরিশোধ করা হয় বা করতে হয়।
  • মাসিক অথবা ত্রৈমাসে কিস্তি হিসেবে ওরিনের পরিমাণ পরিশোধ করা যায়। আর কিস্তির পরিমাণ ও সময়সীমা ভিন্ন হতে পারে লোনের শর্ত অনুযায়ী।
  • লোনের ওপর দেওয়া হয়ে থাকে সুদ। আর এ সুদের হার কিস্তির সঙ্গে যুক্ত থাকে ও এটা লোনের প্রকারভেদ এবং সময়সীমার ওপরে নির্ভর করে থাকে।
  • ব্যাংকের শাখা, অনলাইন ব্যাংকিং এবং মোবাইল ব্যাংকিং অথবা ব্যাংকের অনুমোদিত এজেন্টের মাধ্যমে আপনারা এই লোন পরিষদ করতে পারবেন বা করা যায়।
  • যদি আপনারা আপনাদের কিস্তির সময়সীমার মধ্যে পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে বিলম্ব ফি আরোপিত করা হতে পারে।
  • কিছু কিছু ব্যাংক আছে যারা আবার অগ্রিম পরিষদের সুবিধা দিয়ে থাকে আর যার মাধ্যমে আপনারা আগেই ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। তবে এটার ক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত ফি থাকতে পারে।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের জন্য কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের আগে অবশ্যই আপনাদেরকে কিছু ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিতে হবে এবং সেগুলো ব্যাংকে জমা দিতে হবে। এজন্য আপনারা নিচে দেওয়া ডকুমেন্টসগুলো লোনের জন্য আবেদন করার আগে সংগ্রহ করে নিবেন। ডকুমেন্টগুলো হলো

  • আপনাদেরকে কৃষি ব্যাংকে একটা একাউন্ট করে নিতে হবে।
  • আপনাদের কৃষি কার্ড দরকার হবে।
  • আবেদনকারীর অর্থাৎ যে লোনের জন্য আবেদন করবে তার জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • নাগরিক সনদপত্র।
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি তিন কপি।
  • আবেদনকারীর কতটুকু জমি আছে তা প্রমাণের জন্য জমির দলিল।
  • লেটার অফ হাইপোথিকেশন।
  • জামিন দার বা দাতা ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং তার জাতীয় পরিচয় পত্র এর কপি।
  • সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক ডিপি নোট স্ট্যাম্প।
  • গ্যারান্টিপত্র জামিন দাতার প্রদত্ত।
  • আবেদনকারীর জমির খাজনার প্রমাণপত্র।
  • বিতরণ ব্যবস্থা এবং ব্যবস্থাপক।
  • শস্য বন্ধকি দলিল এবং
  • আবেদনকারীর আগের কোন ব্যাংক ডকুমেন্ট থাকলে সেটার প্রয়োজন হবে।
এই ডকুমেন্টগুলো আপনারা সংগ্রহ করে আপনাদের নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করলে আপনারা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এগুলো ছাড়াও এর বাহিরে যদি কোন রকমের প্রয়োজন হয় বা দরকার হয় সে ক্ষেত্রে সেগুলো ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে জানিয়ে দিবে।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা

আপনারা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম এবং সুদের হার কত এ সকল বিষয় ছাড়াও কৃষি ব্যাংক লোন মওকুফের আবেদন লোন পরিশোধের নিয়ম ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে আর এখন আপনারা জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে। কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষি এবং গ্রামীন উন্নয়নকে উৎসাহিত বা সাহায্য করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন মেয়াদের ঋণ সেবা প্রদান করে থাকে। তবে এই ঋণ পাওয়ার জন্য 

আবেদনকারীকে অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা এবং শর্ত পূরণ করতে হবে। আর এই যোগ্যতা যাচাই বাছাই করার পরে ব্যাংক ঋণ মঞ্জুর করে থাকে। যেটা আবেদনকারীর কৃষি কার্যক্রম ও আর্থিক অবস্থার ওপরে নির্ভর করে থাকে। নিচে প্রধান যোগ্যতা গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

পেশাগত যোগ্যতাঃ আবেদনকারী কে কৃষি, মৎস্য, গবাদি পশু পালন, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প অথবা সংশ্লিষ্ট অন্য যে কোন অর্থনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকতে হবে।

জাতীয়তাঃ আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

জমির মালিকানাঃ কৃষি লোনের জন্য আবেদনকারীর জমির মালিকানা থাকতে হবে অথবা কৃষি লোনের জন্য আবেদনকারী যে জমিতে চাষাবাদ করছে সেই জমির একটা বা সেটার বৈধ প্রমাণ থাকতে হবে।

ক্রেডিট হিস্ট্রিঃ আবেদনকারীর আগে নেওয়া লোনের সময় মত পরিশোধ ও তার ক্রেডিট রেকর্ড ভালো থাকতে হবে।

নথিপত্রঃ জাতীয় পরিচয় পত্র আবেদনকারীর জমির দলিল অথবা খতিয়ান আবেদনকারীর আয়ের উৎসের প্রমাণপত্র ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ছবি ইত্যাদি এ সকল প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়া দরকার বা জমা দিতে হবে।

আয় এবং অর্থনৈতিক অবস্থাঃ ব্যাঙ্ক আবেদনকারী এর আয় ও অর্থনৈতিক অবস্থা মূল্যায়ন করবে এবং সেটার অনুসারে লোনের যোগ্যতা নির্ধারণ করবে ব্যাংক।

ব্যাংক এর শর্তাবলীঃ আবেদনকারীকে ব্যাংকের নির্ধারিত শর্ত গুলো মানতে হবে যেমন ধরুন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবেদনকারী কে অর্থাৎ যে লোন নিয়েছে তাকে লোন পরিশোধ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কিস্তি প্রদান করতে হবে ইত্যাদি কাজগুলো।

কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার শর্তাবলী

ওপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পেরেছেন কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে এবার আপনারা জানতে পারবেন কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার শর্তাবলী সম্পর্কে। কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য যে সকল শর্ত আছে সেগুলো নিচে বলা হল

  • লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হবে।
  • লোন নেওয়ার জন্য কৃষকেরা বেশি সুযোগ-সুবিধা পাবে।
  • যে লোন গ্রহণ করবে অর্থাৎ লোন গ্রহণকারী কে ক্রেডিট পাসবুক দেওয়া হবে।
  • মোট বার্ষিক ঋণ এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬০ ভাগ শস্য নির্ধারিত করা।
  • যে কোন ফসলের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহণ করেন না কেন এই ঋণ আপনারা যে কোন সকল ফসলের জন্য নিতে পারবেন অর্থাৎ এই ঋণ সকল ফসলের ক্ষেত্রেই আওতাভুক্ত করা হবে।
  • সুদের নয় ভাগ ঋণ প্রদান করে থাকে।
  • বার্ষিক হিসেবেও ঋণ মঞ্জুর করা হয়ে থাকে।

লেখক এর মন্তব্য  

প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমাম ইনফো তার এ পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছে কৃষি ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম ও সুদের হার কত জানুন সহ কৃষি ব্যাংক লোন এর প্রকারভেদ, কৃষি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা, ঋণ মওকুফের আবেদন সহ আরো অনেকগুলো বিষয়ে। এ বিষয়গুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন আশা করি এবং উপকৃত হবেন। এজন্য আপনাদের বলছি আপনাদের যদি এই পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন কমেন্টে জানাবেন আপনার মতামত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url