ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত ভাবে জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমার এই পোষ্টের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম এবং প্রতিদিন কত গ্রাম ওটস খাওয়া উচিত। এ বিষয়গুলো ছাড়াও আরো অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে এ সকল বিষয়ে জানতে আপনাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি।
ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম বিস্তারিত ভাবে জানুন
আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম এবং প্রতিদিন কত গ্রাম ওটস খাওয়া উচিত সহ সকালে ওটস খাওয়ার নিয়ম, রাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম বাচ্চাদের ওটস খাওয়ার উপকারিতা, বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি আরো কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে। এই বিষয়গুলো অনেক বিস্তারিতভাবে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এ বিষয়গুলো পড়ে বুঝতে পারবেন এ সকল বিষয়ে এজন্য শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা-ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম

ওটস হচ্ছে একটা পুষ্টিকর খাবার এই খাবারটিতে আছে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটা খাওয়ার ফলে আমরা নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি সহজেই। এটা খাওয়ার ফলে আমরা যেমন নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি তেমনি এটা আমাদের শরীরের ওজন কমাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এটা আমাদের সঠিক নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে তবে উপকার হবে। শুধু বড়দের নয় 
এটা ছোট বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী। ওজন কমানোর জন্য আমরা ওটস এর সাথে কলা, আপেল, বেরি আবার কাজুবাদাম, আখরোট এছাড়াও চিয়া সিড এগুলো যোগ করে আমরা খেতে পারি। এটা আমরা রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারি। তবে সকালে খাওয়ায় আমাদের জন্য বেশ উপযুক্ত। আমরা এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য এর সাথে দারচিনি জিনজার গুঁড়া আবার এর সাথে প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে মধু ব্যবহার করে খেতে পারি। এটা খাওয়ার ফলে কিভাবে আমাদের ওজন কমবে 

কি পরিমানে আমরা খেলে আমাদের ওজন কমবে অর্থাৎ ওজন কমাতে ওরস খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে নিচে আলোচনার মাধ্যমে বলা হয়েছে। আপনারা যদি এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ে তাহলে এ সকল বিষয়ে বুঝতে পারবেন।

প্রতিদিন কত গ্রাম ওটস খাওয়া উচিত

ওটস খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী তবে এটা আমাদের কতটা পরিমাণে খাওয়ার উচিত সে বিষয়ে আমাদের একটা ধারণা থাকা উচিত। ওর আমাদের শরীরের ক্ষতিকারক কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং হৃদ স্বাস্থ্য ভালো রাখে এছাড়াও এটা আমাদের হজম স্বাস্থ্য এবং অন্ত্রের অণুজীবের জন্য অনেক উপকারী। রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এটা ক্যান্সার ও অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস এর মত রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে এছাড়াও এটা প্রদাহ এবং 
টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে। এজন্য আমাদের প্রতিদিন কতটা পরিমাণে ওটস খাওয়া উচিত সে বিষয়ে আমাদের সকলের ধারণা থাকা উচিত। আজকে আপনারা জানতে পারবেন প্রতিদিন কত গ্রাম খাওয়া উচিত এ বিষয়ে। স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের প্রতিদিন এক কাপ রান্না করা ওটস খাওয়া অনেক উপকারী জানান মার্কিন পুষ্টিবিদ জুলি আপটন। এছাড়াও ইটদিস নট দ্যাট ডট কম এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে তিনি বলেন যে, এক কাপ পরিবেশন রান্না করা ওটস এ 

আছে ৪ গ্রাম আঁশ। এছাড়াও আছে থায়ামিন, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। ওটস প্রাকৃতিকভাবে সোডিয়াম মুক্ত এছাড়াও সার্বিকভাবে চর্বি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট এটাতে কম থাকে। এগুলো ছাড়াও আরো আছে বায়োএকটিভ যৌগ যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এক পরিবেশন সাধারণ ওটস এ আছে প্রায় ১৬০ ক্যালরি। আছে প্রায় সাড়ে তিন গ্রাম পরিমাণে মোট চর্বি আরো আছে এক গ্রাম এর ও কম পরিমাণে স্যাচুরেইটেড চর্বি এবং ৬ গ্রাম প্রোটিন। আরো এক পরিবেশন কোর্সে আছে ২৮ গ্রাম 

পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, এক গ্রাম পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা। আপনারা যদি মিষ্টি ওরস খেতে চান তাহলে এতে সামান্য পরিমাণে চিনি যোগ করে খেতে পারেন। মার্কিন কৃষি বিভাগের তথ্য অনুসারে এক কাপ রান্না করা ওটমিলে আছে ১৬০ ক্যালরি, ৬ গ্রাম পরিমাণে প্রোটিন। ২৮ গ্রাম পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ০.৭ গ্রাম পরিমাণে স্যাচুরেটেড চর্বি, আছে সাড়ে তিন গ্রাম পরিমাণে চর্বি এছাড়াও আরো আছে চার গ্রাম পরিমাণে আঁশ এবং এক গ্রামের কম পরিমাণে শর্করা। প্রতিদিন 

ওটস এর পরিমাণ আপনাদের স্বাস্থ্য লক্ষ্য ও পুষ্টির চাহিদার ওপর নির্ভর করে থাকে। সাধারণভাবে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য পরিমাণের কিছু নির্দেশনা নিচে দেওয়া হল

সাধারণ ব্যবহারের জন্যঃ প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭৫ গ্রাম কাঁচা ওটস খাওয়া উচিত যেটা রান্নার পর প্রায় এক কাপ হয়ে যায়। এটা আপনাদের জন্য একটা স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ হিসেবে কাজ করে থাকে।

ওজন কমানোর জন্যঃ ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কাঁচা ওটস পর্যাপ্ত কারণ এটা রান্নার পর প্রায় ৩/৪ কাপ হয়ে যায়। এটা কম ক্যালরিযুক্ত ও বেশি ফাইবার যুক্ত হয়ে থাকে।

মাসল বিল্ডিং অথবা উচ্চ প্রোটিন ডায়েটের জন্যঃ প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম পরিমাণে কাঁচা ওটস খাওয়া যেতে পারে এছাড়াও এটা বেশি ক্যালরি ও প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে।

বাচ্চাদের জন্যঃ ২০ থেকে ৩০ গ্রাম পরিমাণে কাঁচা ওটসই যথেষ্ট যেটা রান্না করার পর প্রায় ১/২ কাপ হয়।

বিশেষ স্বাস্থ্য লক্ষ্য অথবা খাদ্য পরিকল্পনার জন্য আপনারা একজন পুষ্টিবিদ অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করে খেতে পারেন।

সকালে ওটস খাওয়ার নিয়ম

সকালে ওটস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো আপনার মনোযোগ সহকারে এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এ বিষয়টি বুঝতে পারবেন। এছাড়াও সকালে ওটস খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা আছে। সকালে ওটস খাওয়ার সময় আপনারা যদি কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলেন তাহলে এটা আপনাদের দিনের শুরুতে আরো স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর করে তোলার কাজে সাহায্য করবে। সকালবেলা আপনারা কিভাবে ওটস খাবেন বা খাওয়ার কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হলো নিচে

  • ওটস রান্না করার সময় আপনারা গরম পানি অথবা অল্প চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ওটস এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে এছাড়াও আপনারা অতিরিক্ত চর্বি থেকে মুক্ত থাকতে পারবেন।
  • প্রতিদিন আপনারা ১/২ কাপ কাঁচা ওটস রান্না করে খেতে পারেন যা আপনাদের জন্য এক বেলা ব্রেকফাস্ট এর উপযুক্ত।
  • রান্না করা ওটস এ আপনারা তাজা ফল যেমন ধরুন আপেল, বেরি,কলা এগুলো যোগ করতে পারেন। সেগুলো আপনাদেরকে অতিরিক্ত ভিটামিন এবং ফাইবার সরবরাহ করার কাজে সাহায্য করবে।
  • বাদাম যেমন ধরুন কাজুবাদাম আখরোট বাদাম আবার বীজ যেমন-চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্স সিড ইত্যাদি এগুলো যোগ করতে পারেন। এটা আপনাদের প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত করবে।
  • আপনারা অতিরিক্ত চিনি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন এবং প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে আপনারা ফল ব্যবহার করতে পারেন।
  • গ্রিক দই বা সয়াবিনের মত প্রোটিন উৎস যোগ করতে পারেন যেটা দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তি অনুভব করবে।
  • দারুচিনি বা জিনজার মেশাতে পারেন এটা আপনাদের স্বাদ বাড়ানোর কাজে এবং বিপাককে উদ্দীপিত করার কাজে সাহায্য করবে।
  • ওটস এর সাথে সাথে আপনারা সামঞ্জস্যপূর্ণ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেমন- প্রোটিন, শাকসবজি অথবা পূর্ণ শস্য ইত্যাদি।
  • আপনারা আপনাদের ওটস কে সুস্বাদু করার জন্য এর সাথে একটু মধু বা দারচিনি পাউডার যোগ করতে পারেন।
  • ওটস এর সাথে আপনারা এক ক্লাস গ্রিন টি অথবা গরম লেবু জল ব্যবহার করে সেটা পান করতে পারেন।
অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকেই ওটস সহজে হজম করতে পারে না। ওটস সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিবেন। যাতে করে এর মধ্যে থাকা উপস্থিত স্টার্চ জাতীয় পদার্থ ভেঙে যায় আর প্রাকৃতিক ফাইটিক এসিডের মাত্রা কমে যায়। এর ফলে আপনাদের শরীরে ওটস এর পুষ্টিগুণ বেশি পরিমাণে শোষিত হবে। রান্না করা ওটস এর চাইতে আপনারা ভিজিয়ে রাখা ওটস খেতে পারেন এতে করে এটা আপনাদের হজম করতে সুবিধা হবে। এছাড়া আপনারা যদি ওজন কমাতে চান তাহলে 

রাতে ওটস ভিজিয়ে রেখে আপনারা সেটা পরের দিন সকালে খেতে পারেন এতে করে ওজন ঝরার প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত হবে। এছাড়াও আপনারা সকালে ওটস স্মুদি তৈরি করে খেতে পারেন। এই ওটস এর সাথে আপনারা আপেল, কলা, আম এবং অনেক ধরনের বাদাম মিশিয়ে বানাতে পারেন সকালের জলখাবার। এছাড়া আপনারা এর সাথে সাত বারানোর জন্য মধু ব্যবহার করতে পারেন আর এ সকল উপকরণগুলো একসাথে মিশিয়ে আপনারা সহজে বানাতে পারেন ওটস স্মুদি। আপনারা 

সকালের জলখাবার ওটস দিয়ে বানানোর জন্য রাতে ওটস ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা দিয়ে সকালের জল খাবার তৈরি করতে পারেন। এভাবে আপনারা ওটস খাওয়ার ফলে আপনাদের শরীরে অনেক পুষ্টি উপাদান যোগ হবে আর আপনারা সুস্থ থাকতে পারবেন।

বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার উপকারিতা

বাচ্চাদের জন্য একটা পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হচ্ছে ওটস যেটা তাদের সামগ্রিক বৃদ্ধির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান গুলো সরবরাহ করে থাকে। আপনারা উপরের আলোচনা থেকে প্রতিদিন কত গ্রাম ওটস খাওয়া উচিত এবং সকালে ওটস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন এবার জানতে পারবেন বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি এ বিষয়ে। নিচে বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার উপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো

উচ্চ ফাইবারঃ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ এতে আছে অ্যাভেনানথ্রামাইডস নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা প্রদাহ কমাতে এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি করে থাকে।

প্রোটিনঃ ওটস এ আছে প্রোটিন যা শারীরিক বৃদ্ধি এবং পেশী গঠনে সাহায্য করে।

ভিটামিন এবং খনিজঃ এতে আছে ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও জিংক এর মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা বাচ্চাদের জন্য অর্থাৎ বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি করে থাকে।

কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সঃ ওটস এ আছে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যার রক্তের চিনির মাত্রা স্থির রাখতে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

মেটাবলিজম উন্নতিঃ উচ্চ ফাইবার ও প্রোটিনের জন্য অর্থাৎ উজ্জ্বল ভাইবার ও প্রোটিনের কারণে মেটাবলিজম বৃদ্ধি পেয়ে থাকে এবং আমাদের শরীরে শক্তির স্তর বাড়ে।

দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তিঃ ওটস দীর্ঘ সময় ধরে দীপ্ত রাখার কাজে সাহায্য করে যেটা অতিরিক্ত স্ন্যাকস খাওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে।

চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ এতে ভিটামিন ও মিনারেল এর কারণে চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নত করতে এটা আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে।

বুদ্ধি বৃদ্ধিঃ এতে আছে নানা পুষ্টি উপাদান যেটা আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশের সাহায্য করে এবং মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

স্বাস্থ্যকর হৃদয়ঃ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এছাড়াও হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য এটা অনেক ভালো ও স্বাস্থ্যকর।

ইমিউন সিস্টেম মজবুত করাঃ ভিটামিন এবং মিনারেল এর কারণে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে থাকে।

খাদ্য সংবেদনশীলতাঃ সহজে হজম যোগ্য হওয়ার জন্য খাদ্য সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে।

সুস্থ বৃদ্ধি ও উন্নয়নঃ এটা সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য অনেক সাহায্য করে থাকে।

হাড়ের স্বাস্থ্যঃ এতে আসে ক্যালসিয়াম ও আরো অনেক খনিজ যা হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিঃ এতে থাকা সঠিক গুষ্টি উপাদান মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করার কাজে সাহায্য করে থাকে।

স্ট্যামিনা বৃদ্ধিঃ এটা দীর্ঘ স্থায়ী শক্তি সরবরাহ করার কাজে এবং শারীরিক কার্যকলাপে সাহায্য করে থাকে।

স্বাস্থ্যকর চিনি স্তরঃ এটা অর্থাৎ ওটস প্রাকৃতিক মিষ্টি ব্যবহার করে রান্না করার ফলে এটা আমাদের স্বাস্থ্যকর চিনি স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।

পুষ্টিকর ব্রেকফাস্টঃ এটা স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর ব্রেকফাস্ট হিসেবে কাজ করে থাকে যা দিনের শুরুতে দিয়ে থাকে সঠিক পুষ্টি।

স্বাস্থ্যকর অভ্যাসঃ প্রতিদিন নিয়মিত ওটস খাওয়া বাচ্চাদের জন্য একটা স্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস গড়ে তুলার কাজে সাহায্য করবে।

সার্বিক সুস্থতাঃ ওটস বাচ্চাদের সার্বিক সুস্থতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করার কাজে অনেক সহায়ক।

রাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম

আমরা অনেকেই রাতে ওটস ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা সকালে খেয়ে থাকে এতে করে যেমন অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় বা এটা খাওয়ার যেমন নিয়ম আছে তেমনি রাতে ওটস খাওয়ারও কিছু নিয়ম আছে। এবং এর ফলেও অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। রাতে ওটস খাওয়ার কিছু নিয়ম এবং পরামর্শ নিচে আলোচনা করা হলো 

  • সাধারণত রাতে ১/২ কাপ পরিমাণে কাঁচা ওটস ই যথেষ্ট। আর এটা রান্না করার পরে প্রায় এক কাপ হয়ে যায়। আর এটা একটা পূর্ণাঙ্গ রাতের খাবার হিসেবে অনেক উপযুক্ত।
  • রান্না করার সময় আপনারা পানি অথবা অল্প পরিমাণে চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করতে পারেন। আপনারা কিন্তু অতিরিক্ত তেল অথবা চিনি ব্যবহার করবেন না।
  • রান্না করা ওটস এ আপনারা ফল যেমন ধরুন কলা, আপেল, বেরি, আম, পিচ যোগ করতে পারেন এটি আপনাদের ওটস এর স্বাদ এবং পুষ্টি বাড়াবে।
  • এছাড়াও আপনারা এর সাথে বাদাম যেমন ধরুন কাজু অথবা আখরোট বাদাম এবং বীজ যেমন ধরুন চিয়া সিড, ফ্লাক্স সিড এগুলো যোগ করতে পারেন। এটা আপনাদের প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সরবরাহ করে থাকবে এছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তি দিবে।
  • রাতে আপনারা ওটস খাওয়ার সময় অতিরিক্ত চিনি মধু এবং অন্য মিষ্টি জাতীয় উপাদান গুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন। প্রাকৃতিক মিষ্টি করার জন্য আপনারা ফল ব্যবহার করতে পারেন।
  • দারুচিনি জিনজার গুঁড়া অথবা মৌরিযোগ করতে পারেন। এটা সাতবৃদ্ধি করবে এবং রাতের খাবারকে স্বাস্থ্যকর করে তোলার কাজে সাহায্য করবে আপনাদেরকে।
  • রাতের খাবারের জন্য আপনারা দ্রুত প্রস্তুতির জন্য কাঁচা ওটসকে আপনারা দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে রেখে আপনারা এক রাত ফ্রিজে রেখে দিন। তারপরে আপনারা এটা সকালে ফল এবং অন্যান্য টপিংস যোগ করে আপনারা এটা পারেন।
  • প্রোটিনের জন্য আপনারা গ্রিক দই অথবা পনির যোগ করতে পারেন। এটা আপনাদের রাতের খাবারের প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াবে এছাড়াও আপনাকে দীর্ঘসময় তৃপ্ত রাখার কাজে সাহায্য করবে।
  • আপনারা রাতের খাবার এ বিভিন্ন স্বাদের ওটস তৈরি করে খেতে পারেন যাতে করে রাতের খাবারটি আপনাদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়। আপনারা এর সাথে বিভিন্ন ধরনের ফল বাদাম এবং মসলা ব্যবহার করার মাধ্যমে এর স্বাদ পরিবর্তন করতে পারেন।
  • রাতে আপনারা ওটস খাওয়ার বিষয়ে ওটস এর পরিমাণটা পরিমিত রাখবেন যাতে করে আপনাদের রাতের খাবারের পরে হালকা ও সঠিক পরিমাণে খাবার থাকে।
চিকিৎসকেরা মনে করে থাকেন যে ওটস খাওয়ার জন্য কোন শ্রেষ্ঠ সময় হয় না। এটা খাওয়া প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ অথবা নৈশভোজ এর যে কোন সময়েই। এতে করে আমাদের শরীর পেতে পারে নানা ধরনের ভিটামিন এছাড়াও অতিরিক্ত ফাইবার যুক্ত হওয়ার জন্য ওটস আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। রাতে ওটস খাওয়াতে কোন বাধা নেই। বিশেষজ্ঞরা জানান যে, ওটস এ থাকে এক ধরনের অ্যামাইনো এসিড যার নাম হচ্ছে ট্রিপটোফান। আর আমরা যদি রাতে ওরট খাই তাহলে এর 

প্রভাব আমাদের স্নায়ুর ওপরে পড়ে। আর এর ফলে আমাদের শরীরে আসে হালকা আচ্ছন্ন ভাব। এজন্য পেট ভরে ওটস খেয়ে বিশ্রাম নিলে আপনাদের খুব তাড়াতাড়ি চোখে ঘুম আসবে। এছাড়াও সাইকোলজি টুডে পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে যে, এই খাবারের প্রভাবে আমাদের শরীরে ইনসুলিন ও তৈরি হয়। আর সেই ইনসুলিন এর প্রভাবে আমাদের মস্তিষ্কে ট্রিপটোফ্যান হরমোন পৌঁছে থাকে। এই হরমোনটা আমাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয় সেরোটোনিন হরমোন তৈরি করে 

থাকে। সেরোটোনিন হচ্ছে সেই পদার্থ যার মাধ্যমে আমাদের ঘুম, মনের ভাব, ব্যথা ও বেদনার অনুভূতি নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, সে রকমিন আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হলে আমাদের উদ্বেগ অবসাদ কম থাকবে। আবার আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে। এজন্য আপনারা রাতের খাবারের নিশ্চয়ই এই পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ ওটস খেতে পারেন।

ওটস কিভাবে তৈরি করতে হয়

আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে ওটস কিভাবে তৈরি করতে হয় এ বিষয়ে যারা জানে না তারা আজকে আমার এ পোষ্টের মাধ্যমে ওটস কিভাবে তৈরি করতে হয় এ বিষয়ে জেনে নিতে পারবেন। ওর প্রস্তুতির প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং এটা বিভিন্নভাবে আপনারা প্রস্তুত করতে পারবেন। নিচে ওটস তৈরি করার দুইটি সাধারণ পদ্ধতি আলোচনা করা হলো

ক্লাসিক ওটস তৈরির পদ্ধতি

উপকরণ
  • কাঁচা ওটস ১/২ কাপ পরিমাণে
  • এক কাপ পরিমাণে পানি অথবা দুধ এখানে আপনারা অল্প চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করতে পারবেন।
  • এক চিমটি পরিমাণে লবণ এটা ঐচ্ছিক
  • মিষ্টি ও অন্যান্য টপিংস (যেমন: ফল, বাদাম, মধু, দারচিনি, ইত্যাদি)।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
  • আপনারা একটি ছোট প্যানে ১/২ কাপ পরিমাণে কাঁচা ওটস ও এক কাপ পানি অথবা দুধ নিয়ে নিবেন তারপরে ভালোভাবে মেশাবেন। তারপরে আপনারা পানি পা দুধের পরিমাণ স্বাদ অনুযায়ী সামঞ্জস্য করে নিতে পারেন।
  • আপনারা প্যানটি মিডিয়াম তাপে গরম করবেন এবং মিশ্রণটি যখন ফুটতে শুরু করবে তখন তাপ কমিয়ে দিবেন।
  • মিশ্রণটি প্রায় ৫ থেকে ১০ মিনিট রান্না করতে হবে এবং এটা রান্না করার সময় আপনারা মাঝে মাঝে নেড়ে দেবেন যেন ওটস জ্বালা পোড়া না করে।
  • এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনারা রান্নার শেষে এক চিমটি পরিমাণে লবণ যোগ করতে পারেন যদি চান তাহলে।
  • রান্নাটা করা হয়ে গেলে আপনারা আপনাদের পছন্দ মতো টপিংস যোগ করতে পারেন যেমন ধরুন ফল, বাদাম, মধু, দারুচিনি অথবা অন্যান্য প্রিয় উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন।
  • এরপরে আপনারা এটা গরম গরম পরিবেশন করতে পারবেন এবং উপভোগ করুন।
মাইক্রোওয়েভে ওটস তৈরির পদ্ধতি

উপকরণ
  • কাঁচা ওটস পরিমাণে ১/২ কাপ
  • ১ কাপ পরিমাণে পানি অথবা দুধ।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
  • আপনারা একটি মাইক্রোওয়েভ এ নিরাপদ একটা বাটিতে ১/২ কাব পরিমানে কাঁচা ওটস এবং তার সাথে এক কাপ পরিমাণে পানি বা দুধ মেশান।
  • এরপরে বাটিটি মাইক্রোওয়েভে দুই থেকে তিন মিনিট সময় নিয়ে রান্না করুন এবং রান্না করা হয়ে গেলে একবার আপনারা ভালো করে এটা নেড়ে দিবেন।
  • এরপরে আপনারা আপনাদের পছন্দ মতো এবং প্রয়োজন মত টপিংস যোগ করতে পারেন এবং তারপরে এটা পরিবেশন করুন।
ওটস এর অন্যান্য প্রকার

ওভারনাইট ওটসঃ কাঁচা ওটস কে দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে আপনারা এক রাত ফ্রিজে রেখে দিন। তারপরে সকালে আপনারা আপনাদের পছন্দের টপিংস যোগ করে তারপরে পরিবেশন করতে পারেন।

বেকড ওটসঃ বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে আপনারা ওভেনে বেক করতে পারেন এটা আপনাদের জন্য একটা সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ব্রেকফাস্ট হতে পারে।

আপনারা এ পদ্ধতিগুলোর যেকোনো একটি ব্যবহার করে আপনারা দ্রুত এবং সহজেই একটি পুষ্টিকর ওটস প্রস্তুত করতে পারেন এবং পরিবেশন করতে পারেন। এটা আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করবে।

ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম

তোমরা যদি ওজন কমাতে চান তাহলে আপনাদের একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে ওটস। কারণ ওটস এ এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো আপনার ওজন কমাতে আপনাকে সাহায্য করবে। এটা কেবলমাত্র কম ক্যালরিযুক্ত খাবার নয় বরং এটা উচ্চ ফাইবারযুক্ত যেটা আপনাদেরকে দীর্ঘ সময় ধরে তৃপ্ত রাখার কাজে সাহায্য করবে। আপনারা যদি ওজন কমাতে চান তাহলে সঠিক নিয়মে আপনাদের এই ওটস খেতে হবে। আপনারা যদি সঠিক নিয়মে ওটস খান তাহলে ওজন কমানো আপনাদের 
পক্ষে আরও সহজ হবে। ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা এবং সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদেরকে নিচে আলোচনার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হল। আর এই নিয়মগুলো যদি আপনারা অনুসরণ করেন তাহলে অবশ্যই আপনাদের ওজন কমবে।

  • আপনারা সকালের নাস্তায় ওটস খেতে পারেন।সকালের নাস্তায় ওটস খাওয়া সবচেয়ে কার্যকর হবে। এটা আপনাদেরকে অনেক সময় ধরে পেট ভর্তি রাখতে সাহায্য করবে ওয়েব ও অপ্রয়োজনীয় স্নাক্স খাওয়ার প্রবণতা কমাবে।
  • আপনারা প্রতিদিন ১/২ কাপ পরিমাণে কাঁচা ওটস রান্না করেন যেটা আপনাদের মধ্যে এক থেকে দুই জনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে হবে।
  • আপনারা প্রতিদিন নিয়মিত ভাবে এই ওটস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। এটা আপনাদের ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে সমর্থন করবে।
  • আপনারা ওটস রান্না করার সময় এর সাথে গরম পানি এবং কম চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করবেন।
  • রান্না করা ওটস এ আপনারা তাজা ফল যেমন ধরুন আপেল, বেরি এগুলো যোগ করতে পারেন। কারণ ফল ফাইবার ও ভিটামিন সরবরাহ করবে যেটা আপনাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের উন্নতি করবে।
  • এগুলো ছাড়াও আপনারা ওটস এ বাদাম যেমন ধরুন কাজুবাদাম আখরোট এছাড়াও আপনারা বীজ যেমন চিয়া সিড যোগ করতে পারেন। এগুলো প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি সরবরাহ করার কাজে সাহায্য করবে।
  • আপনারা এর সাথে গ্রীক দই অথবা সয়াবিন এর মত প্রোটিন উৎসগুলো যোগ করতে পারেন এগুলো আপনাদেরকে অনেক সময় ধরে তৃপ্তি অনুভব করার কাজে সাহায্য করবে।
  • আপনারা ওটস এ অতিরিক্ত পরিমাণে তিনি অথবা মিষ্টি উপকরণ গুলো এড়িয়ে চলবেন। এগুলোর পরিবর্তে আপনারা প্রাকৃতিক মিষ্টি হিসেবে ফল ব্যবহার করতে পারেন।
  • দারচিনি জিনজার অথবা কুমিনের মত মসলাগুলো যোগ করতে পারেন এতে করে স্বাদ বাড়বে এবং বিপাক কে উদ্দীপিত করবে।
  • আপনারা ওটস এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা ভারসাম্যপূর্ণ খাবার গুলো যেমন প্রোটিন, শাকসবজি ও সম্পূর্ণ শস্য যুদ্ধ করতে পারেন।
  • আপনারা যদি এই নিয়মগুলো অনুসরণ করেন তাহলে আপনাদের ডায়েটে ওরস একটা কার্যকর উপাদান হিসেবে কাজ করবে এছাড়াও এটা আপনাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
আমাদের শরীরের ওজনকে স্বাভাবিক গতিতে রাখা প্রয়োজনটা না হলে কিছু সমস্যা আমাদের ঘাড়ে চেপে বসার আশঙ্কা থেকে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন যে নীরোগ জীবন কাটাতে হলে ওজন রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। ওজন বৃদ্ধি পেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ঘাতক অসুখ হবে। আর এর মধ্যে আছে ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল এগুলো ছাড়া আরো আছে ক্যান্সারের মতো মরণ রোগ। থেকে বাঁচার জন্য আমাদের শরীরের ওজনকে আমাদের নিজেকে বশে রাখার চেষ্টা করতে হবে। 

আর এই কাজে আপনাদের হাতিয়ার হতে পারে ওটস। গবেষকরা বলছেন যে ডায়েটে কিছুটা বদল আনতে পারলে আপনাদের ফ্যাট ঝরবে। আর আপনারা যদি আপনাদের শরীরের ওজনকে বশে আনতে চান তাহলে আপনাদের ডায়েটে রাখতে পারেন ওটস। ওজন কমার পাশাপাশি এটা আপনাদের শরীরকে নানা ঘাতক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারবে। হলে আসুন এবার জানা যাক এর একাধিক গুণ সম্পর্কে এবং এটা আপনারা কখন কিভাবে খাবেন খেলে ওজন কমবে এ বিষয়ে

ফাইবার সমৃদ্ধ ওটসঃ আপনারা যদি ওজন কমাতে চান তাহলে দিনে অন্তত একবার ওটস খাবেন। এই খাবারে আছে অনেক পরিমাণে ফাইবার। আর এই উপাদানটি আপনাদের অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। সেই সাথে এই ফাইবার তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে সিদ্ধ হস্ত। গবেষণা বলছে যে, ওরসে থাকা ফাইবার আমাদের পেট দীর্ঘ সময় ভর্তি রাখার কাজে সাহায্য করে। ফলে আমাদের সহজে খিদে পায় না। এগুলো ছাড়াও এটা আমাদের শরীরে ফ্যাট মেটাবলিজম বাড়িয়ে দিয়ে থাকে ওটস। আপনারা যদি ওজন কমাতে চান তাহলে নিয়মিত ওটস খাওয়া শুরু করতে পারেন তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই এর ফল দেখতে পাবেন।

ব্রেকফাস্টে বা স্ন্যাকস হিসেবে খেতে পারেনঃ আপনারা ব্রেকফাস্ট অথবা বিকেলের স্ন্যাকস হিসেবেও ওটস খেতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, আমাদের যখন সবথেকে বেশি খিদে পায় তখন কিছুটা পরিমাণ ওটস খেলে অনেক উপকার মিলবে। কারণ ওটস এ থাকা ফাইবার আমাদের পেট ভর্তি রাখার পাশাপাশি এটা আমাদের খিদে পাওয়ার আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে। এজন্য আপনারা স্ন্যাকস হিসেবে ওটস খেতে পারেন অথবা এটা আপনাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হতে পারে। এভাবে খাওয়ার ফলে আপনারা দেখবেন আপনাদের ওজন কেমন ঝটপট কমে যাচ্ছে।

প্লেন ওটস খানঃ আপনারা ওটস কেনার সময়ে এর প্যাকেটের দিকে নজর দিয়েন। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটা প্রতিবেদনে ওজন কমানোর জন্য প্লেন ওটস খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এজন্য কোন ফ্লেভার যুক্ত ওটস খাওয়া চলবে না আমাদের। দেখা গিয়েছে যে সাধারণ ওটস এর তুলনায় ফ্লেভার মেশানো ওটস এর প্রতি কাঁপে আছে প্রায় ৭০ ক্যালরি বেশি। এজন্য এই খাবার খেলে তেমন একটা লাভ হবে না উল্টো করে ওজন বাড়বে। এজন্য আপনারা চেষ্টা করবেন প্লেন ওটস খাওয়ার। এটা খাওয়ার ফলে আপনারা নিজেই দ্রুত আপনাদের চেহারার বদল লক্ষ্য করতে পারবেন।

আশা করি আপনারা আমার এই আলোচনার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবং এর উপকারিতা কি। আপনারা যদি এ সকল নিয়ম মেনে প্রতিদিন ওটস খান তাহলে আপনাদের শরীরের ওজন নিশ্চয়ই কমবে সেটা আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার নিয়ম

আপনারা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন বাচ্চাদের ওটস খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আপনারা জানতে পারবেন বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। ছোট বাচ্চাদের জন্য ওরস একটা পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং এটা সহজে অন্তর্ভুক্তযোগ্য খাবার। এই ওটস খাওয়ার ফলে অনেক উপকার হয় শিশুদের। নিচে শিশুদের অর্থাৎ বাচ্চাদের জন্য কিছু নিয়ম এবং পরামর্শ দেওয়া হল

  • ছোট বাচ্চাদের জন্য প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ গ্রাম পরিমাণে কাঁচা ওটস ই যথেষ্ট। রান্নার পরে এটা প্রায় ১/২ কাপ হয়ে যাবে। বড় বাচ্চাদের জন্য পরিমাণটা কিছুটা বাড়ানো যেতে পারে তবে শুরুতে অল্প পরিমাণে দেওয়াই ভালো।
  • বাচ্চাদের জন্য ওটস রান্না করার সময় পানি অথবা অল্প চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করতে পারেন। রান্না করার সময় আপনারা অতিরিক্ত মিষ্টির যোগ করা থেকে বিরত থাকবেন।
  • রান্না করা ওঠছে আপনারা তাজা ফল যেমন ধরুন আপেল, কলা, বেরি ইত্যাদি এগুলো যোগ করতে পারেন এ সকল স্বাস্থ্যকর ফল বাচ্চার স্বাস্থ্য এর জন্য অনেক উপকারী এছাড়াও এই ফলগুলো ওটসে মিষ্টি স্বাদ যোগ করবে।
  • আপনারা এই ওটস এর মধ্যে কোন ছোট ছোট টুকরো করে কেটে বাদাম যেমন কাজুবাদাম আখরোট বাদাম এবং চিয়া সিড ও ফ্লাক্স সিড যোগ করতে পারেন এটা প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সরবরাহ করবে।
  • ছোট বাচ্চাদের জন্য মধু বা চিনি কম পরিমাণে আপনারা ব্যবহার করবেন। এক বছর এর কম বয়সে বাচ্চাদের জন্য মধু ব্যবহার করা উপযুক্ত হবে না।
  • আপনারা এর সাধ বাড়ানোর জন্য দারচিনি বা জিনজার গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এটা এন্টি ইনফ্লামেটরি ও হজমের জন্য অনেক ভালো।
  • আপনারা ওটসকে অনেক উপাদানের সাথে মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন যেমন ওটস ভিত্তিক প্যানকেক, মাফিন বা কুকি এগুলোর সাথে। এটা বাচ্চাদের জন্য আকর্ষণীয় এবং স্বাস্থ্যকর হবে।
  • আপনারা কাঁচা ওটস কে দুধ অথবা পানিতে ভিজিয়ে একরাত ফ্রিজে রাখতে পারেন তারপরে সকালে এটা বাচ্চার পছন্দের ফল এবং টপিংস দিয়ে পরিবেশন করাতে পারেন।
  • যাদের জন্য অনেক স্বাদের ওটস তৈরি করে তাদেরকে খাওয়াতে পারেন এতে করে তাদের নতুন খাবার খাবার আগ্রহী টা বাড়বে।
  • আপনারা নতুন কোন উপাদান যোগ করার আগে অবশ্যই শিশুদের সেটাতে অ্যালার্জি আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করেন নিন অথবা নিশ্চিত হন। তারপরে নতুন উপাদান যোগ করবেন। যদি নতুন উপাদান এর ফলে তাদের কোন প্রতিক্রিয়া থাকে তাহলে বাচ্চাদের সমস্যা হতে পারে।
  • বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় আপনারা ওটস অন্তর্ভুক্ত করার সময় সঠিক পরিমাণ ও পুষ্টিকর উপাদান ব্যবহার করবেন। বাচ্চাদের পছন্দ এবং স্বাস্থ্যের উপর ভিত্তি করে আপনারা ওটস-এর প্রস্তুতি এবং পরিমাণ সামঞ্জস্য করবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, ম্যাক্সিমো ইনফো তার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছে ওজন কমাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম সহ প্রতিদিন কত গ্রাম ওটস খাওয়া উচিত ছাড়াও বাচ্চাদের ওটস খাওয়ার উপকারিতা, বাচ্চাদের জন্য ওটস খাওয়ার নিয়ম এছাড়াও সকালে ও রাতে ওটস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করি আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এ সকল বিষয়ে বুঝতে পারবেন আর যদি আপনাদের এই পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url