গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের কিছু টিপস জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের কিছু টিপস এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায় সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু খুঁজে পাননি। কিন্তু আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা এ সকল প্রশ্নের উত্তর জানতে পারবেন এজন্য শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের কিছু টিপস জেনে নিন
এই পোস্টটির মাধ্যমে আমি গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের কিছু টিপস এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায় ছাড়াও কোন ফল খেলে ঘুম ভালো হয়, কোন ভিটামিন খেলে ঘুম বেশি হয়, প্রেগনেন্সিতে ঘুম না হওয়ার কারণ এবং ঘুম আসার ব্যায়াম ইত্যাদি আরও কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন। এ সকল বিষয়ে জানার জন্য আপনাদের অনুরোধ করবো শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা

আজকাল অনেক গর্ববতী মায়ের ভালো ঘুম হয় না আর ভালো ঘুম হয় না বলে তাদের ক্লান্তি বোধ হয় অবসাদ হয় এবং শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। তারা ভালো ঘুমানোর জন্য অনেক সময় অনেক রকম কৌশল বা পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে আবার অনেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের জন্য আপনারা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার চা কফি এড়িয়ে চলবেন। ভিটামিনযুক্ত এবং পুষ্টিকর শাকসবজি এবং ফলমূল খাবেন। এ সময় ঢিলেঢালা পোশাক এবং আরামদায়ক 
পোশাক পরা উচিত ঘুমোনোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করতে পারেন। ভালো ঘুমানোর জন্য আপনারা ভিটামিন ডি যুক্ত, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন বি ১২ এবং তৈলাক্ত মাছ সামুদ্রিক খাবার খেতে পারেন এতে করে ভালো ঘুম হবে। আপনারা কলা, ডিম, আখরোঠ, কাঠবাদাম খেতে পারেন এতে করে ভালো ঘুমের জন্য বেশ উপকার হবে। আপনারা প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার জন্য অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন যেমন শারীরিক পরিশ্রম শোবার ঘর এর জানালায় 

ভারী পর্দা লাগাতে পারেন এবং শোয়ার সময় কম আলো ব্যবহার করবেন ঘুম না আসলে আপনারা বিছানা থেকে উঠে যাবেন যতক্ষণ না আপনার ঘুম পায় ততক্ষণ আবার বিছানায় যাবেন না। এছাড়া আপনারা ধ্যান করতে পারেন যোগব্যায়াম করতে পারেন। মসলাযুক্ত খাবার, মিষ্টি অথবা ক্যাফেইন সমৃদ্ধ খাবার খাবার ফলে আমাদের ভালো ঘুম হবে না এগুলো আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে।

কোন ফল খেলে ঘুম ভালো হয়

ঘুম আমাদের সকলের জীবনের জন্য অনেক দরকার কারণ এটা আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে মানসিক শান্তি দেয়। রাত হচ্ছে আমাদের বিশ্রাম করার সময় এবং ঘুমানোর সময়। কিন্তু এমন অনেক খাবার ও ফল আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হয়। আবার অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হয় না আমরা সারারাত এপাশ-ওপাশ করে কাটিয়ে দিই। এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যের যেমন ক্ষতি হয় তেমনি করে আমাদের ওপর মানসিক চাপ পড়ে। আমরা ক্লান্ত বোধ করি। এজন্য 

আমাদের খাবার তালিকায় পুষ্টিকর জাতীয় ফলমূল ও শাক সবজি রাখা দরকার। আমাদের খাবার তালিকায় যদি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার বা পদার্থ থাকে তাহলে এটা আমাদের ভালো ঘুম হতে সাহায্য করবে না এটা আমাদের চোখের ঘুম দূর করবে দিবে। চা কফি এগুলো আমাদের ঘুম কাটাতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমরা রাতে ঝাল জাতীয় খাবার এবং অতিরিক্ত চিনি যুক্ত বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে এগুলো আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। আর এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে

ফল এবং বাদামঃ আখরোট এবং কাঠবাদাম থেকে শুরু করে আমরা যদি ফলমূল এবং শাকসবজি খায় তাহলে এটা আমাদের ঘুমের জন্য বেশ উপকার করবে। কারন আখরোট এবং কাঠবাদামে আছে ট্রিপটোফ্যান এটা আমাদের স্নায়ু এবং মাংসপেশীকে শান্ত করতে সাহায্য করে যার ফলে ভালো ঘুম হয়। আবার শাকসবজি এবং ফলমূল এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আর এগুলো আমাদের যেমন ভিটামিনের যোগান দিয়ে থাকে তেমনি আমাদের রাতে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে।

কলাঃ ভালো ঘুমের জন্য আপনারা কলা খেতে পারেন কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম। এই উপাদান দুটো আমাদের মানবদেহে স্পেস কমাতে সহায়তা করে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি আমাদের পেশি শিথিল রাখতে সাহায্য করে। কলাতে রয়েছে অ্যামিনো এসিড ট্রিপটোফ্যান নামের এই উপাদান এটা আমাদের মস্তিষ্ক শান্তকারী হরমোন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে থাকে। এছাড়াও এই ফলটি মেলাটোনিন উৎপাদনে সাহায্য 

করে যা আমাদের ভালো ঘুমের জন্য একটা বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া কলার পাশাপাশি আরো অনেক ফল আছে যেমন চেরি ফল, আঙ্গুর এবং স্ট্রবেরি মেলাটোনিন এর ভালো উৎস। এসব ফল খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে। শুধু ভালো ঘুম হবে না তার পাশাপাশি মানসিক চাপ কমবে। এছাড়াও মানসিক চাপা কমাতে সহায়তা করে থাকে মাছ গোটা শস্য এবং পনির। আবার রুটি, ভাত এবং পাস্তা এসব খাবার উচ্চ কার্বোহাইডেট যুক্ত খাবার এসিড উৎপাদনকে উদ্দীপিত 

করে থাকে আর আমাদের ঘুমের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে। এছাড়া আপনি যদি অনেক বেশি পরিমাণে চকলেট খান তাহলে আপনি অনেক সমস্যার মুখে পড়তে পারেন এবং এটি আপনার ঘুমের ওপর খারাপ। প্রভাব ফেলতে পারে।

মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলু কে বলা হয়ে থাকে ঘুমের মাসি কারণ এতে আছে ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস যা আমাদের শরীরকে শান্ত করতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য স্নায়ু এবং মাংসপেশী শান্ত থাকা বেশ জরুরী আর মিষ্টি আলু এই কাজটি করে থাকে এজন্য ভালো ঘুমের জন্য আপনারা মিষ্টি আলু খেতে পারেন।

দুধঃ আপনারা রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন এতে বেশ উপকার হবে। কারণ দুধে আছে অ্যামিনো এসিড ট্রিপটোফ্যান যেটা আমাদের ভালো ঘুমের জন্য বেশ উপকার করে।

ডিমঃ আমাদের ভালো ঘুমের জন্য দরকার ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে আপনার কখনো ভালো ঘুম হবে না। ডিমের মধ্যে ভিটামিন ডি থাকে। আমাদের মস্তিষ্কের জিএবিএরজিক নিউ গান গুলো ঘুমাতে সাহায্য করে থাকে আর ডিমের মধ্যে থাকা ভিটামিন ডি ঠিক সেখানে কাজ করে আমাদেরকে ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে।

কোন ভিটামিন খেলে ঘুম বেশি হয়

আমাদের ভালো ঘুম হওয়ার জন্য যেমন ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়া উচিত তেমনি করে অনেক ভিটামিন আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের ভালো ঘুম হবে ঘুম বেশি হবে রাতে। রাতে ভালো ঘুমের জন্য আমরা মিষ্টি আলু, আখরোট, কাঠবাদাম, সাদা ভাত, ডিম, দুধ, কলা এবং ভিটামিন ডি খাবার খেতে পারি। ডিম ও ভিটামিন ডি আছে এছাড়াও তৈলাক্ত সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় আর এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে। আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর 
অভাব হয় তাহলে আমাদের ঘুম ভালো হবে না ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিটামিন বি অর্থাৎ ভিটামিন বি ১২ হচ্ছে সেই প্রধান অন্যতম ভিটামিন যার অভাবে আমাদের শরীরে ক্লান্তি বাড়ে এবং ঘুম বেশি পায়। আবার আমাদের শরীরের রক্তস্বল্পতার কারণে ক্লান্তি ভাব হতে পারে যা আমাদের অতিরিক্ত ঘুমের জন্য দায়ী। আমাদের শরীরে ডিএনএ ছাড়া লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনের জন্যে ভিটামিন বি ১২ অনেক প্রয়োজনীয়। আমরা এখন নানা কারণে রাত ভরে ফোন দেখে মোবাইল

দেখে সময় কাটাতে আমাদের ঘুম ভালো হয় না। আর ঘুম ভালো না হওয়ার কারণে আমাদের শরীর ক্লান্তি বোধ করে অসুস্থ হয় আমাদের রাতে ঘুম ভালো হলে তা আমাদের দেহের নানান ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে যে বিভিন্ন ভিটামিন খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ভালো ঘুম হয় সেগুলো হচ্ছে

ভিটামিন এঃ আমরা সবাই জানি ভিটামিন এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে এবং দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। চীনের টং ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের গবেষণা পত্রে দাবি করা হয়েছে যে ভিটামিন এ আমাদের যৌগিক ঘড়ির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে যেটা আমাদের ঘুম চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং আমাদের সময়মতো ঘুম আসতে ও সাহায্য করে থাকে। সবুজ শাক সবজির মধ্যে পালং শাক লাল রঙের শাক এবং খাবার যেগুলো হচ্ছে আম, পেঁপে, গাজর এবং মিষ্টি কুমড়া এছাড়াও ডিম এর মধ্যে ভিটামিন এ পাওয়া যায় আর এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে।

ভিটামিন বি-১ঃ থায়ামিন এর অভাব হলে আমাদের ভালো ঘুম হবে না ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। ভিটামিন বি১ যুক্ত খাবার যেমন চর্বি বিহীন মাংস সামুদ্রিক খাবার মটরশুটি এছাড়া বাদামি চাল বাদামি পাস্তা ইত্যাদি খাবার গুলোতে ভিটামিন বি এক পাওয়া যায় আর এগুলো খাওয়ার ফলে ভালো ঘুম হবে।

ভিটামিন বি ৬ঃ আমাদের শান্তিপূর্ণ ঘুমের জন্য দরকার ভিটামিন বি ৬। এটা আমাদের রাতে ভাল ঘুমাতে সাহায্য করে থাকে। মার্কিন পুষ্টিবিদ অ্যামি ডেভিস রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছেন ভিটামিন বি ৬ আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাজ করে থাকে যার ফলে আমাদের ভালো ঘুম এর সহায়ক হয়।

ভিটামিন বি ৯ঃফোলেইট নামের ভিটামিন বি ৯ আমাদের ঘুমের সময় চোখ বন্ধ করে রাখতে সহায়তা করে থাকে। এটা অর্থাৎ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স নিউরোট্রান্সমিটার গোলার পাশাপাশি আমাদের দেহে সেরোটনিন এবং মেলাটোনিন এর সংশ্লেষণ ঘটিয়ে থাকে আর এগুলো আমাদের ঘুম জাগরণের নিয়ন্ত্রক হিসেবেও কাজ করে। অভাব হলে আমাদের ভালো ঘুম হবে না। এজন্য আমাদের এর অভাব পূরণ করার জন্য পালং শাক, ছোলা, লেটুস, ব্রকলি, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার খাওয়া উচিত।

ভিটামিন বি১২ঃ ভিটামিন বি ১২ আমাদের ভালো ঘুমের জন্য সাহায্য করে থাকে এটা ঘুম নিয়ন্ত্রণের হরমোন মেলাটোনিন উৎপাদন করে থাকে। দুগ্ধজাত খাবার এবং সামুদ্রিক খাবার, মাংস চর্বিবিহীন এছাড়াও ডিম হচ্ছে এই ভিটামিন১২ এর ভালো উৎস এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের ভালো ঘুম হবে।

ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে তবে ডেভিড বলেছেন যে এটা আমাদের ভালো ঘুমাতে সাহায্য করে থাকে। ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, টমেটো, ফুলকপি, তরমুজ, বেরি এবং টক জাতীয় ফল ইত্যাদি থেকে ভিটামিন সি পাওয়া যায় আর এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে।

ভিটামিন ডিঃ এছাড়া ডেভিড বলেছেন যে আমাদের দেহে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তাহলে আমাদের ঘুমের সমস্যা হবে। গবেষণা থেকে জানা গেছে যে ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে আমাদের ঘুমের মান উন্নত হয় এবং আমার তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে পারি। ভিটামিন ডি আমাদের ঘুম জাগরণের চক্রতে ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য আমাদের প্রতিদিন সূর্যের আলোতে ৫ থেকে ৩০ মিনিট থাকা দরকার এ ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার মাছের তেল এবং সামুদ্রিক খাবার গুলো খাওয়া উচিত।

ভিটামিন ইঃ চর্বিতে দ্রবণীয় হিসেবে এটা ভিটামিন থাকে যেটা আমাদের দেহে এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে এর পাশাপাশি এটা আমাদের ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়। এজন্য আমাদের বাদাম, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম এবং পালং শাক ইত্যাদি ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

ভিটামিন কেঃ ২০২৩ সালে চীনের সোঝু মেডিকেল কলেজ অফ সুচো ইউনিভার্সিটির গবেষকদের গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে ভিটামিন কে আমাদের ঘুমের মান উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখে। এছাড়াও আমরা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন কে যুক্ত খাবার খায় তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, রক্ত জমাট বাঁধবে সাহায্য করবে এবং আমাদের হাড় গঠনে ও হাড় মজবুত হবে। এজন্য আমাদের রঙিন শাকসবজি, ডিম, লেটুস এবং ব্রকলি ইত্যাদি ভিটামিন কে যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।

ঘুমানোর আগে বাদাম খেলে কি হয়

ঘুম আমাদের সকলের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভাল ঘুম হলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে মন ভালো থাকে ক্লান্তি ভাব দূর হয়। আর যদি ভালো ঘুম না হয় তাহলে আমাদের শরীরে ক্লান্তি ভাব এবং অলসতা লেগেই থাকে আমরা শান্তি পাই না। এজন্য আমরা অনেকেই রাতে ভালো ঘুমের জন্য অনেক খাবার খেয়ে থাকি যেমন মিষ্টি আলু, দুধ,মধু, ডিম,কলা, আখরোট, কাঠবাদাম, তৈলাক্ত মাছ এবং সামুদ্রিক খাবার ইত্যাদি। এছাড়াও আমরা ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি৯, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে ও ভিটামিন বি ১২ ইত্যাদি খাবারগুলো 

খেয়ে থাকে যাতে করে রাতে আমাদের ঘুমের কোন সমস্যা না হয় আমাদের ভালো ঘুম হয়। আমাদের শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব হয় তাহলে আমাদের ঘুমের সমস্যা হবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। এতে করে আমাদের মানসিক চাপ বাড়বে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আমাদের ভালো ঘুমের জন্য তেমনি একটি খাবার হচ্ছে বাদাম। আমরা যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমোনোর আগে বাদাম খায় তাহলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে এটা আমাদের ঘুমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।কারণ এতে আছে মেলাটোনিন নামক হরমোন আর এই 

হরমোন আমাদের ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক এর পাশাপাশি এটা আমাদের ঘুমের অভাব দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমরা যদি প্রতিদিন রাতে ক্যামোমাইল চা পান করে থাকে তাহলে আমাদের দেহে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং বিভিন্ন রোগ ভালো করতে এটা আমাদের সহায়তা করে থাকে। কারণ এটা হচ্ছে এক ধরনের ভেষজ চা যাতে আছে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর বৈশিষ্ট্য। এটা আমরা প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে পান করার ফলে আমাদের মানসিক চাপ কমবে এবং ভালো ঘুম হবে আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারবো।

কি খেলে ঘুম আসে না

ঘুম আমাদের সকলের জীবনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভালো ঘুম হলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে আমাদের মন ভালো থাকবে। আর এজন্য দরকার ভালো ঘুমের একটা পরিবেশ এবং ভালো ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। আমাদের রাতে ভালো ঘুম না হলে আমরা খুব অসস্তিতে পড়ি ক্লান্ত বোধ করি অলসতা হয়। এ সকল সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের খাবারদাবারের দিকে নজর দেওয়া দরকার। কারণ এমন অনেক খাবার আছে যে সকল খাবার খেলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম 

হবে যেমন মিষ্টি আলু, কলা ডিম দুধ মধু ইত্যাদি খাবার। আবার অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের রাতের ঘুম উড়ে যাবে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে। ভালো ঘুমের জন্য আমাদের দরকার মানসিক স্থিতিশীলতা এবং সেই সাথে আমাদের কিছু খাবার ও এড়িয়ে চলতে হবে ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে তাহলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে। কারণ অনেক খাবার আমাদের ঘুমের উপর প্রভাব ফেলে তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন খাবারগুলো খেলে আমাদের ঘুম আসবে না

ক্যাফেইন জাতীয় খাবারঃ ক্যাফলিন জাতীয় খাবার যেমন চা কফি খাওয়ার ফলে আমাদের ঘুমের সমস্যা হতে পারে এতে আমাদের ভালো ঘুম হবে না। এছাড়াও বেশি পরিমাণে চিনি যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের রাতে ভালো ঘুম হবে না। অথচ গ্রিন টি তে ক্যাফেইন থাকে না আবার চকলেট এনার্জি ড্রিংক এগুলোতে ক্যাফেইন থাকে। এজন্য আমাদের এসব খাবার পরিহার করা উচিত।

মসলাদার খাবারঃ রাতে যদি আমরা মসলাদার খাবার খায় তাহলে আমাদের এসিডিটির সমস্যা হতে পারে। আর এর থেকে আমাদের বুক জ্বালাপোড়া করবে আমরা অসস্তিতে পড়বো আর এজন্য আমাদের শান্তির ঘুম উড়ে যাবে আমাদের ঘুমের সমস্যা হবে আমরা ভালো ঘুমাতে পারবো না। এজন্য আমাদের রাতে মসলাদার খাবার না খাওয়াই ভালো।

ভারি এবং চর্বিযুক্ত খাবারঃ আমারা যদি রাতে ভারী এবং চর্বিযুক্ত খাবার খায় তাহলে আমাদের রাতে ঘুম আসতে অনেক দেরি হবে। যে সকল ব্যক্তি চর্বিযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খায় তাদের ঘুম হাল্কা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আবার একবার রাতে ঘুম ভেঙে গেলে পরবর্তীতে আবার ঘুম আসতে অনেক দেরি হয় এবং ঘুম নাও আসতে পারে। এতে করে আমাদের ভালো ঘুম হবে ঘুমের সময় কমে যাবে।

মিষ্টি এবং ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারঃ আমরা যদি বেশি পরিমাণে মিষ্টি এবং ফাস্টফুড জাতীয় অথবা বেশি পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত অর্থাৎ আলট্রা প্রসেসড জাতীয় খাবারগুলো খায় তাহলে আমাদের ঘুম ঠিকমতো হবেনা। আমাদের ঝুঁকি বাড়বে ঘুম না হওয়ার। এছাড়াও এসব খাবার খেলে আমাদের ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে আর যদি ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে।

অ্যালকোহলঃ অ্যালকোহল খাওয়ার ফলে আমাদের ঘুম তাড়াতাড়ি আসে কিন্তু এটা আমাদের জন্য ভালো ঘুম নয় এটা ঘুমের সমস্যা ঘটাতে পারে। অ্যালকোহল গ্রহণ করার ফলে আমাদের সময়ের আগেই ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে। এতে আমাদের ভালো ঘুম হবে না ঘুমের বিঘ্নিত ঘটবে।

প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম আসার উপায়

ঘুম আমাদের শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে এবং পরবর্তী দিনে কাজের জন্য তৈরি করে থাকে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের রাতে ভালো ঘুম হয় না আর এই সমস্যা আমাদের শরীরকে ক্লান্ত এবং অবসাদ করে তোলে আর আমরা পরবর্তী দিনে কাজ করতে পারি না ভালোভাবে। যাদের এরকম সমস্যা আছে তারা হয়তো অনেকেই ঘুমের ওষুধ খান কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বেশি ঘুমের ওষুধ খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু এই সমস্যা এড়িয়ে আমরা সহজেই ভালো ঘুম ঘুমাতে 
পারি। আর আমরা ওষুধ খাওয়ার পরিবর্তে কিছু প্রাকৃতিক উপায় আছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আমরা সহজে ঘুম আসতে পারি। এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ঘুম আসার জন্য আমাদেরকে কিছু প্রাকৃতিক উপায়ের কথা বলেছেন সেগুলো নিচে বলা হলো

বিছানা থেকে উঠে যানঃ আমরা অনেকেই আছে যারা ঘুম আসে না তবুও বিছানায় শুয়ে থাকি এবং এপাশ ওপাশ করতে থাকি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা এরকম করতে নিষেধ করেছেন এবং এরকম হলে বিছানা থেকে উঠে যাওয়ার কথা বলেছেন। আপনার যতক্ষণ না ঘুম আসে অর্থাৎ ২০,৩০ এবং ৪০ মিনিট এই সময়ের মধ্যে যতক্ষণ ঘুম না আসে ততক্ষণ আপনারা বিছানায় যাবেন না। এ সময়টাতে আপনি এমন কিছু কাজ করুন যাতে ক্লান্ত বোধ হয় আর এই ক্লান্তি ভাব আপনাকে ঘুম আসতে সহায়তা করবে। তবে আপনারা খুব আলোর মধ্যে কিছু করবেন না তাহলে আপনার হিতে বিপরীত হতে পারে অথবা ঘুম উধাও হয়ে যেতে পারে।

ক্যাফেইন এড়িয়ে যাওয়াঃ আপনাদের মধ্যে যাদের ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস আছে তারা ঘুম আসার অন্তত ৫ ঘন্টা আগে চা অথবা কফি পান করতে পারেন। কারণ এ সকল ক্যাফেইন জাতীয় খাবার মানুষের ঘুম এর ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। আবার যাদের ঠিকমতো ঘুম হয়না তারা দুপুরে খাবার খাওয়ার পরে কখনোই কফি পান করবেন না এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন।

গরম পানিতে গোসল করাঃ আপনাদের যদি রাতে ঘুম না আসে অথবা ঘুমের সমস্যা হয় তাহলে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনারা অবশ্যই হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। এভাবে গোসল করার ফলে আপনার শরীর শিথিল হবে এবং আপনার রাতে ভালো ঘুম আসতে এ পদ্ধতি সাহায্য করবে।

ধ্যান করাঃ আরেকটি চমৎকার পদ্ধতি হচ্ছে ধ্যান অথবা মেডিটেশন করা এটা আপনাকে ঘুম আসতে সাহায্য করবে। ২০০৯ সালের একটা গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ধ্যান ঘুমের সমস্যার সাথে লড়াই করে থাকে এবং আমাদের মন ও শরীরকে শিথিল করতে পারে। আবার ধ্যান করার সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস এর ব্যায়াম হয় এবং এটা আমাদের ভালো ঘুম আসতে সাহায্য করে থাকে বেশ ভালোভাবে।

শারীরিক পরিশ্রম করাঃ আমরা যদি নিয়মিত ভাবে শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম করি তাহলে এটা আমাদের ঘুম আসতে সাহায্য করবে আর এটা হচ্ছে প্রাকৃতিক ঔষধ ঘুম আসার। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যে সকল ব্যক্তিরা শারীরিক পরিশ্রম করে তাদের ভালো ঘুম হয়। এজন্য আপনারা রাতে ভাল ঘুমের জন্য এভাবে শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম করতে পারেন।

যোগব্যায়ামঃ আরেকটি ঘুম আসার প্রাকৃতিক উপায়ে এর নাম হচ্ছে যোগব্যায়াম করা। এই পদ্ধতি এখন সারা বিশ্বের মানুষই করে থাকে। এই যোগ ব্যায়াম করার মাধ্যমে মানুষের শরীরকে সহজেই শিথিল করা যায় এবং এটা ভালো ঘুম আসতে আমাদের সহায়তা করে থাকে।

অ্যারোমা থেরাপিঃ অ্যারোমা থেরাপি এর মধ্যে ভেষজ তেল, চোখের মাস্ক এবং বাথ স্ক্রার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে আর এগুলো আমাদের ভালো ঘুম হতে অনেক উপকার করে থাকে। ২০০৫ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ভেষজ তেলের ঘ্রাণ আমাদের গভীর ঘুমের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য যাদের ঘুম হয় না ভালো তারা এখন বিভিন্ন রকমের পার্লার আছে যেগুলোতে গিয়ে অ্যারোমা থেরাপি নিতে পারেন।

শোবার ঘরঃ আপনাদের ভালো ঘুমের জন্য দরকার ভালো একটা শোবার ঘর যে ঘরে অনেক আলো পড়ে না এবং আশেপাশে শব্দ হয় না এরকম একটা ঘর। যে ঘরে আপনি থাকেন আর সেই ঘরে যদি প্রচুর আলো পড়ে এবং ঘরের আশেপাশে যদি প্রচুর শব্দ হয় তাহলে আপনার ভালো ঘুম হবে না। আর এ যেন আপনার শোয়ার ঘরের একটু পরিবর্তন করা দরকার যেমন ধরুন আপনার ঘরের জানালায় একটা ভারি পর্দা লাগানো উচিত আবার আপনি যে ঘরে থাকবেন সেই ঘরে টিভি অথবা কম্পিউটার এ সকল ইলেকট্রিক জিনিসগুলো রাখবেন না। এগুলো আপনার ভালো ঘুম হতে সমস্যা করবে।

ভেষজ চাঃ আপনারা ঘুমোনোর আগে অবশ্যই ক্যাফেইন জাতীয় খাবার চা কফি খাবেন না কিন্তু আপনারা ক্যাফেইন ছাড়া ভেষজ চা পান করতে পারেন। যেমন ধরুন ক্যামোমিল চা এটা আপনাকে যাতে ভালো ঘুম আসতে সহায়তা করবে।

প্রোগ্রেসিভ মাসেল রিলাক্সেন ব্যায়ামঃ আপনারা রাতে ভালো ঘুমানোর জন্য প্রোগ্রেসিভ মাসেল রিলাক্সেন ব্যায়াম করতে পারেন। ২০১৫ সালে আবিষ্কৃত হয় এই ব্যায়াম এবং এই পদ্ধতি এখনো অনেক পুরনো হয়ে যায়নি। এর ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনাদের পেশী সহজেই শিথিল হবে অবসন্নতা দূর হবে এবং আপনাদের ঘুমের পরিমাণ বাড়বে। এজন্য আপনারা ফিটনেস প্রশিক্ষক এর পরামর্শ অনুযায়ী এরকমের ব্যায়ামগুলো শিখে করতে পারেন।

প্রেগনেন্সিতে ঘুম না হওয়ার কারণ

প্রেগনেন্সিতে ঘুম না হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে যে কারণগুলো হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। আপনাদের মধ্যে যারা এ কারণগুলো জানেন না তারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নিন।
  • প্রেগনেন্সিতে ক্রমাগত পরিমাণে হরমোনাল চেঞ্জ এর কারণের জন্য ঘুমের সমস্যা হতে পারে বা ঘুম না হতে পারে।
  • প্রেগনেন্সিতে পায়ে অস্বস্তিকর ব্যাথার জন্য নারীদের ঘুম হতে সমস্যা হয় বা ঘুম হয় না।
  • এই সময় মহিলাদের ঘনঘন প্রসাবের বেগ আসে আর যার ফলে ঘুমের সমস্যা হয়।
  • প্রেগনেন্সিতে মহিলাদের ঘন ঘন বমি হয়ে থাকে অথবা বমি বমি ভাব হওয়ার জন্য এ সময় তারা ভালোভাবে ঘুম আসতে পারে না ফলে তাদের ঘুমের সমস্যা হয়।
  • এ সময় তাদের ব্যাক পেইনের জন্য রাতে ভালোমতো ঘুম হয় না।
  • প্রেগনেন্সির শেষের দিকে মহিলাদের ব্রেস্ট পেইন হয়ে থাকে আর এ সময়ে তাদের ব্রেস্ট ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে এ কারণেও ভালো ঘুম হয় না।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের কিছুক্ষণ পরপর অর্থাৎ বারবার ক্ষুধা লাগে আর এটা তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
  • এ সময় অনেকের এসিডিটি অথবা বুক জ্বালাপোড়া করা সমস্যা হতে পারে আর এ কারণেও তাদের ভালো ঘুম হয় না।
  • এ সময়ে রাতের বেলায় জরায়ু সংকোচন এর কারনেও মহিলাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে থাকে আর এটা রাতের বেলা অক্সিটোসিনের মাত্রা বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে অর্থাৎ ভালো ঘুম হয় না।
  • গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মত যৌন হরমোন গুলো নিঃসরণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে যেটা সার্কাডিয়ান ছন্দ ও ঘুমের নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করে থাকে যার ফলে রাতে ভালো ঘুম হয় না।

গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের কিছু টিপস

একজন গর্ভবতী মহিলাকে অনেক বিশ্রাম নিতে হয় এবং সাবধানে থাকতে হয় এবং এ সময় তাকে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হয় যাতে করে মা ও সন্তান দুজনে ভালো থাকে। এ সময় তাকে আট থেকে দশ ঘন্টা ঘুমাতে হয় এবং বিশ্রাম নিতে হয় যেটা দিনের বেলা নিতে হবে ২ ঘন্টা এবং রাত্রে নিতে হবে আট ঘন্টা। একজন গর্ভবতী মায়ের ঘুমের জায়গা হতে হবে আরামদায়ক, কোলাহল বা শব্দ মুক্ত, কম আলো চলাচল করে এমন জায়গা এবং বাতাস যেখানে ভালোভাবে চলাচল করে এমন ঘর। 

কারণ গর্ভাবস্থায় যদি একজন গর্ভবতী মহিলা দুশ্চিন্তা করে তাহলে তার ভালো ঘুম হবে না এবং তার নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাকে সব সময় মানসিক চাপ এবং চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। কোন সমস্যা অথবা দুশ্চিন্তা হলে সেটা মা বাবা স্বামী অথবা বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে হবে তাহলে দুশ্চিন্তা কমবে এবং রাতে ভালো ঘুম হবে। এ সময় বা গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের জন্য আরো অনেক পরামর্শ দেওয়া হলো আপনাদের জন্য
  • গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মা সবসময় ঢিলেঢালা এবং নরম আরামদায়ক পোশাক পরিধান করবেন।
  • এ সময় তাকে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমানো ঠিক হবে না তাকে একটু সময় নিয়ে তারপরে ঘুমাতে নিতে হবে।
  • গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মা ঘুমোনোর আগে কখনো চা কফি জাতীয় অথবা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাবেনা।
  • ঘুমোতে যাওয়ার কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে গর্ভবতী মা একগ্লাস হালকা গরম দুধ পান করতে পারেন।
  • গর্ভকালীন সময়ে তাকে কখনো ভারী ব্যায়াম করা যাবে না। এ সময় প্রতিদিন সে ৩০ মিনিট করে হালকা ব্যায়াম করতে পারে এটা সঠিক সময়ে ঘুমাতে সাহায্য করবে তাকে।
  • এ সময় গর্ভবতী মা ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ১ ঘন্টা আগে কোন রকমের ডিভাইস অথবা মোবাইল টিভি ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন।
  • গর্ভকালীন সময়ে ঘুমানোর সময় তাকে আরামদায়ক বালিশ ব্যবহার করা উচিত।
  • এ সময় যদি তার পায়ে এবং পিঠে ব্যথা করে তাহলে সে পায়ের নিচে এবং পিঠের নিচে বালিশ ব্যবহার করলে তা এবং কোমরের ব্যথা থেকে সে আরাম পাবে।
আর এভাবে সে যদি নিয়মিত এ কাজগুলো করে থাকে এবং নিয়মমাফিক চলাফেরা ও খাওয়া দাওয়া করে তাহলে তার অবশ্যই ভালো ঘুম হবে। আর ভালো ঘুম হলে তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে তার শিশুর ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনগুলো ঠিক মত হবে। এতে করে সে একটা সুস্থ সন্তানের মা হতে পারবে।

ঘুম আসার ব্যায়াম

আমরা ভালো ঘুম আসার জন্য কিছু ব্যায়াম করতে পারি এতে করে আমাদের ঘুম ভালো হবে। আর ঘুম ভালো হলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে আমরা নানা রোগ থেকে মুক্তি পাবো। এজন্য আমরা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম অথবা ব্যায়াম করতে পারি আবার আমরা অ্যারোবিক ব্যায়ামের সাথে সাথে আমরা চাপমুক্ত জীবন যাপন করতে পারি। এগুলো ছাড়াও আমরা প্রতিদিন ইয়োগা এবং তাড়াতাড়ি ৩০ মিনিট হাটার অভ্যাস করতে পারি এতে করে আমাদের ভালো ঘুম হবে। এজন্য আমাদের রাতে 
বিছানায় অর্থাৎ ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে দুই ঘন্টা আগে ব্যায়াম শেষ করতে হবে। ভালো ঘুম না হওয়ার জন্য অর্থাৎ আমাদের অনিদ্রা দূর করার জন্য ব্যায়াম কি কার্যকর এ বিষয়ে বেশ কিছু গবেষণা আছে। আর এগুলোতে বলা হয়ে থাকে যে, আমরা যদি সহনীয় মাত্রায় অ্যারোবিক ব্যায়াম করি তাহলে এটা আমাদের গভীর ঘুমের জন্য সাহায্য করবে। আর এই অ্যারোবিক ব্যায়াম হচ্ছে সেই রকমের কার্যক্রম অর্থাৎ যার ফলে আমাদের হৃদস্পন্দন দ্রুত হবে এবং শরীর ঘামতে শুরু করবে। যেমন

ধরুন জোরে জোরে হাটা, জগিং করা, দড়ি লাফ দেওয়া, দৌড়ানো, সাইক্লিং করা, সাঁতার কাটা এবং অ্যারোবিক নৃত্য করা ইত্যাদি এ সকল শারীরিক পরিশ্রম করাকে অ্যারোবিক ব্যায়াম বলা হয়ে থাকে। আমারা সুস্থ সবল মানুষ প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে এই অ্যারোবিক ব্যায়াম করতে পারি এবং এটা করা জরুরী। আপনি যদি চান তাহলে এই সময়ের চাইতেও বেশি সময় ধরে করতে পারেন সেটা নির্ভর করবে আপনার শারীরিক সুস্থতার এবং ক্ষমতার উপরে। আপনাদের মধ্যে একজন সুস্থ মানুষের দৈনিক ৩০ মিনিট করে

অ্যারোবিক ব্যায়ামই যথেষ্ট। এই ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কে এন্ডরফিন নামের এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয় যেটা আমাদের সুখানুভূতির সৃষ্টি করে। এটার পাশাপাশি আমাদের মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে আর এর ফলে আমাদের ভালো ঘুম হয়। তবে আপনাদের যেকোনো রকমের অ্যারোবিক ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ঢিলেঢালা পোশাক এবং আরামদায়ক জুতা পড়তে হবে এবং ওয়ার্ম আপ করা দরকার। এছাড়া আমরা বাসায় করতে পারি জগিং জাম্প এবং দড়িলাফ।

জগিং জাম্পঃ এটা করার জন্য আমরা প্রথমে দুই পা ফাঁকা করে দাঁড়াবো এরপরে দুই হাত উপরে তুলে লাফ দিব আমরা। এই জগিং জাম্প আমাদের ১০০ ক্যালরি বার্ন করে থাকে মাত্র ১০ মিনিট সময়ে। এভাবে লাফ দেওয়ার সময় প্রতিটি লাফ দিতে হবে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড এর মধ্যে এবং এটা আমরা ১০ থেকে ৩০ সময় নিয়ে করতে পারি।

দড়িলাফ দেওয়াঃ যদি মাত্র ২০ মিনিট সময় নিয়ে দড়িলাফ দিয়ে থাকি তাহলে আমাদের ২২০ ক্যালোরি খরচ হবে। এটা দেখতে হয়ত আপনাদের কাছে খুব সোজা মনে হবে কিন্তু এটা অতি উচ্চমাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম। এর ব্যায়াম আমরা দশ থেকে ত্রিশ মিনিট সময় নিয়ে করতে পারি। এভাবে আমরা যে কোন অ্যারোবিক ব্যায়ামগুলো দশ মিনিট করে ত্রিশ মিনিট করতে পারি। ভালো ঘুমের জন্য এভাবে আমরা নিয়মিত করতে পারি আর যারা নতুন তারা প্রথমে শুরু করার সময় অল্প মাত্রা করতে পারেন এবং এটা ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন।

লেখক এর মন্তব্য

প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো এই পোষ্টের মাধ্যমে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুমের জন্য কিছু টিপস সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়েছে। অর্থাৎ এই সময় আপনারা কোন কাজগুলো করলে আপনাদের ভালো ঘুম হবে কোন খাবার খেলে ভালো ঘুম হবে কোন খাবার খেলে ভাল ঘুম হবে না ব্যায়াম করার মাধ্যমে ভালো ঘুমের উপায় ইত্যাদি বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছে। আপনাদের যদি জানা না থাকে তাহলে আমার এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন আর এ পোষ্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url