ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম
আসসালামুয়ালাইকুম, আপনারা হয়তো অনেকেই আগে ভাতের মাড় দিয়ে
রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম এবং ভাতের মাড়ের হেয়ার প্যাক এবং চুলের যত্নে
ভাতের মাড় এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার জন্য অনেক সাইট খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু
সঠিক তথ্য খুঁজে পাননি। আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন এজন্য শেষ পর্যন্ত
পড়ুন।
আপনাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি কারণ আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে
জানতে পারবেন ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম এবং ভাতের
মাড়ের হেয়ার প্যাক এবং চুলের যত্নে ভাতের মাড় এছাড়াও ভাতের মাড় খাওয়ার
উপকারিতা ভাতের মাড়ের ক্ষতি কর দিক ইত্যাদি বিষয়ে। এতে অনেক বিস্তারিত তথ্য
আলোচনা করা হয়েছে যেগুলো জানার মাধ্যমে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন এবং এর
স্বাস্থ্যের উপকারিতা ও রূপচর্চার সকল নিয়ম জানতে পারবেন।
ভূমিকা
আপনারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন ভাতের মাড় সম্পর্কিত অনেক
তথ্য। যেখানে থাকবে ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম, এটা
মুখে লাগানোর ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়, এটা খাওয়ার উপকারিতা এবং এর
ক্ষতিকর দিক ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে। ভাতের মাড় হচ্ছে ভাত রান্না করার পরে যে
তরল পানি অংশ বের হয় এটা আমরা অনেকেই ফেলে দেই কিন্তু এর অনেক উপকারিতা আছে এর
সম্পর্কে হয়তো আমরা
অনেকেই জানিনা। এর অনেক উপকারিতা আছে আমাদের ত্বকের জন্য এবং এটা আমরা আমাদের
রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করতে পারি। এটা হতে পারে আমাদের রূপচর্চার জন্য একটা
প্রাকৃতিক এবং সহজলভ্য উপকরণ। এটা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বকের
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে এবং আমাদের ত্বকের শুষ্ক ভাব কমবে।
তবে এটা ব্যবহার করার আগে অবশ্যই এর ক্ষতিকর দিক এবং নিয়ম সম্পর্কে আমাদের জানতে
হবে। এটা যে শুধু আমাদের ত্বকের জন্য
উপকারী তা নয় এটা আমাদের চুলের যত্নে ব্যবহার করতে পারি আমরা। এটা চুলে ব্যবহার
করার ফলে আমাদের চুল হবে মসৃণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে পারবে আমাদের চুল চুলের
বৃদ্ধি হবে।
ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা
ভাতের মাড় হচ্ছে যেটা আমরা ভাত রান্না করার পরে তরল অংশটা ফেলে দিই সেই অংশটুকু।
এই ভাতের মাড় খাওয়ার অনেকগুলো উপকারিতা আছে এটা আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।
এছাড়াও এটা আমাদের ত্বকের যত্নে অনেক উপকার করে থাকে কারণ এতে অনেক প্রাকৃতিক
এবং উপকারী সকল উপাদান আছে। তবে এটা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করার আগে অবশ্যই কিছু
জরুরী বিষয় আমাদের মনে রাখা দরকার। ভাত রান্না করার পরে আমরা এই তরল অংশটুকু যদি
সঠিক
নিয়মে ব্যবহার এবং খেয়ে থাকে তাহলে এতে করে আমরা অনেক উপকার পাবো কারণ এতে
ভাতের অনেক কিছু উপাদান স্টার্চ এবং অনেক দ্রবীভূত উপাদান থাকে। ভাতের মাড় হচ্ছে
ভাত রান্না করার পরে যে পানির অংশটা সেটাই হচ্ছে ভাতের মাড় এতে অনেক পুষ্টি
উপাদান এবং স্বাস্থ্যগত অনেক উপকারিতা আছে। তাহলে আসুন জানা যাক ভাতের মাড়
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
- ভাতের মাড়ে রয়েছে অনেক কার্বোহাইড্রেট যেটা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে থাকে। এটা আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করতে এবং আমাদের শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
- এটা প্রাকৃতিকভাবে আমাদের খাবার হজমের সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। এটা আমাদের অন্ত্রের মিউকাস প্রাচীর কে সুরক্ষা দিয়ে থাকে সেই সাথে আমাদের পেটের অম্লতা কমাতে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।
- ভাতের মাড় আমাদের ডায়রিয়া হলে এ সময় আমাদের শরীরের পানির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করতে পারে। এই ভাতের মাড়ে থাকা স্টার্চ জলীয় ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে যা আমাদের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং ডায়রিয়া তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
- ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী এটি আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেওয়ার কাজ করে এবং ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে।
- ভাতের মাড় আমাদের অনেকের জ্বর হলে এ সময় আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোলাইট এর সরবরাহ করে থাকে। এটা জ্বর কমাতে সাহায্য করে তাড়াতাড়ি এবং সেই সাথে এটা আমাদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে।
- আপনাদের মধ্যে যারা আপনাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা ভাতের মাড় খেতে পারেন এটা ওজন বৃদ্ধি করার সহায়ক হতে পারে আপনাদের জন্য। কারণ এতে আছে কার্বোহাইড্রেট যেটা তাড়াতাড়ি ক্যালরি সরবরাহ করে থাকে আর এটা আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- এই ভাতের মাড় আমাদের কিডনির জন্য অনেক উপকারী হতে পারে কারণ এটা শরীর থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থগুলো দূর করতে পারে। এটা আমাদের কিডনির ওপরে চাপ কমাতে এবং সেই সাথে এটা আমাদের কিডনি ফাংশন উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে।
- গ্রীষ্মকালে ভাতের মাড় আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে। এটা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখতে ও তাপজনিত অসুস্থতা দূর করতে এবং এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে।
- ভাতের মাড়ে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে এটা আমাদের শরীরকে অনেক রোগ থেকে সহজেই সুরক্ষা দিতে পারে।
- এটা আমাদের শরীরের পানির অভাব পূরণে সাহায্য করে থাকে এটা ডায়রিয়া কঠোর পরিশ্রম করার সময় আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে এবং জ্বর এর সময় আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে।
ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হয়
উপরের আলোচনা থেকে আমরা ভাতের মাড় খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছে এখন
আমরা জানবো ভাতের মাড় খেলে কি মোটা হওয়া যায় এ বিষয়ে। ভাতের মাড় খাওয়ার ফলে
অনেকের মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে এটা নির্ভর করবে সে কি পরিমানে ভাতের মাড়
গ্রহণ করছে এবং এটা তার শরীরে কিভাবে এবং কতটুকু প্রভাব পরছে তার ওপর। এজন্য নিচে
ভাতের মাড় খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো
- ভাতের মাড়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে শর্করা আর এটা উচ্চ ক্যালরি এর উৎস। আপনারা যখন এই ভাতের মাড় খাবেন তখন এই ক্যালোরি আপনাদের শরীর গ্রহণ করবে। এই ক্যালরির পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে আপনারা যে পরিমাণে ক্যালরি খরচ করেছেন তার থেকে বেশি হবে এবং তখন এই অতিরিক্ত ক্যালোরি আপনাদের শরীরে জমা হবে। এছাড়াও এই অতিরিক্ত ক্যালরি আপনাদের শরীরে সঞ্চিত হবে ফ্যাট হিসেবে আর এজন্য ধীরে ধীরে পরে আপনাদের শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
- ভাতের মাড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স উচ্চ যেটা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা তাড়াতাড়ি বাড়িয়ে দিতে পারে। আর উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার আমাদের শরীরে তাড়াতাড়ি শর্করা সরবরাহ করে থাকে যার ফলে ইনসুলিন ক্ষরণের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর এই ইনসুলিন হচ্ছে এমন একটি হরমোন যেটা আমাদের শরীরে ফ্যাট সঞ্চয় করতে সহায়তা করে থাকে। আর এই উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যুক্ত খাবার গুলো আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট সঞ্চয়ের মাধ্যমে ওজন বৃদ্ধি করে থাকে।
- ভাতের মাড়ের মধ্যে থাকা শর্করা আমাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে যেটা আমাদের শরীরে ইনসুলিনের মাধ্যমে রূপান্তরিত হয় ফ্যাটে। আর অতিরিক্ত শর্করা যুক্ত খাবার গ্রহণের ফলে এই প্রক্রিয়াটি বারবার ঘুরতে থাকে এবং আমাদের শরীরে ফ্যাট সঞ্চিত হতে থাকে যেটা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
- এছাড়াও উচ্চ শর্করাযুক্ত খাবার গ্রহণ করার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং পরবর্তীতে তাড়াতাড়ি কমে যায়। যার ফলে আমাদের শরীরে আবার নতুন করে ক্ষুধা অনুভব হতে থাকে যা আমাদের অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি করে থাকে। আর এভাবে আমরা যদি নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করে থাকে তাহলে এটা আমাদের ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
- ভাতের মাড় হচ্ছে মূলত কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ। আপনারা যদি নিয়মিত ভাতের মার গ্রহণ করে থাকেন এবং এটা আপনাদের শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় যদি বেশি কার্বোহাইড্রেট সঞ্চিত করে তবে সেটা ফ্যাট এ রূপান্তরিত হবে এবং আপনাদের শরীরে জমা হতে থাকবে আর এটা আপনাদের মোটা হওয়ার কারণ হতে পারে।
- তবে বিশেষ করে যারা ইতিমধ্যেই উচ্চ ক্যালরি অথবা উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার গ্রহণ করছেন। তাদের জন্য ভাতের মাড় মোটা হওয়ার ঝুঁকি অনেক গুণে বাড়াতে পারে। এগুলো ছাড়াও যদি আপনাদের জীবনধারা কম সক্রিয় হয়ে থাকে এবং আপনারা যদি পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করে থাকেন তাহলে এই ঝুঁকি আপনাদের জন্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
ভাতের মাড়ের ক্ষতিকর দিক
ভাতের মাড় খাওয়ার যেমন অনেকগুলো উপকারিতা এবং মোটা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ আছে তবে
এটা খাওয়ারও কিছু ক্ষতি কর দিক আছে। ভাতের মাড় সাধারণত পুষ্টিকর হিসেবে আমাদের
বাংলাদেশের মতো দেশে বিবেচনা করা হয় তবে এটা অতিরিক্ত গ্রহণ করার ফলে বেশ কিছু
ক্ষতি হতে পারে আমাদের স্বাস্থ্যের। এজন্য আপনাদের ভাতের মাড়ের কিছু ক্ষতিকর দিক
নিচে আলোচনা করা হলো
ক্যালরির আধিক্যঃ ভাতের মাড়ে রয়েছে প্রচুর শর্করা যেটা উচ্চ ক্যালরি এর
উৎস। এজন্য এটা অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত আর এটা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে জমা
হলে এটা আমাদের ওজন বৃদ্ধির কারণ হওয়ার সম্ভাবনা হতে পারে। যেটা পরবর্তীতে
স্থূলতা ও অনেক মেটাবলিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
শর্করার আধিক্যঃ ভাতের মাড়ে থাকে অনেক শর্করা যেটা আমাদের রক্তের শর্করার
মাত্রা তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি করতে পারে। আর এটা ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক ক্ষতির কারণ
হতে পারে এবং দীর্ঘ মেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে এটা।
অতিরিক্ত ফ্যাটঃ যদি আপনারা এই ভাতের মাড়ের সাথে তেল অথবা ঘি মিশিয়ে
থাকেন তাহলে সেটাতে ফ্যাটের মাত্রা আরো বেড়ে যাবে আর এটি কোলেস্টেরল বাড়াতে এবং
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
পুষ্টি হারানোঃ ভাত রান্না করার পরে যদি আমরা এটা থেকে মাড় ফেলে দিই তাহলে
ভাতের মূল পুষ্টি উপাদান বা পুষ্টিগুণ যেমন খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন বি এগুলো
হারিয়ে যাবে যাতে করে আমাদের পুষ্টির অভাব দেখা দিবে।
বেশি পরিমাণে সোডিয়ামঃ আমরা যদি ভাত রান্না করার সময় লবণ ব্যবহার করে
থাকে তাহলে ও ভাতের মাড়ে সোডিয়াম এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। আর এই বেশি পরিমাণে
সোডিয়াম আমাদের উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের কারণ হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যার ঝুঁকিঃ অনেকের অথবা কিছু ক্ষেত্রে ভাতের মাড় খাওয়ার
ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও বেশি পরিমাণে ভাতের মাড়ের
কারণে আমাদের পাকস্থলীতে অম্লতা বৃদ্ধি পেতে পারে যেটা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তৈরি
করে থাকে।
পেটের গ্যাসঃ ভাতের মাড়ে রয়েছে শর্করা আর এটা আমাদের হজমের সময় গ্যাস
তৈরি করার সম্ভাবনাকে বাড়ায়। যার জন্য আমাদের পেটে অস্বস্তি এর সৃষ্টি করে
থাকে।
অ্যালার্জিঃ অনেকের ক্ষেত্রে ভাতের মাড়ে থাকা প্রোটিন এবং অন্যান্য
উপাদানের কারণে এলার্জি এর সমস্যা তৈরি হতে পারে যা তাদের ত্বকে ফুসকুড়ি,
চুলকানি এবং শ্বাসকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
হাড়ের সমস্যাঃ বেশি পরিমাণে ভাতের মাড় গ্রহণ করার ফলে ক্যালসিয়ামের
শোষণে বাধাগ্রস্থ হতে পারে যা আমাদের হাড়ের দুর্বলতা ও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি
বাড়াতে পারে।
ক্লান্তি বোধঃ ভাতের মাড়ে উপস্থিত থাকা বেশি পরিমাণে শর্করা আমাদের রক্তে
দ্রুত শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে আবার দ্রুত কমাতে পারে যার ফলে আমাদের
ক্লান্তি এবং অলসতার সমস্যা হয়।
উচ্চ রক্তচাপঃ লবণযুক্ত ভাতের মাড় পান করার ফলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা
বাড়তে পারে যেটা উচ্চ রক্তচাপের কারণ হবে। এর পাশাপাশি এটা আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
অতিরিক্ত ফাইবারঃ ভাতের মাড়ে থাকে ফাইবার আর এটা থাকতে পারে বেশি পরিমাণে।
এজন্য এটা আমাদের হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য আপনারা যদি বেশি পরিমাণে
এটা পান করেন তাহলে আপনাদের পেট ফুলে যাবে গ্যাস ও ডায়রিয়া হতে পারে।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের আধিক্যঃ ভাতের মাড়ে আছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমান
বেশি আছে যেটা আমাদের রক্তে তাড়াতাড়ি শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে থাকে। এছাড়াও
এটা ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতে পারে যা টাইপ দুই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে
থাকে।
পাচনতন্ত্রের সমস্যাঃ বেশি পরিমাণে ভাতের মাড় পান করার ফলে আমাদের
পাচনতন্ত্রে অস্বস্তি তৈরি হতে পারে যা আমাদের হজমের সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং
ডায়রিয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পেট ফোলাভাবঃ বেশি পরিমাণে ভাতের মার পান করার ফলে অতিরিক্ত গ্যাস এর
সমস্যা হতে পারে যা পেট ফুলে যাওয়ার মত সমস্যার কারণ হতে পারে। এছাড়াও এটা
অস্বস্তি ও হজমের সমস্যা তৈরি করে থাকে।
কিডনি সমস্যাঃ ভাতের মাড়ে আছে বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং খনিজ পদার্থ যেটা
আমাদের কিডনির ওপরে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে থাকে এছাড়াও এটা আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে
কিডনি সমস্যার কারণ ও হতে পারে।
অতিরিক্ত ইনসুলিন ক্ষরণঃ ভাতের মাড়ে আছে শর্করা যেটা আমাদের রক্তে দ্রুত
শর্করা এর মাত্রা বৃদ্ধি করে থাকে যার জন্য আমাদের শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে ইনসুলিন
ক্ষরণ করে থাকে। এটা আবার দীর্ঘ মেয়াদের ইনসুলিন প্রতিরোধ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিস
এর কারণও হতে পারে।
খাদ্যনালীতে অস্বস্তিঃ অনেক মানুষের ক্ষেত্রে এই ভাতের মাড় পান করার ফলে
তাদের খাদ্যনালীতে অস্বস্তি এবং জ্বালাপোড়া এর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। করে যদি
তারা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ অথবা অ্যাসিডিটির সমস্যার অসুখে ভুগে
থাকেন তাহলে।
বিষাক্ত পদার্থের সম্ভাবনাঃ এখন অনেক চাল প্রস্তুত করা হয়ে থাকে বিভিন্ন
রাসায়নিক পদার্থ যোগ করে। এ জন্য এ সকল রাসানিক পদার্থ যুক্ত চাল দিয়ে যখন আমরা
ভাত রান্না করব এবং এর থেকে ভাতের মাড় বের করবো তখন এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর হবে কারণ এতে অনেক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানো থাকতে পারে। এটা
আমাদের শরীরে বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে এবং দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের স্বাস্থ্য
সমস্যার কারণ ও হতে পারে।
জ্বালাপোড়া অনুভূতিঃ কিছু মানুষের জন্য ত্বক সংবেদনশীল হতে দেখা যায় এবং
যার ফলে ভাতের মাড় তাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে জ্বালাপোড়া অনুভূতি হতে দেখা
যায়।
আর্সেনিকের উপস্থিতিঃ অনেক ধরনের চালের মধ্যে থাকে আর্সেনিক আর এটা রান্না
করার সময় ভাতের মাড়ে থাকতে পারে অথবা যেতে পারে। আর এই আর্সেনিক আমাদের ত্বকের
জন্য অনেক ক্ষতি করে এবং এটা আমাদের স্বাস্থ্যঝুকি এর সমস্যা তৈরি করে থাকে।
ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম
আজকে আমি আপনাদের অতি পরিচিত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় ভাতের মাড় সম্পর্কে বলবো।
এছাড়াও ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা এবং ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম সম্পর্কে
আলোচনা করব যেগুলো আপনারা পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন। এজন্য আপনারা এই পোস্টটি
মনোযোগ সহকারে পড়বেন। এই ভাতের মাড় আমরা রান্না করার পরে ফেলে দিই তবে এর কিছু
উপকারিতা আছে যেটা আমরা আমাদের ত্বকের যত্নে বা রূপচর্চার জন্য ব্যবহার করতে
পারি। তবে এটা ব্যবহার করার পূর্বে এর
সঠিক ব্যবহার এবং ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের আগে ভালোভাবে জানতে হবে। এটা এখন
অনেকেই প্রাকৃতিক ভাবে রূপচর্চা করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে কারণ এতে অনেক
পুষ্টি উপাদান এবং অনেক দ্রবীভূত উপাদান থাকে। তাহলে আপনারা নিজের আলোচনা থেকে
জানতে পারবেন ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা এবং ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম
সম্পর্কে।
ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা ভাতের মাড়ের ক্ষতি করে দিক এবং ভাতের মাড়ের উপকারিতা
সম্পর্কে জেনেছি। এখন আপনারা জানতে চলেছেন ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা করার
অনেকগুলো উপায় সম্পর্কে। ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারী এটা আমাদের
মধ্যে অনেকেই ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য ব্যবহার করে থাকে। তাহলে চলুন
জেনে নেওয়া যাক ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা করার অনেকগুলো সহজ পদ্ধতি
মুখের ফেসপ্যাকঃ ভাতের মাড়ের সাথে আপনারা অল্প পরিমাণে সাদা মুলতানি মাটি
এবং অল্প পরিমাণে কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। এবং এটা
আপনারা আপনাদের মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে পারেন তারপরে ঠান্ডা পানি
দিয়ে আপনাদের মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
পাবে।
চোখের নিচের প্যাকঃ ভাতের মাড়ের সাথে আপনারা কিছু পরিমাণে আলুর রস মিশিয়ে
চোখের নিচে লাগাতে পারেন। এটা আপনারা চোখের নিচে লাগিয়ে রাখতে পারেন 10 থেকে 15
মিনিট এবং তারপরে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে করে আপনাদের চোখের নিচের কালো দাগ বা
অন্ধকার ও ফোলা ভাব কমে যাবে।
স্কিন টোনারঃ ভাতের মাড়কে আপনারা একটি পরিষ্কার তুলার সাহায্যে আপনাদের
ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করার ফলে এটি আপনাদের ত্বকের পোরস সিকিউর
করবে এবং আপনাদের ত্বককে হাইড্রেট রাখবে।
স্ক্রাবঃ আপনারা ভাতের মাড়কে কিছু পরিমাণে গ্রাইন্ড করা ওটস অথবা চিনি
একসাথে করে মিশিয়ে একটা স্ক্রাব তৈরি করতে পারেন এবং এটা আপনাদের ত্বকে ব্যবহার
করতে পারেন। এটা আপনাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে আপনাদের ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়ে
যাবে এবং এটা আপনাদের ত্বকে করে তুলবে নরম কোমল এবং মসৃণ।
আশা করি আপনারা উপরের আলোচনা থেকে ভাতের মাড় দিয়ে কিভাবে আপনাদের রূপচর্চা করবেন
এ বিষয়ে সঠিক ধারণা পেয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন।আপনারা ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা
করা ছাড়াও এই পোষ্টের মাধ্যমে আরো অনেক বিষয়গুলো জানতে পারবেন যেগুলো নিচে
বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে। যেমন
- ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম
- ভাতের মাড় মুখে দিলে কি হয়
- ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক এবং
- ভাতের মাড়ের হেয়ার প্যাক এবং চুলের যত্নে ভাতের মাড় ইত্যাদি বিষয়ে।
ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম
ভাতের মাড় মুখে লাগানোর অনেকগুলো নিয়ম আছে এবং এগুলো যদি আপনারা সঠিক নিয়ম মেনে
মুখে লাগান তাহলে অনেক উপকার পাবেন আপনাদের ত্বকের জন্য। এটা আপনাদের ত্বকের
আর্দ্রতা বৃদ্ধি করতে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে এছাড়াও অনেক ত্বক জনিত সমস্যার
সমাধান করতে আপনাদের সাহায্য করতে পারবে। তবে এজন্য আপনাদের কিছু সতর্কতা মেনে
চলা উচিত যাতে করে আপনাদের ত্বকে কোন সমস্যা না হয়। এজন্য আপনারা এই পোস্টের
মাধ্যমে জানতে পারবেন
মুখে ভাতের মাড় লাগানোর নিয়ম এবং অনেকগুলো টিপস সম্পর্কে। ভাত রান্না করার পরে
পানির যে তরল অংশটা বা মাড় আপনারা আলাদা করে নিতে পারেন। এটি গরম অথবা ঠান্ডা হতে
পারে তবে এটা খুব গরম না হওয়ায় ভালো। গরম হলে এটা আপনাদের ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি
করবে। আপনাদের মুখে এই ভাতের মাড় লাগানোর আগে আপনাদের মুখটা অবশ্যই ভালোভাবে
পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে আপনাদের মুখে থাকা ধুলোবালি অন্যান্য অনেক
ময়লা এবং মেকআপ পরিষ্কার হবে।
এতে করে আপনাদের ত্বক বা মুখ ভালোভাবে এই মাড় শোষণ করে নিতে পারবে। আপনারা একটা
পরিষ্কার তুলা অথবা প্যাড ব্যবহার করার মাধ্যমে এই মাড় মুখে লাগাতে পারেন।
আপনাদের মুখে সমানভাবে চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং আস্তে আস্তে মাসাজ করুন।
আপনাদের মুখে মাড় লাগানোর পরে আপনারা আপনাদের মুখ হালকা ভাবে মাসাজ করুন। এটা
মুখে লাগানোর ফলে আপনাদের মুখের বা ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে এই কাজটি
করতে সাহায্য করবে এই ভাতের মাড়। আপনাদের
মুখে মাড় লাগানোর পরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। যাতে করে আপনাদের ত্বক
এগুলোকে ভালোভাবে শোষিত করতে পারে। ১০ থেকে ১৫ মিনিট হয়ে গেলে তারপরে আপনারা
ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এটা মুখে ব্যবহার করার
ফলে আপনাদের ত্বককে করবে সতেজ। আপনারা মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নেওয়ার
পরে একটা ময়েশ্চারাইজার ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনাদের ত্বককে আর্দ্র
ও কোমল রাখতে সাহায্য করবে এটা।
কিছু টিপস ও সতর্কতা
- নতুন কোন কিছু ব্যবহার করার আগে বিশেষ করে ত্বকে ব্যবহার করার আগে আপনারা একটা ছোট জায়গায় পরীক্ষা করে নিন যাতে কোন এলার্জির প্রতিক্রিয়া না ঘটে।
- আপনারা যদি মুখে বেশি পরিমাণে মাড় লাগান তাহলে এটা আপনাদের ত্বককে শুষ্ক এবং অস্বস্তিকর করে তুলতে পারে। তবে এটা নিয়মিত ব্যবহার করার সাথে সাথে আপনারা এর পরিমাণটা ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন।
- আপনারা এটা ব্যবহার করার আগে নিশ্চিত হন যে এতে কোন অতিরিক্ত উপাদান এবং কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ নেই যেটা আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
- ভাতের মাড় আপনাদের ত্বকের জন্য হতে পারে একটা প্রাকৃতিক ও সহজলভ্য স্কিন কেয়ার প্রাকৃতিক উপাদান। তবে এটা ত্বকের ধরন ও সমস্যা অনুযায়ী আমাদের ব্যবহার করা উচিত।
ভাতের মাড় মুখে দিলে কি হয়
ভাতের মাড় হচ্ছে প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানে পূর্ণ এবং এটা আমাদের ত্বকের জন্য
বিভিন্নভাবে সাহায্য করতে পারে। তবে এটা আমাদের ব্যবহার করার পূর্বে এর কিছু
বিষয় আমাদের মনে রাখা জরুরী। ভাতের মাড় মুখে লাগানোর যেমন অনেকগুলো উপকারিতা
আমরা উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছি তেমনি এটা মুখে দিলে কি হয় এ বিষয়ে জানতে
আপনাদের পড়তে হবে এই পোস্টটি। এর মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন মুখে ভাতের মাড়
দিলে কি হয় এবং এর সুবিধা ও প্রভাব গুলো।
আর্দ্রতা বৃদ্ধিঃ ভাতের মাড় আমাদের ত্বকে বা মুখে আর্দ্রতা প্রদান করতে
পারে। যেটা আমাদের ত্বককে শুষ্কতা থেকে মুক্তি দিতে পারে এছাড়াও এটি আমাদের
ত্বককে করে তুলে নরম কোমল এবং মসৃণ।
শান্ত ও শীতলতাঃ ভাতের মাড় আপনারা আপনাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে এটা
আপনাদের ত্বককে দেবে শান্ত ও শীতল অনুভূতি। আর এটা আপনাদের ত্বকের অস্বস্তি ও
জ্বালা পোড়া কমাতে সাহায্য করে থাকে।
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিঃ আপনারা যদি ভাতের মাড় নিয়মিতভাবে ব্যবহার করেন আপনাদের
ত্বকে তাহলে এটা আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার কাজে সাহায্য করবে এবং
আপনাদের ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে করবে উজ্জ্বল।
হালকা স্কিন টোনিংঃ এটা ব্যবহার করার ফলে আপনাদের ত্বকের টোন উন্নত হতে
পারার কাজে সাহায্য করবে সেইসাথে এটা আপনাদের ত্বকের অমসৃণতা ভাব কমাতেও সহায়তা
করবে।
পেটের দাগ কমানোঃ এটা কিছু মানুষের ত্বকের ক্ষেত্রে ত্বকে থাকা নানা ছোট
ছোট দাগ অথবা ত্রুটির উপশমের কাজে সাহায্য করতে পারে। ভাতের মাড়ে থাকা প্রাকৃতিক
পুষ্টি উপাদান গুলো এই সমস্যাগুলো উন্নত করতে আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে।
ভাতের মাড় মুখে লাগানোর কিছু সম্ভাব্য প্রভাব
- অনেক মানুষের ত্বক ভাতের মাড়ের উপাদানের প্রতি সংবেদনশীল হতে দেখা যায় যেটা তাদের ত্বকে এলার্জিটিক সমস্যা বা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এতে করে তাদের তকে জ্বালা করে। এজন্য যারা নতুন এটা ব্যবহার করবেন তারা ব্যবহার করার আগে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত যে আপনাদের ত্বকে এটা কোন এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে কিনা।
- ভাতের মাড়ে আছে শর্করা এবং সোডিয়াম আর এটা আমাদের ত্বকের অতিরিক্ত তেল অথবা শুষ্কতার কারণ হতে পারে। এজন্য এটা আমাদের প্রথমে অল্প পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত পরে নিয়মিত ব্যবহার করার সাথে সাথে পরিমাণটা বাড়ানো যেতে পারে।
- অনেক মানুষের ত্বক তৈলাক্ত হয় আর যদি তৈলাক্ত ত্বকে ভাতের মাড় ব্যবহার করা হয় তাহলে এই তৈলাক্ত ভাবের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। এজন্য এটা আপনাদের ত্বকের ধরন অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।
ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক তৈরি
ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের জন্য হতে পারে প্রাকৃতিক ও সহজলভ্য একটা উপাদান। আর এটা
আমরা আমাদের রূপচর্চার জন্য এবং ত্বকের যত্নের জন্য ব্যবহার করতে পারি। এতে করে
আমাদের ত্বক হবে নরম কোমল এবং মসৃণ। এছাড়া এটা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে
আমাদের ত্বকের আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাবে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এর ছাড়াও এটা আমাদের
ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। এখানে আপনারা জানতে ভাতের মাড়ের
ফেসপ্যাক তৈরি পদ্ধতি ও উপকরণ সম্পর্কে
ভাতের মাড় দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতিঃ উপকরণ
- ভাতের মাড় লাগবে ১/২ কাপ
- ১ চামচ পরিমাণে দই
- ১ চামচ পরিমাণে চন্দন গুড়া (ঐচ্ছিক)
- ১ চামচ পরিমাণে মধু (ঐচ্ছিক)
- ১/২ চামচ পরিমাণে কাঁচা হলুদের রস (ঐচ্ছিক)
প্রস্তুত প্রণালীঃ ভাত রান্না করার পরে আপনারা ভাতের মাড় সংগ্রহ করে নিন।
এটা ঠান্ডা অথবা গরম হতে পারে তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে ঠান্ডা মাড়ের। এজন্য
আপনারা মাড় গরম হলে ঠান্ডা করে নিবেন। আপনারা একটা পরিষ্কার পাত্রে ভাতের মাড়
নিয়ে নিন এর সাথে আপনারা মধু দই ও অন্যান্য যে সকল উপাদান বা উপকরণ ব্যবহার করার
কথা বলা হয়েছে উপরে সেগুলো পরিমাণ মতো নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এভাবেই তৈরি
হবে ভাতের মাড়ের ফেসপ্যাক। এরপরে আপনারা আপনাদের মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে
ধুয়ে
তারপরে শুকিয়ে নিন। এরপরে আপনারা এই ফেসপ্যাকটি আপনাদের মুখে ভালোভাবে চারিদিকে
সমান ভাবে লাগিয়ে নিন। আপনাদের চোখের চারপাশে ও ঠোঁটের ওপরে বিশেষ যত্ন নিন। এই
ফেসপ্যাকটি আপনাদের মুখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এতে করে আপনাদের ত্বকে
পুষ্টি পৌঁছানোর সুযোগ হবে এবং নির্দিষ্ট সময় পরে আপনারা ঠান্ডা অথবা লুক
ওয়ার্ম পানি দিয়ে আপনাদের মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
এরপরে আপনারা আপনাদের ত্বক পরিষ্কার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
ভাতের মাড়ের হেয়ার প্যাক এবং চুলের যত্নে ভাতের মাড়
এতক্ষণ আপনারা উপরের আলোচনা থেকে ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা এবং ভাতের মাড় মুখে
লাগানোর নিয়ম ও মুখে লাগালে কি উপকার পাওয়া যায় এসব সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
ভাতের মাড় আমাদের ত্বকের যত্নে এবং রূপচর্চার জন্য যেমন অনেক উপকার ও ব্যবহার করা
যায় তেমনি এটা আমাদের চুলের যত্নেও ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ এতে আছে
প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান এজন্য আপনারা এটা প্রাকৃতিক ও সাশ্রয়ী উপায় হিসেবে
ব্যবহার করতে পারেন আপনাদের চুলের যত্ন
নেওয়ার জন্য এবং
হেয়ার প্যাক
বানানোর জন্য। এটা আপনাদের চুলের স্বাস্থ্য কে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারবে।
তাহলে আপনারা নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য ভাতের মাড়ের
বিভিন্ন পদ্ধতি ও উপকারিতা সম্পর্কে
ভাতের মাড় দিয়ে হেয়ার রিন্সঃ উপকরণ
১ কাপ পরিমাণে ভাতের মাড়। এটা আপনারা ভাত রান্না করার পরে সেখান থেকে সংগ্রহ করে
নিতে পারেন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ রান্না করার পরে আপনারা ভাতের মাড় সংগ্রহ করে সেটা
ঠান্ডা করে নিন। আপনারা শ্যাম্পু দিয়ে আপনাদের চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধোয়ার
পরে আপনারা এই ভাতের মাড় দিয়ে আপনাদের চুলগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে
ফেলুন। এভাবে আপনারা পাঁচ থেকে দশ মিনিট রাখার পরে তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে
আপনারা চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
উপকারিতা
- ভাতের মাড়ে উপস্থিত থাকা ভিটামিন ও মিনারেল আপনাদের চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
- এটা আপনাদের চুলে প্রাকৃতিকভাবে সাইন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
- চুলকে করবে মসৃণ ও শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করবে।
ভাতের মাড় দিয়ে হেয়ার মাস্কঃ উপকরণ
- ভাতের মাড় ১/২ কাপ পরিমাণে
- ১ চামচ পরিমাণে মধু
- ১ চামচ পরিমাণে নারকেল অথবা আমন্ড তেল
প্রস্তুত প্রণালীঃ আপনারা প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে ভাতের মাড় এবং তার
সাথে মধু ও নারকেল অথবা আমন্ড তেল সমপরিমাণ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।এই
মিশ্রণটি আপনারা আপনাদের চুলের গোড়া থেকে শুরু করে একেবারে চুলের শেষ পর্যন্ত
লাগাতে পারেন এভাবে লাগিয়ে রাখতে হবে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। সময় শেষ হওয়ার পরে
আপনারা শ্যাম্পু দিয়ে আপনাদের চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা
- এটা ব্যবহার করার ফলে আপনাদের চুলের শুষ্কতা দূর হবে এবং চুলে গভীর আর্দ্রতা প্রদান করবে এটা।
- আপনাদের চুলকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গুলো সরবরাহ করবে।
ভাতের মাড় এবং দই এর হেয়ার প্যাকঃ উপকরণ
- ভাতের মাড় ১/২ কাপ পরিমাণে
- দুই চামচ পরিমাণে দই
- এক চামচ পরিমাণে অলিভ অয়েল অথবা অ্যাভোকাডো তেল।
প্রস্তুত প্রণালীঃ আপনারা একটি পরিষ্কার পাত্রে নিয়ে নিবেন ভাতের মাড়,
সমপরিমাণে ২ এবং অলিভ অথবা অ্যাভোকাডো তেল নিয়ে ভালোভাবে সমস্ত উপাদান গুলো
একসাথে মিশিয়ে নিবেন। এই মিশ্রণটি আপনারা আপনাদের চুলের গোড়া থেকে একেবারে শেষ
প্রান্ত পর্যন্ত লাগাতে পারেন এবং লাগিয়ে রাখতে হবে ৩০ মিনিট। তারপরে আপনারা
আপনাদের চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
উপকারিতা
- এটা ব্যবহার করার ফলে আপনাদের চুলকে প্রাকৃতিক ভাবে পুষ্টি প্রদান করবে ও আর্দ্রতা প্রদান করতে সাহায্য করবে এটা।
- এছাড়াও এটা ব্যবহার করার ফলে আপনাদের চুল উজ্জ্বল এবং মসৃণ হবে।
আপনারা উপরের এই আলোচনা থেকে কিভাবে ভাতের মাড় দিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করবেন এবং
কি কি উপকরণ লাগবে প্রস্তুত প্রণালী সবকিছুই আশা করি জানতে পেরেছেন এবং এটা
ব্যবহার করার ফলে আপনারা আপনাদের চুলের জন্য কি কি উপকারিতা পাবেন সে সম্পর্কেও
বুঝতে পেরেছেন। আপনারা যদি এ সকল উপকরণ এবং নিয়ম মেনে ভাতের মাড় চুলের যত্নের
জন্য ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আশা করি অনেক উপকারিতা পাবেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো তার এ পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা
করেছে ভাতের মাড় দিয়ে রূপচর্চা-ভাতের মাড় মুখে লাগানোর নিয়ম এবং এটার হেয়ার
প্যাক ও চুলের যত্নে ভাতের মাড়ের ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত
জানা-অজানা সকল তথ্য। আশা করি আপনাদের এই আর্টিকেল পড়ে ভালো লাগবে এজন্য আপনারা
অবশ্যই এই আর্টিকেলটি আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন যাতে করে তারাও
এটা পড়ার সুযোগ পায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url