আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং আখরোট খাওয়ার উপকারিতা জানুন
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে অনেকেই আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং আখরোট
খাওয়ার উপকারিতা সহ প্রতিদিন কয়টি আখরোট খাওয়া উচিত এ বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার
জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন বিভিন্ন সাইট। আপনাদের মধ্যে যারা খুঁজে পানে তারা
আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন এজন্য শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
এখানে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং
আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সহ প্রতিদিন কয়টি আখরোট খাওয়া উচিত, আখরোটের পুষ্টিগুণ,
আখরোটের দাম কত, খালি পেটে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা, মধু এবং আখরোট একসাথে মিশিয়ে
খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা।যেগুলো পড়ার
মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন এবং অনেক উপকৃত হবেন। এ সকল বিষয়ে জানার জন্য
আপনাদের শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভূমিকা-আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
আখরোট আমরা কম বেশি সবাই চেনে এবং এটি হচ্ছে এক ধরনের শুকনা বাদাম জাতীয় ফল। এই
বাদাম খেতে অনেক সুস্বাদু এবং অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই বাদামে আছে প্রোটিন
ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম জিংক এন্টিঅক্সিডেন্ট ফাইবার ভিটামিন এবং আমিষ ইত্যাদি
পুষ্টি উপাদান। আর এ সকল উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে
থাকে। আখরোট বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, হজম
শক্তি বৃদ্ধি পায়, বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের
বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং এটা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক
উপকারী। আখরোট খাওয়ার ফলে আমরা কিডনি রোগ প্রতিরোধ করতে পারি এবং আমাদের হার্টের
স্বাস্থ্য ভালো থাকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়
ইত্যাদি আরো নানা উপকারিতা আছে। তবে এটা আমাদের প্রতিদিন খেতে হবে নিয়ম করে
পরিমিত পরিমাণে। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন পাঁচটি আখরোট খেতে পারেন। তবে
এর বেশি খাওয়া হবে না তাহলে এটা আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করবে। এছাড়াও আরো অনেকগুলো আখরোট সম্পর্কিত বিষয়
সম্পর্কে এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন। যেগুলো নিচে দেওয়া হল এজন্য আপনারা
এগুলো জানতে অবশ্যই এই পোস্টটি পড়বেন। যেমন
- আখরোটের পুষ্টিগুণ
- আখরোট এর দাম কত
- খালি পেটে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
- আখরোট এবং মধু একসাথে খাওয়ার উপকারিতা
- আখরোট খাওয়ার অপকারিতা
- আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা
আখরোটের পুষ্টিগুণ
আখরোট হচ্ছে শুকনা বাদাম জাতীয় ফল। এই বাদাম খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে কারণ এতে
আছে অনেক পুষ্টিগুণ উপাদান। এতে আছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম,
ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। এর জন্য
এই আখরোট বাদাম খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। আখরোট খাওয়ার ফলে
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে কিডনি রোগ
প্রতিরোধ করা যায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে
আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এছাড়াও এটা আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্যও অনেক
উপকারী। আখরোটে অন্যান্য বাদামের চাইতে সবচাইতে বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
থাকে আর এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন রোগের সাথে লড়াই
করে আমাদের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। অন্যান্য সকল বাদামের চাইতে
আখরোটে পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে এবং এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
আমরা আখরোট প্রতিদিন পরিমিত
পরিমাণে অর্থাৎ আমরা প্রতিদিন পাঁচটি আখরোট খেতে পারি। আখরোটের প্রতি ১০০ গ্রামে
আছে
- প্রোটিন-১৫.২ গ্রাম
- স্নেহ পদার্থ-৬৫.২ গ্রাম
- ফাইবার-৬.৭ গ্রাম
- ভিটামিন-২০ আই ইউ (IU)
- ম্যাগনেসিয়াম-১৫৮ মি.গ্রা
- ক্যালসিয়াম-৯৮ মি.গ্রা
- পটাশিয়াম-৪৪১ মি.গ্রা
- জিংক-৩.০৯ মি.গ্রা
প্রোটিনের মধ্যে থাকে অনেকগুলো অত্যাবশ্যকীয় বা অতি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড।
আখরোট এর দাম কত
আখরোট খুবই পুষ্টিকর গুণে ভরপুর এক ধরনের বাদাম এতে আছে ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাটি
এসিড, ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপাদান আছে। আখরোট খাওয়ার ফলে
মস্তিষ্কের কার্য ক্ষমতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এছাড়াও আপলোড খাওয়ার
ফলে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। বর্তমানে
আখরোটের দাম বাজারে এই বাদামের কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে থাকে। বর্তমানে বাজারে
আখরোটের দাম বিভিন্ন হতে পারে এজন্য আপনারা
আখরোট কেনার আগে এর সঠিক মূল্য জেনে তারপরে কিনবেন। আখরোটের প্রতি ১০০ গ্রামে আছে
৬২ গ্রাম ফ্যাট এবং সাত গ্রাম প্রোটিন। বর্তমানে এখন বাজারে অনেক কোয়ালিটির
আখরোট বাদাম পাওয়া যাচ্ছে তবে এর দাম ভিন্ন হতে পারে। ভালো মানের আমেরিকার
ইমপোর্ট করা ২৫০ গ্রাম আখরোটের দাম হচ্ছে ৩৪৫ টাকা। আবার ৫০০ গ্রাম আখরোটের দাম
হচ্ছে ৬৯০ টাকা। ১ কেজি আখরোটের দাম হচ্ছে বর্তমানে ১ হাজার ৩৮০ টাকা থেকে ২
হাজার টাকা। তবে চীনা এবং
কাশ্মিরী আখরোটের দাম একটু কম তুলনামূলকভাবে চীনা আখরোটের দাম এর ক্ষেত্রে ৮০০
থেকে ১০০০ টাকা আর কাশ্মীরী আখরোটের দামের ক্ষেত্রে এটা ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা
প্রতি কেজি বিক্রি হয়ে থাকে। বাংলাদেশের একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ঘরের
বাজারে এখানে ৫০০ গ্রাম আখরোট এর দাম হচ্ছে ৬৫০ টাকা দামে বিক্রি হয়। বাংলাদেশের
সাধারণ মানের আখরোটের দাম প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা আর উন্নত মানের আখরোট
প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা।
খালি পেটে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
আখরোট ফলটি আমরা হয়তো অনেকেই ভালোভাবে চিনি না কিন্তু এটা এক ধরনের বাদাম জাতীয়
ফল এই ফলের অনেক পুষ্টিগুণ আছে। আমরা অনেকেই সকালে খালি পেটে আখরোট খেয়ে থাকি
এতে অনেক উপকার পাওয়া যায় এ কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানি না না জেনে খেয়ে থাকি।
সকালে খালি পেটে আখরোট খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের নানা রকম পরিবর্তন ঘটে থাকে এবং
আমরা অনেক রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারি। আখরোট দেখতে গোলাকার এর ভেতরে
থাকে
বীজ আর এটাই খাওয়ার উপযুক্ত। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে নিয়মিত আখরোট খাওয়ার অভ্যাস
করলে আমরা এই ফলটি থেকে স্নেহ পদার্থ, প্রোটিন, এমিনো এসিড, ফাইবার, ক্যালসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর মত অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পেতে পারি।
এই আখরোট অনেক ধরনের মিষ্টি সালাদে ব্যবহার করা হয় এবং এটা দেশ-বিদেশের নানা
নামিদামি খাবারের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটা খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে থাকে। এটা
যে খাবারের স্বাদ বাড়ায় তা নয় এটা আমাদের স্বাস্থ্যের
জন্যও অনেক উপকার করে। কারণ এতে আছে নানা পুষ্টি কোন যা আমাদের শরীরকে নানা ধরনের
রোগ থেকে রক্ষা করে এবং রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। কিন্তু আমরা অনেকেই সকালে খালি
পেটে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানি না। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের
গবেষকদের মতে, সকালে খালি পেটে প্রতিদিন আখরোট খাওয়ার অভ্যাস করলে ক্যান্সার,
হার্টের অসুখ, স্নায়ুগত বিভিন্ন সমস্যা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এছাড়াও এটা নানা রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে থাকে
এই আখরোট বাদাম। এছাড়াও জার্নাল অফ নিউট্রিশন এ সম্প্রতি প্রকাশ পাওয়া যাতে
গবেষকরা দাবি করেছে যে আখরোট একই সাথে আমাদের হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্ক সুরক্ষা
নিশ্চিত করে থাকে। এজন্য হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো রোগের হাত থেকে আমরা
সহজেই বাঁচতে পারি এবং আমাদের খাবার তালিকায় এটা রাখা দরকার। এছাড়াও আখরোটে
থাকা ও মেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ভিটামিন ই আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকারী।
যাদের ঘুম হয় না এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকছে না
তারা নিয়মিত আখরোট খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন তাহলে এগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া
যাবে। আপনাদের হাড় এবং দাঁতের যত্নের জন্যও আপনারা আখরোট খেতে পারেন। পুষ্টিবিদরা
বলেছে যে এর সম্পূর্ণ পুষ্টি কোন পাওয়ার জন্য এবং হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য
আপনারা আখরোটকে নিয়মিত পানিতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। তবে যদি
আপনারা পানির পরিবর্তে এর সাথে দুধ অথবা মধু এর সাথে ভিজিয়ে রেখে এটা সকালে
খাওয়া যেতে পারে। একজন পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক
মানুষের প্রতিদিন পাঁচটি আখরোট খাওয়া যথেষ্ট। প্রতিদিন পাঁচটির বেশি আখরোট
খাওয়ার ফলে শরীরের উপকারের চাইতে ক্ষতি হতে পারে বলে অভিমত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রতিদিন কয়টি আখরোট খাওয়া উচিত
আখরোট খুবই পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি বাদাম জাতীয় ফল। এই আখরোট এ আছে প্রোটিন,
ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং এমিনো এসিড
ইত্যাদি সকল পুষ্টি উপাদান। আখরোট খাওয়ার ফলে আমরা সহজে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা
পেতে পারি এবং এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে,
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হার্ট ভালো রাখতে ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে,
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আমাদের ত্বক এবং চুলের
জন্য অনেক উপকারী। এছাড়াও এটা আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকার করে থাকে। তবে এটা আমাদের
নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে তবে আমরা এর থেকে সম্পূর্ণ উপকার পাব। যদি আমরা
নিয়মিত বেশি পরিমাণে আখরোট খেয়ে ফেলি তাহলে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি
করতে পারে। আখরোট আমরা পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারি সকালে খালি পেটে এতে অনেক উপকার
পাওয়া যাবে। এতে করে আমাদের রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা নানা রোগের সাথে লড়াই করতে পারব। একজন
পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন পাঁচটি আখরোট খাওয়া যেতে পারে বলে মনে
করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রতিদিন পাঁচটির বেশি আখরোট খাওয়া যাবে না। পাঁচটির
বেশি আখরোট আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয় এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর বলে অভিমত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আখরোট খাওয়ার অপকারিতা
আখরোট খাওয়ার ফলে আমরা যেমন অনেক উপকারিতা পায় তেমনি আখরোট খাওয়ার ফলে আমাদের
কিছু অপকারিতা দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য। আখরোট খাওয়ার ফলে আমাদের
হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়, মস্তিষ্কের বিকাশের
সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়,
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে এছাড়াও এটা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্য অনেক উপকারী।
আমাদের যে কোন খাবারই পরিমিত পরিমানে খাওয়া উচিত অতিরিক্ত
পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় এতে আমাদের শরীরে পুষ্টি উপাদান এর মাত্রার সামঞ্জস্য
বজায় রাখার কাজটা কঠিন হয়ে পরে। এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। আখরোট ও
আমাদের পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। আখরোট
খাওয়ার অপকারিতা হচ্ছে
- অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে তাদের কিছু গভীর সমস্যায় হতে পারে যেমন গালে জিব্বা এবং ফুসফুসে জ্বালা অনুভব করতে পারেন তারা। এই লক্ষণগুলোর সাথে সাথে তাদের নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে যার ফলে অনেকের মৃত্যু হতে পারে। এজন্য এই লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- বেশি পরিমাণে আখরোট খাওয়ার ফলে লিভারের সমস্যা হতে পারে।
- কালো আখরোটে থাকে ফাইটেটস আর এটা আমাদের শরীরের আয়রন শুষে নিয়ে থাকে যার ফলে আমাদের শরীরে আয়রনের অভাব দেখা দিতে পারে।
- যাদের বাদামে এলার্জির সমস্যা আছে তাদের আখরোট খাওয়ার ফলেও এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- গবেষণা থেকে জানা গেছে যে অতিরিক্ত পরিমাণে আখরোট খাওয়া হলে এটা আমাদের ওজন বাড়াতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণে আখরোট খাওয়ার ফলে অনেকের হজমের সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে আখরোট খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের শরীরে ফুসকুড়ি ও ফোলা ভাব লক্ষ্য করা যেতে পারে।
আখরোট এবং মধু একসাথে খাওয়ার উপকারিতা
আখরোট এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়া যায় এবং এর অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে।
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বাদাম জাতীয় খাবার গুলো অনেক উপকারে আর যদি সেটা হয়
আখরোট বাদাম তাহলে এত কোন কথাই নেই। কারণ আখরোট বাদাম হচ্ছে সবচাইতে বেশি উপকারী
এবং এতে অন্যান্য বাদামের চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
এজন্য এটা খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আমরা বিভিন্ন
রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারি।
এটা আমাদের চুলকে শক্তিশালী করতে চুল পড়া কমাতে এবং চুল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
থাকে। আখরোট এবং মধুর মিশ্রণ একসাথে খাওয়ার ফলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
পায় সেইসাথে আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং অনিদ্রা দূর হয়। এবং মধু একসাথে
মিশিয়ে খাওয়ার ফলে শিশুদের ব্রেন শক্তিশালী হয় এবং ক্যান্সার দূর করা যায় এবং
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। মধু এবং আখরোট গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক উপকারী। এই
বাদাম এবং মধু অনেক পুষ্টিকর খাবার এজন্য
এগুলো একসাথে খেলে আরো অনেক বেশি উপকারিতা মিলবে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। এটা
খাওয়ার ফলে কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, ওজন জনিত নানা সমস্যা, হৃদপিন্ডের রোগ এবং
এলার্জি সহ নানা রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। মধুতে বেশি পরিমাণে ক্যালরি
থাকে এজন্য এটি খাওয়ার সময় আমাদের মাথায় রাখতে হবে এবং পরিমিত পরিমানে
প্রতিদিন খেতে হবে। প্রতিদিন আখরোটের সাথে মধু মিশিয়ে খাওয়ার ফলে পুরুষের যৌন
সমস্যা দূর হয় যৌন স্বাস্থ্য উন্নত হয় সেই সাথে শুক্রানুর মান বৃদ্ধি পায়।
আখরোট এবং
মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়ার ফলে পুরুষের মধ্যে শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে
এছাড়া এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদান আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী এবং
এটাতে চুলের জন্য নানা উপকারী উপাদান আছে। যেমন আছে ওমেগা সিক্স, ওমেগা থ্রি এবং
ওমেগা নাইন ইত্যাদি আর এগুলো আখরোট বাদামের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। এই কারণে
আখরোট নিয়মিত খাওয়ার ফলে আমাদের চুল শক্ত হবে চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং সেই
সাথে আমাদের মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
আখরোট এক প্রকারের বাদাম জাতীয় ফল এবং এটা অনেক সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর।
এই আখরোট বাদাম আমাদের শরীরের জন্য অনেক পুষ্টিকর এবং নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রদান করে থাকে। কিন্তু আমরা যদি এই আখরোট সঠিক নিয়ম এবং পরিমাণ না জেনে খায়
তাহলে আমরা এর পূর্ণ উপকারিতা থেকে সহজেই বঞ্চিত হতে পারব। এজন্য আমাদের নিয়ম
করে প্রতিদিন পরিমিত পরিমানে আখরোট বাদাম খেতে হবে। তবেই আমরা এর পূর্ণ উপকারিতা
পাবো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন
আমাদের ৫টি আখরোট খাওয়া উচিত এবং এটা রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খাওয়া
উচিত তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। আখরোট খাওয়ার আগে অবশ্যই পাঁচ থেকে ছয়
ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজানো আখরোট সকালে খালি পেটে খাওয়ার ফলে
আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা বিভিন্ন রোগ সহজেই নিরাময় করতে
পারব। আপনারা দুধ এবং মধুর সাথে মিশিয়েও আখরোট খেতে পারেন। আবার অনেকে হালকা করে
তেল ছাড়া ভেজে খেয়ে থাকেন সন্ধ্যায় নাস্তা হিসেবে।
আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
আখরোট হচ্ছে খুবই পুষ্টিকর বাদাম জাতীয় ফল এতে অনেক ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ
পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে থাকে। এতে আছে
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, প্রোটিন, ফাইবার, বায়োটিন, ক্যালসিয়াম ও
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপস্থিতি উপাদান। এই আখরোট বাদাম খাওয়ার ফলে আমরা
নানা রোগ থেকে রক্ষা পায় সহজেই এবং এটা আমাদের হজম শক্তি উন্নত করতে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের রাখতে সাহায্য
করে থাকে এছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা আছে যেগুলো আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে
জানতে পারবেন। আমাদের প্রতিদিন নিয়ম করে পরিমিত পরিমাণে আখরোট খাওয়া উচিত তবে
আমরা এর স্বাস্থ্য উপকারিতা পাব। আখরোট খাওয়ার উপকারিতা নিচে বর্ণনা করা হলো
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ আখরোট খাওয়ার ফলে আপনাদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনাদের ইমিউন সিস্টেমকে ঠিক
রাখতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ যেমন তামা ও
ভিটামিন বি ৬ যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে থাকে।
হার্ট ভালো রাখতেঃ আমাদের হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য আখরোটের বিশেষ ভূমিকা
আছে। কারণ এতে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যেটা আমাদের শরীরের খারাপ
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল এর মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
থাকে। এর ফলে আমাদের হার্টের রোগের সম্ভাবনা কম হয় আর হার্ট সুস্থ ও ভালো থাকে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ আপনাদের মধ্যে যারা ডায়াবেটিসের সমস্যায়
ভুগছেন তারা আখরোট খেতে পারেন। এটা গবেষণা মতে যে নারীরা সপ্তাহে দুই দিনে ২৮
গ্রাম পরিমাণ আক্রোটে খেয়েছে তাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে গেছে
প্রায় ২৪%। আখরোট আমাদের শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ আখড়তে আছে প্রোটিন ফাইবার এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি
এসিড আর ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডকে বলা হয় গুড ফ্যাট। এটা আমাদের ওজন কমাতে
সাহায্য করে থাকে এজন্য আপনারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনাদের খাদ্য
তালিকায় আখরোট বাদাম রাখতে পারেন।
অনিদ্রা দূর করতেঃ আখরোটে আছে মেলাটোনিন নামের এক প্রকারের যৌগ এটা আমাদের
ঘুমের জন্য বিশেষ সহায়ক। আমাদের শরীরে এই মেলাটোনিনের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পায়
তাহলে আমাদের ভালো ঘুম হয় এজন্য যারা অনিদ্রার সমস্যায় ভুগছেন তারা এই আখরোট
বাদাম খেতে পারেন এতে করে অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং ভালো ঘুম হবে।
স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতেঃ আখরোটে আছে বায়োটিন বা ভিটামিন বি ৭ এটা
আমাদের চুলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে থাকে এবং আমাদের চুল পড়া কমিয়ে আনে
চুলের গোড়া মজবুত এবং শক্ত করে এছাড়াও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতেঃ আপনাদের ত্বকের উজ্জ্বল এবং টানটান করার
জন্য আপনারা নিয়মিত আপলোড খেতে পারেন কারণ এতে আছে ভিটামিন ডি এবং প্রচুর
পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এনটিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেল এর
হাত থেকে রক্ষা করে এছাড়াও এটা আমাদের ত্বকের বলি রেখা এবং বয়সের ছাপ কমাতে
সাহায্য করে থাকে।
মানসিক অবসাদ দূর করতেঃ আখরোট আমাদের মানসিক অবসাদ দূর করার কাজে ভীষণ
উপকারী। পুষ্টিবিদদের মতে এক মুঠো পরিমাণে আখরোট আমাদের করটিসল হরমোন এর মাত্রা
কমাতে সাহায্য করে। এই হরমোন আমাদের মানসিক চাপের সাথে যুক্ত। এছাড়াও আখরোটে আছে
পলিঅ্যানস্যাচুরেটেড ফ্যাট যেটা আমাদের দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় রক্তচাপ কমানোর
কাজে সাহায্য করে থাকে। আপনাদের অবসাদ এর সমস্যা হলে আপনারা এজন্য আখরোট খেতে
পারেন।
মস্তিষ্ক ভালো রাখতেঃ আছে বেশ কয়েকটি নিউরোপ্রোটেকটিভ যৌগ যেমন ভিটামিন
ই, মেলাটোনিন, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফোলেট। এছাড়া
গবেষণায় দেখা গেছে যে আখরোট খাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য এটা অনেক
ভালো এতে থাকা এ সকল উপাদান পারকিনসন্স এবং আল-ঝাইমার্স রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে
সাহায্য করে। এটা খাওয়ার ফলে স্মৃতিসৌতি বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কের ফাংশন ভালো
রাখতে এটা সাহায্য করে থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আখরোট খাওয়ার ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে এটা
অগ্ন্যাশয়, প্রোটেস্ট এবং মলদ্বারের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে থাকে
বিশেষত। আখরোট এর মধ্যে থাকা গামা, টোকোফেরল, ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড এবং ইলেজিক
গ্যালিক অ্যাসিড আমাদের শরীরের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
এজন্য আপনারা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করার জন্য আখরোট খেতে পারেন।
পেটের সমস্যা দূর করতেঃ আমাদের পেট পরিষ্কার রাখার জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ
খাদ্য বা ফাইবার অত্যন্ত প্রয়োজন। যে খাবারগুলো থেকে আমাদের শরীরে প্রোটিন আসে
সেগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ কম থাকে আর আখরোটে থাকা ফাইবার খাওয়ার ফলে আমাদের হজম
শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং এর ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় আমাদের পেটের সমস্যা
দূর হয় এবং পেট পরিষ্কার থাকে।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ আখরোটে থাকা ফাইবার আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে থাকে এর ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য
ভালো থাকে।
গর্ভাবস্থায় উপকারীঃ গর্ভবতী মহিলাদের ডায়েটে উচ্চমাত্রার ফ্যাটি
অ্যাসিড থাকে আর তাদের খাদ্য তালিকায় আখরোট থাকা উচিত এটা গর্ভের শিশুর জন্য
অনেক উপকারী।
হাড় শক্ত করতেঃ আখরোটে আছে ক্যালসিয়াম যা আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক
রাখে এবং আর্থাইটিস এর হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে।
দীর্ঘায়ু লাভ করতেঃ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে আমরা যদি প্রতি সপ্তাহে
তিনদিন আখরোট বাদাম খায় তাহলে আমরা দীর্ঘ এবং সুস্বাস্থ্য জীবন পাব এবং এটা
উপভোগ করতে পারব।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো তার এই পোস্টটির মাধ্যমে আখরোট সম্পর্কিত অনেক বিষয়
তুলে ধরেছে। আখরোট খাওয়ার নিয়ম এবং আখরোট খাওয়ার উপকারিতা, প্রতিদিন কয়টি
আখরোট খাওয়া উচিত, আখরোট খাওয়ার অপকারিতা এবং মধুর সাথে আখরোট খাওয়ার উপকারিতা
ইত্যাদি বিষয়গুলো। আশা করি আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে অনেক সঠিক তথ্য
জানতে পারবেন এবং আখরোট খাওয়ার অভ্যাস শুরু করবেন। আর আপনাদের যদি এই পোস্টটি
পড়ে ভালো লাগে
তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন যাতে
করে তারাও পড়ার সুযোগ পায়। এছাড়াও প্রতিদিন নতুন তথ্য জানতে আমার এই
ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন এবং কমেন্টে জানাবেন কেমন হয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url