ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন জানার জন্য কিন্তু খুঁজে পাননি। যারা খুঁজে পাননি তারা আজকে আমার এ পোষ্টের মাধ্যমে জানার জন্য শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ, গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা, ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় এবং নিয়ম সহ ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক ইত্যাদি বিষয়ে। এই পোষ্টের মাধ্যমে এ বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে যেগুলো আপনাদের জানার মাধ্যমে আপনাদের স্বাস্থ্যের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন ড্রাগন ফলের। এজন্য আপনাদের সকলকে অনুরোধ করবো শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা

ড্রাগন ফল আমাদের বিশ্বের সকলের কাছে পরিচিত একটা এবং সুস্বাদু ফল। এই ফল অনেক পুষ্টিকর কারণ এই ফলে আছে অনেক ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান সহ পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, প্রোটিন, কার্বোহাইডেট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। আর এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক উপকারিতা পাবো আমরা এবং নানা রোগ থেকে সহজে মুক্তি পাবো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আমরা 
সহজে নানা সংক্রামন রোগ থেকে মুক্তি পাব। আমরা ক্যান্সার ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করতে পারব। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে এতে করে মা ও শিশুর দুজনার উপকার হবে দুজনার স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা ও শিশুর হাড় শক্ত মজবুত থাকে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় হার্ট ভালো থাকে মানসিক চাপ কমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া ও শিশুর জন্ম গত ত্রুটি এবং শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি বিকাশের জন্য 

ড্রাগন ফল অনেক উপকারী এবং এতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান গুলো গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। ড্রাগন ফল আমরা সকালের নাস্তায় খেতে পারি এবং এই ফল খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে খাবার খাওয়ার ২ ঘন্টা আগে অথবা পরে। তবে আমাদের এটা পরিমিত পরিমানে খেতে হবে তা না হলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হতে পারে।

ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় 

ড্রাগন ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী এটা আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য এবং আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি এর ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। এই ফলে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং খনিজ আছে যেগুলো আমাদের অনেক রোগ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের দেশে দুই ধরনের ড্রাগন ফল পাওয়া যায় একটি হচ্ছে ভেতরে সাদা এবং অন্যটি হচ্ছে ভেতরে লাল কিন্তু দুটোর মধ্যেই কালো বীজ আছে। সাদা ড্রাগন ফলের চাইতে লাল ড্রাগন ফল খেতে অনেক বেশি সুস্বাদু 

হয়ে থাকে। এই ফলকে ইংরেজিতে বলা হয় ড্রাগন ফ্রুট বা পিটাহায়া। এই ড্রাগন ফল থেকে আইসক্রিম এবং অনেক রকমের ডেজার্ট তৈরি করা হয়ে থাকে। প্রত্যেকটা ফল খাওয়ার জন্য একটা সময় এবং নিয়ম আছে যে নিয়মগুলো মেনে চলে খাওয়া হলে অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। তেমনি করে ড্রাগন ফল খাওয়ারও সঠিক নিয়ম এবং সঠিক সময় আছে। আমরা ছোট বড় সকলের ড্রাগন ফল খেতে পছন্দ করি কিন্তু এর উপকারিতা এবং খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম সম্পর্কে 

আমরা অনেকেই অবগত নই। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমরা মরণ ব্যাধি ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে পারি এবং এর ফল খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের শরীরে সহজে অন্য কোন রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধতে পারে না। এছাড়াও এটা আমাদের কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে অনেক উপকার করে থাকে। ড্রাগন ফলে আছে ভিটামিন সি আর এটা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস ক্যান্সার এবং আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকারে আসে। এতে থাকা ফাইবার 

আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখাতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে এর ফলটি আমরা সকালবেলা খাবার খাওয়ার আগে আবার খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে খেতে পারি। এই সময়টাতে খেলে খাদ্য পরিপাকের জন্য বিভিন্ন এনজাইম দ্রুত কাজ করে। শুধু ড্রাগন ফল নয় অন্যান্য ফল খাওয়ার আগে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা আমাদের সকলের উচিত। খাবার খাওয়ার পরে আমরা যদি ড্রাগন ফল খায় তাহলে তা খাদ্য পাকস্থলীতে জমা না হয়ে সেটা জমা হবে অন্য স্থলিতে আর 

এর কারণে ক্ষতিকর এসিড তৈরি হতে পারে। আর এটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতি করতে পারে। এজন্য আমাদের পেটে ব্যথা এবং পেট ফোলার মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। আপনারা যদি খাবার খাওয়ার পর ফল খেতে চান তাহলে আপনারা তিরিশ মিনিট পরে খাবেন। এছাড়াও যাদের ড্রাইভেটিস আছে তাদের ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় বা নিয়ম হচ্ছে খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা আগে বা খাবার খাওয়ার দুই ঘন্টা পরে। এভাবে আমরা যদি ড্রাগন ফল খায় তাহলে আমরা সব উপকার গুলো পাব আমাদের শরীরের জন্য।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল হচ্ছে অনেক পুষ্টি গুণে ভরপুর একটি ফল যা খেলে আমরা নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা পাব। জাদুন ফল খাওয়ার ফলে আমরা অনেক ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাবো সহজেই এবং আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এছাড়াও এটা আমাদের কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।আমরা উপরের আলোচনা থেকে ড্রাগন ফল খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জেনেছি আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন এবার 

আপনাদের জানাবো ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। নিয়ম মেনে খাওয়ার ফলে আমরা অনেক উপকারিতা পাবো ড্রাগন ফল থেকে। ড্রাগন ফল খাওয়ার জন্য আপনাকে বেছে নিতে হবে পাকা ড্রাগন ফল। তারপরে আপনারা ড্রাগন ফলটিকে পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিবেন। ড্রাগন ফলটি যদি পাকা হয় এবং খাওয়ার উপযুক্ত হয় তাহলে আপনারা এটাকে ছুড়ির সাহায্যে কেটে নিবেন এবং ফলটিকে কাটবেন সোজা মাঝ বরাবর অর্ধেক করে। এরপরে আপনারা ছোট ছোট পিস করে 

কাটা অংশ গুলো থেকে খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের সাদা বা লাল অংশটুকু খেতে পারেন। ড্রাগন ফলের একটি ভেতরে সাদা হয় এবং আরেকটির ভেতরে লাল হয় এবং ভেতরে কালো বীজ থাকে। এই দুই ধরনের ড্রাগন ফল আমাদের দেশে পাওয়া যায়। এই ড্রাগন ফল অনেক সুস্বাদু এটি আপনারা সালাদ হিসেবে খেতে পারেন।কাঁচা ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আপনাদের ক্ষতি হতে পারে এজন্য আপনারা পাকা ড্রাগন ফল খাবেন। আপনারা সকালের নাস্তা হিসেবেও খেতে পারেন এই সুস্বাদু ড্রাগন ফল।

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা

ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা
ড্রাগন ফলের উপকারিতার কথা আমরা হয়তো অনেকে কমবেশি জানে কিন্তু ড্রাগন ফলের যেমন উপকারিতা আছে তেমনি করে ড্রাগন ফলের খোসার ও অনেক উপকারিতা আছে। এই ড্রাগন ফলের খোসার উপকারিতা কথা আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন। আমরা ড্রাগন ফল খাওয়ার সময় এর খোসা গুলো ছাড়িয়ে ফেলে দিই কিন্তু এটা ফেলে না দিয়ে আপনারা এটাকে কাজে লাগাতে পারেন আপনাদের রূপচর্চার ক্ষেত্রে এবং জুস বানিয়েও আপনারা খেতে পারেন। ড্রাগন ফলের 
খোসা আপনাদের রূপচর্চা করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমরা যেমন বিভিন্ন রোগ থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারি এছাড়া এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং ক্যান্সার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে থাকে। তেমনি করে এর খোসার ও অনেক উপকারিতা আছে। এর খোসার উপকারিতা এখন আপনাদের জন্য আলোচনা করব। আপনারা প্রথমে ড্রাগন ফলটি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে কেটে এর থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিবেন। তারপরে 

এই খোশাগুলোকে ছোট ছোট করে কেটে আপনারা ফুটন্ত গরম পানিতে দিবেন এবং কয়েক মিনিট ফোটানোর পরে যখন এর কালার এর পরিবর্তন হবে অর্থাৎ পানির রং যখন লাল অথবা বাদামি হবে তখন এটাকে নামিয়ে আপনারা ছাকনি দিয়ে ছেকে খোসা এবং পানি আলাদা করে নিবেন। তারপরে আপনারা এই পানির সাথে লেবু এবং অল্প পরিমানে লবণ মিশিয়ে আপনারা জুস বানিয়ে খেতে পারেন। এই জুস আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটা ছাড়াও আপনারা ড্রাগন ফলের খোসা 

দিয়ে তৈরি করতে পারবেন সহজেই ফেসিয়াল প্যাক। কারণ ড্রাগন ফলের খোসাতে আছে ভিটামিন সি এবং জিংক আর এগুলো আমাদের মুখের ব্রণ দূর করার জন্য এবং ব্রণের দাগ, রোদে পোড়া কালো দাগ দূর করার জন্য আপনারা এই ড্রাগন ফলের খোসা ব্যবহার করতে পারেন। আপনাদের ত্বকের মুখের উজ্জ্বলতা দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করবে এই ড্রাগন ফলের খোসার ফেসপ্যাক। এজন্য আপনারা প্রথমে ড্রাগন ফলের খোসা ছাড়িয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে বেটে নিবেন এবং 

এর সাথে মিশাতে পারেন আপনারা কাঁচা দুধ, চালের গুড়া এবং বেসন। এই সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে আপনারা আপনাদের মুখে লাগাতে পারেন। এটা লাগানোর পরে আপনারা পাঁচ মিনিট রাখতে পারেন এবং তারপরে আপনারা ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন এতে করে আপনাদের ত্বক হবে নরম, কোমল, উজ্জ্বল এবং মসৃন। এছাড়া আপনারা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খেতে পারেন ড্রাগন ফলের খোসার জুস। কারণ ড্রাগন ফলের 

খোসায় আছে ফাইবার আর এ কারণে এটা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূর করতে আমাদের সাহায্য করবে। যাদের পেটে আলসার হয়েছে এর জন্য যারা ঠিকমত খেতে পারেনা তারা প্রতিদিন এক গ্লাস করে ড্রাগন ফলের খোসার জুস খেতে পারেন এতে করে পেটের আলসার ভালো হয়ে যাবে এবং পেটের হজম শক্তি বাড়বে। আপনাদের চুল লম্বা এবং চুল ঘন কালো করার জন্য আপনারা ড্রাগন ফলের খোসার পেস্ট বানিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন মাথায় ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনাদের চুল কালো

লম্বা এবং ঝরঝরে হবে। ড্রাগন ফলের খোসার সাথে আপনারা পেঁয়াজের খোসা তেজপাতা দুইটা এবং লং তিনটা এই সমস্ত উপকরণগুলো একটা পাত্রে নিয়ে ৩০ মিনিট জাল করুন এবং যখন এর পানির রং পরিবর্তন হয়ে হলুদ অথবা লাল হবে তখন এটা নামিয়ে নিন। এটা থেকে যে পানিটুকু আপনারা পাবেন সেই পানিটুকু আপনারা বোতলে রেখে প্রতিদিন ঘুমোতে যাওয়ার আগে মাথার চুলে ব্যবহার করতে পারেন এতে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। আপনাদের হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ড্রাগন ফলের খোসা অনেক উপকারী এই খোসা

দিয়ে আপনারা জুস তৈরি করে খেতে পারেন এতে করে আপনাদের হার্ট সতেজ এবং শক্তিশালী হবে। এ ছাড়া আপনারা আপনাদের কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রতিদিন খেতে পারেন এক গ্লাস পরিমাণ করে ড্রাগন ফলের খোসার জুস। চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করার জন্য আপনারা ড্রাগন ফলের খোসার জুস খেতে পারেন এতে আছে ও মেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যা আপনারদের চোখকে করবে স্বাস্থ্যজ্জল এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আপনারা ড্রাগন ফলের খোসার জুস খেতে পারেন কারণ এটা 

রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে শরীরের দুর্বলতা কেটে যাবে। এছাড়াও আপনারা ড্রাগন ফলের খোসার জুস খাওয়ার ফলে আপনাদের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন কারণ এতে আছে পটাশিয়াম এবং ওমেগা৩ ফ্যাটি এসিড। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে কারণ এতে আছে পটাশিয়াম, আইরন এবং প্রোটিন যা আপনাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার কাজে সাহায্য করবে। আপনাদের গীরার ব্যথা দূর হয়ে যাবে। কারণ খোসায় আছে ক্যালসিয়াম যা হাড় ও পেশি শক্তিশালী করবে  গিড়ার ব্যথা দূর করবে।

ড্রাগন ফলের ক্ষতিকর দিক

ড্রাগন ফল খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং নিরাপদ কিন্তু এটা আমাদের পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে তবে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারিতা পাব। আর যদি আমরা এটা বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলে তাহলে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটা আমাদের মানসিক ভাবে প্রভাব ফেলতে পারে নেতিবাচক। ড্রাগন ফলের কিছু ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে নিচে বলা হলো

  • ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে অনেকের এলার্জির সমস্যা হতে পারে। কারণ কিছু ড্রাগন ফলের প্রজাতির মধ্যে আছে এলার্জি বাড়ানোর উপাদান। যাদের জাদুর ফল খাবার ফলে এলার্জি সমস্যা হয় তাদের এটা না খাওয়াই ভালো।
  • অনেক মানুষের ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে অ্যালার্জেটিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে এর ফলে অনেকের চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং চোখ মুখ ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে।
  • ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি এর কারণে তবেবেশি পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে তাদের ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
  • মাত্রা অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও হজমে সমস্যা গ্যাসের সমস্যা এবং পেট ফোলাভাব ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। এজন্য পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
  • ড্রাগন ফল অনেক ওষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে এজন্য ডায়াবেটিস এবং যারা কিডনি রোগী এবং লিভারের সমস্যায় ভুগছেন এবং ঔষধ খাচ্ছেন তারা ড্রাগন ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন।
  • ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে প্রসাবের রং পরিবর্তন হতে পারে তবে এটা স্বাভাবিক এতে ভয়ের কোন কারণ নেই।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা
গর্ভাবস্থার ড্রাগন ফল খাওয়া অনেক উপকারী কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিকর উপাদান এবং অন্যান্য ভিটামিন যেমন আয়রন রয়েছে যা একজন গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য অনেক উপকারী। এটা গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভের সন্তানের সুরক্ষিত রাখতে এবং বিভিন্ন রোগ ও সংক্রমণ এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। এজন্য ড্রাগন ফল খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনারা একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন সঠিক সময়ে ও নিয়ম মেনে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করতেঃ একজন গর্ভবতী মায়ের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য বা রাখতে ভিটামিন সি অনেক দরকারি আর এর জন্য আপনারা ড্রাগন ফল খেতে পারেন। কারণ ড্রাগন ফলে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন সি আর এটা গর্ভবতী মায়ের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এবং তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য এছাড়াও এটা তাদের নানা রকমের সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সাহায্য করে থাকে।

পেট পরিষ্কার রাখতেঃ একজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় পেট পরিষ্কার বা পায়খানা ঠিকমতো ভাবে হওয়া অনেক দরকার আর এজন্য তাদের প্রয়োজন হবে ফাইবারের। আর ড্রাগন ফলে আছে ফাইবার এটা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য তার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে সরবরাহ করে থাকে। এজন্য গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এর ফলে পেট পরিষ্কার থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় আবার কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা ও অনেক কম থাকে।

শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিতেঃ শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি এবং তার হাড় শক্ত ও মজবুত করার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম আর এই দুইটা উপাদান পাওয়া যায় ড্রাগন ফলে। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মা যদি ড্রাগন ফল খায় পরিমিত পরিমাণে তাহলে এই উপাদানগুলো পাওয়া সম্ভব এবং এতে করে তার গর্ভের শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি এবং হাড় শক্ত ও মজবুত হবে। গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভের সন্তানের শারীরিক বৃদ্ধির জন্য ও হাড় শক্ত মজবুত করার জন্য ড্রাগন ফল খাওয়া দরকার।

গর্ভবতী মায়ের ত্বক ভালো রাখতেঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এটা গর্ভবতী মায়ের ত্বক ভাল রাখার জন্য এবং বয়সের ছাপ কমানোর জন্য ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য সাহায্য করে থাকে। এজন্য গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়া দরকার। এছাড়াও ড্রাগন ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি। আর এটা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলার শরীর হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে থাকে। শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ করে থাকে।

চর্বির সমৃদ্ধ উৎসঃ ড্রাগন ফলে চর্বি আছে আর এই ভালো চর্বি গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে উচ্চশক্তির মাত্রা বজায় রাখার কাজে এবং ভ্রুনের মস্তিষ্কের বিকাশের কাজে সাহায্য করে থাকে।

সংক্রমণ থেকে রক্ষা করেঃ ড্রাগন ফল বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে থাকে এবং কোষের পুনর্জন্মএ সহায়তা করে থাকে।

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তিঃড্রাগন ফলে আছে ফাইবার এবং এই ফাইবার সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে একজন গর্ভবতী মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিঃ ড্রাগন ফলের আয়রন আমাদের রক্তের কোষের অক্সিজেন বহন করার কাজের ক্ষমতা উন্নত করার কাজে সাহায্য যার ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় আর এটা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়।

জন্মগত ত্রুটি রোধ করতেঃ ড্রাগন ফলে রয়েছে ভিটামিন বি ও ফোলেট আর এটা নবজাতকের জন্মগত ত্রুটি রোধ করার কাজে সাহায্য করে থাকে এবং গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মহিলার শক্তি সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও এতে থাকা ক্যালসিয়াম ভ্রুনের হাড়ের বিকাশের জন্য প্রয়োজন এবং এটা ক্যান্সার প্রতিরোধ করার কাজে সাহায্য করে থাকে। এজন্য কোন গর্ভবতী মহিলা যদি গর্ব অবস্থায় ড্রাগন ফল খায় তাহলে তার শিশুর জন্মগত ত্রুটি আর থাকবে না।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেঃ গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ড্রাগন ফল ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ার জন্য এটা খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এ কারণে গর্ভবতী মায়ের গর্ভকালীন সময়ে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ড্রাগন ফল খেতে পারেন।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ভিটামিন সি সমৃদ্ধ হচ্ছে ড্রাগন ফল এটা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কাজ করে। ক্যান্সারের জীবাণু নষ্ট করার উপাদান আছে ড্রাগন ফলে এজন্য নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যায়।

হার্টের ঝুঁকি কমায়ঃ ড্রাগন ফল হচ্ছে ওমেগা থ্রি এবং ওমেগা নাইন ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ তাই ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আমাদের হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এছাড়াও কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এর ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণঃ গর্ভকালীন সময়ে ক্যালসিয়ামের অভাব দেখা যায় গর্ভবতী মহিলাদের এ সময় এজন্য তাদের হাড়ের ব্যথা দাঁতের ব্যথা এবং অন্যান্য অনেক ব্যথা ও সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য তারা এ সময় ড্রাগন ফল খেতে পারেন ড্রাগন ফলে আছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এটা গর্ভবতী মহিলাদের হাড় এবং পেশী মজবুত রাখতে সাহায্য করে এছাড়া ভ্রুণের পেশী এবং হাড় মজবুত করার কাজে সাহায্য করে থাকে।

রক্তস্বল্পতা দূর করতেঃ অনেক গর্ভবতী মহিলারা গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্প তাই ভোগেন আর এজন্য তারা এ সময়ে ড্রাগন ফল খেতে পারেন কারণ এতে আছে আইরন এটা লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলাদের রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য এবং অ্যানিমিয়া রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ড্রাগন ফল খেতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতেঃ গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মহিলাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হয় এ সময় যদি তারা ড্রাগন ফল খায় তাহলে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি হবে কারণ এতে আছে ভিটামিন সি। ঠান্ডা সর্দি কাশি ইত্যাদি থেকে রক্ষা করতে পারে।

মানসিক চাপ কমায়ঃ শারীরিক বিভিন্ন অসুস্থতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার জন্য গর্ভকালীন সময়ে মহিলারা মানসিক সমস্যায় ভুগেন। এজন্য গর্ভকালীন সময়ে যদি তারা ড্রাগন ফল খায় তাহলে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি এর মাধ্যমে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং মানসিক চাপ কমবে ফলে তাদের মন মেজাজ ভালো এবং প্রফুল্ল থাকবে।

ড্রাগন ফল খেলে কি পায়খানা লাল বা কালো হয়

ড্রাগন ফল খেলে পায়খানা লাল বা কালো হয় না অন্য কোন খাবারের কারণে আপনার পায়খানা কালো হতে পারে বা আপনি যদি কোন রঞ্জক পদার্থ বা রঞ্জক খাবার অথবা পানীয় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার পায়খানার রঙের পরিবর্তন হতে পারে এক্ষেত্রে আপনার পায়খানা লাল হতে পারে। কিন্তু ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে আপনার পায়খানার রঙের কোন পরিবর্তন হবে না বা আপনার পায়খানা লাল বা কালো হবে না। কারণ ড্রাগন ফলের রং সাদা, গোলাপি বা লাল হতে পারে কিন্তু ড্রাগন ফলে কোন রঞ্জক পদার্থ থাকে না যার জন্য আপনার 

পায়খানা রঙেরও কোন পরিবর্তন হবে না। আপনার পায়খানা লাল অথবা কালো হওয়ার দুটি কারণ থাকতে পারে। একটি হচ্ছে রক্তপাত আরেকটি হচ্ছে রঞ্জক পদার্থ। আপনারা যদি দেখেন আপনাদের পায়খানার রং লাল তাহলে এটি আপনাদের গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে এক্ষেত্রে আপনারা একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন। আবার আপনারা যদি কোন রঞ্জক পদার্থ জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খান তাহলে আপনাদের পায়খানার রঙের পরিবর্তন হতে পারে। তবে ড্রাগন ফল খেলে পায়খানা লাল বা কালো হয় না।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ

ড্রাগন ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা ও ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ
ড্রাগন ফল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং এতে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান আছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে আমাদেরকে। এছাড়াও আরো নানা উপকারিতা আছে ড্রাগন ফল খাওয়ার। এটা গর্ভবতী মা এবং ছোট বড় সকলের জন্য অনেক উপকার করে। এতে আছে ফাইবার, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। এই ড্রাগন ফল মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ।

ড্রাগন ফলের উপকারিতা হচ্ছে

হজমে সাহায্য করেঃ প্রতিদিন নিয়মিত পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা দূর হবে। ড্রাগন ফলে থাকা আঁশ এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে এবং যার ফলে আপনাদের পরিপাক প্রক্রিয়া ঠিকমতো ভালোভাবে কাজ করবে এই ফল খাওয়ার ফলে আপনাদের খাবারহজমের অনেক উপকার হবে অর্থাৎ হজম প্রক্রিয়া সহজ হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ ড্রাগন ফলের মধ্যে আছে সকল রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা। এর ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটা আমাদের বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করে এজন্য আপনারা নিয়ম খেলে আপনাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারবেন।

কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেঃ একটা পরিপক্ক ড্রাগন ফলে আছে প্রায় সাত গ্রাম ফাইবার যা প্রতিদিনের সুপারিশকৃত পরিমাণের চার ভাগের প্রায় এক ভাগ পরিমাণ। এটা আমাদের অন্ত্রের বর্জ্য পদার্থগুলো দূর করনে সাহায্য করে এবং যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা এই ফল খেতে পারেন এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

বয়সের ছাপ দূর করতেঃ ড্রাগন ফল বয়সের ছাপ দূর করতে এবং আপনাদের ত্বককে নরম কোমল দৃঢ় উজ্জ্বল মাখার কাজে সাহায্য করে এবং এর জন্য প্রয়োজন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এটা ড্রাগন ফলে আছে এছাড়াও আছে ভিটামিন সি যার কারণে আপনাদের বয়সের ছাপ দূর হবে। ভিটামিন সি ভাল পরিমাণে থাকার জন্য ড্রাগন ফলকে বলা হয় এন্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস।

রক্ত চলাচল সঠিকভাবে বজায় রাখতেঃ সারা বিশ্বের একটি পরিচিত ফল এই ড্রাগন ফল এবং এতে আছে আয়রন। সারা বিশ্বের মানুষের আয়রনের ঘাটতি দেখা যায় এটা নারীদের মধ্যে এই সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। ড্রাগন ফল হচ্ছে আইরন সমৃদ্ধ ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১.৯ মিলিগ্রাম আয়রন আছে যা আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনের মাত্রার দশ শতাংশের বেশি। হিমোগ্লোবিন উৎপাদন করার জন্য আয়রন অনেক প্রয়োজন যা আমাদের শরীরের টিস্যুতে অক্সিজেন পৌঁছাতে এটা লোহিত রক্তকণিকাকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে থাকে এবং রক্ত চলাচল সঠিকভাবে হয়।

চুল পড়া রোধ করেঃ আয়রনের অভাব থাকলে চুল পড়া সমস্যা হয় আর এই আয়রনের ঘাটতি জনিত কারণে অন্যান্য উপসর্গগুলো প্রশমিত হতে পারে যেমন অত্যাধিক ক্লান্তি ত্বকের বিবর্ণতা মাথাব্যথা এবং হাতে পায়ে ঠান্ডা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি সমস্যা। আর নিয়মিত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে এই সমস্যাগুলো থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়া যায়। আপনাদের চুল লম্বা ঘন কালো করার জন্য ড্রাগন ফল এর খোসার পেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ আমাদের খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমানোর জন্য এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধির জন্য আমরা ড্রাগন ফল খেতে পারি এবং এই ড্রাগন ফল আমাদের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। একটি রিসার্চ থেকে দেখা গেছে যে যারা প্রতিদিন একটি মাত্র ড্রাগন ফল খেয়েছে তাদের কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমেছে ৪.৪% আর যারা প্রতিদিন দুইটি ড্রাগন ফল খেয়েছে তাদের কমেছে নয় দশমিক চার শতাংশ।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখতেঃ খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে আমাদের হৃদযন্ত্র ভালো রাখে এই ড্রাগন ফলটি। ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। 

ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ ড্রাগন ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এটি ওজন বজায় রাখতে বা ওজন কমাতে আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এর ফলে আছে ৮০ শতাংশ পানি এছাড়াও আছে প্রচুর পরিমাণে ভাইবার যেগুলো আমাদের অন্ত্রের গতিবিধিকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ ড্রাগন ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফেনোলিক এসিড,ফ্ল্যাভোনয়েড এবং বিটাসায়ানিন সমৃদ্ধ যেগুলো আমাদেরকে ফ্রি ‍র‍্যাডিকেল দ্বারা ক্ষতি প্রতিরোধ করার কাজে সাহায্য করে থাকে। এই ফ্রি র‍্যাডিকেল হচ্ছে এমন একটি পদার্থ যেটা ক্যান্সার ও অকাল বার্ধক্য রোগ সৃষ্টি করতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে ভিটামিন সি যেটা আমাদের অনেকদিনের দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেমন ডায়াবেটিস, পারকিনসন্স ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। এটা আমাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়ঃ নিয়মিত যদি আপনাদের খাদ্য তালিকায় ড্রাগন ফল থাকে তাহলে আপনাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা সহজেই মুক্ত করা যাবে। বেশি পরিমাণে আঁশ থাকার জন্য ড্রাগন ফল খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল হয়। বয়স বাড়ার সাথে ক্যান্সার এবং ডাইবেটিস প্রতিরোধ করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে এবং এটা থেকে মুক্তির জন্য আপনারা ড্রাগন ফল খেতে পারেন। গর্ভবতী মায়েরাও এই সুস্বাদু দারুণ উপকারী ফলটি খেতে পারেন।

ত্বকের জন্য উপকারীঃ ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বকের সতেজতা বজায় রাখার কাজে এবং বলি রেখা দূর করার কাজে সাহায্য করে থাকে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

হাড় এবং দাঁতের জন্য ভালোঃ ড্রাগন ফলের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হার এবং দাঁতের জন্য ভালোই এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আমাদের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতেঃ ড্রাগন ফলে থাকা বিটা ক্যারোটিন আমাদের দৃষ্টি শক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে এবং ড্রাগন ফলে থাকা ভিটামিন এ আমাদের রাতকানা রোগ এবং চোখের ছানি পড়ার রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।

এতক্ষণ আমরা উপরের আলোচনা থেকে ড্রাগন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি এবার আমরা জানবো ড্রাগন ফলের অপকারিতা সম্পর্কে। কারণ সকল ফলের এবং খাবারের যেমন উপকার আছে তেমনি এটা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের জন্য সেটা ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য আমাদের পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত ড্রাগন ফলের অপকারিতা হচ্ছে

  • বেশি পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। যাদের অ্যালার্জি সমস্যা হবে তারা এটা খাওয়া থেকে বের হতে থাকবেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
  • মাত্রা অতিরিক্ত ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হতে পারে আবার বেশি পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে নিম্ন রক্তচাপ এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য ড্রাগন ফল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • এছাড়া গর্ভবতী মা এবং স্তন দানকারী মায়ের ড্রাগন ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন।
  • ড্রাগন ফল কিছু ওষুধের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে এজন্য যারা কিডনি এবং লিভারের সমস্যায় ভুগছেন এবং যাদের ডায়াবেটিসের ঔষধ খাচ্ছেন তারা অবশ্যই এটা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • বেশি পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে পেটে ব্যথা পেট ফুলে যাওয়া এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে ড্রাগন ফল খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ

আমাদের দেহে সঠিক পরিমাণ এর পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রয়োজন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় নানার ধরনের শাকসবজি এবং ফল রাখা। আর এরকম একটি ফল হচ্ছে ড্রাগন ফল। গ্রীষ্মমন্ডলীয় এই ফল এ আছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন। আমাদের দেশে দুই ধরনের ড্রাগন ফল পাওয়া যায় একটি হচ্ছে সাদা এবং অন্যটি হচ্ছে লাল জাতের। তবে ড্রাগন ফলের ধরন ও পরিপক্ক তার ওপর এর পুষ্টির মান পরিবর্তিত হতে দেখা যায় বা পারে। আনুমানিক ১০০ গ্রাম বা ৩.৫ আউন্স ড্রাগন ফলের মধ্যে যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে তা নিচে দেওয়া হল।

প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ এর সাদা ড্রাগন ফলে আছে

  • কার্বোহাইড্রেট-৯-১৪ গ্রাম
  • ক্যালরি-৬০ গ্রাম
  • চিনি-৮-১২ গ্রাম
  • ডায়াটারি ফাইবার-১-২ গ্রাম
  • প্রোটিন-১-২ গ্রাম
  • চর্বি-১ গ্রামের কম।
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ এর লাল ড্রাগন ফলে আছে

  • ক্যালরি-৫০-৬০ গ্রাম
  • কার্বোহাইড্রেট-৯-১৪ গ্রাম
  • চিনি-৮-১২ গ্রাম
  • ডায়েটারি ফাইবার-১-২ গ্রাম
  • প্রোটিন-১-২ গ্রাম
  • চর্বি-১ গ্রামের কম।
এ ছাড়া ড্রাগন ফল হচ্ছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), ভিটামিন বি ২ (রিবোফ্লাভিন) ও আয়রন ও অনেক ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের ভালো উৎস। এগুলো বাদেও আছে ভিটামিন বি ৩, ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, হাইটোনিউট্রিয়েন্টস যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড ও পলিফেনল, ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি উপাদান আছে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো তার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছে ড্রাগন ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম সঠিক সময় ও গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা এই সকল বিষয়ে আশা করি ভালোভাবে জানতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন। আপনাদের যদি এই পোস্টটি পড়ে ভালো লাগে তাহলে আপনারা অবশ্যই এই পোস্টটি আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন এবং নতুন নতুন তথ্য পেতে সঙ্গে থাকুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url