সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা জানুন
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা অনেকেই হয়তো আগে সকালে
খালি পেটে
কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা এবং বাদাম খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় এ
সকল বিষয়ে জানার জন্য অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু খুঁজে পাননি।
যারা খুঁজে পাননি তারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন এজন্য শেষ
পর্যন্ত পড়ুন।
আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
এবং বাদাম খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায় এগুলো সহ প্রতিদিন কয়টা
কাঠবাদাম খাওয়া উচিত কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক কাঠবাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
এবং গর্ভাবস্থায় কাঠবাদাম খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি অনেকগুলো বিষয়ে অনেক সঠিক তথ্য
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। যেগুলো আপনারা পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন এজন্য
আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করবো শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
আমরা সকলেই কাঠবাদাম খেতে পছন্দ করে থাকি কাঠ বাদামের মধ্যে আছে অনেক পুষ্টিকর
উপাদান এবং খনিজ ও ভিটামিন উপাদান। কাঠ বাদামের মধ্যে আছে প্রোটিন, ফাইবার,
মিনারেলস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, জিংক এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপাদান। এগুলো আমাদের স্বাস্থ্য কে ভালো রাখার জন্য
এবং বিভিন্ন অসুখের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে
অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় তবে এটা ভিজিয়ে খেলে আরো উপকারিতা বেশি পাওয়া যাবে।
রাতে
সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখার পরে সকালে খালি পেটে এটা খেলে অনেক উপকার পাওয়া
যায় এর ফলে শরীরের দুর্বলতা কাটে, শরীরে শক্তি পাওয়া যায়, ওজন কমে যায়,
স্মৃতিশক্তি বাড়ে, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, হজমের
উন্নতি ঘটে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ইত্যাদি আরো নানা উপকারিতা পাওয়া
যায়।বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, হার্টের জন্য ভালো, উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, ক্যান্সার প্রতিরোধ করা,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ে, ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।
প্রতিদিন কয়টা কাঠবাদাম খাওয়া উচিত
বিভিন্ন পুষ্টিকর ডাই ফুডের মধ্যে হচ্ছে বাদাম অন্যতম এবং এটার মধ্যে সবচেয়ে
জনপ্রিয় এবং পুষ্টিকর হচ্ছে কাঠবাদাম। কাঠবাদাম আপনারা নো খাবার খাওয়ার আগে
সকালে পানিতে ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খেতে পারেন এবং এটা অনেকেই খেতে পছন্দ করে
থাকে। কারণ এ কাঠবাদামে আছে অনেক পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন
ই,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, তেল,
খনিজ,মনোস্যাকারাইড এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ইত্যাদি সকল উপাদান। আর এই
সকল
উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং এগুলো আমাদের বিভিন্ন রোগ
থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে এজন্য আপনারা প্রতিনিয়ত পরিমান মত কাঠবাদাম
খেতে পারেন। কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে আপনারা আপনাদের হাড় ভালো রাখতে পারবেন মজবুত
রাখতে পারবেন। আপনাদের হৃদরোগের ঝুঁকি থাকবে না আপনাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে
থাকবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করবে আপনাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে কারণ এতে আছে
ফাইবার। এছাড়া
এটা আপনাদের কষ্ট কাঠিন্য দূর করবে দৃষ্টি শক্তির জন্য অনেক উপকারী এছাড়া ত্বকের
জন্য ভালো এটা আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এটা আমাদের
ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
আছে ভিটামিন এ এবং ফ্লাভোনয়েড এগুলো আমাদের স্তন ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য
করে থাকে। এটা গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক উপকারী এবং তার বাচ্চার জন্য অনেক
উপকার করে থাকে এই কাঠবাদাম। আপনারা
কাঠবাদাম প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে খেতে পারবেন কিন্তু বেশি পরিমাণে খাবার ফলে
আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য সেটা ক্ষতিকর হতে পারে। গবেষণায় থেকে দেখা গেছে যে
বেশি পরিমাণে চিনা বাদাম খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য সেটা অনেক ক্ষতিকর।
অপরদিকে ডায়েট বিশেষজ্ঞরা বলছেন আপনারা প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ টি কাঠ বাদাম খেতে
পারবেন এটা আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হবে। তবে কাঠবাদাম আপনারা রাত্রে
ভিজিয়ে রেখে সকালে সেটা খেতে পারেন এভাবে খাওয়ার
ফলে সেটা আমাদের শরীরকে সকল ভালো পুষ্টিকর উপাদান দিতে সাহায্য করে থাকবে।
প্রতিদিন আমাদের শরীরে যতটুকু পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এর প্রয়োজন হয় সেটা
শুধুমাত্র আমরা কাঠবাদাম খেলেই পূরণ করতে পারব বা এটা খাওয়ার ফলে আমাদের
ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পুরনকরা যেতে পারে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়িয়ে তোলার জন্য দিন ১৪ টা পর্যন্ত কাঠ বাদাম খেতে পারব।
কাঠ বাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে এই কাঠবাদামের জরি মেলা ভার কারণ এটা আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং এটা গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য অনেক উপকার করে
থাকে। এটা শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এজন্য অনেকেই
তাদের খাদ্য তালিকায় সুস্বাস্থ্যের জন্য কাঠবাদাম রাখেন। এছাড়াও এটা আমাদের ওজন
কমাতে সাহায্য করে থাকে। তবে এটা অনেকেই সঠিকভাবে খেতে জানে না আর এটা সঠিকভাবে
না খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে
খেয়ে ফেলে এবং এটা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কাঠ বাদামে রয়েছে
ভিটামিন ই, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, জিংক, ভিটামিন
বি, ফ্যাট, প্রোটিন এবং ফাইবার ইত্যাদি সকল পুষ্টিগুণ। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে,
বাদাম হজম করা কঠিন। বাদামে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ফাইবার ও ফ্যাট এজন্য
বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর গরম হয়ে ওঠে। এ জন্য কাঠবাদাম ভিজিয়ে খাওয়া
ভালো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। অনেকেই সারারাত পানিতে ভিজিয়ে
রাখার পরে সকালে খালি পেটে খেয়ে থাকেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। ভিজিয়ে
রাখা কাঠ বাদাম খেতে অনেকেই পছন্দ করে থাকেন। আপনারা যখনই খাবেন তখনই ৬ থেকে ৮
ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে খাবেন এভাবে খাওয়ার ফলে তাপ কমে যায় অনেকটা।
কাঠবাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে বলা হলো
- ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে সহজেই পুষ্টিগুণ নিতে সক্ষম হয়ে থাকে আমাদের শরীর। সেই সাথে ফাইটিক এসিড অপসারিত হয়।
- ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে হজমের কোন সমস্যা হয় না। এটা আমাদের পেটে গিয়ে খুব সহজেই ভেঙে যায় এবং হজমের সাহায্যকারী উৎসেচকগুলো ভালো কাজ করতে পারে সহজেই।
- ভেজানো কাঠবাদাম থেকে আপনাদের শরীর সহজেই শুষে নিতে পারবে প্রোটিন, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ই ইত্যাদি পুষ্টিগুণ।
- কাঠবাদাম ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে আপনাদের মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং আপনাদের স্মৃতিশক্তি বাড়বে।
- আপনারা আপনাদের উজ্জ্বল ত্বকের জন্য এই কাঠবাদাম ভিজিয়ে খেতে পারেন এমনটা মনে করেছেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
- ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কর্ম ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আপনাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে এটা কারণ ভিজিয়ে রাখলে কাঠবাদাম থেকে লাইপেস নামক উপাদান নির্গত হয়ে থাকে। আর এটা আমাদের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে থাকে আর যার ফলে আমাদের শরীরে মেদ বৃদ্ধি পায় না।
- ভিজিয়ে রাখা কাঠ বাদাম খাওয়ার ফলে ফাইটিক এসিডের পরিমাণ কমে কারণ বাদাম ভিজিয়ে ফলে এটা থেকে ফাইটিক অ্যাসিড বের হয়ে যায়। ফলে এটার পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়।
- তবে অনেকেরই ভেজানো কাঠবাদাম খেতে অপছন্দ হলে তারা শুকনো বাদামই গুড়া করে খেতে পারবেন। কাঠবাদামের রয়েছে আশি শতাংশ চর্বি আর এই চর্বি হজম হতে অনেক সময় লেগে থাকে। এজন্য বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে আপনাদের পেট ফাঁপা অথবা ডায়রিয়া হতে পারে। আপনারা প্রতিদিন পাঁচ থেকে দশটা করে কাঠ বাদাম খেতে পারেন।
সকালে খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা
আমরা সকলে কাঠবাদাম খেতে পছন্দ করে থাকি এটা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং এটা আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এটা ড্রাই ফুডস। এই কাঠবাদামে রয়েছে নানা রকমের
পুষ্টি উপাদান যেমন আয়রন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক,
কপার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ই ইত্যাদি সকল পুষ্টি
উপাদান। আর এই পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে
থাকে এবং অনেক রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে। এর ফলে
আমরা আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারি। কিন্তু এটা আমাদের
খেতে হবে নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে তবে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার করবে।
কাঠ বাদাম অনেকেই শুকনো আবার অনেকেই ভেজানো খেতে পছন্দ করে থাকেন। তবে ভেজানো
কাঠবাদাম খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। আপনারা প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ টা করে কাঠ
বাদাম খেতে পারেন। এজন্য আপনারা যখন খাবেন তখনই ৬ থেকে ৮ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে
রেখে তারপরে এটা খাবেন
অথবা রাত্রে পানিতে এর উপরের খোসা ছাড়িয়ে ভিজিয়ে রাখার পরে সকালে সেটা খালি
পেটে খেতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। সকালে
খালি পেটে
কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা বলা হল নিচে
শরীরের দুর্বলতা কমাতেঃ আপনারা আপনাদের শরীরের দুর্বলতা কাটানোর জন্য
সকালে খালি পেটে কাঠবাদাম খেতে পারেন এতে করে আপনারা সারাদিন সতেজ থাকতে পারবেন।
কাঠবাদামে থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান আমাদের সাহায্য করে থাকে। পানিতে ভিজিয়ে
রাখার ফলে এর পুষ্টিগুণ আরো বৃদ্ধি পায় এছাড়া এটা খেতে অনেক ভালো লাগে। এই
কাঠবাদাম আমাদের শরীরের দুর্বলতা কমাতে এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
থাকে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ সকালে খালি পেটে ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এটা
আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে এছাড়াও এটা আমাদের প্রয়োজনীয়
এনজাইম নিঃসরণ এর কাজে সাহায্য করে থাকে।
ওজন কমাতেঃ সকালে খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এটা আমাদের ওজন কমাতে
সাহায্য করে থাকে কারণ এতে থাকা মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট আমাদের খিদা কমায় এবং
আমাদের পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে থাকে।
হৃদয় ভালো রাখতেঃ আমাদের হৃদয় ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে কাঠবাদাম
কারণ এটা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল অর্থাৎ এটা আমাদের লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে।
শরীরের ফোলাভাব কমাতেঃ ভেজানো কাঠ বাদামে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট আর এটা
আমাদের শরীরের ফোলা ভাব কমাতে এবং অকালপক্কতা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
টিউমার হতে দেয় নাঃ কাঠ বাদামে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড আমাদের শরীরে টিউমার
হতে দেয় না এটা টিউমার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আপনারা যদি ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ চান তাহলে খেতে
পারেন ভেজানো কাঠবাদাম কারণ এতে উপস্থিত আছে ভিটামিন বি ১৭। এটা ক্যান্সার কোষ
প্রতিহত করে থাকে এবং আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে মরণঘাতী ক্যান্সার রোগ থেকে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ আপনারা যদি প্রতিদিন নিয়মিত সকালে খালি পেটে
ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খেতে পারেন তাহলে এটা আপনাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজে সাহায্য করে থাকবে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্যঃ গর্ভবতী মহিলারা নিয়মিত ভেজানো কাঠবাদাম খেলে
বাদামে থাকা ফলিক এসিড জন্মের সময় বাচ্চার খুঁত দূর করে থাকে এজন্য স্ত্রী রোগ
বিশেষজ্ঞরা গর্ভবতী মহিলাদের নিয়মিত নিয়ম করে ভেজানো কাঠবাদাম খাওয়ার পরামর্শ
দেন।
হজমে সাহায্য করেঃ ভেজানো কাঠ বাদাম নিয়মিত খাওয়ার ফলে এটা আমাদের হজমে
সাহায্য করে। এছাড়াও ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের তাপ কম
হয়। এছাড়াও ভেজানো কাঠবাদাম সকালে খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর পুষ্টিগুণ নিতে
সক্ষম হয় সহজে এবং বদহজমের কোন সমস্যা হয় না।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃমস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে ওঠে ভেজানো কাঠবাদাম সকালে
খাওয়ার ফলে এবং এবং এটা খাওয়ার ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
ত্বকের জন্য ভালোঃ প্রতিদিন আপনারা যদি নিয়ম করে ভিজিয়ে রাখা কাঠবাদাম
খান তাহলে এটা আপনাদের ত্বকের জন্য ভালো আপনাদের ত্বক উজ্জ্বল রাখতে তারুণ্য ধরে
রাখতে বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেঃ আপনারা আপনাদের পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে
প্রতিদিন নিয়ম করে ভেজানো কাঠবাদাম সকালে খেতে পারেন এতে করে আপনাদের হজম
সংক্রান্ত সমস্যা দূর হবে কারণ এতে আছে ডায়েটারি ফাইবার। কাঠবাদামের মধ্যে আছে
মাইক্রোনিউন্ট্রিয়েন্টস উপাদান আর এটা আমাদের পেটের গোলমাল দূরে রাখার কাজে
সাহায্য করে থাকে এছাড়াও এই উপাদানটি আমাদের পেটে অবস্থিত নানা সংক্রমণের সাথে
লড়াই করে থাকে।
বিপাকক্রিয়া চাঙ্গা করতেঃ কাঠবাদামে আছে ফাইটিক অ্যাসিড নামের উপাদান আর
এটা আমাদের পেট ফাঁপা অম্বল এবং গ্যাস থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে। এছাড়াও
আমাদের হজম শক্তি কোনো কারণে দুর্বল হয়ে পড়লে এই এসিড আমাদের বিপাকক্রিয়া
চাঙ্গা করে তুলতে সাহায্য করে থাকে।
টক্সিন দূর করতেঃ কাঠবাদামের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এটা
আমাদের দেহ থেকে টক্সিন জাতীয় পদার্থগুলো বের করতে সাহায্য করে থাকে প্রদাহের
ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এটা আমাদের সর্দি কাশি জ্বরের হাত থেকে
রক্ষা করে থাকে। এটা আমাদের মন ভালো রাখতে এবং আমাদের অবসাদ এর সমস্যা
নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজে সাহায্য করে থাকে।ট্রিপটোফ্যান নামের পদার্থটি আমাদের
শরীরে যায় এই কাঠবাদামের মাধ্যমেই।
কাঠ বাদামের ক্ষতিকর দিক
কাঠবাদাম নানা পুষ্টিগুনে ভরপুর এজন্য এটা আমাদের খাবারের সময় ঠিকমতো পরিমাণ মতো
নিয়মিত খেতে হবে বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি
হতে পারে। আমাদের প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ টাকা কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত এর বেশি খেলে
এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া যে কোনো খাবারই আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হতে পারে যদি আমরা সেটা বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলি এর জন্য
আমাদের যে কোন খাবার খাওয়ার সময়
পরিমাণ মতো খেতে হবে। কাঠবাদাম ও আমাদের খেতে হবে পরিমাণ মতো এটার যেমন অনেক
উপকারিতা আছে তেমনি অপকারিতা আছে এজন্য আমাদের পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। কাঠ
বাদামের ক্ষতিকর দিকগুলো আলোচনা করা হলো নিচে
- কাঠবাদাম ভিটামিন ই এর ভালো উৎস এজন্য এটা যদি আপনারা বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলেন যেমন একদিনে আপনারা যদি আড়াই গ্রামের বেশি খেয়ে ফেলেন তাহলে এটা আপনাদের শরীরে ভিটামিন ই এর প্রভাবে আপনাদের পেটের ভেতরে এটা বিষক্রিয়া এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর ফলে আপনাদের বদহজম, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা ও পেট ফুলে যাওয়ার মত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- এটা বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে আপনাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কমে গিয়ে আপনাদের শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও আপনাদের শরীরের যেকোনো রকমের ক্ষত সারাতে দেরি হতে পারে এর ফলে আপনারা সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন নানা রকম সংক্রামক রোগে।
- কাঠ বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি এবং ফ্যাট এজন্য আপনারা প্রতিদিন বেশি পরিমাণে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এটা আপনাদের ওজন বাড়াতে পারে।
- কাঠবাদাম অক্সালেট তৈরি করে থাকে প্রচুর পরিমাণে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য জরুরী একটি উপাদান এটা আমাদের প্যাথোজেন সহ নানা রোগের সাথে লড়াই করে থাকে। কিন্তু আমরা যদি বেশি পরিমাণে কাঠবাদাম খায় তাহলে এই অক্সালেট আমাদের কিডনিতে জমে পড়ে সেটা পাথরে রূপ নিতে পারে। এর ফলে আমাদের পেটে ব্যথা হয় ।
- কাঠবাদামে থাকা ফাইটিক অ্যাসিড আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং জিংক উপাদানগুলো শোষিত হতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু আমাদের শরীরে যদি ফাইটিক এসিড বেশি হয়ে যায় তাহলে এটা ওই মিনারেল গুলো জটিল পদার্থে পরিণত হতে থাকে আর তখন এগুলো আমাদের হজমে গোলমাল ঘটাতে সাহায্য করে।
- অনেকের বেশি পরিমাণে কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। এবং অনেকের এই কাঠবাদাম বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে এনজাইমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কাঠ বাদাম এলার্জির উপাদান হতে দেখা যায় এজন্য কাঠবাদাম খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে তারা কাঠবাদাম না খাওয়াই ভালো।
- কাঠবাদামের রয়েছে প্রচুর ফাইবার আর এটা বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে। আর এক্ষেত্রে আপনাদের বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
- কাঠ বাদাম অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে টক্সিন জমতে থাকে কারণ কাঠবাদামে আছে হাইড্রোকার্বন অ্যাসিড। আর এই হাইড্রোকার্বন অ্যাসিড আমাদের শরীরে বেশি জমা হলে শ্বাসকষ্ট, নার্ভের সমস্যা এমনকি মৃত্যু হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম খাওয়ার নিয়ম
গর্ভবতী মহিলারা
গর্ভাবস্থায়
কাঠবাদাম খেতে পারেন এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ কারণ কাঠবাদাম খাওয়ার মধ্যে অনেক
পুষ্টিগুণের চাহিদা মেটানো সম্ভব। গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মহিলা কতটুকু
পরিমাণে কাঠ বাদাম খেতে পারবেন এবং কিভাবে খাবেন এ বিষয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকে।
আজকে আপনারা আমার এই পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিন এ বিষয়ে। গর্ভাবস্থায় কাঠবাদাম
খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে প্রতিদিন গর্ভবতী মহিলা ২৮ গ্রাম পরিমাণের কাঠবাদাম খেতে
পারবেন অথবা ১ আউন্স পরিমাণে।
এই পরিমাণটা যে কোন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কিন্তু এর চাইতে পরিমাণে বেশি খেলে কাঠ
বাদামের উপকারের চাইতে অপকারে ভুগতে হতে পারে। কাঠ বাদামে অনেক পুষ্টি গুনাগুন
থাকে আর এগুলো একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা
মেটাতে সাহায্য করে থাকে এর পাশাপাশি তার সন্তানের জন্য অনেক উপকার করে থাকে।
গর্ভের সন্তান সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য কাঠ বাদামের মধ্যে থাকা ফলিক এসিড ভালো
পরিমাণে সাহায্য করে থাকে এছাড়াও এটা
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলার ওজন এবং সন্তান জন্মের পরে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির
জন্যেও এটা কাজ করে থাকে। গর্ভবতী মহিলার রক্ত নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট ভূমিকা পালন
করে এ ছাড়া আয়রনের অভাবে রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে থাকে কাঠবাদাম। তবে এটা
খাওয়ার পরও ভালোভাবে পরিষ্কার করে এটা খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় কাঠ বাদাম আপনারা
পানিতে ভিজিয়ে খেতে পারেন এটা খাওয়া সবচেয়ে ভালো। গর্ভাবস্থায় এগুলো পানিতে
ভিজিয়ে রেখে তারপরে এর খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া ভালো। কারণ এর
খোসার মধ্যে রয়েছে ট্যানিন আর এটা এমন একটি যৌগ যা কাঠ বাদামের মধ্যে থাকা
পুষ্টিকর উপাদান গুলোকে আবদ্ধ করে রাখে। আর খোসা ছাড়ালে এর মধ্যে পুষ্টিকর
উপাদান গুলো উন্মুক্ত হয় এবং এটা এভাবে খোসা ছাড়িয়ে পানিতে ভিজিয়ে রেখে
খাওয়ার ফলে আমাদের হজমের জন্য অনেক উপকার হয় এবং হজমের উৎসেচক গুলো মুক্ত হয়।
কাঠবাদাম এর মধ্যে থাকা ম্যাঙ্গানিজ মা এবং শিশুর জন্য দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণের
কাজে সাহায্য করে থাকে। এটা আমাদের হজমে সাহায্য করে থাকে এবং
এতে থাকা ভিটামিন ই আমাদের চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে সহায়তা করে।
এটা আমাদের মস্তিষ্কের সঠিক ক্রিয়া কালাপের কাজ এবং স্নায়ুতন্ত্র বজায় রাখার
কাজে সাহায্য করে থাকে এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও ফোলেট। কাঠ বাদামের মধ্যে থাকা
ফলিক এসিড ভ্রুনের মস্তিষ্ক ও স্নায়বিক বিকাশের জন্য প্রয়োজন। এছাড়া এটা আয়রন
সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে শিশুর হৃদযন্ত্রের বিকাশে ও অনাক্রম্যতা বৃদ্ধিতে সাহায্য
করে থাকে। এজন্য গর্ভাবস্থায় এ সকল উপকারিতা পাওয়ার জন্য নিয়মিত
পরিমিত পরিমাণে কাঠ বাদাম খাওয়া উচিত একজন গর্ভবতী মহিলার।তবে আরেকটি নির্দেশনা
হচ্ছে যাদের অ্যালার্জি এবং কিডনির সমস্যা আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে
কাঠবাদাম খাবেন কারণ এলার্জি এবং কিডনির সমস্যা থাকলে কাঠ বাদাম খাওয়া থেকে বিরত
থাকা উচিত।
বাদাম খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যায়
বাদাম খাওয়ার ফলে আমরা অনেক উপকারিতা পাব কারণ বাদাম অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি
খাবার এর মধ্যে নানা রকমের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে এছাড়াও রয়েছে
এন্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, আয়রন, প্রোটিন, ক্যালরি, চর্বি, ম্যাগনেসিয়াম ও
পটাশিয়াম ইত্যাদি। আর এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকার করে আমাদেরকে
বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে। এ সকল উপকারিতা পাওয়ার জন্য এবং আমাদের
স্বাস্থ্যকে ভালো রাখার জন্য আমাদের প্রতিদিনের
খাদ্য তালিকা বাদাম রাখা উচিত তবে সেটা পরিমিত পরিমাণে কারণ বেশি পরিমাণে খাওয়ার
ফলে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে যে যে
উপকার গুলো পাওয়া যায় সেগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো
- বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- কোষ গুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং কোষের ক্ষয় রোধ করা সম্ভব হয়।
- বাদাম খাওয়ার ফলে আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে থাকে এবং হাড় মজবুত ও শক্ত হয়।
- আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় অথবা ব্রেনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
- পুষ্টির অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়।
- খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায় আমাদের দেহে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় অর্থাৎ এটা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- ক্যান্সারের মতো মরণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় অর্থাৎ ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা যায়।
- ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।
- আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- আমাদের দেহের নার্ভের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
- আপনারা বাদাম খেতে পারেন হৃদ যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে।
- রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাতে সাহায্য করে থাকে।চিনা বাদামে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর এটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে এজন্য আপনারা ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১০ থেকে ১৫ টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং পরের দিন সকালে এটা খেতে পারেন এতে করে আপনাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
সকালে খালি পেটে কোন বাদাম কয়টি করে খাওয়া স্বাস্থ্যকর
সকালে খালি পেটে বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে তবে এটা আমাদের সঠিক পরিমাপে
খেতে হবে বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। আমাদের শরীরে প্রতিদিন যতটুকু পরিমাণে
ম্যাগনেসিয়াম প্রয়োজন হয় এই পরিমাণটা শুধু আমরা কাঠবাদাম খেলেই সেটা পূরণ করতে
পারব। এছাড়াও আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমরা প্রতি দিনে ১৪ টা
পর্যন্ত কাঠ বাদাম খেতে পারব কারণ এই বাদাম আমরা যদি সকালে খালি পেটে খায় তাহলে
অনেক উপকারে আসবে।
তাহলে আপনারা দেখে নিন সকালে খালি পেটে বাদাম কয়টি করে খাওয়া উচিত এবং এটা
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারে এবং আমরা সারা দিনে কয়টা করে বাদাম খেতে
পারব।
কাঠবাদামঃ খালি পেটে কাঠবাদাম খাওয়া অনেক উপকারী কারণ এতে আছে ভিটামিন ই,
প্রোটিন, ফাইবার ও ফ্যাট এগুলো আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য এবং আমাদের হজম
শক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ানোর জন্য আমরা প্রতিদিন ১৪ টা কাঠবাদাম খেতে পারব।
আখরোটঃ আখরোটের মধ্যে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড এটা আমাদের মস্তিষ্কের
জন্য অনেক উপকারী। এই বাদাম যদি আমরা সকালে খালি পেটে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আখরোট বাদামে ফ্যাটের পরিমাণ থাকে ৬৫ শতাংশ
আর প্রোটিনের পরিমাণ থাকে ১৫% এছাড়াও থাকে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। খনিজ
উপাদানে ভরপুর থাকা আখরোট আমাদের হার্টের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এছাড়াও এই
আখরোট খাওয়ার ফলে আমরা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে পারব এবং ক্যান্সারে
আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে। কিন্তু আমরা এই বাদামদিনে চারটির বেশি খেতে
পারবো না।
পেস্তা বাদামঃ আমরা যদি সকালে খালি পেটে পেস্তা বাদাম খায় তাহলে এটা
আমাদের হজমের জন্য অনেক উপকার করবে এবং এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের
শরীরের ভেতরে থাকা টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে থাকবে। এই বাদাম ওষুধ ছাড়া
আমাদের হৃদযন্ত্রের ধমনী অথবা রক্ত বাহিকার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে
থাকে। এ বাদামে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, প্রোটিন, ফাইবার,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন বি ৬ এছাড়াও আছে থায়ামিন এর মত অনেক গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান। পুষ্টিবিদরা বলেছেন যে আমাদের সারা দিনে বিশটা পেস্তা বাদাম খাওয়া উচিত
বা খাওয়া যেতে পারে।
কাজুবাদামঃ কাজু বাদামে রয়েছে প্রোটিন ফ্যাট এছাড়াও আছে ফাইবার আয়রন
ক্যালসিয়াম ইত্যাদি সকল পুষ্টি উপাদান আর এটা খালি পেটে খাওয়ার ফলে আমাদের
শক্তি প্রদান করে থাকে এছাড়াও ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে আমাদেরকে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও কাজু বাদামে আছে অ্যানাকার্ডিক অ্যাসিড এটা আমাদের মানসিক চাপ কমানোর
কাজে সাহায্য করে থাকে। এগুলোর পাশাপাশি এটা আমাদের দাঁত এবং মাড়ির স্বাস্থ্য
ভালো রাখার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এই
কাজুবাদাম আমাদের সারা দিনে ১১ টার বেশি কাজুবাদাম খাওয়া উচিত নয় এটা আমাদের
স্বাস্থ্যের জন্য স্বাস্থ্যকর হবে না। অর্থাৎ আমাদের সারা দিনে ১১ টা কাজুবাদাম
খাওয়া উচিত।
কাচা বাদাম পানিতে ভিজিয়ে খেলে কি হয়
প্রতিদিন সকালে অনেকেই ঘুম থেকে ওঠার পরে বাদাম ভিজিয়ে খান এবং এভাবে খাওয়ার
ফলে নানা ধরনের অসুখের হাত থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদরাও রোজ সকালে
ভিজিয়ে রাখা বাদাম খাওয়ার কথা বলে থাকেন। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন বাদাম
ভিজিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে আপনারা ডায়াবেটিস হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ এর মত
দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে সহজেই দূরে থাকতে পারবেন। কারণ বাদামে অনেক পুষ্টিকর
ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান আছে বাদামে আছে ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম,
পটাশিয়াম, প্রোটিন, ফাইবার, কপার এছাড়াও আছে রিবোফ্লাভিন। গবেষণায় বলা হয়েছে
যে বাদাম খাওয়ার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমার পাশাপাশি এটা আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ
ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে। প্রতিদিন সকালে পানিতে ভিজিয়ে রাখা বাদাম খাওয়ার
ফলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। বাদাম ভিজিয়ে রাখার ফলে এর ভেতরে থাকা হজমের
উৎসেচক গুলো মুক্ত হয় এবং আমাদের এটা হজম করতে সুবিধা হয়।বাদাম পানিতে ভিজিয়ে
খেলে যে যে উপকার পাওয়া যায় সেগুলো হলো
- আপনারা যদি প্রতিদিন বাদাম ভিজিয়ে রেখে তারপরে এটা খান তাহলে আপনাদের সারা দিনের কাজ করার জন্য আপনারা সত্যি পাবেন যার ফলে আপনারা সারাদিন উদ্যমী বোধ করতে পারবেন।
- এছাড়াও এভাবে ভিজিয়ে রাখা বাদাম খাওয়ার ফলে আপনাদের পিরিয়ডের সময় ক্র্যাম্প থেকে আপনারা সহজেই মুক্তি পাবেন।
- আপনাদের হজম শক্তির উন্নতি ঘটবে।
- আপনাদের মস্তিষ্কে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং মস্তিষ্কে কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- এটা আপনাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকার করবে কারণ এতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিন।
- আপনাদের হার্টের জন্য এটা অনেক ভালো এর জন্য আপনারা নিয়মিত ভেজানো বাদাম খেতে পারেন।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো এই পোস্টটির মাধ্যমে আপনাদের কাছে তুলে ধরেছে সকালে
খালি পেটে কাঠ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা সহ বাদাম খাওয়ার উপকারিতা এবং ভেজানো
কাঠবাদাম খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে। যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা
অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন আশা করি। আপনাদের যদি কাঠবাদাম খাওয়ার অভ্যাস না
থাকে তাহলে আমার এই পোস্টটি পড়ার পর থেকে আপনারা অবশ্যই কাঠ বাদাম খাওয়ার
অভ্যাস শুরু করবেন আশা করি।
আর আপনাদের যদি এই পোস্টটি পড়ে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি
আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য পেতে আমার এই
ওয়েবসাইটের সঙ্গে থাকুন। ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url