গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা উচিত জানুন
আসসালামুয়ালাইকুম, আপনারা হয়তো অনেকেই আগে
গর্ভাবস্থায়
কত লিটার পানি পান করা উচিত এবং গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এ বিষয়ে অনেক
সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন জানার জন্য কিন্তু খুঁজে পাননি। আপনাদের মধ্যে যারা
খুঁজে পাননে তারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে এ সকল বিষয়ে জানতে পারবেন এজন্য
শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা উচিত
এবং গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এই বিষয়গুলো ছাড়াও আরো গর্ভাবস্থায় গরম
পানি খাওয়া যাবে কি, গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার কিছু অপকারিতা, গর্ভাবস্থায়
লেবু এবং চিড়া খাওয়া যাবে কি এবং খেলে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা পানি
খেলে কি হয় এ সকল বিষয়ে অনেক সঠিক তথ্য বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
এবিষয়ে পড়ে আপনারা অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন এজন্য শেষ
পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা-গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা উচিত
গর্ভাবস্থায় এমন অনেক খাবার আছে যে সকল খাবারগুলো খাবার ফলে মা ও শিশু দুজনার
স্বাস্থ্য অনেক ভালো থাকবে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে তাদের শরীরে কোন রকমের
পুষ্টির অভাব হবে না। কারণ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলাকে খাবার খাবার বিষয়ে
অনেক সচেতন থাকতে হয়। এ সময় তাকে পরিমিত পরিমাণে পানি পান করতে হবে তা না হলে
তার এবং বাচ্চার সমস্যা হতে পারে। গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মহিলাকে প্রতিদিন
৮ থেকে ১২ কাপ অথবা আনুমানিক
এক দশমিক আট থেকে ২.৯ লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পানি পান করার ফলে
মা ও শিশু দুজনে ভালো থাকে। গর্ভাবস্থায় পরিমিত পরিমানে পানি পান করার ফলে
গর্ভবতী মহিলার কোন খাবার হজমে সমস্যা হয় না তার পেটের ভ্রুণের চারপাশে
অ্যামনিওটিক তরল গঠন হয় শরীরকে হাইড্রেট রাখা সম্ভব হয় অর্থাৎ ডিহাইড্রেশন
প্রতিরোধ করা সম্ভব হয় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং তার শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়া উচিত কারণ
এতে
অনেক পুষ্টিকর উপাদান এবং খনিজ আছে। এগুলো গর্ভবতী মহিলার পুষ্টির ঘাটতি পূরণ
করতে পারে। এতে আছে ভিটামিন বি এবং খনিজ এগুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য অনেক প্রয়োজন
এছাড়াও এতে কম পরিমাণে ক্যালরি এবং এসিডের পরিমাণ কম থাকে এজন্য গর্ভাবস্থায়
মুড়ি খাওয়ার ফলে এসিডিটির সমস্যা কম হয়। মা ও শিশুর হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করা
সম্ভব হয় এছাড়াও আরো নানা উপকারিতা আছে মুড়ি খাওয়ার। তবে এটা পরিমিত পরিমানে
খেতে হবে বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে সমস্যা
হতে পারে গ্যাস অম্বল এর। এছাড়া গর্ভাবস্থায় আপনারা হালকা কুসুম গরম পানি এবং
লেবু খেতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। এ সকল বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য
জানার জন্য আপনাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে কারণ এই পোস্টটিতে সকল
বিষয় ছাড়াও আরো অনেকগুলো বিষয়ে অনেক বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
গর্ভাবস্থায় গরম পানি খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় আমরা অনেকেই হালকা গরম পানি পান করে থাকি তবে এতে কি উপকার আছে না
অপকারিতা আছে হয়তো এ বিষয়ে আমরা অনেকেই জানিনা। হালকা গরম পানি খাওয়ার যেমন
অনেক উপকারিতা আছে তেমনি আছে কিছু অপকারিতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে গর্ভকালীন সময়ে
একজন হব মায়ের শরীর আর্দ্র রাখা জরুরী। গর্ভকালীন সময়ে একজন গর্ভবতী মাকে বেশি
পরিমাণে পানি এবং তরল জাতীয় খাদ্য বা তরল পদার্থ পান করা উচিত বা খাওয়া উচিত
এতে করে মা এবং
আরো পড়ুনঃরাতে গরম পানি খাওয়ার উপকারিতা জানুন
শিশু দুজনেই ভালো থাকবে আর এগুলো তাদের ক্ষেত্রে সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করবে।
তবে এ সময় তাদের হালকা গরম পানি পান করা উচিত বেশি গরম পানি পান করা যাবে না।
একজন হবু মায়ের জন্যে হালকা গরম পানি কতটা কার্যকর হবে এবং এটা তাদের জন্য কোন
ক্ষতির কারণ হবে কিনা এ বিষয়ে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ এ ভুগে থাকেন। এ বিষয়ে
ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে
যে, অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের ঈষদুষ্ণ পানি
পান করার ফলে তাদের শরীরে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে এর জন্য তাদের কিছু বিষয়
মেনে চলতে হবে সেগুলো হচ্ছে।
- গর্ভবতী মায়েদের পানি কোনভাবেই যেন বেশি গরম না হয় খাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের জন্য পানি হালকা গরম হতে হবে।
- খাওয়ার জন্য যে পানি হালকা গরম করা হবে সেই পানি যেন ফিল্টার করা পানি হয়। কারণ ফিল্টার করা না হলে সেই পানিতে ব্যাকটেরিয়া জীবাণু এবং ক্ষতিকর সীসা থাকে আর এগুলো মা এবং শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- আরেকটি বিষয়ে নজর দিতে হবে সেটা হল খাওয়ার জন্য য়ে পানি পানি ব্যবহার করবেন সেই পানি যেন বারবার গরম করে খাওয়া না হয় অর্থাৎ খাওয়ার জন্য একই পানি বারবার গরম করে খাওয়া যাবে না।
- হালকা গরম পানি পান করার ক্ষেত্রে একেবারে বেশি পরিমাণে খাওয়া যাবে না অল্প পরিমাণে পান করার অভ্যাস করতে হবে।
- বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, হালকা গরম পানি পান করার পরিবর্তে যদি কোন গর্ভবতী মহিলা বেশি গরম পানি আবার দুধ ও চা পান করে তাহলে তার মুখ এবং জিহবা পুড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে এছাড়াও খাদ্যনালীর কোষ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া সম্ভাবনা থাকে।
- আবার গর্ভবতী মহিলা যদি প্রতিদিন গরম পানি, চা এবং দুধ পান করার অভ্যাসের ফলে তার রেসপিরেটরি ট্রাক্টের ক্ষতি হতে পারে এবং এসোফ্যাগাসে ক্যান্সার হতে পারে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন।
উপরের এ সকল বিষয়গুলো মেনে যদি হালকা গরম পানি পান করার অভ্যাস করেন একজন
গর্ভবতী মহিলা তবে সে আবার অনেকগুলো উপকারিতা পেতে পারেন সেগুলো হলো
- তার শরীরের মেটাবলিজম বাড়বে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
- ব্লাড সার্কুলেশন বাড়বে এবং হজম শক্তি বাড়বে।
- বুকে ব্যথা করা ও সর্দি কাশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
- এই হালকা গরম পানি পান করার ফলে তার শরীর থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে বিষাক্ত টক্সিন পদার্থগুলো বের হবে সহজেই এবং শরীর পরিষ্কার হবে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এ বিষয়ে অনেকেই জানতে চান আপনারা এজন্য আপনারা
আজকে এই আর্টিকেল থেকে এ বিষয়ে জানতে পারবেন। আমরা অনেকেই মুড়িকে সাধারণ খাবার
হিসেবে খেয়ে থাকি কিন্তু এই মুড়ির রয়েছে নানা উপকারিতা এবং গুনাগুন। যেগুলোর
কথা জানলে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন একজন গর্ভবতী মহিলা গর্ভাবস্থার মুড়ি খেতে
পারেন। মুড়িতে আছে সোডিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন,
ম্যাগনেসিয়াম ও খনিজ উপাদান ইত্যাদি।
আর একজন গর্ভবতী মায়ের এই সকল পুষ্টি উপাদান গুলোর অনেক প্রয়োজন হয়ে থাকে
তাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য। গর্ভাবস্থায় এগ ওজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে
এ সকল পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি বেশি দেখা যায় এবং এ সকল উপাদান গুলোর চাহিদা বেড়ে
যায় এ সময়। আর এ সময় যদি তারা মুড়ি খায় তাহলে তাদের এই সকল পুষ্টি উপাদানের
অভাব পূরণ করা সম্ভব হবে। আবার মুড়ির মধ্যে এসিড জাতীয় উপাদান কম থাকে এজন্য
গর্ভকালীন সময়ে মুড়ি খাওয়ার ফলে এসিডিটির সমস্যা অনেক
কম হয় এ সময় আবার এসিডিটির পরিমাণ তাদের পেটে কম থাকার জন্য এ সময় তাদের বমি
এবং বমি ভাব অনেক কম দেখা যায়। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা কি খাবার খাবেন
এবং কোন খাবার গুলো খাবেন না এ বিষয়ে অনেক চিন্তায় থাকেন তাদের সন্তানকে নিয়ে।
কারণ এই সময় একটু ভুলের কারণে তাদের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। একজন গর্ভবতী মা
তাদের খাবার তালিকায় মুড়ি রাখতে পারেন নিশ্চিন্তে কারণ এটা গর্ভাবস্থায়
খাওয়ার ফলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা এবং তার শিশুর শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয় এজন্য মা এবং শিশু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা দুজনেই সুস্থ থাকে।
- মুড়িতে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন বি এবং খনিজ উপাদান আর গর্ভাবস্থায় এটা খাওয়ার ফলে মা এবং শিশুর শরীরে ভিটামিন বি এবং খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণ হয়।
- মুড়িতে আছে ভিটামিন এবং মিনারেল আর এই মুড়ি খাওয়ার ফলে আপনি গর্ভাবস্থায় এ সকল ভিটামিন এবং মিনারেল এর ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন।
- মুড়িতে আছে শর্করা জাতীয় খাদ্য উপাদান আরে এটি গর্ব অবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা খাওয়ার ফলে তাদের এনার্জি ধরে রাখতে সাহায্য করবে মুড়ি।
- গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মা এবং তার গর্ভের সন্তানের হাড় গঠনে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করা সম্ভব হবে কারণ মুড়িতে আছে ক্যালসিয়াম ও আয়রন।
- মুড়িতে আছে ফাইবার এজন্য এটি গর্ভাবস্থায় খাবার ফলে হজমের সমস্যা হবে না অর্থাৎ হজমে সাহায্য করবে এবং এটার ফলে আমাদের শরীরের ডাইজেস্টিক সিস্টেম ভালো থাকবে।
- মুড়িতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে এ কারণে মুড়ি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- মুড়ি আমাদের শরীরে শর্করা বা চিনির পরিমাণ কম রাখতে সাহায্য করে আর এজন্য আমাদের শরীরের ওজন বাড়তে পারে না।
- মুড়িতে আছে ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, পটাশিয়াম, ফসফরাস, থায়ামিন এবং নিয়াসিন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান আর এগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর থেকে অনায়াসেই অনেক রোগ জীবাণু দূরে সরে যাবে।
- গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটি মহিলার বমি বমি ভাব হওয়া একটা বড় সমস্যা আর এই বমি ভাব দূর করার জন্য এ সময় তারা মুড়ি খেতে পারে এটা নিয়মিত খাওয়ার ফলে তাদের এই বমি বমি ভাব অনেকটাই কমে যাবে।
- মুড়িতে এসিডের পরিমাণ কম থাকে এজন্য বদহজম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না গর্ব অবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার। এ ছাড়া মরে আমাদের গ্যাস বা বুক জ্বালাপোড়া করার সমস্যায় এবং দেহের এসিড দূর করতে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার কিছু অপকারিতা
আপনারা অবশ্যই এতক্ষণ উপরের আলোচনা থেকে গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় বা মুড়ি
খাওয়ার উপকারিতা কি এই সম্পর্কে আশা করে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। মুড়ি খাওয়ার
যেমন অনেক উপকারিতা আছে তেমনি এর কিছু অপকারিতা আছে। মুড়িতে যেমন নানা রকমের
পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে এজন্য এটা আমাদের খেতে হবে
পরিমাণ মতো বেশি পরিমাণে খাওয়া ঠিক নয়। আর গর্ভাবস্থায় তো অনেক রকমের খাবারই
বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত
নয় এতে করে গর্ভবতী মহিলাদের নানারকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে আসুন জেনে
নেওয়া যা গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে
- মুড়ি খেলে ওজন কমে কিন্তু যদি আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে মুড়ি খায় তাহলে আবার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কারণ এতে কার্বোহাইড্রেট আছে প্রচুর পরিমাণে এটা আমাদের ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
- মুড়িতে উচ্চ পরিমাণে গ্লাইফেমাইক নামের উপাদান আছে এটা আমাদের শরীরে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে থাকে।
- মুড়িতে লবণের পরিমাণ থাকে বেশি এজন্য যাদের কিডনিতে সমস্যা আছে তারা মুড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- যে সকল ব্যক্তির বুকে ব্যথা, হাড়ের ব্যথা এবং বাতের ব্যথা আছে সে সকল ব্যক্তির মুড়ি খাওয়া ঠিক নয়।
- বেশি পরিমাণে মুড়ি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যা হতে পারে।
- আপনাদের মধ্যে যাদের ইউরিক এসিডের সমস্যা আছে তারা মুড়ি খাবেন না কারণ মুড়ি খেলে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের তার সন্তানের কথা ভেবে অর্থাৎ তার সন্তানের দাঁত, মাড়ি
এবং হাড়ের বিকাশের জন্য তাকে প্রতিদিন ৮৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি গ্রহণ করা উচিত।
এ ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েরা কমলা, লেবু এবংজাম্বুরার মত যে ফলগুলো সাইট্রাস
জাতীয় ফল আবার ব্রকলি, টমেটো এবং স্ট্রবেরি ইত্যাদি এগুলোতে ভিটামিন সি থাকে
এজন্য এগুলো তারা অবশ্যই খেতে পারে। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের খাবারের দিকে
সবচাইতে বেশি নজর দিতে হয় এবং পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার খেতে হয়।
এজন্য তখন তাকে সাধারণ খাবার খাবার ক্ষেত্রে সন্দেহের চোখে দেখা হয়ে থাকে এ
অবস্থায় তিনি কোন খাবার খাবেন কোন খাবার খাবেন না এ বিষয়ে অনেক খেয়াল রাখতে
হয় তাকে।
গর্ভাবস্থায়
লেবু এবং সাইট্রাস জাতীয় ফল খাওয়া স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ একজন গর্ভবতী মায়ের
জন্য। তবে এটা পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে লেবুর যেমন অনেক উপকারিতা আছে তেমনি বেশি
পরিমাণে খাওয়ার ফলে তাদের বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। লেবুতে থাকা ভিটামিন
খনিজ পদার্থ এবং
আরো অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান একজন গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য এবং শিশুর
বিকাশের জন্য অনেক প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় লেবু খাওয়ার কিছু উপকারিতার কথা বলা
হলো
বমি ভাব নিয়ন্ত্রণ করেঃ একজন গর্ভবতী মাকে লেবু অথবা লেবুর রস তাদের বমি
ভাব নিয়ন্ত্রণে আনার কাজে সাহায্য করে থাকে। একটা স্টাডিতে দেখা গেছে যে, লেবু
খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের বমি এবং বমি ভাব থেকে উপশম এর জন্য ভালো
ফল পাওয়া যায়। আর এই গুণটা কিন্তু প্লাসিব নয়। ২০১৪ সালের অন্য একটি গবেষণা
বলছে যে, ফোন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে সার্ভে করে দেখা গেছে যে লেবুর ইনহেলেশন
থেরাপি গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে হালকা থেকে মাঝারি বমি ও বমি ভাব কমাতে সাহায্য
করে থাকে বা পারে।
ভিটামিন সি অনাক্রম্যতা এবং ভ্রূণের বিকাশঃ একটা ছোট লেবুতে থাকে দুই
গ্রাম পরিমাণে ভিটামিন সি আর এটা গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য
অপরিহার্য। এই দুই গ্রাম পরিমাণে লেবু থেকে পাওয়া ভিটামিন সি একজন গর্ভবতী
মায়ের ক্ষেত্রে পুষ্টির জন্য অপরিহার্য। অনেক গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে অর্থাৎ
গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে ইমিউনো কম্প্রোমাইজ হওয়ার অথবা অনাক্রম্যতা আক্রান্ত
হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ও তার শিশুর ওজন
এবং
উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। আবার ভিটামিন সি আয়রন শোষণ
ত্বরান্বিত করে থাকে এবং এটা স্বাস্থ্যকর গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিপোষক।
তবে একজন গর্ভবতী মাকে ভিটামিন সি এর নানা প্রয়োজনীয়তা পূরণ করার জন্য তাকে
শুধু লেবু খেলেই হবে না এর পাশাপাশি খাবারের তালিকায় রাখতে হবে ভিটামিন সি
সমৃদ্ধ খাবার ও জুস। রাখতে হবে ব্রকলি, কমলালেবু, পালং শাক এবং টমেটো ইত্যাদি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার।
ফোলেট ভ্রূণের স্নায়বিক বিকাশেঃ একটি ঘর আকারের লেবুতে ৬.৩৮ মাইক্রগ্রাম
পরিমাণে ফোলেট পাওয়া যায় আর এটা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অপরিহার্য পুষ্টি
উপাদান। একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য এবং ক্রমবর্ধমান ভ্রুনের স্নায়বিক বিকাশের
জন্য এই ফোলেট অনেক প্রয়োজনীয়। খাদ্য এবং পুষ্টি বোর্ড অনুসারে, খাদ্য এবং
সাপ্লিমেন্ট থেকে মায়েদের জন্য ৬০০ এমসিজি ফোলেট এর প্রয়োজন হয় আর এই
প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়ার জন্য আমরা লেবু খেতে পারি এবং এটা
আমাদের গর্ভবতী মায়েদের জন্য দুর্দান্ত সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। তবে
প্রয়োজনীয় ফোলেট গর্ভবতী মহিলাদের জন্য শুধু লেবুর ওপর নির্ভর থাকলে চলবে না এর
পাশাপাশি তাকে ফোলেট সমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট, সাদা রুটি,
পালং শাক এবং অ্যাভোক্যাডো ইত্যাদি খাবার খেতে হবে।
তবে গর্ভবতী মহিলাদের পরিণত পরিমাণে লেবু খেতে হবে বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে
তাদের স্বাস্থ্যের জন্য এবং শিশুর জন্য এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে। বেশি পরিমাণে
গর্ব অবস্থায় লেবু খাওয়ার ফলে তাদের দাঁতের সমস্যার এর পাশাপাশি দাঁতের ক্ষয় ও
অম্বল হতে পারে। লেবুতে থাকা উচ্চ সাইট্রিক এসিড দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি ঘটিয়ে
থাকে। আবার বেশি পরিমাণে লেবু খাওয়ার ফলে এর সাইট্রিক এসিড গর্ভবতী মহিলাদের
অম্বলের লক্ষণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা উচিত
গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা উচিত বা প্রয়োজন এ বিষয়ে হয়তো অনেকেই
ঠিকমতো সঠিক উত্তর জানেনা। এজন্য আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে এ বিষয়ে
ভালোভাবে জেনে নিন। একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণে পানি পান করা
উচিত কারণ এতে করে তার শরীর হাইড্রেট থাকবে এবং তার শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
তাকে যে শুধু তৃষ্ণা পেলে পানি পান করতে হবে এমনটা নয় তাকে এ সময় বেশি বেশি করে
অন্য যেকোনো সময়ও পানি পান করতে
হবে। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলাকে প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১২ কাপ বা ৬৪
থেকে ৯৬ আউন্স বা আনুমানিক ১.৮ থেকে ২.৯ লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এটা তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করবে এবং
ভালো খাবার হজমে সহায়তা করবে। একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন গড়ে
প্রায় ১০ কাপ বা ২.৩ লিটার তরলের প্রয়োজন হয়। এ সময় পানি পান করার অনেক
উপকারিতা রয়েছে সেগুলো হচ্ছে এটা হজমে সাহায্য করে
এছাড়াও ভ্রুণের চারপাশে অ্যামনিওটিক তরল গঠনে সাহায্য করে থাকে। আবার পানি
আমাদের শরীরে পুষ্টি সঞ্চালন করতে এবং আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ গুলো বের
করে দিতে সাহায্য করে। গর্ব অবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার শরীর হাইড্রেটেড থাকা
জরুরী এবং এটা রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং আমাদের
শরীরের তাপমাত্রা
নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। এজন্য একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য এবং তার শরীরের কথা
এবং তার সন্তানের কথা চিন্তা করে
তাকে প্রতিদিন পরিমিত পরিমানে পানি পান করতে হবে। এছাড়া সন্তান জন্মের পরেও
মায়ের বুকের দুধ উৎপাদন বজায় রাখার জন্য তাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা
উচিত। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন এজন্য তাকে.৮ থেকে ১২ কাপ পানি পান করার পরামর্শ
দেওয়া হয় এবং পর্যাপ্ত হাইড্রেশন এর জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
ভ্রণের বিকাশঃঅ্যামনিওটিক তরল গঠন করার কাজে সমর্থন করে থাকে।
রক্তের পরিমাণঃ অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহের জন্য বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধঃ মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা ও অকালে প্রসব এড়ায়।
ফোলা কমানোঃফোলা এবং শোথ কমাতে সহায়তা করে থাকে।
হজমে সাহায্য করেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য ও হেমোরয়েড প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ আমাদের শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল বজায় রাখার
কাজে সাহায্য করে থাকে।
অর্থাৎ গর্ভাবস্থায় আপনারা আপনাদের হাতের কাছে সব সময় একটি পানির বোতল রাখতে
পারেন। পানি সমৃদ্ধ খাবার গুলো বেশি পরিমাণে খেতে পারেন এবং আপনারা নিয়মিত পানি
পান করার অভ্যাস করুন শুধু পিপাসা পেলে পানি পান করবেন তা নয়। এভাবে আপনারা
গর্ভাবস্থায় পানি পান করার ফলে গর্ভবতী মা সুস্থ থাকবে এবং তার বাচ্চা ভালো
থাকবে এবং বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে সহজেই।
গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা পানি খেলে কি হয়
অনেকেই গর্ভাবস্থায় ঠান্ডা পানি পান করে থাকে। মায়ের শরীরে খাদ্যনালির সাথে
জরায়ুর সরাসরি কোন সংযোগ নেই। তবে মায়ের শরীর থেকে সন্তান যে অক্সিজেন পুষ্টি
এবং পানি পাই সেগুলো মায়ের রক্ত থেকে সন্তানের রক্তে প্লাসেন্টার মাধ্যমে
প্রবাহিত হয়ে থাকে। একজন গর্ভবতী মা যখন কিছু খেয়ে থাকে তখন তার খাদ্যনালীর
মধ্য দিয়ে পাকস্থলীতে যায় আর সেগুলো সেখানে খাবারের পুষ্টি যেমন কার্বোহাইডেট,
অ্যামাইনো এসিড, মিনারেল, ভিটামিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিড হিসেবে শোষিত হয়ে থাকে। এ
সকল
পুষ্টি প্লাসেন্টা গ্রহণ করে থাকে এবং সেটা রক্তের মাধ্যমে ভ্রুনের
অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সরবরাহ করে থাকে। আর যে সকল খাদ্যের অংশ ভ্রুনের প্রয়োজন হয় না
সেগুলো আবার প্লাসেন্টার মাধ্যমে মায়ের রক্তে ফেরত চলে যায় এবং সেটা মায়ের
লিভার এবং কিডনির মাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে থাকে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে কোন গর্ভবতী
মা যদি ঠান্ডা পানি পান করে থাকে তাহলে সেটা ভ্রুন পর্যন্ত সরাসরি পৌঁছায় না ।
আমাদের শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক মাত্রায় ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে। এজন্য
ঠান্ডা
পানি যখন খাওয়া হয় তখন এটা খাদ্যনালী হয়ে পাকস্থলীতে জমা হয়ে থাকে এবং
ততক্ষণে এটা তার শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় নিয়ে আসে। অনেকে মনে করেন যে
ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে বাচ্চা নড়াচড়া করে কিন্তু এই ধারণার কোনো গবেষণা
ভিত্তিক সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তবে গর্ভবতী মহিলা যদি মিষ্টি কোন খাবার খায়
তাহলে বাচ্চার নড়াচড়া করা বাড়তে পারে। তবে যাই হোক ঠান্ডা পানি পান করার ফলে
ক্ষতি না হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে একজন গর্ভবতী মহিলা ঠান্ডা পানি খাওয়ার
ফলে
অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং পরবর্তীতে যেটা তার বাচ্চাকে প্রভাবিত করা
সম্ভাবনা থাকে। একজন গর্ভবতী মহিলা ঠান্ডা পানি পান করার ফলে তার ঠান্ডা লাগতে
পারে এবং সর্দি কাশি ও হতে পারে। আর এর ফলে মায়ের যে শারীরিক সমস্যা হয় সেটার
প্রভাব তার বাচ্চার ওপর পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ঠান্ডা পানি পান করার ফলে মায়ের
নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো হল।ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা পানি পান করার
ফলে মেদ ঝরে গবেষণায় দেখা গেছে। ঠান্ডা পানির তাপমাত্রা
এবং আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার বিরাট একটা পার্থক্যের কারণে পানির
তাপমাত্রা কে স্বাভাবিক করার জন্য শরীরের ক্ষয় হয় অতিরিক্ত শক্তি আর এটা আমাদের
মেদ ঝরাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু মেদ কমানোর পরিমাণ খুবই কম। ফ্রিজে রাখা
ঠান্ডা পানি পান করার অনেকগুলো ক্ষতিকর দিক আছে এর ভালো দিকের চাইতে। ফ্রিজে
ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে খাবারের চর্বি কঠিন অবস্থায় আসে এবং এটা পরবর্তী সময়ে
ঠান্ডা পানির সাহায্যে খাবারের সেই কঠিন হয়ে থাকা
বেশি পরিমাণে চর্বিকে পরিপাক করার জন্য শরীরের অনেক কষ্ট হয়ে পরে। এছাড়াও এ সকল
অতিরিক্ত চর্বি রক্ত প্রবাহের মাধ্যমে শোষিত হয়ে থাকে কখনো কখনো এবং এটা ধমনীতে
ধীরে ধীরে জমতে থাকে। আর এর পরিণামে উচ্চ রক্তচাপ এবং মানুষের হৃদরোগের ঝুঁকি
বাড়ে। ঠান্ডা পানি পান করার ফলে আমাদের তৃষ্ণা মেটে কিন্তু আমাদের তৃপ্তি হয় না।
এর ফলে আমাদের শরীর মনে করে যে তার পানি পান করার প্রয়োজন নেই এজন্য আমাদের
শরীরে প্রয়োজনীয় পানির অভাব
থেকে যায় এর ফলে পরবর্তীতে আমাদের শরীরে পানি শূন্যতা এর সমস্যা তৈরি হয় যেটা
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও ঠান্ডা পানি পান করার ফলে মায়ের হজমের
সমস্যা হতে পারে। এই ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে আমাদের পাকস্থলী খাবার হজম করার
চাইতে সেই ঠান্ডা পানিকে আমাদের শরীরের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে ব্যস্ত থাকে।
তাহলে পাকস্থলীর মূল দায়িত্ব খাবার হজমের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে এবং আমাদের
হজমে সমস্যা দেখা দেয়। আবার ঠান্ডা পানি পান
করার ফলে দাঁতের এনামেল এর ক্ষতি হয় এছাড়াও মাড়ির ক্ষয় হয়। এজন্য
গর্ভাবস্থায় বেশি পরিমাণে ঠান্ডা পানি না খাওয়াই ভালো। আমাদের শরীরের জন্য
স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি অনেক উপকারী।
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় অনেকে সকালে বা যে কোন সময় চিড়া খেয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় চিড়া
খাওয়া যাবে এতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর এটা গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভকালীন সময়
রক্তস্বল্পতার উচ্চ ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও চিড়াতে আছে ফাইবার,
ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট এবং এতে কম পরিমাণে গ্লাইসেমিক সূচক আছে। অনেকে সকালের
নাস্তায় চিড়া খেয়ে থাকেন এতে অনেক স্বাস্থ্য ও উপকারিতা পাওয়া যায়। আবার
অনেকেই সকালের স্বাস্থ্যকর নাস্তার জন্য চিড়া খেয়ে থাকেন
আবার যাদের দুধ খেলে পেটের সমস্যা হয়ে থাকে তারা চিড়ার সাথে দই মিশিয়ে খেতে
পারেন। অনেকের রাতে ভারী খাবার খেয়ে পেটে গন্ডগোল হওয়ার সমস্যা দেখা যায় এবং
পেট ভার থাকে এমনটা হলে আপনারা সকালের নাস্তায় দই চিড়া খেতে পারেন। এতে করে
আপনাদের পেট ঠান্ডা থাকবে। যাদের বেশি পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে
সমস্যা হয় তারা সহজেই খেতে পারেন চিড়া। কারণ এতে থাকা ফাইবার আমাদের জন্য
সহজপাচ্য। শিশু এবং বয়স্ক সকল মানুষই
চিড়া খেতে পারেন। সকালের নাস্তায় আপনারা চিড়া পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে
তারপরে এর সাথে গুড়,দই, দুধ এবং চিনি একসাথে করে মিশিয়ে খেতে পারেন অনেকে আবার
কলা এর সাথে চিড়া খেয়ে থাকেন। সকালের নাস্তায় চিড়া খাবার অনেক উপকারিতা হলো
- চিড়া সহজেই হজম করা যায় অর্থাৎ এটা সহজে হজম হয়। দিনের শুরুতে আপনারা এটা খেতে পারেন এবং এটা আপনাকে শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে।
- চিড়া ফাইবার সমৃদ্ধ এবং এটা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে এবং আমাদের অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
- সকালের নাস্তায় উচ্চশক্তি অথচ কম ক্যালরি সম্পূর্ণ খাবার খেতে চান তারা চিড়া খেতে পারেন। কারণ চিড়াতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে এক বাটি পরিমাণ দুই চিকাতে থাকে মাত্র ৩০০ ক্যালোরি।
- চিড়া খাওয়ার ফলে পেট খারাপের সমস্যা দূর হয়ে যায় কারণ এটা হালকা ও সহজপাচ্য।চিড়া আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে প্রশমিত করে থাকে।
- চিড়াতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন কারণ এটা গর্ভবতী মহিলাদের রক্তস্বল্পতার ঝুঁকে কমাতে সাহায্য করে থাকে। এজন্য গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় বাসি খাবার খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়া ঠিক নয় এতে করে গর্ভবতী মায়ের
এবং সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। গর্ভকালীন সময়ে একজন নারীকে খাবারের দিকে অবশ্যই
সচেতন এবং খেয়াল রাখতে হয়। কারণ এই সময় একটু ভুলের কারণে নেমে আসতে পারে তার
জীবনে অতি দুঃখ। এ সময় অনেকেই বাসি খাবার খেয়ে থাকেন কিন্তু এই বাসি খাবার
খাওয়া ঠিক নয়। এ সময় প্যাকেট জাত খাবার আবার হারবাল চা, ফুটপাতের খাবার, হাফ
সেদ্ধ করা খাবার এবং বাসি খাবার খাওয়া ঠিক নয়
কারণ এসব খাবারগুলোতে রোগ জীবাণু অথবা ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থাকতে পারে। এছাড়া
এ সময় আরো মিষ্টি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে চিনি দেওয়া খাবার তৈলাক্ত ও
মসলাদার খাবার এবং বেশি পরিমাণে ভিটামিন ট্যাবলেট ও খাওয়া উচিত নয়।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো এই পোস্টটিতে গর্ভাবস্থায় কত লিটার পানি পান করা
উচিত এ বিষয় ছাড়াও গর্ভাবস্থায় লেবু খেলে কি হয় আবার গর্ভাবস্থায় বাসি খাবার
গরম পানি এবং ঠান্ডা পানি খেলে কি হয় এবং গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয় এবং এর
অপকারিতা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা
অনেক উপকৃত হতে পারবেন এবং অন্য কেউ উপকৃত করতে পারবেন আশা করি। আপনাদের যদি এই
পোস্টটি পড়ে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url