খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন বিস্তারিতভাবে
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে খালি পেটে শসা
খাওয়ার উপকারিতা
এবং ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন
কিন্তু পাননি কিন্তু আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সে বিষয় সম্পর্কে
জানতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
এখানে আমি আপনাদের জন্য শসা সম্পর্কিত সকল তথ্য অর্থাৎ খালি পেটে শসা খাওয়ার
উপকারিতা, ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম, শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, শসা
খাওয়ার সঠিক সময় ও নিয়ম ,চোখে শসা দিলে কি হয় এবং রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা
সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছে যেগুলো করে আপনারা অনেক তথ্য জানতে
পারবেন। এ সকল তথ্য জানার জন্য তাই এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
শসা আমাদের সকলের কাছে একটা পরিচিত সবজি এই শসা আমরা রান্না করে খেয়ে থাকি আবার
খবর খাবারের সাথে সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকি। শসা আমাদের অনেক উপকারে আসে কারণ শসা
তে আছে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। শসা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পানির
ঘাটতি পূরণ হয়, আমাদের শরীর থাকে হাইড্রেট। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, আমাদের ওজন
কমে, আমাদের ত্বক, চোখ, নখ এবং চুলের জন্য অনেক উপকারী। খালি পেটে শসা খাওয়ার
ফলে আমাদের
অনেক সমস্যা দূর হয়। আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে,
শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়, কোষের ক্ষতি কমে, রক্তচাপ কমে ও আমাদের চোখের দৃষ্টি
শক্তি বাড়ে ইত্যাদি আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়াও ওজন কমানোর জন্য শসা
আমাদের অনেক কাজে আসে কারণ শসাতে থাকে অনেক পানি এবং লোক্যালরি পানি আমাদের খাবার
হজম করতে সাহায্য করে এবং আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
শসা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
শসা আমার আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী সবজি। এই সবজিটি আমরা সারা বছরই
পেয়ে থাকি এবং এই সবজির অনেক উপকারিতা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তেমনি
আমাদের রূপচর্চার জন্যেও এটার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। শসাতে অনেক পুষ্টি উপাদান
রয়েছে যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম,
ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, দস্তা, ক্যালোরি, ফাইবার ও প্রোটিন ইত্যাদি। শসার অনেক
গুরুত্বের কথা আজ আমি আপনাদের বলব। শসা খাওয়ার উপকারিতা গুলো হচ্ছে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ শসাতে আছে অনেক ভিটামিন এ, বি এবং সি যেগুলো
আমার আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের কর্ম ক্ষমতা
বাড়ায়।
পানির ঘাটতি পূরণেঃ আপনার দেহে যদি পানির অভাব দেখা দেয় যদি আপনি পানি
শূন্যতায় ভোগে থাকেন তাহলে আপনি প্রতিদিন শসা খেতে পারেন কারণ শসাতে আছে ৯৫ ভাগ
পানি যা আপনার দেহের পানির ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করবে।
ওজন কমাতেঃ শসায় আছে অনেক পানি এবং ফাইবার এছাড়াও আরো আছে নিম্নমাত্রার
ক্যালরি যেটা আমাদের দেহের অতিরিক্ত
ওজন কমাতে
সাহায্য করবে।
ত্বকের জন্যঃ শসার আছে অনেক পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সিলিকন যেটা
আমাদের ত্বকের পরিচর্যার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ও আমাদের
ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ শসার আছে ফাইবার এবংফ্লুইড সমৃদ্ধ এলিমেন্ট
যেগুলো আমাদের দেহে পানির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে এছাড়াও আরো রয়েছে স্টেরল
নামের উপাদান যা আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এবং শসা তে থাকা
পটাশিয়াম ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়াম আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য
করে।
হজম শক্তি বাড়াতেঃ শসায় আছে এরেপসিন নামের এনজাইম যা আমাদের হজম শক্তি
বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে।
দেহের বিষাক্ত পদার্থ অপসারণেঃ শসাতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় এটা
আমাদের দেহে যে বিষাক্ত পদার্থ থাকে তা অপসারণ করতে সাহায্য করে এবং আমাদের
রক্তকে পরিষ্কার করে। এছাড়াও আলসার এবং এসিডিটি ক্ষেত্রে অনেক উপকারী শসার রস।
কিডনিকে সুস্থ রাখেঃ শসা আমাদের দেহে ইউরিক এসিডের মাত্রা কি ঠিক রাখতে
সাহায্য করে যার ফলে আমাদের কিডনি সুস্থ এবং সতেজ থাকে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ শসা আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য
করে এবং আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরল কমিয়ে। এছাড়াও শসা আমাদের
দাউদ এবং এক্সিমা সহ ত্বকের নানা রকম সমস্যার ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করে
থাকে।
চুল ও নখের ক্ষেত্রেঃ শসাতে আছে খনিজ ও সিলিকা যা আমাদের চুল ও নখকে করে
শক্তিশালী এবং সতেজ। শসা তে আছে মিনারেল যা আমাদের নখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতেঃ শসা আমাদের চোখের নিচে অনেক সময় যে কালো দাগ পড়ে
তা দূর করতে সাহায্য করে এবং আমাদের মুখের ও চোখের নিচের ময়লা অপ্রসারণ করে থাকে
এতে করে আমাদের চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায়।
দাঁত ও মাড়ির জন্যঃ শসা তে আছে অনেক মিনারেল যা আমাদের দাঁত ও মারের অনেক
সমস্যা নিরসনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের মাথা ধরা থেকে
নিষ্কৃতি দেয় এছাড়াও গেটে বাত থেকেও আমাদের অনেক মুক্তি দিয়ে থাকে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ শসা আমাদের কিডনি, ইউরিনারি ব্লাডার এবং লিভার
এর সমস্যায় অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এছাড়াও আমাদের স্তন ক্যান্সার, জরায়ু
ক্যান্সার এবং আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য
করে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেঃ শসা আমাদের মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে অনেক
সাহায্য করে থাকে। আমাদের মুখের ভেতরে থাকা বজ্র পদার্থ, টক্সিন এবং দূষিত গন্ধ
দূর করতে অনেক সাহায্য করে। শসা ছোট করে টুকরা করে কেটে আপনি এক টুকরো মুখের
মধ্যে জিহবার নিচে রেখে দিতে পারেন এতে করে শসা মুখের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়ার
বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর করবে।
এখন আমরা জানবো শসা খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। শসা খাওয়ার যেমন অনেকগুলো
উপকারিতা আছে তেমনি এটা খাওয়ারও কিছু অপকারিতা আছে যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এজন্য বুঝে শুনে সব রকম খাবার খাওয়া উচিত।
আপনি যদি শুধু ওজন কমানোর জন্য শসা খেয়ে থাকেন অন্যান্য খাবার না খেয়ে যখন
আপনার ক্ষুধা লাগবে তখন আপনি ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য যদি শুধু শসা খান তাহলে
আপনার দেহে পুষ্টির ও ভিটামিনের অভাব দেখা দিবে।
এজন্য আপনার শরীর দুর্বল হবে আপনার দেহে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাবে। শসা হচ্ছে
ফাইবার এবং লোক্যালোরি খাবার। আবার আরেকটা বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি যদি
সারাদিন শসা খেয়ে থাকেন অনেক বেশি পরিমাণে তাহলে আপনার গ্যাস্ট্রিক, বদহজম,
আপনার পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা এবং বমি ভাব সহ এরকম আরো নানা সমস্যা আপনার শরীরে
দেখা দিতে পারে। এজন্য আপনি আপনার খাবার তালিকায় অন্যান্য পুষ্টিকর ও ভিটামিন
সমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি শসা রাখতে পারেন।
শসার রস ও শসার জুসের উপকারিতা
আমরা অনেকেই শসার রস ও শসার জুস করে খেয়ে থাকি এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়
আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। এ সকল উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের খাবার তালিকায়
অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন শসা থাকা উচিত। শসা খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে
পানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে
ইত্যাদি আরো অনেক উপকারিতা পাব। শসার রস ও জুসের উপকারিতা গুলো হচ্ছে
- শসার রস আমাদের আলসার, এসিডিটি এবং গ্যাসট্রাইটিস এর ক্ষেত্রে অনেক উপকারী।
- শসাতে রয়েছে মিনারেল যা আমাদের শরীরে ফ্লুইড ব্যালেন্স করতে অনেক সাহায্য করে।
- শসা এবং গাজরের জুস খেলে আমাদের গেটে ব্যথার জন্য অনেক উপকার হয়।
- শসার রস আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী এটা আমাদের চুলকে ঘন করতে এবং মজবুত করতে সাহায্য করে।
- শসার জুস আমাদের শরীরে পটাশিয়ামের ব্যালেন্স ঠিক রাখে এবং এর নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে।
- শসার জুস আমাদের হাই ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
চুলের যত্নে শসার ভূমিকা
আপনারা অনেক অবাক হবেন জেনে যে চুলের যত্নের জন্য যদি আপনি শসা ব্যবহার করেন
তাহলে আপনার চুল হবে অনেক মজবুত এবং শক্তিশালী। আপনি যদি প্রতিদিন আপনার চুল শসার
রস দিয়ে ধুতে পারেন তাহলে আপনার চুল মজবুত হবে। কারণ শসা তে অনেক ভিটামিন আছে
যেগুলো আপনার ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে নতুন করে আবার পুনরুজ্জীবিত করে তুলতে সাহায্য
করবে। আবার আপনি যদি চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার সময় এর সাথে শসার রস ভালোভাবে
মিশে আপনার চুলে লাগান
তাহলে আপনি আপনার চুলকে শাইনি করে তুলতে পারবেন। আপনি যদি রেগুলার শসা খান তাহলে
আপনার ত্বক যেমন হাইড্রেড হবে এর পাশাপাশি আপনার চুল পড়া ও বন্ধ হয়ে যাবে।
শসাতে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং সিলিকা আপনার চুলকে ঘন করতে সাহায্য করবে। শসার রসে
আছে সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আপনার মাথার স্কাল্পে ব্যবহার করলে
আপনার চুলের গোড়া মজবুত হবে এবং আপনার চুল মসৃণ হবে সুন্দর হবে।
শসা খাওয়ার সঠিক সময় এবং নিয়ম
আমাদের শসার উপকারিতা এবং অপকারিতা জানার পরে আমাদের খাবার তালিকায় প্রতিদিন শসা
থাকা উচিত এবং আমাদের সঠিক নিয়ম ও সময় মেনে শসা খাওয়া উচিত তবে আমরা এর
উপকারিতা পাব। শসা নিজে হজম হতে অনেক বেশি সময় নেই এজন্য রাতে ঘুমানোর আগে শসা
না খাওয়াই উচিত। আপনি রাতে খাবার খাওয়ার ২০ থেকে ৩০ মিনিট আগে খেতে পারেন এতে
করে শসা আপনার পেটে অনেকক্ষণ থাকবে এবং আপনার রাতের খাবারকে অনেকটাই হালকা করে
দিবে এর পাশাপাশি আপনার ওজন
কমাতে ও সাহায্য করবে। আবার সকালে খালি পেটে শসা খাওয়া উচিত নয় কারণ শসা তে আছে
অনেক ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম যা আপনার লো ব্লাড প্রেসার এর জন্য তাই হতে
পারে। এজন্য আপনারা যদি সকালে খালি পেটে শসা খান তাহলে আপনাদের লো ব্লাড প্রেসার
এ অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আবার আপনারা দুপুর বেলা শসার সালাত বা শসা গোল
করে কেটে খেতে পারেন। শসা খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে অন্যান্য খাবারের সাথে খাওয়া অথবা
ছোট ছোট টুকরো করে কেটে খাওয়া।
শসা আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে কারণ শসা তে অনেক পরিমাণে পানি আছে এবং
শসা নিজে হজম হতে অনেক সময় নেয়। শসা খাওয়ার আগে অবশ্যই পানি দিয়ে ভালোভাবে
ধুয়ে নিতে হবে এবং দুই পাশে অল্প করে কেটে নিতে হবে। কেউ যদি শসার উপরের অংশটা
কেটে পছন্দ না করেন তাহলে সেটা ছিলে খেতে পারেন। চিকিৎসকরা বলেন যে সস্যার উপরের
ত্বকে অনেক ফাইবার রয়েছে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী আমাদের খাবার হজম
করতে সাহায্য করবে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে। আপনারা যদি প্রতিদিন একটি করে
শসা খান তাহলে এটি আপনাদের শরীরে অনেক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করবে।কারণ হাফ কাপ ছোট
করে কেটে নেওয়া শসা তে আছে ০.৩ গ্রাম পরিমাণে ফাইবার ১.৯ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
এবং ০.৩ গ্রাম পরিমাণে আছে প্রোটিন এজন্য একদিনে আমাদের একটি শসা খাওয়া যথেষ্ট।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না আবার অনেকেই জানেন
আজকে যারা জানেন না তারা জেনে নিন এই পোস্টের মাধ্যমে। শসাতে রয়েছে অনেক
পুষ্টিকর উপাদান এবং ভিটামিন যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এটা
একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর পানীয় এবং এটা তৈরি করা অনেক সহজ। বেশিরভাগ মানুষ
শরীরকে ডিটক্সিফাই করার জন্য নিয়মিত শসার জুস খান আবার মানুষ এটিকে সালাত
হিসেবেও অনেক পছন্দ করেন।
ব্যায়াম করার পরে অনেকেই শরীরকে হাইড্রেট রাখার জন্য শসার জুস খেয়ে থাকেন।
এছাড়াও অনেক উপকারিতা পাওয়ার জন্য আপনি প্রতিদিন খালি পেটে শসা খেতে পারেন।
খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা গুলো হচ্ছে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ শসাতে রয়েছে অনেক পানে যা আমাদের শরীরকে
হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রতিদিন খালি পেটে শসার জুস ও সালাদ খেলে
আপনার শরীর হাইড্রেট থাকবে এবং আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আপনার শরীরকে
ডিটক্স করে রাখার জন্য শসার পানীয় খেতে পারেন।
ওজন কমাতেঃ ওজন কমানোর জন্য আপনি শসার রস খেতে পারেন। এই শসার রস আপনার
ওজন কমাতে সাহায্য করবে কারণ এতে আছে নিম্ন ক্যালরি এবং পানি এবং আছে ফাইবার যা
আপনার খাবারকে সহজে হজম করবে। এছাড়াও খালি পেটে শসা খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে
কোলেস্টেরল অনেক কম হয়।
কোষের ক্ষতি কমাতেঃ শসাতে এবং শসার রসে রয়েছে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা
আমাদের শরীরের কোষের কোন ক্ষতি করবে না এবং ক্ষতি কমাতে সাহায্য করবে।
রক্ত চাপ কমাতেঃ রক্ত চাপ বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে যদি আপনার খাবারে সোডিয়ামের
পরিমাণ বেশি হয় এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ কম হয় তাহলে। কিন্তু শসার রসে আছে অনেক
উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম যা আপনার রক্তচাপ কমাতে অনেক সাহায্য করবে।
ত্বকের যত্নেঃ ত্বকের যত্নের অনেক উপকারিতা রয়েছে শসাতে। শসার রস আপনার
শরীর থেকে বিষাক্ত ও টক্সিন জাতীয় পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করবে যার ফলে
আপনার ত্বক পরিষ্কার এবং মসৃণ ও সুস্থ থাকবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তিঃ শসাতে রয়েছে অনেক ফাইবার যা আমাদের
কোষ্ঠকাঠিন্য, হজম, বদহজম, গ্যাস এবং এসিডিটির মতো অনেক সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে
অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে।
চোখের জন্য ভালোঃ শসা তে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন এ যা আমাদের চোখের অনেক
সমস্যা থেকে মুক্তি দিয়ে থাকে।
পানির ঘাটতি পূরণেঃ শসাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি যা প্রতিদিন খালি
পেটে খেলে আপনার শরীরে পানের ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়াও আমাদের কিডনি, ব্লাডার,
ইউরিনারি এবং লিভারের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে শসা।
ওপরে দেওয়া এই তথ্যগুলো সাধারণ তথ্য কোন বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্য নয়। নির্দিষ্ট
কোন তথ্য জানতে হলে আপনি একজন উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলাকে পুষ্টিকর ফল এবং শাকসবজি খেতে হয় অনেক বেশি পরিমাণে
কারণ এতে করে তার পেটের বাচ্চা এবং মা দুজনে সুস্থ থাকবে। এ সময় যদি আপনারা
প্রচুর পরিমানে তাজা ফল এবং শাকসবজি খান তাহলে অনেক পুষ্টি পাবেন এবং বিশেষজ্ঞরা
এগুলো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থায় শসা খেলে বিভিন্ন উপকার পাওয়া
যায়। শসাতে আছে ভিটামিন সি, কে, বি এবং পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, খনিজ ও
মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান যেগুলো
গর্ভাবস্থায় একজন মা এবং তার পেটে থাকা ভ্রুণ কে সুস্থ এবং তার বিকাশের জন্য
অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শসাতে উপস্থিত থাকা ভিটামিন বি৬ এবং
ভিটামিন বি৯ একজন গর্ভবতী মহিলার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং তার মুড ভালো
করে। এ সময় গর্ভবতী মহিলাদের ঘন ঘন মুড পরিবর্তন হয় এজন্য আপনারা শসা খেতে
পারেন। শসা আছে পটাশিয়াম যার রক্ত চাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে
গর্ভাবস্থায়। গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন এর ফলে রক্তচাপ ওঠা নামা করে
থাকে এক্ষেত্রে আপনারা শসা খেলে অনেক উপকার পাবেন। শসা সোডিয়ামের মাত্রা কমাতে
পারে এবং তরলের ভারসাম্য বজায় রাখে। শসা খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় রক্তচাপের
মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কারো কারো শসা খাওয়ার ফলে ঘন ঘন
প্রসাব হয় এবং আবার কারো এলার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে হতে পারে বদহজম কারণ
শসাতে থাকে লবণ ও পানির পরিমাণ বেশি এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী
গর্ভাবস্থায় শসা খাওয়া উচিত।
রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা
শসা হচ্ছে একটি লোক্যালোরি যুক্ত এবং বেশি পরিমাণে পানি থাকা একটি সবজি যাতে অনেক
ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। শসা
খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন কমে, আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়, আমাদের শরীর
হাইড্রেট থাকে, আমাদের চোখের, ত্বকেরও নখের অনেক সমস্যা দূর হয়, আমাদের শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ও আমাদের হজম এর সমস্যা সমাধান হয় এছাড়াও আরো অনেক
উপকারিতা
পাওয়া যায় শসা খাওয়ার ফলে। কিন্তু রাতে শসা খেলে কি হয় বা কি উপকারিতা পাওয়া
যায় এ কথা আজকে আমি আপনাদের বলব। রাতে শসা খাওয়ার ফলে ও অনেক উপকারিতা পাওয়া
যায় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তাহলে আসুন জানা যাক রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা কি
কি
- আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়
- ওজন কমানোর জন্য অনেক উপকারী
- আমাদের রক্তচাপ ঠিক রাখতে সাহায্য করে
- আমাদের ঘুমের মান বাড়াতে সাহায্য করে
- চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
- আমাদের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে
- হাড়ের অনেক সমস্যা নিবারণ করে
- ক্ষতিগ্রস্ত মেরামত করে ও কোষের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে
- কিডনির জন্য অনেক উপকারী
- আমাদের হার্ট ভালো রাখে এবং লিভার ডিটক্সিফাই রাখার কাজ করে
- আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে
- দেহে পানির ঘাটতি পূরণ করে এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখে
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে
- মুখের ভেতরের দুর্গন্ধ দূর করে
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়ামের উৎস।
ওজন কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম
শসা তে আছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন কে এবং ফোলেট এর মত অনেক
পুষ্টি উপাদান। আরো আছে কম পরিমাণে ক্যালরি যা আপনার ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে।
আপনারা যারা শরীরের ওজন কমাতে চান তারা নিয়মিত শসা খেতে পারেন এটা একটি ভালো
সবজি খাবার যা আপনার খাবারকে সহজে হজম করে। এছাড়াও শসা তে আছে কম পরিমাণে চিনি
যা আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু আপনার শরীরেপ্রোটিনের
যোগান দেওয়ার জন্য আপনাকে
খেতে হবে পনির মাছ মাংস এবং ডাল ইত্যাদি। শসা তে আছে হাই ফাইবার যা আপনাকে পেট
ভরা রাখতে সাহায্য করবে। শসা আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে
এবং এতে থাকা ইথানল নামক উপাদান আমাদের শরীরে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে
থাকে। শসাতে থাকে অনেক পরিমানে পানি যা আপনার খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে
এবং আপনার শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে আপনার শরীরের পানির অভাব পূরণ করে।
ওজন কমানোর জন্য আপনি আপনার খাবারের তালিকায়
শসার সালাত রাখতে পারেন এটি আপনার ওজন কমাতে অনেক কার্যকরী ভাবে প্রমাণিত। আপনি
যদি দুপুরে এবং রাতের খাবারের সাথে শসার সালাদ খান তাহলে এটা আপনার ওজন কমাতে
কার্যকরী। এছাড়াও আপনি ঘরে বসে শসার স্যুপ তৈরি করে খেতে পারেন এতে করে আপনার
ওজন কমবে। শসার সালাতের সাথে আপনি লেবুর রস, অলিভ অয়েল এবং আট থেকে নয়টি জলপাই
মিশিয়ে তার সাথে টমেটো, গোলমরিচ এবং পুদিনা পাতা সাজিয়ে খেতে পারেন এতে করে
অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে।
চোখে শসা দিলে কি হয়
আমরা অনেকেই আছি যারা চোখে শসা দিয়ে থাকি এবং চোখের ওপর শসা রাখলে কি হয় এ
সম্পর্কে বিশেষ কিছু তথ্য জানিনা আজকে জানাবো আপনাদের। আমরা অনেকে চোখের ওপর শসার
টুকরো দিয়ে থাকে ফেসিয়াল বা রূপচর্চা করার জন্য কিন্তু এই শসা চোখে দিলে কি হয়
এগুলো সম্পর্কে আজ জানব।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেঃ শশায় অনেক ভিটামিন এ এবং খনিজ আছে। আরো আছে
থায়ামিন, ভিটামিন বি ৬, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি আছে এই উপাদান
গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমনি এগুলো আমাদের চোখে দৃষ্টি শক্তি
বাড়াতে অনেক কার্যকর।
চোখের ফোলা কমাতেঃ চোখের যত্ন নেওয়ার জন্য অনেক কার্যকর হচ্ছে শসা। শসাতে
প্রদাহ নাশক উপাদান আছে এজন্য চোখের ফোলা ভাব দূর হয় সহজেই। আবার শসাতে জলীয়
অংশ বেশি থাকায় আমাদের চোখের শুষ্ক ভাব দূর করে।
ক্লান্তি দূর করতেঃ ক্লান্তি দূর করার জন্য শসা টুকরো করে কেটে চোখের ওপর
রেখে দিতে পারেন এতে করে আপনার ক্লান্তি দূর হবে এবং আপনি সতেজ অনুভব করবেন।
ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতেঃ শসার জোসে আছে ফাইটোকেমিক্যাল কেলাজেন
যা এর ধরনের প্রোটিন যা আমাদের ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।
ডার্ক সার্কেল দূর করতেঃ শসাতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সিলিকা যার ফলে
আমাদের ত্বকের ডার্ক সার্কেল এবং কালো দাগ দূর হয় আমাদের মুখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি
পায়।
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারঃ আমাদের চোখের চারপাশের চামড়া অনেক পাতলা হয়
তা কুচকে যাওয়া এবং ত্বকে বলি রেখা দূর করতে সহজেই প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার
হিসেবে কাজ করে শসা।
চোখের নিচে ফাইনলাইনঃ চোখের নিচের চামড়া অনেক সময় ঝুলে পড়ে এজন্য
আপনারা শসা ব্যবহার করতে পারেন। শসা পেস্ট করে নিয়ে তার সাথে
মধু এবং লেভেন্ডার তেল মিশিয়ে চোখের নিচে ভালোভাবে হালকা করে লাগিয়ে রাখলে অনেক
উপকার পাওয়া যায়।
লেখকের মন্তব্য
ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের জন্য খালি পেটে শসা খাওয়ার উপকারিতা এবং ওজন
কমাতে শসা খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও রাতে শসা খাওয়ার উপকারিতা শসা খাওয়ার সঠিক সময়
এবং নিয়ম ইত্যাদি বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছে। যেগুলো পড়ে আপনারা
অনেক উপকৃত হবেন এবং সঠিক তথ্য জানতে পারবেন তাই এই পোস্টটি আপনাদের পরিচিতদের
মাঝে শেয়ার করে দিবেন তাহলে সবাই উপকৃত হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url