কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা জানুন
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা এবং
অপকারিতা ছাড়াও
গর্ভাবস্থায়
কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু
পানি যারা পাননি তারা আজকে আমাদের পোস্টের মাধ্যমে জেনে নিন। এজন্য আপনাদেরকে শেষ
পর্যন্ত পড়তে হবে।
এখানে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি
উপকারিতা এবং অপকারিতা সহ কচুর লতির পুষ্টি উপাদান গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার
উপকারিতা, কচুর লতি চাষ পদ্ধতি এবং কচুর লতিতে কি এলার্জি আছে ইত্যাদি আরো অনেক
কয়েকটি বিষয়ে। এর বিষয়গুলো পড়ে আপনারা অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং উপকৃত
হবেন। কচুর লতিতে আছে অনেক পুষ্টি এবং ভিটামিন যেগুলো ছোট বড় সকলের এবং গর্ভবতী
মহিলাদের জন্য অনেক উপকার করে। এই বিষয়গুলো জানতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
কচুর লতি আমাদের আমাদের বাংলাদেশে চাষ করা হয় এবং এটা এখন এটা জনপ্রিয় সবজি। এই
সবজিটা এখন অনেকেই খেতে খুব পছন্দ করে এবং অনেক সুস্বাদু একটা খাবার। এই সবজিটা
চিংড়ি এবং শুটকি মাছ দিয়ে রান্না করা যায় এবং অনেক সুস্বাদু হয়। কচুর লতিতে
অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান আছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক
উপকারী এছাড়াও গর্ভবতী মহিলা ও বাড়ন্ত শিশু সহ যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এবং
যাদের অপারেশন করা হয়েছে তারা অপারেশনের পরে এই কচুর লতি খেতে পারেন এতে
করে অনেক উপকার হবে। এতে থাকা ভিটামিন এ আমাদের রাতকানা রোগ এবং চোখে নানা রকমের
রোগ থেকে রক্ষা করে দৃষ্টি শক্তি বাড়ে। এতে থাকা আইরন আমাদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায় এবং রক্তশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে।
এছাড়াও কচুর লতিতে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের এবং গর্ভবতী মায়ের হাড় শক্ত এবং
মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া ভিটামিন সি নানা রকম সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা
করে ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে ক্যান্সার বিরোধী
উপাদান আছে কচুর লতিতে।
কচুর লতির পুষ্টি উপাদান
কচুর লতি আমরা সকলে পছন্দ করি এটা চিংড়ি মাছ দিয়ে রান্না করলে অনেক স্বাদের
একটা তরকারি হয় এছাড়াও এটা আরো অন্যান্য ছোট মাছ চিংড়ি শুটকি ইত্যাদি দিয়ে
রান্না করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এই কচুর লতি স্বাদে যেমন অতুলনীয় তেমনি
এটার অনেক পুষ্টিগুণ আছে। লতিতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, আঁশ,
ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও লোহা ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। এই কচুর লতিতে থাকা থাকা
আঁশ আমাদের শরীর থেকে বজ্র পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং আমাদের খাবার
হজম
করতে সাহায্য করে। আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তারা কচুর লতি প্রতিদিনের খাবার
তালিকায় রাখতে পারেন এবং এতে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হাড়ের গঠন শক্ত করতে
সাহায্য করে। এছাড়াও এতে আছে আয়োডিন এবং ভিটামিন বি যা আমাদের মস্তিষ্কের
স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও ত্বক এবং চুলের জন্য এগুলো অনেক
উপকারী। কচুর লতিতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
পারে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন রকমের নানা সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে। এতে আছে
লোহা।
আপনারা যারা রক্তশূন্যতার সমস্যায় ভুগছেন তারা কচুর লতি খেতে পারেন। কচুর লতিতে
আছে আয়রন যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আমাদের
শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। গর্ভবতী মহিলাদের বাড়ন্ত শিশু খেলোয়াড় এবং
কেমোথেরাপি দেওয়া হয় যে সব রোগীদের তাদের সুস্থতার জন্য কচুর লতি অনেক উপকারী।
এটি আমাদের কোলেস্টেরল বা চর্বি কমাতে সহায়তা করে থাকে। এতে থাকা ভিটামিন বি
আমাদের হাত পা এবং মাথার ওপরের অংশ গরম হয় এরকম সমস্যা থেকে
রক্ষা করে এবং হাতে পায়ে ঝিঝি ধরা এই সমস্যা থেকে দূরে রাখে। আপনারা যারা
নিয়মিত কচুর লতি খান তাদের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যাবে না এজন্য
ডায়াবেটিসের রোগীরাও এই কচুর লতি খেতে পারবেন। আমাদের মস্তিষ্কের রক্ত চলাচলের
জন্য ভিটামিন বি অনেক দরকার আর যদি কচুর লতি খাওয়া হয় তাহলে এর সমস্যা থেকে
মুক্তি পাওয়া যাবে। নিচে কচুর লতির পুষ্টি উপাদান গুলো বলা হলো
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কচুর লতিতে আছে
- শর্করা- ৬.৭ গ্রাম
- প্রোটিন- ৫গ্রাম
- চিনি- ৩ গ্রাম
- শক্তি- ১৭৭ কিজু (৪২ kcal)
- স্নেহ পদার্থ- ০.৭৪গ্রাম
- খাদ্য আঁশ- ৩.৭গ্রাম
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কচুর লতিতে ভিটামিনের পরিমাণ আছে
- ভিটামিন এ আছে-২৪১ μg
- ভিটামিন বি আছে-৬০.১৪৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি আছে-৫২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন ই আছে-২.০২ মিলিগ্রাম
- বিটা ক্যারোটিন আছে-২৮৯৫ μg
- লুটিন জিয়াক্সানথিন আছে- ১৯৩২ μg
- থায়ামিন (বি১) আছে- ০.২০৯ মিগ্রা
- রিবোফ্লাভিন (বি২) আছে- ০.৪৫৬ মিগ্রা
- ফোলেট (বি৯) আছে- ১২৬ μg
- ভিটামিন কে আছে- ১০৮.৬ μg
- নায়াসিন (বি৩) আছে- ১.৫১৩ মিগ্রা।
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কচুর লতিতে খনিজ পদার্থ আছে
- ম্যাগনেসিয়াম-৪৫ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস-৬০ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম-১০৭ মিলিগ্রাম
- ম্যাঙ্গানিজ-০.৭১৪ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম-৬৪৮ মিলিগ্রাম
- লৌহ-২.২৫ মিলিগ্রাম এবং
- জিংক-০.৪১ মিলিগ্রাম।
কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা
কচুর লতি একটা সবজি আর এই সবজিটা কম বেশি আমরা সকলেই পছন্দ করি খেতে। কারন এই
সবজিটাতে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন উপাদান আছে যেগুলো আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের
জন্য অনেক উপকারে আসে। বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতেই এখন এই কচুর লতি পাওয়া
যায় এবং কচুর লতির চাষ করা হচ্ছে এখন। কচুর লতিতে আছে ভিটামিন বি,এ, ভিটামিন সি,
আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, ডায়াটারি ফাইবার, আয়রন, লোহা ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। কচুর
লতি খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে সেগুলো নিজে বলা হলো
- কচুর লতিতে আছে ডায়াটারি ফাইবার যা আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখে।
- কচুর লতিতে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় শক্ত করে এবং চুল পড়া রোধ করে।
- ভিটামিন সি আছে আর এটা আমাদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেই সাথে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে।
- কচুর লতিতে আছে অনেক আয়রন। গর্ভবতী মহিলা বাড়ন্ত বাচ্চাদের এবং যারা খেলোয়ার তাদের জন্য এছাড়াও কেমোথেরাপি দেওয়া রোগীদের জন্য এই কচুর লতি অনেক উপকারী।
- কচুর লতি খাওয়ার ফলে আমাদের চর্বি অর্থ বা কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে পারা যায়।
- এতে থাকা ভিটামিন বি আমাদের হাত পা ঝিঝি ধরা এবং হাত-পা এবং মাথার ওপরের অংশ গরম হয়ে যাওয়া এ সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- কচুর লতিতে থাকা ভিটামিন বি আমাদের মস্তিষ্কের সুষ্ঠুভাবে রক্ত চলাচলের জন্য অনেক দরকার।
- এতে থাকা আয়োডিন আমাদের দেহ থেকে বজ্র পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে এবং এটা খাওয়ার ফলে এসিডিটি এবং গ্যাস্টিকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে।
- কচুর লতি আমাদের রক্তে চিনির মাত্রা বাড়াতে পারে না তাই ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের কচুর লতি খেতে কোন ভয় নেই তারা নিঃসন্দেহে খেতে পারেন।
- আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তারা কচুর লতি খেতে পারেন আবার রক্তশূন্যতার সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা কচুর লতি খেলে অনেক উপকার হবে।
- কচুর লতিতে থাকা আয়োডিন আমাদের দাঁত, চুল এবং হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে।
- কচুর লতিতে থাকে অনেক পানি আর গরমের সময় আমাদের শরীর থেকে অনেক পানি বের হয়ে যায় এ কারণে আপনারা খাবার তালিকায় কচুর লতি রাখতে পারেন।
- যারা আলসারের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কচুর লতি খেতে পারেন এতে থাকা ফাইবার এবং বিভিন্ন রকমের পুষ্টি উপাদান আপনার এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
- আপনার হজম শক্তি উন্নত করার জন্য আপনার খাবার তালিকায় রাখতে পারেন কচুর লতি। এছাড়াও আপনার হার্টের ক্রিয়া মজবুত হবে কচুর লতি খাবার ফলে।
- নিয়মিত কচুর শাক এবং কচুর লতি খাওয়ার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভে থাকা সন্তানের স্মৃতিশক্তি বাড়বে এবং জ্ঞান বহু গুনে ভালো হবে।
- গর্ভবতী মহিলারা কচুর লতি খাওয়ার ফলে তাদের আমাশয় অথবা পেট ফাঁপার সমস্যা দূর হবে।
- এছাড়াও এটি আমাদের শুক্র বৃদ্ধি করে থাকে এবং শরীর পুষ্ট করতে সাহায্য করে।
- গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার ফলে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কোন কষ্ট হবে না এবং শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ সচল থাকবে।
- কচুর লতিতে ভিটামিন কে আছে এটা আমাদের রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- কচুর লতিতে আছে ভিটামিন সি যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ক্ষত সারাতে সাহায্য করে।
- কচুর লতিতে অর্থাৎ ১০০ গ্রাম লতিতে আছে ৬৫ কিলো ক্যালরি শক্তি যা আমাদের অর্থাৎ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাদের প্রতিদিনের শক্তির ২.৪৩% পূরণ করতে পারে।
- কচুর লতিতে আছে ফাইবার যেটা আমাদের রক্তনালীতে চর্বি জমতে বাধা দেয় এজন্য আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে।
- কচুর লতিতে আছে ভিটামিন এ যেটা আমাদের রাতকানা রোগ এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাবে যে সকল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে।
- কচুর লতি আমাদের শরীরে ভিটামিন সি এবং আয়রনের অভাব পূরণ করতে পারে এজন্য আমাদের খাবার তালিকায় কচুর লতি রাখা উচিত।
কচুর লতি আমাদের সবার কাছে একটা জনপ্রিয় সবজি হয়ে উঠেছে এখন কারণ এর অনেক
পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন আছে যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এই
সবজিটা অন্যান্য সবজির তুলনায় এখন দামে সস্তা এবং সুস্বাদু। এই সবজিটা দিয়ে
নানা রকমের রেসিপি তৈরি করে খাওয়া যায় এবং সেগুলো অনেক সুস্বাদু হয়। এটা
খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে হজমে সমস্যা দূর হয়, কোষ্ঠকাঠিন্য
দূর হয়, আমাদের ত্বক এবং চুল এর জন্য অনেক উপকারী।
এছাড়াও আমাদের হাড়ের গঠনের জন্য এবং শক্ত হাড়ের জন্য এটা অনেক দরকার। এতে থাকে
ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফাইবার, ভিটামিন সি ও বি ইত্যাদি আরও নানা পুষ্টি উপাদান।
এতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন
সংক্রমক রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে। এর যেমন অনেক উপকারিতা আছে তেমনি কিছু
অপকারিতা আছে। কচুর লতি খাওয়ার অপকারিতা গুলো হল
- কচুতে থাকে অক্সালেট এজন্য এটা রান্না করার পরেও খাওয়ার সময় আমাদের গলা চুলকায়। এজন্য আপনারা কচুর লতির তরকারির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন।
- অনেকের কচু খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা এবং শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে যাদের এ ধরনের সমস্যা হয় তারা কচু খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- তারাও যাদের হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ কোলেস্টেরল এর সমস্যায় আক্রান্ত অথবা যারা হাই ব্লাড প্রেসারে ভুগছেন সে সকল ব্যক্তিরা প্রচুর লতি খাওয়ার সময় এর সাথে চিংড়ি এবং শুটকি বর্জন করবেন।
- আপনাদের মধ্যে যাদের শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি তারা কচুর লতি খাবেন না।
- বেশি পরিমাণে কচুর লতি খাবার ফলে আমাদের পাচনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
- বেশি পরিমাণে কচুর লতি খাওয়ার ফলে তো উস্কো খুস্কো এবং শুষ্ক করে তুলবে এটা।
- কচুর লতি বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না হতে পারে অথবা পেট ভারী ভাব আপনারা অনুভূত করতে পারেন কারণ এতে বেশি পরিমাণে আছে ফাইবার উপাদান।
- বেশি পরিমাণে কচুর লতি খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া পেট ফাঁপা এবং বদ হজমের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- বেশি পরিমাণে কচুর লতি খেলে আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম অক্সাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে যার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
কচুর লতিতে কি এলার্জি আছে
কচুর লতিতে কি এলার্জি আছে এ বিষয়ে অনেকেরই প্রশ্ন জাগে। হ্যাঁ কচুর লতিতে
এলার্জি আছে কিনা তা জানার জন্য আপনাকে কচুর লতি খেতে হবে এবং আপনাকে লক্ষ্য
রাখতে হবে যে কচুর লতি খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে কোন রকমের এলার্জির কোন লক্ষণ
দেখা দিচ্ছে কিনা। যদি কোন লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে কচুর লতিতে আপনার
এলার্জি আছে। আর যদি এলার্জির কোন রকমের লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা না দেয় বা আপনি
বুঝতে না পারেন তাহলে বুঝতে হবে
আপনার কচুর লতিতে এলার্জি নেই। কচুতে আছে অক্সালেট অ্যাসিড এজন্য এটা খাওয়ার
সময় আমাদের গলা চুলকায়। এজন্য কচু অথবা কচুর লতি রান্না করার সময় আপনারা লেবুর
রস অথবা তেতুলের রস কিছুটা ব্যবহার করতে পারেন। আবার অনেকের কচু খাওয়ার ফলে
শরীরে এলার্জি অথবা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে যাদের এ ধরনের সমস্যা গুলো হয়
তারা কচু অথবা কচুর লতি খাবেন না। যাদের হৃদরোগ ডায়াবেটিস এবং উচ্চমাত্রার
কোলেস্টেরল ইত্যাদি সমস্যায় আক্রান্ত
রোগীরা এবং যাদের হাই ব্লাড প্রেসার আছে তারা কচুর লতি রান্না করে খাওয়ার সময়
চিংড়ি এবং শুটকি মাছ এড়িয়ে খাবেন। আপনারা নিরাপদ খাবার গ্রহণ করুন এবং সুস্থ
থাকুন সব সময়।
কচুর লতির ইংরেজি কি
ইতোমধ্যেই আমরা কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে অনেক তথ্য
জেনেছি। এছাড়াও আরো অনেক কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জেনেছি যেগুলো পড়ে আমরা অনেক
তথ্য জানতে পারলাম। এখন আমরা জানবো কচুর লতির ইংরেজি কি। কচুর লতির ইংরেজি হচ্ছে
Arum lobe। বাংলাদেশের জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলা কচুর লতি চাষের জন্য
বিখ্যাত। এই জেলার কচুর লতি এতই বিখ্যাত এবং এর স্বাদ এতই বেশি যে এটা এখন আমাদের
দেশের
চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এই জেলা ছাড়াও বাংলাদেশের
আরো অনেক জেলা যেমন খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, ঢাকা এবং টাঙ্গাইল ইত্যাদি জেলাতেও
এখন কচুর লতি চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের জয়পুর হাটের কচুর লতি এখন আমাদের দেশের
চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথেও বর্তমানে কাতার, ওমান, মালেশিয়া, আমেরিকা, সৌদি আরব
এবং সিঙ্গাপুর ইত্যাদি দেশে এই জয়পুরহাটের কচুর লতির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের খাবারের দিকে একটু বেশি নজর দিতে হয় এ সময়
তাকে পুষ্টিকর এবং সবুজ শাকসবজি ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হয়। যাতে করে মা ও
শিশু দুজনে ভালো থাকে এবং পরিণত পরিমাণে পুষ্টি পায়। এর মধ্যে একটি খাবার হচ্ছে
কচুর লতি। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা অবশ্যই কচুর লতি খেতে পারবেন কারণ এতে
আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং পুষ্টি উপাদান। যেটা একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য
অনেক উপকার করবে। কচুর লতিতে আছে ক্যালসিয়াম,
ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি,সি, বিটা ক্যারোটিন, পটাশিয়াম, আয়রন, লৌহ এবং
জিংক ইত্যাদি আরো পুষ্টি উপাদান। আর এ সকল পুষ্টি উপাদান গুলো একজন গর্ভবতী
মায়ের এবং তার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। গর্ভাবস্থায় কচুর
লতি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলা হলো। কচুর লতিতে থাকে আঁশ আর এটা আমাদের শরীর
থেকে বর্জ্য পদার্থ গুলোকে বের করে দেয় এবং খাদ্য হজম করতে সাহায্য করে। এজন্য
গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে
এবং গর্ভবতী মায়ের দেহ থেকে বিষাক্ত বা বর্জ্য পদার্থগুলো সহজেই বের হয়ে যাবে।
কচুর লতিতে প্রচুর পরিমাণে থাকে
পানি
আর এটা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের অর্থাৎ গর্ভবতী মায়ের শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ
হবে। শরীর ঘামের মাধ্যমে আমাদের শরীর থেকে অনেক পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় আর
এটা পূরণ করার জন্য আমাদের খাবার তালিকায় কচুর লতি রাখা যেতে পারে। একজন গর্ভবতী
মায়ের শরীরের ওজন বেশি হওয়ার কারণে তার পেটের শিশুর সমস্যা দেখা দিতে পারে আর
এ
সময় ওজন কমানোর জন্য একজন গর্ভবতী মা কচুর লতি খেতে পারেন। কচুর লতিতে থাকে
ক্যালসিয়াম আর এটা গর্ভবতী মায়ের হাড় শক্ত এবং তার শিশুর হাড় শক্ত এবং মজবুত
করতে সাহায্য করবে। এজন্য শিশুর হাড় এবং দাঁত এর গঠন ভালো করার জন্য একজন
গর্ভবতী মায়ের কচুর লতি খাওয়া প্রয়োজন। এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা
গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রচুর প্রয়োজনীয় এর ফলে তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়বে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করবে। লৌহ থাকে
কচুর লতিতে যা রক্তশূন্যতার থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কচুর লতি খাওয়ার ফলে
গ্যাস্ট্রিকের,পেট ফাঁপা ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যা গুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
খারাপ কোলেস্টেরল দূর করবে এবং ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াবে। ক্যান্সার তথা
স্তন ক্যান্সার কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন
এ যার কারণে আমাদের রাতকানা রোগ এবং চোখের নানা রকম সমস্যা থেকে আমরা রক্ষা পাব
দৃষ্টিশক্তি বাড়বে। কচুর লতিতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের
ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকার করে এটা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এছাড়া গর্ভাবস্থায় বাড়ন্ত শিশু এবং যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন আবার বড় ধরনের
অপারেশনের পর আপনারা এই কচুর লতি খেতে পারেন এতে করে আপনাদের অনেক উপকার হবে।
কচুর লতিতে কি ভিটামিন আছে
আমরা আগেই জেনেছি যে কচুর লতি খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে এটা আমাদের স্বাস্থ্যের
জন্য অনেক উপকারী এবং গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার ও অনেক উপকারিতা আছে। কচুর
লতি খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় হজম শক্তি উন্নত হয়
দৃষ্টি শক্তি বাড়ে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ইত্যাদি আরো
অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। এখন হয়তো আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কচুর
লতিতে আবার কি ভিটামিন আছে এবং কি অনুপাতে আছে এবং কোন কোন ভিটামিন আছে এগুলো
সম্পর্কে।
১০০ গ্রাম পরিমাণ কচুর লতিতে আছে
- ভিটামিন এ আছে-২৪১ μg
- ভিটামিন বি আছে-৬০.১৪৬ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন সি আছে-৫২ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন ই আছে-২.০২ মিলিগ্রাম
- বিটা ক্যারোটিন আছে-২৮৯৫ μg
- লুটিন জিয়াক্সানথিন আছে- ১৯৩২ μg
- থায়ামিন (বি১) আছে- ০.২০৯ মিগ্রা
- রিবোফ্লাভিন (বি২) আছে- ০.৪৫৬ মিগ্রা
- ফোলেট (বি৯) আছে- ১২৬ μg
- ভিটামিন কে আছে- ১০৮.৬ μg
- নায়াসিন (বি৩) আছে- ১.৫১৩ মিগ্রা।
গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের খাবারের দিকে বেশি নজর দিতে হয় এবং এ সময়টা সতর্কতার
সাথে খাবার খাওয়া প্রয়োজন। এ সময় এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খাওয়া ঠিক নয় সে
সকল খাবার খাওয়ার কারণে গর্ভবতী মায়ের সমস্যা হতে পারে। আজকে আপনারা আমার এই
পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নিন গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার খাওয়া যাবে না। এ সময়টাই
কিছু খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার কথা বলেছে বিশেষজ্ঞরা তাহলে কোন খাবার গুলো
জেনে নেওয়া যাক
কম সিদ্ধ মাছঃ গর্ভাবস্থায় কম সিদ্ধ মাছ অথবা কাঁচা মাছ খাওয়া উচিত নয়
কারণ এতে থাকতে পারে নানা রকমের জীবাণু। আর এই জীবাণুগুলো গর্ভবতী মায়ের জন্য
জটিল রোগ তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে তাই এগুলো নোরো ভাইরাস,সালমোনেল্লা এবং
লিস্টেরিয়া ইত্যাদি নানা রকম ক্ষতিকর জীবাণু গর্ভবতী মায়ের শরীরে বাসা বাধতে
পারে।
কম সিদ্ধ মাংসঃ গর্ভাবস্থায় কম সিদ্ধ মাংস খাওয়া যাবেনা এটাও গর্ভবতী
মায়ের জন্য অনেক ক্ষতিকর একটা খাবার। এতে থাকে ব্যাকটেরিয়া এবং প্যারাসাইটস
এছাড়াও আরো যেমন ই- কলি,সালমোনেল্লা,টোক্সোপ্লাসমা এবং লিস্টেরিয়া ইত্যাদি
সংক্রমনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। আর এরকমের সংক্রমণ থেকে একজন গর্ভবতী মায়ের চোখের
রোগ, স্নায়ুর অসুখ, স্টিল ব্যর্থ এবং মৃগী ইত্যাদি নানা জটিলতার সমস্যা হতে
পারে।
কম সিদ্ধ করা ডিমঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের কম সিদ্ধ করার ডিম
খাওয়া উচিত নয় কারণ এর মাধ্যমে তার শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। এই
কম সিদ্ধ করা ডিমের মাধ্যমে তার শরীরে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে।
আর এই ব্যাকটেরিয়া তার শরীরে প্রবেশ করার পরে গর্ভবতী মায়ের জ্বর, পায়খানা,
পেটে ব্যথা এবং বমি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে আর এ সকল সমস্যা গুলো
গর্ভাবস্থায় একদম ভালো লক্ষণ নয়।
কফি পানঃ কোন মহিলা যদি গর্ভধারণ করে থাকে তাহলে এ সময় তাকে কফি পান করা
থেকে বিরত থাকতে হবে। এ সময় যদি একজন গর্ভবতী মহিলা ২০০ মিলিগ্রামের থেকে বেশি
সাদা কফি পান করে তাহলে তার শরীরে এটা নানা রকমের সমস্যা তৈরি করবে। এটা গর্ভে
থাকা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে বাধা দিবে।
অ্যালকোহল পানঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা কোন রকমের অ্যালকোহল পান
করতে পারবে না কারণ এতে করে ভ্রূণের ফেটাল অ্যালকোহল সিনড্রোম এর সমস্যা হতে
পারে। এতে করে জন্মের পরে শিশুর হার্টের সমস্যা এবং আরো একাধিক অঙ্গের নানা
সমস্যা হতে পারে।
যকৃতঃ এ সময় একজন গর্ভবতী মহিলাকে যকৃত এবং অন্যান্য অঙ্গের গোস্ত থেকে
বিরত থাকতে হবে কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে থাকে আইরন থাকে এটা গর্ভবতী মায়ের জন্য
অনেক দরকার কিন্তু এতে আরো উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ থাকে আবার এ ধরনের গোস্ত এ
থাকে বিষক্রিয়ার ঝুঁকি।
অঙ্কুরিত বীজ এবং খাদ্যশস্যঃ এ সময় একজন গর্ভবতী মায়ের অঙ্কুরিত
বীজ,খাদ্যশস্য এবং সিম আরও কাঁচা মূলা ও রেডি-টু-ইট সালাদ ইত্যাদি খাবার গুলো
থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ এই খাবারগুলোতে থাকে লিস্টেরিয়া, সালমোনিলা এবং ই-কলির
মতো অনেক ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া যেগুলো গর্ভবতী মহিলার জন্য অনেক ক্ষতিকর।
উচ্চ মাত্রার পারদ যুক্ত মাছঃ কিছু কিছু মাছে উচ্চমাত্রায় পারদ অথবা
মার্কারি থাকে। শিকারি মাছ যথা হাঙ্গর,মার্লিন,সোর্ড ফিশ এবং কিং ম্যাককেরেল
ইত্যাদি মাছে অনেক বেশি পরিমাণে মার্কারি থাকে এজন্য এ সকল মাছ খাওয়া থেকে বিরত
থাকতে হবে।স্মোকড স্যালমন মাছ রান্না না করে খাওয়া যাবে না।
কাঁচা ও পাস্তুবায়ন ছাড়া দুধঃ এ সময় কাঁচা ও পাস্তুরায়ন ছাড়া দুধ ও এ
ধরনের দুধ থেকে তৈরি করা খাবার এবং কোমল পনির খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ
এগুলোতে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যেমন লিস্টেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে
লিসটেরিওসিস রোগ হতে পারে। আবার গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলাকে মেয়াদ
উত্তীর্ণ খাবার খাওয়া থেকে বেঁচে থাকতে হবে কারণ এসব খাবারের থাকে ব্যাকটেরিয়া।
কচুর লতি চাষ পদ্ধতি
অন্যান্য দেশের মতো আমাদের বাংলাদেশের কচুর লতির চাষ করা হয় এবং এর চাহিদা এখন
অনেক বেশি আমাদের দেশে। আবার এখন বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে এই কচুর লতি। কচুর
লতিতে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন রয়েছে বাজারে এখন এক কেজি লতি বিক্রি করা
হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এখন অনেক কৃষক এই কচুর লতি চাষ করে অনেক লাভবান হচ্ছে।
তাহলে জেনে নিন কচুর লতি চাষ পদ্ধতি। এই লতি উষ্ণ জলবায়ুতে চাষ করলে ভালো হয়
এবং কচুর লতি চাষ করার জন্য জমিটা হতে হবে একটু নিচু যেখানে
বৃষ্টির পানি জমে থাকে এছাড়াও এই কচুর লতি অল্প আলো বা ছায়াতে চাষ করলে ভালো
জন্মে। রোদ বেশি হলে ভালো হয় কচুর লতির ফলন। এই কচুর লতি সব ধরনের মাটিতে চাষ
করা যায় তবে আপনারা যদি দোআঁশ মাটি পলি মাটি এবং বেলে দোআঁশ মাটিতে কচুর লতির
চাষ করেন তাহলে ভালো হবে। আমাদের বাংলাদেশে অনেক রকমের কচুর লতির জাত আছে। এ
ধরনের জাতের গাছের পাতা ছোট এবং গাছ ও ছোট এবং চিকন হয় লতি হয় লম্বা এবং সরু।
আবার উন্নত জাতের লতি হয় মোটা এবং লম্বা গিটযুক্ত মাংসল
এবং রান্না করার সময় দ্রুত গলে যায়। বারি পানি কচু এক এবং দুই এই দুটি জাত
উন্নত এবং লতি চাষ করার জন্য ভালো। লতি চাষ করার জন্য সেপ্টেম্বর মাসে লতি তুলা
শেষ আগেই এর চারা সংগ্রহ করতে হবে এবং এই চারাগুলো লতির আগায় যেগুলো জন্ম সেগুলো
নিতে হবে। তারপর এই চারাগুলো অন্য জায়গায় পুঁতে রাখতে হবে এবং এই চারাগুলো
শীতের আগে লাগাতে হবে যাতে করে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসে দিকে এসে এসব গাছ
থেকে লতি পাওয়া যায়। লতি চাষ করার জন্য প্রথমে আপনাদেরকে জমি তৈরি করতে হবে
এজন্য
জমির মাটি তিন থেকে চার বার চাষ দিয়ে সমান করে নেওয়া দরকার। এর চারাগুলো জমিতে
সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো যেতে পারে এভাবে যদি আপনারা সারি করে লাগান তাহলে প্রতি
হেক্টরে চারা লাগবে প্রায় ৩৮০০০। কচুর লতির চারার জন্য গুড়িচারা লাগানো যেতে
পারে এবং এই কচুর লতির চারা লাগানোর উত্তম এবং উপযুক্ত সময় হচ্ছে অক্টোবর মাস। এ
সময়টাই যদি আপনারা চারা লাগান তাহলে আপনারা লতি পাবেন ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চ
মাসে। এছাড়া আপনারা লতির ফলন ভালো পাওয়ার জন্য জমিতে সার দিবেন। প্রতিবিঘা
জমিতে
গোবর সার ৫০০ কেজি, ইউরিয়া সার ২৫ কেজি, এমওপি সার ২৫ কেজি এবং টিএসপি সার দিবেন
১৮ কেজি পরিমাণে। লতি চাষ করার সময় আপনারা সব রকমের সার একসাথে দেবেন না
প্রাথমিক পর্যায়ে ইউরিয়া সার ছাড়া অন্য সব সার জমিতে দিতে পারেন ছিটিয়ে।
আপনারা তারপরে চারা লাগানোর ২০ থেকে ২৫ দিন পর ইউরিয়া সার দিতে পারেন এবং জমিতে
পানি সেচ দিতে হবে। চারা লাগানোর সময় জমিতে কাদা করে নিতে হবে পানি দিয়ে কারণ
পানি না থাকলে কচুর গাছের ক্ষতি হবে।
আরেকটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে যে যেন কচুর লতির গাছের গোড়ায় যেন সবসময় পানি
থাকে এবং এই পানি মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করে দিতে হবে আগাছা পরিষ্কার করে দিতে
হবে। কচুর লতি চাষ করার ক্ষেত্রে ছোট লাল মাকড় এই গাছের পাতার ক্ষতি করে
এক্ষেত্রে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে আবার অনেক সময় কচুর লতির ক্ষেত্রে লেদা
পোকার আক্রমণ হতে পারে এক্ষেত্রে আপনারা ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি কীটনাশক স্প্রে করলে
এই পোকা দমন করা যাবে। আপনারা কচুর লতি সব রকম
বয়সেই তুলে সেটা খেতে পারবেন তবে আপনারা যদি ছোট সাইজের কচুর লতি তুলেন তাহলে এর
ফলন কমে যাবে এজন্য আপনাদেরকে সবসময় বড় এবং মোটা জাতীয় লতিগুলো তুলতে হবে এতে
করে ফলন বেশি হবে আপনারাও লাভবান হবেন।
লেখক এর মন্তব্য
প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কচুর লতি
সম্পর্কিত অনেক তথ্য দিয়েছে যেমন কচুর লতি খাওয়ার ২৪ টি উপকারিতা এবং অপকারিতা,
কচুর লতি চাষ পদ্ধতি, কচুর লতিতে কি কি ভিটামিন উপাদান আছে এবং গর্ভাবস্থায় কচুর
লতি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কিত আরো অনেক তথ্য। যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা কচুর
লতি খাওয়ার অভ্যাস শুরু করে দিবেন আজকে থেকেই এবং এর নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা
সম্পর্কে জানতে পারবেন। আপনাদের পোস্টটি পড়ে ভালো লাগলে অবশ্যই এই পোস্টটি
শেয়ার করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url