খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু পাননি। আপনাদের মধ্যে যারা পাননি তারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে এ বিষয়ে জেনে নিন এজন্য আপনাদের শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিন
এখানে আপনাদের জন্য করলা সম্পর্কিত অনেক তথ্য দেওয়া হয়েছে। যেগুলো পড়ার মাধ্যমে অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং উপকৃত হবেন। খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং এর উপকারিতা এছাড়াও করলাতে কি কি উপাদান আছে, তিতা করলার উপকারিতা এবং উচ্ছে ও করলার মধ্যে পার্থক্য কি ইত্যাদি বিষয়ে। করলা খাওয়ার ফলে আমরা অনেক রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি। আজই করলা খাওয়ার অভ্যাস শুরু করুন আপনার স্বাস্থ্যের ভালোর জন্য এবং সেই সাথে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা-খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা 

করলা হচ্ছে তেতো স্বাদ যুক্ত একটি সবজি। এই সবজিটা আমরা সকলেই কমবেশি খেতে পছন্দ করে থাকি। এই সবজিতে আছে অনেক রকমের পুষ্টি এবং ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, বি, সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, এন্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপাদান। আর এ সকল উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। করলা খাওয়ার ফলে আমরা নানা রকম রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারি যেমন ক্যান্সার প্রতিরোধে লিভার সুরক্ষার জন্য আমাদের হার্টের ভালোর জন্য রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা যায় প্রদাহ কমাতে
সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে আনতে ইত্যাদি। আবার আমরা করলার জুস করে খেতে পারি এতেও অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। করলার জুস খাওয়ার ফলে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, অ্যাজমা, গলার প্রদাহ ও ব্রংকাইটিস ইত্যাদি থেকে আরাম পাওয়া যায়, দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে, কোলেস্টেরল কমাতে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ইত্যাদি আরো নানা উপকারিতা আছে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে এবং এর অনেক উপকারিতা আছে এতে করে গর্ভবতী মহিলার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে গর্ভের সন্তানের বিকাশ হবে।

করলা ইংরেজি কি

করলা হচ্ছে তেতো স্বাদ যুক্ত এবং এর শরীরটা কাটার মত। এই ফল লম্বাটে হয় এবং কাঁচা অবস্থায় এর রং হয় সবুজ এবং পাকলে হয় কমলা অথবা লাল। করলা, উচ্ছে, উচ্ছা বা করল্লা এগুলো সবই এর প্রকারের ফল জাতীয় সবজি। করলার ইংরেজি হচ্ছে Balsam pear এছাড়াও alligator pear, bitter gourd, bitter melon, bitter cucumber ইত্যাদি বলা হয়ে থাকে। করলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Momordica charantia এবং এটা Cucurbitaceae পরিবারভুক্ত লতা জাতীয় উদ্ভিদ।

করলাতে কি কি উপাদান আছে?

করলাতে আছে অনেক পুষ্টি উপাদান এবং খনিজ পদার্থ যেমন ভিটামিন এ, সি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, খাদ্য আঁশ, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। করলা খাওয়ার ফলে আমরা অনেক উপকার পাব। করলাতে থাকা এ সকল পুষ্টি উপাদান আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। এটা আমাদের অ্যালার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি একটি উত্তম খাবার। আপনারা যদি নিয়মিত ভাবে করলার রস খান তাহলে আপনাদের রক্তের শর্করা

নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বাতের ব্যথার জন্য করলার রস অনেক উপকারী এবং এটা কৃমিনাশক, পিত্ত নাশক এবং কফ নাশক হিসেবে অনেক কাজে আসে। এছাড়াও জন্ডিস এবং লিভারের অসুখের ক্ষেতে খাবারের অরুচি সমস্যার সমাধানে আপনারা করলা খেতে পারেন এতে করে খাবারে রুচি আসবে। এছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে করলাতে।

প্রতি ১০০ গ্রাম করলাতে আছে বিভিন্ন প্রকার পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ সেগুলো হচ্ছে
  • কার্বোহাইড্রেট-৩.৭০ গ্রাম
  • প্রোটিন-১ গ্রাম
  • ফ্যাট-০.১৭ গ্রাম
  • খাদ্য আঁশ-২.৮০ গ্রাম
  • নায়াসিন-০.৪০০ মিলিগ্রাম
  • প্যান্টোথেনিক এসিড-০.২১২ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন এ-৪৭১ আই ইউ
  • ভিটামিন সি-৮৪ মিলিগ্রাম
  • সোডিয়াম-৫ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম-২৯৬ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম-১৯ মিলিগ্রাম
  • জিংক-০.৮০ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম-১৭ মিলিগ্রাম
  • আয়রন-০.৪৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ-০.০৮৯ মিলিগ্রাম
  • কপার-০.০৩৪ মিলিগ্রাম।

গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং এর উপকারিতা

 
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং এর উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এ বিষয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকে যারা এই বিষয়ে জানেন না তারা আজকে আমার এই পোস্টটির মাধ্যমে জেনে নিন। করলা নানা রকম পুষ্টি গুনে ভরপুর এবং এটা খাওয়ার অনেক উপকারিতা আছে গর্ভাবস্থায়। এর জন্য একজন গর্ভবতী মহিলা তাদের খাবার তালিকায় সীমিত পরিমানে করলা রাখতে পারেন। করলাতে আছে ভিটামিন এ, বি, বি-১, বি-২, বি-৩ এছাড়াও ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, আয়রন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। এটি আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখলে 
তা অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। এটা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য একটা চমৎকার খাবার হতে পারে এবং তার গর্ভে থাকা সন্তানের জন্যেও। এতে আছে ক্যান্সার এবং প্রদাহ বিরোধী উপাদান এজন্য গর্ভবতী মহিলাদের অল্প পরিমাণে করলা খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে যদি বেশি পরিমাণে খাওয়া হয় তাহলে তাদের নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য গর্ভাবস্থায় সীমিত পরিমাণে করলা খাওয়া নিরাপদ। গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার কিছু উপকারিতা বলা হলো

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা কে তার ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী রাখাটা অনেক দরকার আর করলা ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ এছাড়াও আরো নানা পুষ্টিকর ভিটামিন এবং ফাইটোক্যামিক্যাল আছে। যেগুলো গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এতে থাকা ভিটামিন সি গর্ভবতী মহিলার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং আয়রন শোষণে সাহায্য করে।

সংক্রমণ প্রতিরোধেঃ গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার ফলে করলাতে থাকা এন্টিমাইক্রোব্রিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফরমেটরি বৈশিষ্ট্য গুলো প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও সংক্রমনের ক্ষতি কমায় রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

হজমের সমস্যা কমাতেঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা কোষ্ঠকাঠিন্য ও হেমোরয়েড এর সম্মুখীন হয়।করলাতে থাকা ফাইবার এ সমস্যা সমাধানে কাজ করে। এছাড়াও স্বাস্থ্যকর অন্ত্র এর ব্যাকটেরিয়া গুলোকে সমর্থন করে যার ফলে আমাদের হজম এবং পুষ্টি শোষণের উন্নতি ঘটে থাকে। করোলাতে কম ক্যালরি আছে এবং কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি আছে যা আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ভ্রূণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছেঃ করলা ক্রমবর্ধমান ভ্রূণের জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে যার মধ্যে আছে আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, পাইরিডক্সিন ওপ্যান্টোথেনিক অ্যাসিড। এছাড়াও ভ্রূণের হাড়ের বিকাশের জন্য ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে থাকে এবং ভ্রূণের সুস্থ বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য কাজ করে।

মলত্যাগের উন্নতি ঘটায়ঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ জটিলতা এটা প্রায় অস্বস্তি এবং ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় একজন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে। এজন্য খাদ্য তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার থাকা জরুরি। গর্ভাবস্থায় করোলা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে অর্থাৎ মলত্যাগের উন্নতি ঘটিয়ে থাকে।

অ্যান্টি-ডায়াবেটিকঃ একজন গর্ভবতী মহিলার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি এজন্য তাদের ঘন ঘন করলা খাওয়ার কথা বলা হয়। এতে এমন ইনসুলিন জাতীয় যৌগ আছে যেটা পরিচিত হাইপোগ্লাইসেমিক প্রোটিন নামে। এই যৌগটির রক্ত শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়াও করলাতে আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেমন পলিপেপটাইড পি যেটা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।

উচ্চতর ফাইবার সামগ্রীঃ করলা হচ্ছে ফাইবারে ভরপুর যা আমাদের অত্যধিক লোভ কমিয়ে থাকে। এটা আমাদেরকে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া কমাতে সাহায্য করে এতে করে গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় সুস্থ এবং ফিট থাকে। এটা পাচনতন্ত্রের কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ এসিডকে আটকে রাখে যার ফলে আমাদের হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় আবার প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

উচ্চ ফোলেট সামগ্রীঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য ফোলেট অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কারণ এটি ডিএনএ এবং আরএনএ ও নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও নবজাতককে নিউরাল টিউব ত্রুটি এবং অ্যানেন্সফালি এর মত অনেক জন্মগত অক্ষমতা থেকে রক্ষা করে থাকে আর এগুলো মেরুদন্ড ও মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে থাকে।

অন্যান্য পুষ্টির উৎসঃ উপরে উল্লেখিত পুষ্টিগুণ ছাড়াও করলাতে আরো অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভের সন্তানের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। আরো আছে ভিটামিন বি, বিটা ক্যারোটিন,রাইবোফ্লাভিন ইত্যাদি। করলাতে থাকা বিটা ক্যারোটিন গর্ভাবস্থায় ভ্রুনের ফুসফুসের বিকাশের জন্য অবদান রাখে এছাড়াও ভিটামিন এ বিষাক্ততার ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে থাকে।

তিতা করলার উপকারিতা

আমাদের মধ্যে অনেকের কাছে তিতা করলা তেমন একটা পছন্দ নয় আবার অনেকেই এটা খেতে খুব পছন্দ করে এর গুণের জন্য। আমাদের ছোট বড় সকলের খাদ্য তালিকায় এই করলা রাখা দরকার তা না হলে আমরা এর স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হব। আমরা যদি নিয়মিত করলা খায় তাহলে অনেক রোগের থেকে রক্ষা পাবো এবং রোগবালায় আমাদের থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবে। এবার চলুন জানা যাক তিতা করলার উপকারিতা সম্পর্কে
  • তিতা করলার রস আমাদেরকে শক্তিবর্ধক হিসেবে সাহায্য করে এছাড়াও এটি আমাদের স্ট্যামিনা বাড়ায় এবং ভালো ঘুমে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে আমাদের শরীরকে।
  • এই করলাতে আছে ভিটামিন এ,সি, লৌহ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি। এন্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ ও সি আমাদেরকে বার্ধক্য বিলম্বিত করতে সাহায্য করে। এতে থাকা লুটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী উপাদান আছে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধী লাইকোপিন আছে।
  • করলাতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং রক্তের চিনির মাত্রা কমানোর উপাদান। ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য করলা খেতে পারেন।
  • পানি পিপাসা বেড়ে যাওয়া এছাড়াও বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হওয়া শরীর কামড়ানো ইত্যাদি সমস্যা গুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা করলা পাতার রস খেতে পারেন। এই পাতার রস এক চা চামচ পরিমাণে গরম করে অথবা গরম পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন আপনারা।
  • সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। করলা এডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাক্টিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ নামের এনজাইনের মাত্রা বাড়িয়ে থাকে ফলে রক্ত থেকে আমাদের দেহের কোষগুলোতে সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এছাড়া এটি আমাদের দেহের কোষের গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়া বাড়িয়ে থাকে এর ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়।
  • হার্ট অ্যাটাক রোধ করে। করলা ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এর ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এছাড়াও এটি রক্তনালীতে চর্বি জমার কারণে যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থাকে তা রোধ করে।
  • শ্বাস রোগ দূর করে অর্থাৎ এটি আমাদের হজম প্রক্রিয়ার গতি বাড়ায়। পানির সাথে মধু এবং করলার রস মিশিয়ে খাওয়ার ফলে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস এবং গলার প্রদাহ থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • হজমে স্বস্তি আনে কোষ্ঠকাঠিন্য দৌড় করে এবং পরিপাকতন্ত্রের জটিলতা দূর করে।
  • খাবারে রুচি আনে অর্থাৎ খাবারে অরুচি হলে অপুষ্টি জনিত নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তখন আর এটা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনারা এক চা চামচ পরিমাণে করলার রস সকালে এবং বিকেলে খেতে পারেন এতে করে রুচি আসবে খাবারে।
  • ম্যালেরিয়া রোগের জন্য করলা পাতার রস অনেক উপকারী এটার পাতা সাড়ে তিনটে আস্ত গোলমরিচ এর সাথে থেঁতো করে সাত দিন খাওয়ানোর ফলে সুস্থ হওয়া যায়। এছাড়াও কৃমি দূর করা সম্ভব।
  • বাতের ব্যথা নিরাময়ে আপনারা উচ্ছে বা করলা পাতার রস ৪ চা চামচ পরিমাণে গরম পড়ে এটা দেড় চা চামচ পরিমাণে বিশুদ্ধ ঘি এর সাথে মিশিয়ে ভাতের সাথে খেলে উপকার হয়।
  • করলাতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক ভালো এবং এটা আমাদের বার্ধক্য ঠেকাতে সাহায্য করে সাথে সাথে আমাদের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এই করলা।

উচ্ছে ও করলার মধ্যে পার্থক্য কি?

আপনাদের মনে হয়তো অনেকের প্রশ্ন আছে যে উচ্ছে ও করলার মধ্যে পার্থক্য কি এটা হয়তো অনেকেই জানেনা। দুটোই দেখতে একই রকম খেতেও তেতো স্বাদ যুক্ত তাহলে ২ টার নাম আলাদা কেন। মরশুম পরিবর্তনের সময় আমাদের সকলেরই স্বাদ বদলাতে ভালো লাগে এবং খাবারে অরুচি কাটানোর জন্য আমরা তেতো স্বাদযুক্ত খাবার গ্রহণ করে থাকি এটা ভালো কাজে আসে। এজন্য আমরা অনেকেই উচ্ছের ব্যবহার করে থাকি। উচ্ছে ও করলার মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে উচ্ছে সাধারণত ছোট হয়

আর করলা হয় আকারে বড়। অর্থাৎ ৫ থেকে ৭ সেন্টিমিটার এবং এর থেকেও আকারে ছোট গুলোকে বলা হয় উচ্ছে আর যেগুলো বড় এবং লম্বা অনেক হয় সেগুলোকে বলা হয় করলা কিন্তু উভয়ের ক্রোমজম সংখ্যা কিন্তু সমান (2n=22)। কিন্তু করলার চেয়ে আকারে ছোট উচ্ছের খাদ্যমান অনেক বেশি থাকে।Momordicasoids নামের একটা উপাদান আছে করলা ও উচ্ছের ভেতর ।এটার ওপর নির্ভর করে এদের তেতো ভাব। উচ্ছের ভেতর থাকা ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিনয়েডস এলার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে 

এবং বিভিন্ন উৎসেচকের সক্রিয়তা বাড়িয়ে থাকে যার ফলে আমাদের লিভার সুস্থ থাকে। অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য থাকার জন্য উচ্ছের ভেতর এটা আমাদের সর্দি কাশি জ্বর ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে এবং প্রতিরোধ করে। তবে উচ্ছে ও করলা আমাদের পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় এতে স্বাস্থ্যের সমস্যা হতে পারে। দিনে আপনারা ৩০ থেকে ৪০ গ্রাম মত উচ্ছে খেতে পারবেন এর বেশি খাওয়া ঠিক নয়।

খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা

খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা
তেতো স্বাদের জন্য করলা অনেকেই খেতে পছন্দ করে না কিন্তু এটা খাবার অনেক উপকারিতা আছে। সেই সাথে সাথে আপনারা যদি করলার জুস করে খান তাহলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। করলা আমরা ভাজি অথবা তরকারি করে খেয়ে থাকি। এর অনেক পুষ্টিগুণ আছে আছে ভিটামিন যেমন ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ইত্যাদি। করলা যেমন আমরা অনেক উপকারিতা পাওয়ার জন্য খেয়ে থাকি কিন্তু করলার জুস করেও 
আমরা খেতে পারি। এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রহমান বলেন করলা একটি ঔষধি গুণসম্পূর্ণ সবজি এটা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার করে। তবে আমরা যদি করলা অনেক তেল দিয়ে অনেক সময় ধরে রান্না করে খায় তাহলে এর পুষ্টিগুণ কমে যায় এক্ষেত্রে আমরা করলা রস করে খেতে পারি এবং অনেক উপকার পাব। করলা প্রথমে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে এর ভেতরের বীজ ফেলে দিতে হবে এবং তারপরে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে জুস বানিয়ে নিতে হবে। তারপরে আপনারা 

ছাকনির সাহায্যে ছেকে রস আলাদা করে নিয়ে সেটা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার আপনারা এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য এর সাথে লেবুর রস অথবা মধু যোগ করতে পারেন। খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা বলা হলো
  • ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে করলার জুস। করলাতে থাকা পলিপেপটাইড পি ও চারেন্টিন যোগ্য যেটা আমাদের শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে।
  • করলার জুস আমাদের শরীরের ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়ানোর কাজ করে এবং আমাদের শরীরে সুগারের মাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে দেয় না এজন্য যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা করলার জুস খাওয়ার ফলে অনেক উপকারিতা পাবে। আবার নিয়মিত করলার জুস খাওয়ার ফলে সুগার লেভেলের মাত্রা কমে যেতে পারে এজন্য ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটা খাবেন।
  • পানির সাথে মধু এবং করলার রস মিশিয়ে খাওয়ার ফলে অ্যাজমা, গলার প্রদাহ, ব্রংকাইটিস এবং শ্বাস রোগ থেকে আরাম পাওয়া যায়।
  • করলার রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং আমাদেরকে বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করে থাকে।
  • সকালে আপনারা করলার রস খেলে আপনাদের পেট পরিষ্কার হবে এবং হজম শক্তি বাড়বে এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে।
  • করলার জুসে আছে বিটা কেরোটিন এবং ভিটামিন এ। ভিটামিন এ আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে ও ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • করলার রসে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি উপাদান যেটা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
  • করলার রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের ত্বক এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে থাকে এবং চর্মরোগ সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে।
  • করলার রস খাওয়ার ফলে ওজন কমানো যায় এবং এটা আমাদের ফ্যাট ফেল বার্ন করে থাকে সেই সাথে নতুন ফ্যাট ফেল তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে।
  • করলার জুস খাওয়ার ফলে রক্ত পরিষ্কার হয় এবং আমাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
  • করলার রস খাওয়ার ফলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করা যায় এবং বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার প্রতিরোধ করার কাজে সাহায্য করে থাকে এই করলার রস।
তবে এটা খাওয়ার কিছু সতর্কতা আছে সেগুলো হচ্ছে
  • তা করলা থেকে যতটুকু রস পাওয়া যাবে প্রতিদিন ততটুকু রস আপনাকে খেতে হবে এর বেশি খাওয়া উচিত নয়।
  • গর্ভাবস্থায় করলার জুস খাওয়ার ফলে ক্ষতি হতে পারে এজন্য এটি খাওয়ার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে এটি তাদের পেটের ব্যথা বমি এবং ডায়রিয়া এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে করলার রস খাওয়ার ফলে লিভারের প্রদাহ ও ডায়রিয়া সমস্যা হতে পারে।
  • আপনাদের মধ্যে যারা নিয়মিতভাবে ওষুধ গ্রহণ করেন তারা করলার রস খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  • করলার রস আপনারা একটানা খাবেন না মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে খাবেন এভাবে খেলে ভালো হবে। আপনারা যদি তিন মাস খান তাহলে এরপর ১২ থেকে ১৫ দিন আবার বিরতি দেয়ার পরে খাবেন এভাবে খাওয়া ভালো।

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
করলা অর্থাৎ করল্লা উচ্ছে বা উচ্ছা এগুলো হচ্ছে এর প্রকারের ফল জাতীয় সবজি এই সবজিটা হয়তো আমরা অনেকেই খেতে পছন্দ করি না এর তেতো স্বাদের জন্য। কিন্তু এই তেতো স্বাদের সবজিটির অনেক গুনাগুন এবং উপকারিতা আছে। এই সবজিটাতে আছে অনেক পুষ্টি উপাদান যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বিটা ক্যারোটিন, ফলিক অ্যাসিড, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ইত্যাদি আরো নানা পুষ্টি উপাদান। আর এ সকল পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য 

অনেক উপকারী। প্রতিদিন আমরা যদি করলার রস খাই তাহলে আমরা বিভিন্ন রকমের রোগ থেকে রক্ষা পাবো যেমন ডায়াবেটিস এলার্জি রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় ইত্যাদি আরো নানা উপকারিতা আছে এটা খাওয়ার। এইসবজিটাতে ব্রকলি থেকে দ্বিগুণ পরিমাণে আছে বিটা ক্যারোটিন। নিচে করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা বলা হলো। করলা খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে
  • করলাতে থাকা ক্যারোটিন আমাদের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য এবং চোখের নানা রকমের সমস্যা সমাধানের কাজে আসে।
  • এই সবজিতে থাকা আয়রন আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে।
  • পালং শাকের চাইতে দ্বিগুণ পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং কলার চাইতে দ্বিগুণ পরিমাণে পটাশিয়াম আছে করলাতে। এই সবজিতে থাকা ক্যালসিয়াম আমাদের দাঁত এবং হাড় শক্ত ও ভালো মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
  • করলা আমাদের তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং বার্ধক্য প্রতিরোধ ও সাহায্য করে। করলাতে থাকা ভিটামিন সি আমাদেরকে ম্যালেরিয়া জ্বর থেকে স্বস্তি দেয়।
  • করলাতে আছে লৌহ ভিটামিন এ সি এবং এন্টি অক্সিডেন্ট ইত্যাদি। এতে আছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিকারী লুটিন আর ক্যান্সার প্রতিরোধ কারী লাইকোপিন।
  • করলা আমাদের রক্তের চর্বি কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন নিয়মিত করলা খাওয়ার ফলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং রক্তনালীতে চর্বি জমার কারণে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা রোধ করা যায়।
  • এতে থাকা পটাশিয়াম আমাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে এবং আমাদের হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে।
  • করলাতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের শরীরে নানা রকমের ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আমাদের দেহে প্রোটিন এবং আয়রন যোগানের কাজ করে থাকে।
  • করলাতে থাকে ফাইবার যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
  • করলাতে থাকা পলিপেপটাইড পি যেটা আমাদের ব্লাড এবং ইউরিন সুগার এর লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এবং এটা আমাদের ব্লাড পিউরিফিকেশন এ সহায়তা করে।
  • আমাদের ত্বকের নানা রকমের ডিজিজ এবং ইনফেকশনের হাত থেকে আমাদেরকে প্রতিরোধ করে।
  • নিয়মিত করোলার রস খাওয়ার ফলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
  • করলার রস আমাদের এলার্জি প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য করলা একটি উত্তম সবজি। ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড এবং ইউরিন সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে এতে থাকা পলিপেপটাইড পি।
  • করলা তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সক্ষম এবং আমাদের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • করলাতে থাকা এন্টিইনফ্লামেটরি উপাদান আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে প্রদাহ থেকে।
  • করলা আমাদের লিভার পরিশোধনের কাজ করে এবং মুত্রাশয় ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। করলা নিজে তার এনজাইনের মাত্রা বাড়িয়ে আমাদের লিভারের কার্যকারী তাকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • করলা আমাদের শরীরকে ঠান্ডা এবং হাইড্রেড রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের হজম শক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • করলাতে থাকা এন্টিইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আমাদেরকে বিভিন্ন রকমের ক্ষত এবং আঘাত যনিত সমস্যা নিরাময়ে সাহায্য করে।
  • করলার রস খেলে অর্শ রোগ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি মেলে। করলা হচ্ছে একটি শক্তিশালী এন্টি ইনফ্লামেটরি ও পাইলসের অসুখের জন্য লোশন হিসেবে এটা ভালো কাজ করে থাকে।
  • এই গাছের মূল থেকে যে প্রাপ্ত পেস্ট তা বাহ্যিক ব্যবহার অর্থাৎ ফোলা কমাতে, ব্যথা কমাতে এবং রক্তপাত বন্ধ করতে সাহায্য করে থাকে।
  • করলা আমাদের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং রক্ত বিশুদ্ধকারী হিসেবে কাজ করে।
  • করোলা তে থাকা এন্টি ভাইরাল এবং এন্টিহিস্টামিন বৈশিষ্ট্য আমাদের শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য কে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটা হাঁপানি এবং ব্রংকাইটিস এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।
  • এটি আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে এটি আমাদের চর্বি জমা কমাতে সাহায্য করে এবং স্থূলতা বিরোধী প্রভাব আছে এই করলার।
  • খাবারে রুচি আনে করলা।
  • করলাতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।
আমাদের যে কোন খাবারই পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত তবে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকার করবে। আর যদি আমরা অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে খাবার খেয়ে থাকে তাহলে সেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি করবে। তেমনি করলা আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক উপকার করে কিন্তু এটা বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে এর কিছু অপকারিতা বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাহলে আপনারা এখন জেনে নিন করলা খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে
  • করলা হচ্ছে তেতো স্বাদযুক্ত এজন্য এটা অনেকের কাছেই অপ্রীতিকর লাগতে পারে এর অনেক শক্তিশালী তেতো স্বাদআছে।
  • বেশি পরিমাণে করলা খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা এবং পেট খারাপ ও পেটে ব্যথা হতে পারে মাঝে মাঝে।
  • করলা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে এজন্য যারা ডায়াবেটিসের ঔষধ গ্রহণ করেন তারা তাদের রক্তে শর্করা এর নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে তারপরে করলা খাবেন।
  • বেশি পরিমাণে করলা খাবার ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকির সমস্যা হতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের উদ্বেগের কারণ হতে পারে এবং এটি সংকোচনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে যার ফলে জটিলতার দিকে চলে যায় একজন গর্ভবতী মহিলা।
  • অনেকের বেশি পরিমাণে করলা খাওয়ার ফলে চুলকানি, এলার্জি এর সমস্যা এবং শ্বাস নিতে কষ্ট পাওয়া ও ফুসকুড়ি এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • করলা কিছু ওষুধের সাথে যোগাযোগ রাখতে সক্ষম বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস এবং রক্ত পাতলা করার ঔষধ খান তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে করলা খাবেন।
  • বেশি পরিমাণে করলা খাওয়ার ফলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। আবার খিচুনিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং বেশি পরিমাণে তিতা করলা খাওয়ার ফলে মাসিকের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়।
  • শিশুরা বেশি পরিমাণে করলা খাবার ফলে পেটে ব্যথা, বমি এবং পেট ফাঁপা এর সমস্যা হতে পারে।
  • অনিয়মিত হার্টবিট এর কারণ হতে পারে বেশি পরিমাণে তিতা করলা খাওয়ার ফলে।

করলা পাতার রসের উপকারিতা

করলা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী একটা সবজি তেমনি এর পাতার রস ও আমাদের জন্য অনেক উপকারে আসে এ কথা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না। যারা জানেন না তারা জেনে নিন করলা পাতার রসের উপকারিতা সম্পর্কে
  • করলা পাতার রস আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং নানা ধরনের ইনফেকশনের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে থাকে।
  • করলা পাতার রস আমাদের এনার্জি এবং স্টেমিনা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে।
  • যারা অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করেন তাদের লিভার ড্যামেজড হওয়া সম্ভব না থাকে বা হলেও হতে পারে এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা করোলা পাতার রস খেতে পারেন।
  • যাদের ব্লাড ডিসঅর্ডার এর সমস্যা আছে তারা করোলা পাতার রস এর সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
  • অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস এবং ফেরেনজাইটিস এর মত সমস্যা কমানোর জন্য আপনারা করোলা পাতার রস খেতে পারেন।
  • করলা পাতার রস ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনারা সোরিয়াসিস এবং নানা রকমের ফাংগাল ইনফেকশন এর প্রতিরোধ করতে পারবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক ম্যাক্সিমো ইনফো এই পোষ্টের মাধ্যমে করলা সম্পর্কিত অনেক তথ্য দিয়েছে। যেমন খালি পেটে করলার জুস খাওয়ার উপকারিতা এবং করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, গর্ভাবস্থায় করলা খাওয়া যাবে কি এবং এর উপকারিতা এছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন এবং অন্যকে উপকৃত করতে পারবেন। এ পোস্টটি পড়ে আপনারা করলা এবং করলার জুস খাওয়ার অভ্যাস শুরু করে দিতে পারেন এতে করে আপনাদের স্বাস্থ্যের উপকার হবে সেই সাথে এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url