মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে
মধু
দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় এবং ছেলেদের মুখে মধু ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা
সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন
কিন্তু পাননি।যারা পান নিয়ে তারা আজকে আমার এ পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন।
এজন্য আপনাদের শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
এখানে আমি আপনাদের জন্য মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় ছাড়াও ছেলেদের মুখে মধু
ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা, মুখে মধু মাখার উপকারিতা, রাতে মুখে মধু মাখার
উপকারিতা, মধু দিয়ে ফেসিয়াল ইত্যাদি অনেক কয়েকটি বিষয়ে অনেক বিস্তারিত তথ্য
আলোচনা করেছি। যেগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং সঠিক তথ্য জানতে পারবেন।
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার জন্য আপনারা মধুর সাথে যেমন লেবুর রস, কাঁচা দুধ,
অ্যালোভেরা ব্যবহার করে মুখে লাগাতে পারেন। এজন্য আপনাদের শেষ পর্যন্ত পড়ার
অনুরোধ করছি।
ভূমিকা
মধু হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক উপাদান যাতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট,
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টি ফাঙ্গাস এবং এন্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য। এটা আমরা
আমাদের ত্বকে মুখে ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বক হবে উজ্জ্বল নরম কোমল এবং দাগ
মুক্ত। এ সকল বৈশিষ্ট্যের জন্য আমরা ত্বকে মধু ব্যবহার করার ফলে ব্রণের দাগ থেকে,
তৈলাক্ত ত্বক দূর করা ও কালো দাগ দূর হবে। এছাড়াও এতে থাকা এ সকল বৈশিষ্ট্যের
কারণে আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে আমরা রক্ষা পাবো আবার ফোলা ভাব, লাল
ভাব এবং চুলকানি থেকে রক্ষা পাবো। মধুর এমন অনেক বৈশিষ্ট্য আছে
যার কারণে এটা আমাদের ত্বকে ব্যবহার করার ফলে আমাদের ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়। মধু
দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় এর মধ্যে আমরা মধুর সাথে লেবুর রস চিনি,এলোভেরা ও
কাঁচা দুধ ব্যবহার করে ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগাতে পারি এতে ত্বক
উজ্জ্বল, শ্যামলা ত্বক ফর্সা হবে। এছাড়াও ছেলেরা মুখে মধু ব্যবহার করতে পারে এবং
এর উপকারিতা পাবে। মুখে মধু ব্যবহার করার জন্য প্রথমে মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার
করে ধুয়ে নিয়ে তারপরে মুখে মধু লাগাতে হবে হালকা করে। তারপরে হালকা কুসুম গরম
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।
মুখে মধু মাখার নিয়ম
মুখে মধু মাখার নিয়ম হচ্ছে প্রথমে মুখ বা ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে
তারপরে ত্বকে বা মুখে পাতলা করে মধু লাগাতে হবে। এই মধুমাখার পরে আট থেকে দশ
মিনিট রেখে তারপরে
হালকা কুসুম গরম পানি
দিয়ে মুখটা ধুয়ে নিতে হবে। তারপরে আপনাদের মুখের পানি মুছে ফেলতে হবে আলতো চাপ
দিয়ে। এভাবে আপনারা সপ্তাহে এক দুই বার মুখে মধু লাগালে অনেক ভালো ফল পাবেন।
এভাবে মুখে মধু লাগার ফলে আপনার ব্রণ দূর হবে, ত্বকের দাগ কমাতে পারবেন এছাড়াও
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পাবেন। কারণ মধুতে আছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,অ্যান্টিসেপটিক ও ব্যাকটেরিয়া রোধী উপাদান। এতে করে আপনাদের
ত্বক সুন্দর এবং মসৃণ হবে। আবার আপনারা এক চা চামচ পরিমাণে বেকিং পাউডার এবং এর
সাথে ২ চা চামচ পরিমাণে মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এই মিশ্রণটি আপনাদের মুখে
লাগাতে পারেন। কিন্তু প্রথমে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে তারপরে মুখে
এটা লাগাতে হবে। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রাখার পরে মুখ হালকা কুসুম
গরম পানি দিয়ে ধুতে হবে। এছাড়াও আপনারা লেবুর রস এবং এক চামচ পরিমাণে মধু
মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করার পরে এটা মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখার পরে কুসুম গরম
পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন। তাহলে আপনাদের ত্বক সুন্দর হবে উজ্জ্বল
এবং মসৃণ হবে।
রাতে মুখে মধু মাখার উপকারিতা
আমরা অনেকেই রাতে মুখে মধু মেখে থাকি এর অনেক উপকারিতা পাওয়ার জন্য ত্বক সুন্দর
মসৃণ এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য। আমরা অনেকেই রাতে মুখে মধু মাখার
উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা। রাতে মুখে মধু মাখার অনেক উপকারিতা আছে সেগুলো হচ্ছে
- রাতে মুখে মধু মাখার ফলে আমাদের মুখ থেকে সহজেই মৃত কোষ গুলোকে তুলে ফেলতে সাহায্য করে থাকে মধু।
- আবার নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে থাকে মধু।
- মধুতে আছে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাস উপাদান যা আমাদের ত্বক পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- মধুতে আছে প্রোবায়োটিক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এজন্য রাতে মধুমাখার ফলে আমাদের ত্বকের পুষ্টি সরবরাহ হবে এবং আমাদের ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করবে।
- রাতে মুখে মধুমাখার ফলে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং ত্বক নরম কোমল হবে।
- আমাদের মুখের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ তুলতে সাহায্য করে থাকে এজন্য রাতে মুখে মধু মাখা ভালো।
প্রতিদিন মুখে মধু দিলে কি হয়
আমরা অনেকেই আমাদের মুখে মধু দিয়ে থাকি এতে করে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়
আমাদের মুখের জন্য। কারণ মধুতে আছে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট,
এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাস উপাদান যেগুলো আমাদের ত্বকের জন্য বা
মুখের জন্য অনেক উপকারী। প্রতিদিন মুখে মধু দিলে কি হয় এ বিষয়ে বলা হলো
- মধুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টিসেপটিক ও ব্যাকটেরিয়ারোধী উপাদান যার কারণে ব্রণ দূর হয়।
- এটা আমাদের মুখের লোমকূপ কে উন্মুক্ত করে আবার বিরক্তিকর ব্ল্যাকহেডস দূর করে ত্বক আদ্র রাখতে সাহায্য করে থাকে।
- আমাদের শুষ্ক এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী তৈলাক্ত ও শুষ্ক ভাব দূর করার জন্য।
- মুখে মধু মাখার ফলে আমাদের ত্বক মসৃণ এবং টানটান হয় সুন্দর হয়।
- ত্বকের কালো দাগ দূর করা সম্ভব হয় এবং জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
- ত্বকের চুলকানি, লাল ভাব এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে মধু।
- এটা আমাদের ত্বকের গভীর থেকে পানি টেনে আনে এবং ত্বকে হাইড্রেট এবং মশ্চারাইজার করতে সাহায্য করে।
- এটা মুখে ব্যবহার করার ফলে আমাদের মুখের ব্রণ এবং ত্বকের সংক্রমণ এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার ভূমিকা রাখে।
- এটা আমাদের মুখের মৃত কোষগুলোকে অপসারণ করতে সহায়তা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
- মুখে মধু মাখার ফলে আমরা এর সান্দ্রতা এবং টেক্সচার এর জন্য তোকে একটি প্রশান্তিদায়ক প্রভাব অনুভব করতে পারি।
ছেলেদের মুখে মধু ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা
মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরাও মুখে মধু ব্যবহার করতে পারে। এজন্য তাদেরকে প্রথমে মুখ
ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে তারপরে মুখে মধু মাখতে হবে। মধুমাখার পরে ১৫ থেকে ২০
মিনিট রাখার পরে তা হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং আলতো চাপ
দিয়ে মুখের পানি মুছে ফেলতে হবে এতে করে অনেক উপকার পাওয়া যাবে। ছেলেরা
বেশিরভাগ সময় কাজের জন্য বাহিরে থাকে এতে করে তাদের ত্বকে মুখে ধুলাবালি এবং
রোদের তাপের জন্য ছেলেদের ত্বক রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়।
আর এজন্য যদি ছেলেরা মুখে মধু ব্যবহার করে তাহলে তাদের মুখের রুক্ষ ত্বকে প্রাণ
ফিরিয়ে আনতে পারবে। এজন্য আপনারা ঘরেই মধু দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে সেটা মুখে
ব্যবহার করতে পারেন। ছেলেদের মুখে মধু ব্যবহারের অনেক উপকারিতা আছে সেগুলো হচ্ছে
ব্রণ এর চিকিৎসায়ঃ উচ্চ টেস্টোস্টেরন এর কারণে পুরুষের ত্বকে ব্রণ হওয়ার
প্রবণতা এবং তৈলাক্ত ভাব বেশি দেখায় মেয়েদের তুলনায়। আর এজন্য যদি ছেলেরা মুখে
মধু ব্যবহার করে তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারবে কারণ মধুতে আছে অ্যান্টি
ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
অ্যান্টি এজিং এর উপকারিতাঃ মধু পুরুষ এবং মহিলা দুজনেরই বার্ধক্য জনিত
প্রভাব অনুভব কমাতে সাহায্য করে কারণ এতে অনেক বৈশিষ্ট্য আছে। মধুতে আছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ফেনোলিক অ্যাসিড ও ফ্ল্যাভোনয়েড যেগুলো অকাল বার্ধক্যের
জন্য দায়ী ফ্রি রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে লড়াই করে। ত্বকে মধু ব্যবহার করার ফলে
সূক্ষ্ম রেখার প্রভাব কমানো যায় এবং ত্বককে পুনরুজ্জীবিত এবং তারুণ্যময় করে
তোলা সম্ভব।
ছেলেদের দাড়ির যত্নেঃ মধুদাড়ির যত্নের জন্য অনেক উপকার করে। মধু তে থাকা
প্রাকৃতিক হিউমেকট্যান্ট বৈশিষ্ট্য মুখের ত্বক ও লোমকূপ এর জন্য ময়শ্চারাইজ এর
কাজ করতে সাহায্য করে থাকে। দাড়ির বৃদ্ধির সাথে সাথে শুষ্কতা, চুলকানি ও খিচুনি
প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
ক্ষত নিরাময়ের জন্যঃ ছেলেদের বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের কাঁটা এবং
অন্যান্য কারণে আঘাতে প্রবণতাটা বেশি হতে দেখা যায় আর এজন্য ছেলেরা মধু ব্যবহার
করতে পারে। হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এর উৎপাদনে মধুতে পাওয়া জে এনজাইম গ্লুকোজ
অক্সিডেস এর দ্বারা সহজ হয় একটি এন্টি মাইক্রোবিয়াল পরিবেশ তৈরি করে থাকে যা
সংক্রমণ প্রতিরোধ করার কাজ করে এবং ক্ষত তাড়াতাড়ি নিরাময় করার কাজ করে থাকে।
মধু আমাদের ত্বক পরিষ্কার করার কাজ করে থাকে।
মধু দিয়ে ফেসিয়াল
মধুর অনেক উপকারিতা আছে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই নয় এটা
আমাদের ত্বকের জন্যও অনেক উপকারী। অনেকদিন আগে থেকেই এটা খাবারের পাশাপাশি আমরা
রূপচর্চায় ব্যবহার করে আসছি। মধু ব্যবহার করার ফলে আমাদের রোদে পোড়া ট্যান থেকে
শুরু করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য, ত্বক নরম কোমল করার জন্য এবং ত্বকের
বলিরেখা, কালচে দাগ দূর করার জন্য এছাড়াও ব্রণের জীবাণু ও ব্রণের দাগ দূর করার
জন্য মধু বেশ কার্যকর। মধু ব্যবহার করার ফলে
আমরা খুব কম সময়ের মধ্যে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করতে পারে এতে মধুর কোন বিকল্প
নেই। আমরা চাইলে ঘরে বসে মধু দিয়ে ফেসিয়াল করতে পারি। এর সাথে আমরা আবার অনেক
কয়েকটি উপাদান বা জিনিস ব্যবহার করেও ফেসিয়াল তৈরি করে এটা ব্যবহার করতে পারি।
ক্লিনজার হিসেবে মধুঃ মধুতে আছে অ্যান্টিইনফ্লামেটরি এবং
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও হিউমেক্ট্যান্ট বৈশিষ্ট্য যার কারণে মধু আমাদের ত্বকের
জমে থাকা ময়লা দূর করার কাজ করে থাকে। এছাড়া এটি আমাদের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ
ছাড়াও ত্বকের জ্বালা ভাব প্রতিরোধ করার কাজ করে থাকে। মধুতে আছে ময়শ্চারাইজিং
বৈশিষ্ট্য এর জন্য আমরা মুখে এবং ঘাড়ে মধু লাগাতে পারি এবং ২০ মিনিট রাখার পরে
হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফেসিয়াল টোনার হিসেবেঃ মধু আমাদের ত্বকের ওপেন পোরস বন্ধ করার কাজ করে
এবং ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আপনারা শসা এবং মধু দিয়ে ফেস টোনার তৈরি
করতে পারেন। শসা কেটে খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে এর পিউরি বানিয়ে নিতে হবে এবং
ছেঁকে রস বের করে নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে নিতে হবে তারপরে একটি বোতলে ঢেলে
ঝাঁকিয়ে নিতে হবে ভালোভাবে। এবার আপনি একটি তুলার প্যাডের সাহায্য নিয়ে আপনার
ত্বকে লাগাতে পারেন এই ফেসিয়াল টোনারটি।
মধু, গোলাপজল এবং হলুদের গুঁড়াঃ মধু এক টেবিল চামচ পরিমাণে এবং তার সাথে
কয়েক ফোটা গোলাপ জল এবং অল্প পরিমাণে
হলুদের গুড়া
একসাথে করে মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে এবং ১৫ মিনিট রাখতে হবে। তারপরে মুখ ধুয়ে
ফেলতে হবে দেখা যাবে এটি আপনাদের ত্বক নিমিষেই উজ্জ্বল করার কাজ করবে।
মধু এবং লেবুর রসঃ মধু নিতে হবে এক চা চামচ পরিমাণে এবং তার সাথে লেবুর রস
নিতে হবে এক চা চামচ পরিমাণে এই দুটো উপাদান একসাথে মিশিয়ে আপনার মুখে মাস্যাজ
করুন বিশ মিনিট। তারপরে বিশ মিনিট রাখার পরে মুখ হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলতে হবে এতে করে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে।
মধু এবং টক দইঃ মধু এবং টক দই নিতে হবে এক টেবিল চামচ পরিমাণে তারপরে এটা
ভালোভাবে মিশিয়ে আপনাদের মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন তারপরে
হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এতে করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য অনেক উপকার
হবে এবং ত্বকের ব্রণ দূর করার জন্য এটি কাজে লাগবে।
মধু এবং পেঁপেঃ২ টুকরো পেঁপে প্রথমে চটকে নিয়ে তার সাথে ২ চা চামচ
পরিমাণে মধু মিশিয়ে এটা আপনাদের মুখে লাগাতে পারেন এবং ১৫ মিনিট রাখার পরে তা
ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলে আপনাদের শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর হবে এছাড়াও বয়সের ছাপ
দূর করার কাজে এটি অনেক উপকারে আসে।
মধুর তৈরি স্ক্রাবঃ মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ময়েশ্চারাইজিং
বৈশিষ্ট্য আছে যা আমাদের ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েট এর কাজ করে থাকে। এটা আমাদের
ত্বকের ছিদ্র গুলিকে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে এবং হোয়াইট ও ব্ল্যাকহেডস দূর করার
কাজ করে। এর জন্য আমরা মধু ও চিনি ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে এবং ঘাড়ে লাগিয়ে পাঁচ
থেকে দশ মিনিট রাখতে হবে তারপরে পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। আমাদের
ত্বকের নমনীয়তা বেশিদিন ধরে রাখার কাজ করে থাকে মধু।
লেবু আর মধু দিয়ে রূপচর্চা
আমরা অনেকে লেবু আর মধু দিয়ে রূপচর্চা করে থাকি। রূপচর্চা করার জন্য আমরা লেবু
আর মধু ছাড়াও আরো অনেক উপাদান আছে সেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের ত্বক
সুন্দর কোমল এবং উজ্জ্বলতা ফিরে পায়। অনেকদিন থেকে আমরা রূপচর্চা করার ক্ষেত্রে
লেবু আর মধু এর ব্যবহার করে আসছি। মধুতে আছে ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি এন্টিসেপটিক ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। আবার
লেবুতেও আছে ভিটামিন সি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ইত্যাদি উপাদান
যেগুলো আমাদের ত্বকের জন্য অনেক উপকার করে। এই দুটি উপাদানের মধ্যে থাকা এন্টি
অক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কাজ করে এবং বিভিন্ন ধরনের
ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া এবং বিভিন্ন সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করে থাকে। লেবু আর
মধু দিয়ে রূপচর্চা করার বিষয়ে নিচে বলা হলো
ত্বক উজ্জ্বল করতে মধু এবং লেবুর রসঃ মধু এক চা চামচ পরিমাণে
এবং এর সাথে সমপরিমাণ
লেবুর রস
মিশিয়ে সেটা আমাদের মুখে মাসাজ করতে পারি এবং বিশ মিনিট রাখতে হবে তারপরে হালকা
কুসুম গরম পানি দিয়ে আপনাদের মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে এতে করে আপনাদের ত্বক
তাড়াতাড়ি উজ্জ্বল হবে।
এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট এ মধু এবং লেবুর রসঃ মধু দুই চামচ এবং
তার সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস এবং আধা চামচ পরিমাণে চিনি মিশিয়ে আপনাদের মুখে
হালকাভাবে দুই থেকে তিন মিনিট সময় মাস্যাজ করে তারপরে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে লেবু
ত্বকের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে এবং মধু আপনাদের ত্বকে পুষ্টি যোগাবে এবং
আপনাদের ত্বককে করে তুলবে নরম এবং স্বাস্থ্য উজ্জ্বল। আর মধু আপনাদের ত্বকের জন্য
এক্সফোলিয়েটিং এজেন্ট এর কাজ করবে।
কালো দাগ ও ব্রণ দূরে লেবু এবং মধুঃ লেবু এবং মধু এর ফেসপ্যাক আমাদের
ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। মধুতে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য আমাদের ত্বকের ব্রণের দাগ ও কালো দাগ দূর করার
কাজে সাহায্য করে এবং লেবুতে ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি আমাদের ত্বককে হালকা
করতে এবং কালো দাগ কমানোর কাজে সহায়তা করে। এছাড়াও আপনারা মুখের কালো দাগ দূর
করার জন্য লেবু এর রস এবং এলোভেরা জেল ও মধু একসাথে মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে
পারেন।
মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
মধু হচ্ছে এমন একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের ত্বক পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
আমরা যদি নিয়মিত আমাদের ত্বকে মধু ব্যবহার করে তাহলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা
বৃদ্ধি পাবে নরম কোমল সুন্দর এছাড়াও ত্বকের কালো দাগ, ব্রণ এবং ব্রণের কালো দাগ,
বলি রেখা ইত্যাদি দূর হবে। কারণ মধুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি
ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপ্টিক বৈশিষ্ট্য। আরো আছে ব্যাকটেরিয়া রোধী উপাদান
যা আমাদেরকে বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে এবং
ব্রণ দূর করতে, ত্বক আদ্র রাখার জন্য এছাড়াও বিরক্তি কর ব্ল্যাকহেডস দূর করার
জন্য এবং লোমকূপ উন্মুক্ত করার কাজে সাহায্য করে থাকে। আমরা অনেকেই আমাদের ত্বক
ফর্সা করার জন্য মধু ব্যবহার করে থাকি। আবার মধুর সাথে অনেক কয়েকটি উপাদান
মিশিয়ে সেটার ফেসপ্যাক তৈরি করেও মুখে ব্যবহার করে থাকি। এবার আসন জানা যাক মধু
দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
মধু এবং লেবুর রসঃ ২ চামচ পরিমাণে মধু এবং তার সাথে সমপরিমাণ লেবুর রস
মিশিয়ে আপনারা আপনাদের মুখে ব্যবহার করতে পারেন। এটি মুখে লাগানোর পরে ২০ থেকে
৩০ মিনিট রাখতে হবে তারপরে ধুয়ে ফেলতে হবে এভাবে আপনারা সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন
ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনাদের শ্যামলা ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা হবে এবং
লাবণ্যময় হবে আপনাদের ত্বক। আবার আপনারা এক চা চামচ পরিমাণে মধু এবং তার সাথে
সমপরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে বিশ
মিনিট আপনাদের মুখ মাসাজ করুন তারপরে আপনারা ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে হালকা গরম
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এতে করে আপনাদের ত্বক তাড়াতাড়ি উজ্জ্বল হবে। এটি
আপনারা সপ্তাহে তিন দিন করতে পারেন। মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করার জন্য আপনাদের
জন্য যাদু করি উপায় হচ্ছে মধু
মধু, গোলাপজল এবং হলুদের গুঁড়াঃ কয়েক ফোটা গোলাপ জল এবং অল্প পরিমানে
হলুদের গুঁড়া এর সাথে এক টেবিল চামচ পরিমাণে মধু মিশিয়ে আপনারা আপনাদের মুখে
লাগাতে পারেন এবং ১৫ মিনিট রাখার পরে তা ধুয়ে ফেলতে হবে এতে করে আপনাদের ত্বক
অতি সহজেই উজ্জ্বল হবে।
মধু এবং কাঁচা দুধঃ আপনারা আপনাদের ত্বক তাড়াতাড়ি ফর্সা করার জন্য
আপনাদের ত্বকে মধুর সাথে কাঁচা দুধ এবং হলুদ ও
কলা
একসাথে করে আপনাদের মুখে লাগাতে পারেন। এটা হচ্ছে আপনাদের জন্য একটি উত্তম
ফেসপ্যাক যা আপনাদের ত্বক ফর্সা করবে।
মধু এবং চিনিঃ এক টেবিল চামচ পরিমাণে মধুর সাথে মিশাতে হবে এক চা চামচ
পরিমাণে চিনি। তারপরে এটা আপনাদের মুখে মাসাজ করুন এবং ১০ মিনিট রেখে দিন। তারপরে
আপনারা মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন এতে করে আপনাদের ত্বকের মরা কোষ
গুলো দূর হয়ে যাবে এবং আপনাদের ত্বক হবে উজ্জ্বল।
মধু এবং অ্যালোভেরাঃ আপনারা আপনাদের ত্বকের গ্লো বৃদ্ধি করার জন্য মধু এবং
এলোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। এই দুই উপাদানের সাথে আপনারা টক দই মিশিয়ে ত্বকে
ব্যবহার করতে পারেন। এটা ব্যবহার করার ফলে আপনাদের ত্বক হবে উজ্জ্বল এবং দাগবিহীন
নরম ও কোমল।
মুখে মধু ব্যবহারের উপকারিতা
মধুতে এমন সব উপকারিতা বা উপাদান আছে যা আমাদের শুষ্ক এবং তৈলাক্ত দুই রকমের
ত্বকের জন্যই অনেক উপকারী। মধুতে আছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, লৌহ
আছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক এবং
অ্যান্টিফাঙ্গাস উপাদান যেগুলো আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য অনেক
সাহায্য করে। মুখে মধু মাখার জন্য প্রথমে আপনাদের মুখটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে
ধুয়ে তারপরে পাতলা করে মুখে মধুমাতে হবে এবং ১৫ থেকে ২০
মিনিট রেখে তারপরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। আমরা অনেকেই মুখে
মধু ব্যবহার করে থাকি। অনেকে আছে এর উপকারিতা জেনে আবার অনেকে আছেন যারা উপকারিতা
না জেনে ব্যবহার করে থাকেন। যারা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না তারা আজকে আমার এ
পোষ্টের মাধ্যমে মুখে মধু ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
ব্রণ দূর করার জন্যঃ মধুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক ও
ব্যাকটেরিয়া রোধী সব উপাদান আর এই সব উপাদানগুলো আমাদের মুখের ব্রণ দূর করতে
সাহায্য করে থাকে। আবার এটা আমাদের মুখের লোমকূপ উন্মুক্ত করে থাকে এবং আমাদের
বিরক্তি কর ব্ল্যাক হেডস থেকেও দূরে রাখে আবার আমাদের ত্বককে সারা দিন আদ্র রাখতে
সাহায্য করে থাকে।
এক্সফোলিয়েশনঃ মধুতে আছে প্রাকৃতিক এনজাইম যথা গ্লুকোজ অক্সিডেস যা
আদ্রতার সংস্পর্শে আসলে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড তৈরি করে থাকে। এই মৃদু
এক্সফোলিয়েটিং এর প্রভাব আমাদের মৃত ত্বকের কোষ গুলোকে দূর করতে সহায়তা করে এবং
ছিদ্র খুলে দেওয়ার কাজ করে সাথে সাথে ত্বকের কোষের টার্নওভার উন্নত করতে সাহায্য
করে। মহিলারা যদি নিয়মিত ত্বকে মধু ব্যবহার করে থাকে তাহলে তাদের ত্বক হবে মসৃণ
এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সুরক্ষাঃ মধুতে প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট আছে। এর
মধ্যে আছে সাভনয়েড ও ফেনলিক এসিড এগুলো আমাদের দূষণ এবং অতিবেগুনি রশ্মির কারণে
সৃষ্ট হওয়া অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকেও আমাদের ত্বককে রক্ষা করে থাকে। এন্টি
অক্সিডেন্ট আমাদের ফ্রি রেডিক্যাল এর বিরুদ্ধে কাজ করে এবং আমাদেরকে অকাল
বার্ধক্যের হাত থেকে রক্ষা করে এবং আমাদের ত্বকের তারুণ্য বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রশান্তি দেয় এবং নিরাময় সুবিধার জন্যঃ মধুর সান্দ্রতা ও টেক্সচার
আমাদের ত্বককে একটি প্রশান্তি দায়ক প্রভাব অনুভব করে বা প্রদান করে থাকে আবার
বিরক্তি কর অঞ্চল গুলোকে শান্ত রাখার জন্য উপযুক্ত করে তুলে। এর অ্যান্টি
ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আমাদের ত্বকের ফোলা ভাব, চুলকানি ও লাল ভাব কমানোর কাজ করে
থাকে। এছাড়া কোলাজেন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে এবং দাগের
উপস্থিতি কমাতে সাহায্য করে।
ময়শ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্যঃ মধু আমাদের আদ্রতা আকর্ষণ করে এবং ধরে রাখার কাজ
করে থাকে। মধুতে থাকা উচ্চ চিনির কারণে এটি হাইপারটনিক পরিবেশের তৈরি করে এবং যার
ফলে আমাদের ত্বকের গভীর থেকে পানি টেনে আনার কাজ করে এবং এর ফলে আমাদের ত্বক
হাইড্রেট ও ময়শ্চারাইজ করার কাজে সাহায্য করে থাকে। যাদের ত্বকে শুষ্কতার পরিমাণ
বেশি থাকে তাদের জন্য এটি অনেক উপকার করবে।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্যঃ মধু প্রাকৃতিকভাবে আমাদের ত্বক এক্সফোলিয়েট করার
ক্ষমতা রাখে যার ফলে আমাদের ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব কমে। এটি আমাদের ত্বকের
ছিদ্রগুলোকে উন্মুক্ত করতে সাহায্য করে এবং বলিরেখা দূর করতে কাজ করে। মধুর সাথে
আপনারা কাঠবাদামের গুড়া মিশিয়ে আপনাদের তৈলাক্ত ত্বকে মালিশ করে পাঁচ থেকে দশ
মিনিট রেখে তারপরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে করে আপনাদের তৈলাক্ত
ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আপনারা অবশ্যই এই পোষ্টের মাধ্যমে মধু দিয়ে ত্বক ফর্সা করার উপায়
এবং ছেলেদের মুখে মধু ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয়ে
জানতে পারবেন যেগুলো আপনাদের রূপচর্চা অর্থাৎ ত্বকের জন্য অনেক উপকারে আসবে।
আপনারা যদি মধু দিয়ে রূপচর্চা করার কথা ভাবেন তাহলে অবশ্যই আমারে পোস্টটি পড়ে
অনেক কিছু জানতে পারবেন। মধু ব্যবহার করার ফলে আপনাদের ত্বক ফর্সা হবে উজ্জ্বল
হবে। এই পোস্টটি যদি পড়ে আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি
শেয়ার করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url