নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা এ বিষয়ে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু পাননি। যারা পাননে তারা আমার এ পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন এবং অন্য কেউ জানাতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা জেনে নিন
আজকে আমারে পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা ছাড়াও কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা, সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে কি হয়, হলুদের পাতার ব্যবহার এবং উপকারিতা, কাঁচা হলুদ খেলে কি ওজন কমে ও ত্বকের যত্নে হলুদ গুঁড়া ইত্যাদি কয়েকটি বিষয়ে অনেক বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। কাঁচা হলুদ আমাদের অনেক উপকারে আসে লিভার কিডনি হার্ট রোগের জন্য ভালো ক্যান্সার রোগের জন্য উপকারে আসে। এ সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য জানার জন্য অবশ্যই এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ভূমিকা

কাঁচা হলুদ আমরা সকলে ব্যবহার করে থাকি আমাদের ত্বকের যত্নে এবং আমরা খেয়ে থাকি আমাদের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। এটা যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তেমনি ত্বকের জন্য উপকারী। নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদের ব্যবহার আমরা অনেকে করে থাকে চুলকানি ফুসকুড়ি চর্ম রোগের জন্য। এছাড়াও আমরা আমাদের শরীরের পরিপাক যন্ত্রকে সচল রাখার জন্য এবং বিপাক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া আমরা অনেকে নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদের বড়ি বানিয়ে খেয়ে থাকি
এটা আমাদের মুখের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে কাজে লাগে। কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আমাদের হার্ট ভালো থাকে ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হয় কাঁচা হলুদ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় হজমে সাহায্য করে ত্বকের জন্য উপকারে আসে যেমন ত্বকের বলি রেখা চোখের নিচের কালো দাগ পোড়া দাগ ব্রণ দূর করতে অনেক উপকারে আসে এই কাঁচা হলুদ। আবার অতিরিক্ত পরিমাণে বেশি খাওয়ার ফলে আমাদের নানা সমস্যা হতে পারে যেমন মাথা ধরা এলার্জির সমস্যা এবং রক্তপাত হওয়া কিডনি স্টোন ইত্যাদি।

সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে কি হয়

প্রাচীনকাল থেকে আমাদের দেশে হলুদ মশলাটির গুরুত্ব অনেক কারণ এটি অনেক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় এবং আমাদের সুন্দর ত্বকের জন্য এবং মুখে হলুদের নানা রকমের প্যাক ব্যবহার করার নিয়ম আছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনাদের নানা শারীরিক উপকার হবে। সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনাদের রক্ত পরিষ্কার থাকবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। হলুদের মধ্যে আছে কারকিউমিন যেটা আমাদের রোগমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন আপনাদের জন্য প্রতিদিন ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদ যথেষ্ট। সকালে এবং রাতে ২৫০ মিলিগ্রাম হলুদ আপনারা খেতে পারবেন তবে খালি পেটে হলুদ খাওয়ার পরে আধাঘন্টা কিছুই খাওয়া উচিত নয়। আবার আপনারা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হলুদ দুধ খেতে পারবেন। তবে ২৫০ মিলিগ্রাম এর বেশি হলুদ খাওয়া যাবে না এতে আপনাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে কি হয় বা কি উপকার পাওয়া যায় এ বিষয়ে ঝটপট জেনে নিন

গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তিঃ হলুদ আমাদের গ্যাস অম্বল থেকে মুক্তি দিতে অনেকটাই সাহায্য করে থাকে। কারণ কাঁচা হলুদের গ্যাস নিরোধ হোক উপাদান আছে এটা বিশেষজ্ঞদের মতে। এজন্য আপনারা নিয়মিত সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন।

মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ কাঁচা হলুদ আপনাদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য অনেক সাহায্য করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনারা ডিমেনশিয়া,অ্যালঝাইমার্স এবং মস্তিষ্কের অনেক কিছু রোগ বা সমস্যা থেকে আপনাদের কয়েক হাত দূরে রাখতে সাহায্য করবে। এবং আপনাদের মস্তিষ্কের বয়স বাড়ার সাথে সাথে যে সমস্যা হয় সেগুলো দূরে রাখতে সাহায্য করবে এবং আপনাদের ব্রেন কে সজাগ করে তুলবে সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে।

ক্যান্সার নিরোধকঃ প্রতিদিন সকালে যদি আপনারা খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন তাহলে আপনাদের ক্যান্সারের মরণঘাতি রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। কারণ এতে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং ক্যান্সার রোগ থেকে রক্ষা করবে।

হার্ট ভালো রাখতেঃ আপনারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনাদের হার্ট ভালো থাকবে হার্টের সমস্যা দূর হবে। কাঁচা হলুদ চিবিয়ে না খেতে পারলে আপনারা এর রস করেও স্যুপে মিশিয়ে খেতে পারবেন।

আর্থাইটিস এর প্রকোপ কমাতেঃ আপনাদের কারো আর্থাইটিস এর সমস্যা থাকলে তারা কাঁচা হল খেতে পারেন সকালে খালি পেটে এছাড়াও আপনার অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়ার কবল থেকেও আপনি রক্ষা পাবেন। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের নানারকম সমস্যা বাড়তে থাকে বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যায় এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে এগুলো কমাতে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন।

ফ্যাটি লিভারের জন্যঃ রোজ প্রতিদিন সকালে যদি খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন তাহলে আপনাদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় অনেক উপকার পাবেন এছাড়াও কোলেস্টেরল কমবে রক্ত পরিশুদ্ধ হবে এবং রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহায্য করবে।

হলুদের পাতার ব্যবহার এবং উপকারিতা

হলুদের পাতা আয়ুর্বেদিক ওষধে ব্যবহার করা হয় কারণ এতে আছে অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য। যেটা সর্দি, জন্ডিস এছাড়াও অন্ত্রের কৃমির লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে থাকে। হলুদের পাতা আমাদের হজমের উন্নতিতেও সাহায্য করে আবার আমাদের পেট ফোলা ও পেটের অস্বস্তিকর অবস্থা প্রতিরোধ করতেও পারে বলে বিশ্বাস করা হয়। হলুদ হচ্ছে মসলা জাতীয় উদ্ভিদ এর অনেক উপকারিতা আছে মূল ও পাতার। এখন আমরা জানব হলুদের পাতার ব্যবহার এবং উপকারিতা সম্পর্কে

রান্নায় ব্যবহারঃ হলুদের পাতা দক্ষিণ এশীয় খাবারে যেমন তরকারি ভাতে এবং স্টু খাবারের ব্যবহার করা হয়। থালা বাসনে একটি গন্ধ এবং সুবাস প্রদান করে।

ঔষধি গুণাগুণঃ হলুদের পাতায় আছে কারকিউমিন এবং বায়োঅ্যাকটিভ যৌগ যার মধ্যে আছে প্রদাহ বিরোধী এন্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুনাগুন। হলুদের পাতা খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যের যেমন জয়েন্টের ব্যথা ত্বকের বিভিন্ন রকমের সমস্যা এবং হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

ক্ষত নিরাময়েঃ হলুদের পাতা ঐতিহ্যগতভাবে ও ক্ষত নিরাময়ের কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাতায় যৌগ আছে যা প্রদাহ কমাতে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য এবং নিরাময় প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করার কাজে সাহায্য করে থাকে।

পোকামাকড় তাড়ানোর জন্যঃ প্রাকৃতিক পোকামাকড় প্রতিরোধ করার জন্য হলুদের পাতার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মশা ও অন্যান্য কামড়ানো পোকামাকড়ের জন্য এটা অনেক উপকারে আসে।

রং উৎপাদনঃ হলুদের পাতা থেকে প্রাকৃতিক রং বের করা যেতে পারে যা ব্যবহার করা যেতে পারে টেক্সটাইল, প্রসাধনী তৈরিতে ও অন্যান্য পণ্যের রং করার কাজে।

পশু খাদ্য হিসেবেঃ এর পাতা পশুদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা ও যেতে পারে যা পশুর খাদ্যের প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং ফাইবার এর সরবরাহ করে থাকবে।

নিম পাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা

নিমপাতা এবং হলুদ আমাদের শরীরচর্চার জন্য এবং ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে আসে এ কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানিনা যারা জানেন না তারা জেনে নিন। একটি প্রচলিত কথা আছে যে বাড়িতে নিম গাছ থাকে সেই বাড়িতে একজন ডাক্তার বাস করে সে বাড়িতে কোনো রকমের ভাইরাস আসতে পারে না। আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য এবং চুল টক সুন্দর রাখতে নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
কিন্তু আমরা অনেকে নিমপাতার তেতো স্বাদ আর গন্ধের জন্য একে একেবারেই সহ্য করতে পারি না। নিম পাতায় এবং কাঁচা হলুদ দিয়ে আপনারা সহজেই বাড়িতে বসে বানাতে পারেন একটি বড়ি যা আপনারা অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন এবং এটি আপনারা সহজে খেতে পারবেন কোন রকম বিস্বাদ ও গন্ধ ছাড়াই। এই বড়ি বানানোর জন্য আপনাকে অবশ্যই এক আঁটি নিমপাতা এবং তার সাথে যোগ করতে হবে ২৫০ গ্রাম কাঁচা হলুদ এবং প্রয়োজন মত পানি। প্রথমে আপনাকে নিম পাতা গুলো ভালোভাবে ছারিয়ে

নিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে কাঁচা হলুদ ও খোসা ছাড়িয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এবার নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদ আলাদা করে শীল পাটায় বেটে নিতে হবে। বেটে নেওয়া হয়ে গেলে মিশ্রণটি আপনার দুই হাতের তালু সাহায্যে ছোট ছোট করে বড়ি বানিয়ে নিতে পারেন তারপরে এগুলো রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে শুকানো হয়ে গেলে আপনি এগুলোকে একটি বায়ুরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন অনেকদিন পর্যন্ত। এই বড়ি গুলো আপনি

প্রতিদিন খালি পেটে সকালে এবং রাত্রে ঘুমোতে যাওয়ার আগে একটি করে পানি দিয়ে গিলে খেতে পারেন এতে করে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। নিম পাতায় এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা হচ্ছে
  • মুখের ব্রণ এবং ব্রনের দাগ দূর করার জন্য আপনারা নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।
  • নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদের বড়ি আপনাদের শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে অনেক কাজে আসবে।
  • আপনাদের ত্বকের রং উজ্জ্বল এবং ফর্সা করার জন্য কাঁচা হলুদ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • কাঁচা হলুদে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বকের বলি রেখা এবং বার্ধক্য জনিত সমস্যা প্রতিরোধ করার কাজে আসবে কোন রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া।
  • নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের পরিপাক যন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে এবং বিপাক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে।
  • নিম পাতা আমাদের শরীরের এলার্জিজনিত সমস্যা চুলকানি ও ফুসকুড়ি ইত্যাদি নানা রোগ দূরে রাখতে সাহায্য করে।
  • নিম পাতায় এবং কাঁচা হলুদ আপনারা আপনাদের ত্বকের রোদে পোড়া দাগ দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য আপনারা এক চা চামচ পরিমাণে নিমপাতা বাটা কাঁচা হলুদ বাটা তার সাথে মুলতানি মাটি এক চা চামচ এবং এক চা চামচ পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে রোদে পোড়া জায়গায় লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট তারপরে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলতে পারেন এটা আপনারা সপ্তাহে দুই দিন ব্যবহার করতে পারেন তিন সপ্তাহ পর্যন্ত।
  • ত্বকের অতিরিক্ত তেল ভাব দূর করার জন্য আপনারা কাঁচা হলুদ এবং নিমপাতা ও চন্দনের গুড়া দিয়ে পেক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
  • চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার জন্য আপনারা কাঁচা হলুদ এবং নিমপাতা ব্যবহার করতে পারেন।

কাঁচা হলুদ খেলে কি ওজন কমে

কাঁচা হলুদ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এটা খেলে যেমন অনেক অসুখের থেকে রক্ষা পাওয়া যায় আবার আমাদের ত্বক চুল এর জন্য অনেক উপকারী কাঁচা হলুদ। মোট কথা কাঁচা হলুদের গুণের কথা কখনোই আমরা বলে শেষ করতে পারবো না। কাঁচা হলুদে আছে অনেক এন্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এন্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য যেগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রকমের ক্যান্সার হার্টের অসুখ এবং ত্বকের যত্নে অনেক উপকারী। অনেকেই হয়তো জানেন না যে কাঁচা হলুদ খেলে ওজন কমে কি কমে না হ্যাঁ

কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে ওজন কমে। কাঁচা হলুদ আমাদের অস্থির স্বাস্থ্য উন্নতিতে সহায়তা করতে পারে যার ফলে আমাদের শারীরিক দক্ষতা ও সম্প্রেষণ বৃদ্ধিতেও অনেক সাহায্য করে। কাঁচা হলুদের থাকা অ্যান্টি ওবেসিটি গুন আছে যা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি জমতে দেয় না এছাড়াও আমাদের মেটাবলিজম এর হাড় বাড়াতে সাহায্য করে। তাই কাঁচা হলুদ আমাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমানো জন্য এটা কার্যকরী উপাদান। আবার হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে।

কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রাচীন কাল থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হলুদকে মহা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি প্রাণঘাতী ক্যান্সার রোগ দূর করতে ব্যবহার করা হয়। কাঁচা হলুদের থাকা কারকিউমিন এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলো আমাদের বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আমাদের ত্বকের যত্নেও অনেক উপকারে আসে এই কাঁচা হলুদ। এখন আমরা আলোচনা করব কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। কাঁচা হলুদের উপকারিতা
  • হার্টের জটিল রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আপনারা কাঁচা হলুদ খেতে পারেন। কাঁচা হলুদ আপনাদের হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অনেক উপকারে আসবে।
  • প্রদাহের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে কাঁচা হলুদ। আপনাদের শরীরে কোন রকমের রোগ বাসা বাঁধতে পারবে না এমনকি ক্রনিক রোগ থেকেও রক্ষা পেতে প্রদাহ কমাতে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন।
  • কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনারা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন। কারণ এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি হতে দেয় না।
  • কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনাদের অ্যালঝাইমার্স রোগ প্রতিরোধ করতে পারবেন। এই রোগে আক্রান্ত হলে রোগের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে থাকে এজন্য আপনারা প্রতিদিন কাঁচা হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
  • কাঁচা হলুদের থাকা কারকিউমিন নামক উপাদান আছে যা মস্তিষ্কে স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করতে এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।
  • কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনার অস্থির স্বাস্থ্য উন্নতিতে কাজ করবে যা আপনার শারীরিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
  • কাঁচা হলুদের থাকা অ্যান্টি ওবেসিটি গুণ আছে যা আপনাদের শরীরে বাড়তি চর্বি জমতে দেবে না এবং মেটাবলিজম এর হার বাড়াতে সাহায্য করবে এবং আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে কাঁচা হলুদ সাহায্য করে।
  • কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনি আপনার লিভার ভালো রাখতে পারবেন লিভারের চিকিৎসায় এই হলুদ ব্যবহার করা হয় কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
  • কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে আপনি আপনার সর্দি কাশি দূর করতে পারবেন কারণ এতে আছে ভিটামিন সি।
  • কাঁচা হলুদ আপনাদের সানবার্ন চোখের নিচের কালো দাগ রোদে পোড়া দাগ ব্রণ ইত্যাদি দূর করতে পারে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার জন্য আপনারা এলোভেরার সাথে কাঁচা হলুদ এর ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
এবার আমরা জানবো কাঁচা হলুদের কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। আমাদের কোন জিনিসই বেশি পরিমাণে ব্যবহার করা বা খাওয়া ঠিক নয় এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে। কাঁচা হলুদের কিছু অপকারিতা নিচে আলোচনা করা হলো
  • অতিরিক্ত হলুদ আমাদের শরীর থেকে আয়রন শোষণ করে নিতে পারে। এর জন্য তখন আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে থাকে এবং শরীরে আইরনের ঘাটতি দেখা দিতে থাকে।
  • হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী কিন্তু এটি বেশি খেলে অ্যানিমিয়া হতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে কিডনি স্টোন রক্ত পাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • হলুদ বেশি পরিমাণে হলুদ খাওয়ার ফলে আমাদের হজমের সমস্যা হতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে কাঁচা হলুদ খাওয়ার ফলে মাথা ধরা এবং ত্বকের সমস্যা এছাড়াও লিভার বড় হওয়া আলসার ও প্রদাহ ইত্যাদি সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ত্বকের যত্নে হলুদ গুঁড়া

প্রাচীন কাল থেকে আমরা রূপচর্চার কাজে বা ত্বকের যত্নে হলুদ বা হলুদের গুড়া ব্যবহার করে থাকি। হলুদ হচ্ছে ভেষজ গুনে ভরপুর তাই এটি আমাদের ত্বকের যত্নে দারুন ভাবে কাজ করে থাকে। এজন্য আমরা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে রূপচর্চার কাজে এটার ব্যবহার করতে পারি। রূপ বিশেষজ্ঞদের মতে আমাদের গায়ের রং উজ্জ্বল এবং ফর্সা হওয়া থেকে শুরু করে আমরা ব্রণ এলার্জি পড়া দাগ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে হলুদের ব্যবহার করতে পারি। আমরা হলুদের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারি ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদ ব্যবহার না করেও।

তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের জন্যঃ আপনাদের মধ্যে কারো তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকে এ ক্ষেত্রে আপনারা অল্প পরিমাণে গুড়া হলুদ এবং এর সাথে অল্প পরিমাণে মধু এবং দই মিশিয়ে এর সাথে চাইলে আপনারা কাঁচা দুধও মেশাতে পারেন। এ সকল উপকরণ একসাথে মিশিয়ে এই মিশ্রণটি আপনাদের মুখে রাখতে পারেন বিশ মিনিট তারপরে শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। এভাবে আপনাদের তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে পারবেন।

ত্বকের জেল্লা ফিরিয়ে আনতেঃ আপনারা সারাদিন রোদে ঘুরে বেড়ান এতে আপনাদের ত্বকের জেল্লা হারিয়ে যায় আর এ থেকে বাঁচার জন্য আপনারা দুই চামচ পরিমাণে বেসন এবং তার সাথে পরিমাণে আধা চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং দুই চা চামচ পরিমাণে মধু এবং ডাবের পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে এই মিশ্রণটি আপনাদের মুখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে তারপরে শুকিয়ে গেলে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে অনেক উপকারে আসবে।

মুখের জ্বালা এবং র‍্যাশ কমাতেঃ আপনাদের মুখের চামড়া পাতলা হওয়ার কারণে রোদে থাকলে মুখে জালা এবং র‍্যাশ বের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এজন্য আপনারা একটি বাটিতে এক টেবিল চামচ পরিমাণে দই এবং তার সাথে হলুদ গুঁড়ো অল্প পরিমাণে এবং মধু মিশিয়ে মিশন তৈরি করে সেই মিশ্রণটি কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। একটু ঠান্ডা অবস্থা হয়ে আসলে সেটা মুখে মাখতে হবে এতে করে আপনাদের মুখের লাল ভাব এবং জ্বালা ভাব কমবে।

ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেঃ আপনারা আপনাদের ত্বকের তারণ্য ধরে রাখার জন্য হলুদ গুঁড়ো ১/৪ চা চামচ এবং এক টেবিল চামচ পরিমাণে এভোকাডার পেস্ট ও এক চা চামচ পরিমাণে টক দই একসাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে নিতে পারেন দশ মিনিট মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে গেলে তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে আপনাদের ত্বক হাইড্রেড হবে এবং আপনাদের ত্বকের কারণ ও ধরে রাখতে সক্ষম হবেন আপনারা।

ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ

আপনারা আপনাদের মুখের ব্রণ দূর করতে অনেক অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন এবং অনেক জিনিস ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু আপনারা কাঁচা হলুদ ব্যবহার করেও আপনাদের মুখের ব্রণ দূর করতে পারেন। এটা আপনাদের ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়ে থাকে ব্রণ সহ অনেক সমস্যায় দূর করা সম্ভব হবে এর দ্বারা ব্রণ দূর করার জন্য আপনারা হলুদের কিছু ব্যবহার জেনে নিন।

ব্রণের দাগ দূর করতেঃ আপনাদের মুখের ব্রণের বা যে কোন দাগ ছোপ দূর করার জন্য আপনারা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। একটি গবেষণায় জানা যায় যে হলুদে থাকা অনেক উপাদান রয়েছে যা আমাদের ত্বকের দাগ দূর করতে অনেক কার্যকর। ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা লেবুর রসের সাথে হলুদ মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন এভাবে দশ মিনিট রাখার পরে ধুয়ে ফেলতে হবে এতে করে ব্রণ দূর হয়ে যাবে।

বলি রেখা দূর করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতেঃ আপনারা আপনাদের ত্বকের বলি রেখা দূর করার জন্য এবং ত্বককে উজ্জ্বল করার জন্য হলুদ ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য আপনারা হলুদের সাথে মধু মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন এভাবে এক সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

ত্বকের জেল্লা বাড়াতে এবং প্রদাহ কমাতে ও ব্রণ দূর করতেঃ আপনারা আপনাদের ত্বকের প্রদাহ কমাতে ব্রণ দূর করার জন্য এবং ত্বকের জেল্লা ফিরে আনার জন্য হলুদের ফেসপ্যাক মুখে লাগাতে পারেন। এর জন্য আপনারা এক চা চামচ পরিমাণে গুড়ো হলুদ মধু এবং টক দই আবার এর সাথে দুধ ব্যবহার করতে পারেন এগুলো সব একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগাতে করতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে তারপরে শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের জন্য হলুদ সম্পর্কিত অনেক তথ্য দিয়েছে এজন্য আপনারা অবশ্যই এই পোস্টটি পড়ে হলুদের ব্যবহার এবং উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে তারপরে ব্যবহার করবেন। নিমপাতা এবং কাঁচা হলুদের উপকারিতা ছাড়াও কাঁচা হলুদের উপকারিতা ও অপকারিতা বলা হয়েছে এখানে যেগুলো আপনাদের অনেক কাজে আসবে। তাই এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনারা এই পোস্টটি আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন।







এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url