কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা ছাড়াও বাচ্চাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেক সঠিক তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু পাননি আপনারা আজকে আমার এই পোস্টের মাধ্যমে এগুলো জানতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে নিন
আজকে আমার এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা বাচ্চাদের কলা খাওয়ার নিয়ম, বাচ্চাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, গর্ভবতী মহিলাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও আরো অনেক কয়েকটি বিষয়ে জানতে পারবেন। যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং অন্য কেউ উপকৃত করতে পারবেন। কলার মোচা আমাদের জন্য অনেক উপকারী সেই সাথে কলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা কথা এখানে বর্ণনা করা হয়েছে।

ভূমিকা

কলা আমাদের দেশে সবার কাছেই একটা জনপ্রিয় ফল এবং এই ফলটি আমরা বছরের সব সময়ই পেয়ে থাকি এবং এটা সহজলভ্য এবং সুস্বাদু। এটা খাওয়ার ফলে আমাদের অনেক উপকার হয় বড় থেকে ছোট সবার। এছাড়াও আমরা কলার মজা সবজি হিসেবে ভর্তা করে খেয়ে থাকি এতে অনেক পুষ্টিগণ ও ভিটামিন আছে যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কলার মোচা খাওয়ার ফলে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে, আমাদের ত্বক ও চুল ভালো থাকে, আমাদের দাঁতের গঠনের জন্য, 

 
আমাদের রাতকানা রোগ ভালো হয় এবং গলগন্ড রোগের বিরুদ্ধে কাজ করার ক্ষমতা রাখে এই কলার মোচা। এছাড়া বাচ্চাদের কলা খাওয়ার ফলে তাদের শক্তির যোগান দিয়ে থাকে কলা। বাচ্চাদের হজম শক্তি ঠিক রাখে, হাড়ের জন্য ভালো, চোখের জন্য ভালো, রক্তস্বল্পতা রোধ করে এবংমস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। এ সকল উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের সকলের খাবার তালিকায় কলা থাকা উচিত। ছয় মাস বয়সের পর থেকে বাচ্চাদের কলা খাওয়ানো যেতে পারে।

বাচ্চাদের কলা খাওয়ার নিয়ম

কলা একটি সুস্বাদু পুষ্টিকর ফল এই ফলটি আমরা বছরের সব সময়ে পেয়ে থাকি। কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, ভিটামিন এ, সি, ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি পাওয়া যায় যেটা বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে আসে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা বাচ্চাদের কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের বাচ্চাদের কলা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বলবো। আমরা ছোট বাচ্চাদের বয়স যখন ৬ মাস পূর্ণ হবে তারপর

থেকে তাকে প্রতিদিন একটি করে ছোট সাইজের কলা খেতে দিতে পারি। অর্থাৎ বাচ্চা যখন অল্প কঠিন খাবার বা কঠিন খাবার খাওয়া শুরু করবে তখন থেকে তাকে কলা খেতে দেওয়া যাবে। ছোট বাচ্চাদের গলা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে কাঁটা চামচের সাথে এটাকে চটকে নিতে হবে তারপরে শিশুকে এটা খাওয়াতে হবে। এটা করার ফলে কলা নরম এবং পিউরি হয়ে যাবে যার ফলে শিশুর কলা খাওয়ানোর সময় গলায় আটকে যাবে না শিশু সহজেই খেতে পারবে।

৯ মাস বয়স হলে শিশুরা ছোট কঠিন কামড় এর সাথে খাবার খেতে শুরু করে তখন আপনি আপনার বাচ্চাকে কলা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে অথবা চটকে খাওয়াতে পারেন। শিশুর বয়স যখন বছর পার হবে তখন শিশু হাত দিয়ে অল্প অল্প করে খেতে শুরু করবে এ সময় আপনি কলা ছোট করে টুকরো করে কেটে কাঁটা চামচের সাহায্যে তাকে খাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারেন। শিশুকে কলা মাখিয়ে বা পেস্ট করে খেতে দিতে হবে এতে করে তার হজম করা সহজ হবে।

কিন্তু শিশুকে কলা খাওয়ানোর সময় একটু সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়াতে হবে যাতে করে কলা শিশুর গলায় আটকে না যায়। শিশুকে কখনোই অনেক বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ানো ঠিক নয় এতে করে তার ক্ষুধা মরে যেতে পারে তার দুধ এবং অন্যান্য খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমে যেতে পারে। কিন্তু শিশুকে রাতে কখনোই কলা খাওয়ানো উচিত নয় এতে করে তাদের বোল্টিং এবং গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।

বাচ্চাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কলা পুষ্টি গুণে ভরপুর এবং সহজলভ্য সুস্বাদু ফল। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের ও কলা খাওয়ানো উচিত কলার অনেক উপকারিতা রয়েছে যেগুলো বড় ছোট সবার জন্যই দরকার। আমাদের প্রতিদিনের খাবার তালিকায় বড়দের ও ছোটদের কলা থাকা উচিত। এতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬, পটাশিয়াম, ফাইবার, প্রাকৃতিক সুগার, সুক্রোজ, গ্লুকোজ, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সি ইত্যাদি। আজ আমরা জানবো বাচ্চাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে । বাচ্চাদের কলার উপকারিতা

শক্তির যোগান দেয়ঃ শিশুরা সারাদিন অনেক ছোটাছুটি করে থাকে এজন্য তাদের অনেক শক্তির দরকার হয়। আর এই শক্তির যোগান দিতে পারে কলা এজন্য বাচ্চাদের প্রতিদিন পাকা কলা খাওয়ানো উচিত। কলা খাওয়ার ফলে বাচ্চাদের ক্লান্তে দূর হবে এবং বাচ্চারা শক্তি পাবে।

হজম শক্তি ঠিক রাখতেঃ কলার মধ্যে আছে অনেক ফাইবার যা হজম শক্তি ঠিক রাখতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কলাতে আছে পেকটিন নামক ফাইবার ।এই ফাইবার পানিতে দ্রবীভূত কার্বোহাইড্রেট কে সুগারে পরিণত করতে পারে। এছাড়াও কলা খাওয়ার ফলে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। বাচ্চাদের অনেক সময় ধরে পেট ভরা থাকে।

হাড়ের জন্য ভালোঃ কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এই পটাশিয়াম সোডিয়াম কে লঘু করে দিয়ে থাকে। বাচ্চাদের খাবারের তালিকায় সোডিয়াম থাকতে পারে কলা খেলে তা নিউট্রালাইজ হয়ে যায় যার ফলে বাচ্চাদের হাড় শক্ত হয়। এছাড়া বাচ্চাদের প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম বের হয়ে যায়। কলা খাওয়ার ফলে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয় বাচ্চাদের এবং হাড় শক্ত হয়।

চোখের জন্যে ভালোঃ বাচ্চাদের রোজ কলা খাওয়ানো হলে তাদের ভিটামিন এ এর অভাব পূরণ হয়। কলাতে ভিটামিন এ থাকে আর এর ফলে বাচ্চাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়ে। কারণ কলাতে থাকা ভিটামিন এ বাচ্চাদের চোখের জন্য অনেক ভালো।

রক্তস্বল্পতা রোধেঃ যাদের শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদন হয় না তাদের রক্তস্বল্পতায় ভুগতে দেখা যায় বেশি। এজন্য বাচ্চাদের খাবার তালিকায় আয়রন, ফলিক এসিড, কপার এবং ভিটামিন বি ১২ থাকা দরকার যথেষ্ট পরিমাণে এগুলো আমাদের রক্তের লোহিত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে আর এই সকল পুষ্টি উপাদানগুলো কলার মধ্যে আছে। কলা হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং এনিমিয়া প্রতিরোধ করে থাকে। বাচ্চাদের কলা খাওয়ানোর ফলে তাদের রক্তস্বল্পতা রোধ করা সম্ভব হবে।

মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করেঃ কলার মধ্যে এমন অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো বাচ্চাদের মস্তিষ্কের জন্য অনেক দরকার। কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম বাচ্চাদের মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করবে এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা ঠিক রাখবে ও শক্তি বৃদ্ধি করবে।

এতক্ষণ তো আমরা জানলাম কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এবার আমরা জানব কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। যে কোন ফল বা খাবার অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালোর চাইতে খারাপের পরিমাণটা বেশি হতে পারে। এজন্য আমাদের সব ফল বা খাবারই ঠিকমতো নিয়ম করে খাওয়া উচিত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তো আরো সচেতন থাকা উচিত। কলার অপকারিতা হচ্ছে
  • যারা অনিদ্রায় ভুগছেন তারা কলা না খাওয়াই ভালো রাতের বেলা।
  • যদি ঠান্ডা লাগে তাহলে কলা না খাওয়াই ভালো কারণ বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে বাচ্চাদের ও বড়দের ঠান্ডা লাগার প্রবনতা বেড়ে যেতে পারে আরও বেশি।
  • যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তাদের কলা না খাওয়াই উচিত এতে করে মাইগ্রেনের সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
  • কলাতে অনেক পরিমাণে সুগার এবং কার্বোহাইড্রেট আছে যেটা আমাদের দাঁতের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এজন্য বেশি পরিমাণে কলা খাওয়া উচিত নয়।

গর্ভবতী মহিলাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা

একজন গর্ভবতী মহিলাকে আরো বেশি সচেতন থাকতে হয় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে। কারণ এ সময় তার নিজের শরীরের পাশাপাশি তার গর্ভে বড় হওয়া বাচ্চার জন্যেও খাবারের দরকার হয়। এসময় গর্ভবতী মহিলাদের একটু বেশি পরিমাণে খাবার খেতে হবে তার শরীর স্বাস্থ্যের এবং তার বাচ্চার জন্য। তাকে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পুষ্টি গুন সমৃদ্ধ খাবার এবং ফল রাখতে হবে। গর্ভবতী অবস্থায় কলা একটি ভালো ফল হতে পারে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য কারণ কলাতে অনেক পুষ্টিকর

ভিটামিন ও উপাদান আছে যেটা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মহিলা এবং তার গর্ভে থাকা সন্তানের দুজনার জন্যই ভালো হবে। আজকে আমি আপনাদের গর্ভবতী মহিলাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বলব যেটা হয়তো আপনারা পড়ার মাধ্যমে আরো ভালোভাবে জানতে পারবেন গর্ভবতী মহিলাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তবে আসন জানা যাক গর্ভবতী মহিলাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ কলাতে অনেক পটাশিয়াম থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যকর রক্তচাপের মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মহিলার রক্তচাপের ওঠা নামা হয়ে থাকে যা কলা খাওয়ার মাধ্যমে এড়াতে পারবেন এজন্য আপনার খাবার তালিকায় প্রতিদিন কলা রাখতে পারেন।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নতঃ গর্ভবতী মহিলাদের আয়রনের মাত্রা কম থাকা একটি বড় সমস্যা। আর এজন্য আপনি আপনার খাবার তালিকায় প্রতিদিন কলা রাখতে পারেন কলাতে অনেক আয়রন থাকে। এটি আপনার খাদ্যে প্রাকৃতিক আয়রন সম্পূরক খাবার হিসেবে কাজ করবে।

মর্নিং সিকনেস দূর করতেঃ বিশেষজ্ঞদের মতে কলাতে অনেক ভিটামিন বি পূর্ণ থাকে যেটা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বমি রোধ করে থাকে। মাথা ব্যাথা এবং এসিডিটি এগুলো নিয়ে ঘুম থেকে ওঠা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে তাই আপনাকে সুস্থ বোধ করার জন্য এবং এ সকল লক্ষণ কমানোর জন্য উপায় বের করতে হবে। আর এজন্য আপনি এ সময় আপনার খাবার তালিকায় কলা রাখতে পারেন যাতে করে আপনার এ সকল সমস্যা অর্থাৎ মর্নিং সিকনেস দূর হয়।

বুক জ্বালা কমাতেঃ গর্ভাবস্থায় অনেকের বুক জ্বালা সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এ সময় আপনি যদি এ সমস্যাটি কমাতে চান তাহলে আপনার খাবার তালিকায় কলা রাখতে পারেন কারণ কলা খাওয়ার ফলে তা আপনার খাদ্য নালী এবং পাকস্থলীতে অম্লতার ভাব কমে আনতে পারে।

শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশেঃ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নতি করার জন্য ভিটামিন বিষ হয় আইরন এবং ফলিক এসিড দরকার। আর এ সকল উপকারী উপাদান গুলো কলার মধ্যে আছে এজন্য আপনার গর্ভে থাকা সন্তানের মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য নিয়মিত কলা খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

কলার জাত ও কোন কলা খাওয়া বেশি উপকারী

কলা সারা বিশ্বব্যাপী একটি জনপ্রিয় ফল। এই ফল উষ্ণ জলবায়ু দেশসমূহে ভালো জন্মায়। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কলার উৎপত্তিস্থল হিসেবে পরিগণিত হয়। আমাদের বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বহু দেশে কলা জন্মে থাকে ও পাওয়া যায়। বাংলাদেশের নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, যশোর, বরিশাল, রংপুর, জয়পুরহাট ও মেহেরপুর ইত্যাদি এলাকায় শত শত বছর ধরে কলার চাষ করা হয়। পার্বত্য এলাকায় বাংলা কলা, বনকলা ও মামা কলা ইত্যাদি বুনো জাতের কলা চাষ করা হয়ে থাকে।

বাংলাদেশে প্রায় ১৯ টি জাতের কলা আছে। কলার জাতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পাকা অবস্থাতে খাওয়ার জন্য কলার জাত চার প্রকারের।
  • সম্পূর্ণ বীজমুক্ত কলা এগুলোর মধ্যে আছে অমৃত সাগর, সবরি, দুধসর ও দুধ সাগর ইত্যাদি।
  • দুই একটি বীজ যুক্ত কলা। এগুলোর মধ্যে আছে চম্পা, চিনি চম্পা, কবরী, চন্দন কবরী এবং জাব কাঁঠালি ইত্যাদি।
  • বীজযুক্ত কলার মধ্যে আছে এটেকলা, গোমা এবং সাংগী আইটা প্রভৃতি।
  • এবং আনাজী কলার মধ্যে আছে বেহুলা, মন্দিরা, বিয়ের বাতি এবং ভেড়ার ভোগ ইত্যাদি।
কলা আমরা বাজারে কাঁচা পাকা দুই রকমেরই পেয়ে থাকি। কাঁচা কলা আমরা সবজি হিসেবে খেয়ে থাকি এবং পাকা কলা আমরা ফল হিসেবে খেয়ে থা্কি। এই ফলটি বছরের সব সময় পাওয়া যায়। এবং এতে আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি উপাদান আছে। এটা আমাদের অসুস্থতার জন্য থাকি আমরা ক্ষুধা লাগলে পাকা কলা খায় পেট খারাপের কোনো রকমের সমস্যা হলে আমরা কাঁচা কলা খেয়ে থাকি। দুই রকমের কলাতে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায় এবং কাঁচা বা পাকা দুই

রকমের কলায় আমাদের জন্য উপকারী। কাঁচা কলা আমরা সবজি হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকি এতে অনেক ফাইবার বেশি থাকে এবং চিনির পরিমাণটা বেশি থাকে না। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা কাঁচা কলা খেতে পারেন। এটি আমাদের লিভারের জন্য ভালো কারণ এতে আছে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া। কাঁচা কলা যেমন উপকারী তেমনি পাকা কলাও আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। পাকা কলা দামে সস্তা এবং পাকা কলা খাওয়ার ফলে আমাদের খাবার খুব সহজেই হজম হয়। 

পাকা কলা তে আছে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যেটা আমাদের সহজে খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে আরো আছে অনেক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে কিছু ক্ষেত্রে পাকা কলা খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে কারণ পাকা কলাতে অনেক চিনি থাকে এজন্য যাদের টাইপ দুই ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য পাকা কলা ক্ষতিকর হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা

আমরা সকলে কলা খেতে পছন্দ করে থাকি সবজি হিসেবে বা পাকা ফল হিসেবে। কিন্তু আমরা কলার মোচা খেতে পারি কারণ কলার মোচাতে আছে প্রচুর আয়রন। গ্রামের দিকে কলার মোচা বেশি পাওয়া যায় সব ধরনের কলার মোচায় খাওয়া যায় তবে কচি মোচা খাওয়া বেশি ভালো এটা অনেক নরম এবং সুস্বাদু হয় এবং খুব সহজে রান্না করা যায়। গর্ভবতী মহিলাদের এবং তার গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্ক গঠনের জন্য এই কলার মোচা খাওয়া উচিত নিয়মিত গর্ভবতী মহিলাদের এতে করে গর্ভবতী


মহিলায় এবং তার গর্ভে থাকা সন্তানের দুজনারে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে। গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে যে কথা হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না। কিন্তু আজকে আমার এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা তা জানতে পারবেন। কলার মোচাতে অনেক ভিটামিন এ থাকে যেটা আমাদের রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে এবং আমাদের দৃষ্টি শক্তি হারানো থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। গর্ভে থাকা অবস্থায় শিশুর প্রায় ৭০ ভাগ মস্তিষ্কের গঠন হয়ে থাকে এ সময় গর্ভবতী

মহিলা যদি কলার মোচা পরিমিত পরিমাণে খান তাহলে তার শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারে আসবে। কলার মোচা হাজারো পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি সবজি। এতে থাকা পুষ্টি গুণগুলো বাচ্চার গায়ের রং ফর্সা করতে বা পরিষ্কার করতে অনেক সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার ফলে তার বাচ্চার দেহ গঠন এবং বুদ্ধি বিকাশের জন্য অনেক উপকারে আসবে। যারা বাচ্চার গায়ের রং নিয়ে চিন্তা করেন তারা কলার মোচা খেতে পারেন কারণ কলার মোচা বাচ্চার গায়ের রং পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা

আমরা সকলে কলার মোচা খেতে হয়তো পছন্দ করি না কিন্তু কলার মোচাতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ যেটা আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে থাকে। কলার মোচাতে রয়েছে আয়রন এবং ভিটামিন এ ছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান। যেগুলো আমাদের বুড়ো থেকে বাচ্চা বয়স্ক সবার জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কলার মোচা অনেক উপকারী কলার মোচার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের বলব। কলার মোচার উপকারিতা

পুষ্টি উপাদানঃ কলার মোচাতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ ভিটামিন সি ফাইবার ভিটামিন এ আয়রন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। এছাড়াও আরো আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন এ প্রোটিন সহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

মন ভালো রাখতেঃ কলার মোচাতে আছে ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের হতাশ কমিয়ে আনে এবং উদ্বেগ কমায়। আমাদের মন মেজাজ ভালো রাখার জন্য কলার মোচা খাওয়া উচিত।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা প্রতিনিয়ত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করুন কারণ কলার মোচা খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে আছে ফেনোলিক এসিড ও বায়োএকটিভ যা আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ কমাতেঃ কলার মোচাতে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ রোগ বা অসুখ কমাতে সাহায্য করে থাকে। এটা আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আমাদের হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

পিরিয়ড স্বাভাবিক রাখেঃ কলার মোচা পিরিয়ডের সময় যে ব্যথা হয় তা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমাদের পেটের বিভিন্ন অসুখ থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফোলা ভাব ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

ত্বকের জন্য ভালোঃ কলার মোচাতে আছে অনেক আয়রন যা আমাদের ত্বক এবং চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও আরো আছে ক্যালসিয়াম, আয়োডিন এবং ম্যাগনেসিয়াম যেগুলো আমাদের দাঁতের গঠনের জন্য অনেক উপকারী।

রাতকানা রোগের বিরুদ্ধেঃ কলার মোচাতে থাকে ভিটামিন এ যা আমাদের রাতকানা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে। যার ফলে আমরা আমাদের দৃষ্টি শক্তি হারানো থেকে রক্ষা পেতে পারি।

গলগন্ড রোগের বিরুদ্ধেঃ কলার মোচাতে আছে অনেক ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়োডিন যেগুলো আমাদের গলগন্ড রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের এর রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।

হিমোগ্লোবিন শক্তিশালী করতেঃ রক্তের মূল উপাদান হচ্ছে হিমোগ্লোবিন আর এই হিমোগ্লোবিনকে শক্তিশালী করার জন্য কলার মোচা খাওয়া অনেক দরকার। আমাদের দেহের রক্তের পরিমাণ ঠিক রাখার জন্য এবং রক্তশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এগুলো দরকার।

হাড় মজবুত করতেঃ নির্দিষ্ট বয়স হওয়ার পরে মহিলাদের মাসিক বন্ধ হয়ে যায় এ সময় নারীদের হাড় গঠন মজবুত করার জন্য এই কলার মোচা অত্যন্ত উপকারী একটা সবজি। এছাড়াও বয়স্ক নারী পুরুষ বাড়ন্ত শিশু এবং যারা শারীরিক পরিশ্রম করে এবং যারা খেলোয়াড় তাদের জন্য এই সবজিটার কোন তুলনা নেই অর্থাৎ আশীর্বাদ স্বরূপ।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্যঃ গর্ভবতী মহিলাদের জন্য কলার মোচা অত্যন্ত উপকারী। শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় ৭০ ভাগ মস্তিষ্কের গঠন হয়ে থাকে তার মায়ের পেটে এ সময় সেই সুর মস্তিষ্ক বিকাশ এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য গর্ভবতী মায়ের কলার মোচা খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

এতক্ষণ তো আমরা জানলাম কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এখন আমরা জানবো কলার মোচা খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। কলার মোচার যেমন উপকারিতা আছে তেমনি কিছু অপকারিতা ও আছে যেগুলো হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। যারা জানে না তারা জেনে নিন কলার মোচার অপকারিতা
  • কলার মোচা যদি আমরা বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকে তাহলে আমাদের পেট ব্যথা এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের শরীরে এলার্জি আছে তারা কলার মোচা খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে খাবেন কারণ কলার মোচা খাওয়ার ফলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • বেশি পরিমাণে কলার মোচা খাওয়ার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে।

কলার মোচার পুষ্টিগুণ

কলার মোচা বারোমাসি একটি সবজির এই সবজিটা গ্রামের দিকে বেশি পাওয়া যায় এর রং দেখতে হয় গাঢ় লাল রঙের। এই কলার মোচাতে অনেক পুষ্টিগুণ আছে যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। পুষ্টিগুণে ভরপুর থাকা এই সবজিটা আমাদের শরীরের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। এই সবজিটা আমরা ভর্তা করে খেতে খুব পছন্দ করে থাকে অনেকেই অনেকেই আবার অনেক রকম পদ্ধতির ব্যবহার করে রান্না করে থাকি। এটা দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি গুন


ও পুষ্টিতেও অতুলনীয়। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলার মোচাতে থাকে প্রোটিন থাকে ১.৭ গ্রাম, ফসফরাস থাকে ৪২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম থাকে ৩২ মিলিগ্রাম, ৪২০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এছাড়াও আছে ৫.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট সহ ১৮৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ভিটামিন এ আছে ২৭ আইইউ, আইরন আছে১.৬ মিলিগ্রাম, ফ্যাটের পরিমাণ ০.৭ গ্রাম, ১.৩ গ্রাম আছে আঁশ, থায়ামিন আছে .০৫ মিলিগ্রাম এবংরিবোফ্লোবিন আছে .০২ মিলিগ্রামএছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে ।

কলার মোচার অনেক ঔষধি গুনাগুন আছে এটা আমাদের হজম শক্তি উন্নত করে এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কলার মোচা তে অনেক আয়রন থাকে যা আমাদের ত্বক এবং চুল ভালো রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে।

লেখকের মন্তব্য

ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের জন্য কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা এবং বাচ্চাদের কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক সঠিক তথ্য জানতে পারবেন তাই এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আপনারা অবশ্যই এই পোস্টটি আপনাদের পরিচিত আত্মীয় বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url