কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ জেনে নিন

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমি আপনাদের কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ ছাড়াও ১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে ইত্যাদি বিষয়ে জানাবো এ সকল বিষয়ে আপনারা আগে হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি। এ সকল বিষয় জানতে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ জেনে নিন
এখানে আপনারা এই পোষ্টের মাধ্যমে কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ ছাড়া খালি পেটে কলা খেলে কি হয় ,কলা খাওয়ার সঠিক সময় এবং ১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে ইত্যাদি কলা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে যেগুলো পড়ে অনেক সঠিক তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। কলা খাওয়ার ফলে আমাদের অনেক উপকার হয় এ সকল বিষয় পড়লে আপনারা জানতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি।

ভূমিকা

কলা হচ্ছে আমাদের দেশের একটা পরিচিত ফল এবং আমাদের সকলের কাছে খুব জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু ফল। এই ফল খাওয়ার ফলে আমাদের অনেক উপকার হয় আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে আমাদের কিডনি ও হার্ট ভালো থাকে। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, আমাদের স্মৃতি শক্তি এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক উপকার পায় আমরা কলা খাওয়ার ফলে। করা হচ্ছে একটি সহজলভ্য এবং বছরের সব সময় পাওয়া যায়


যেটা আমরা সকলে খেয়ে থাকে সকালের নাস্তায় অথবা দিনের যেকোনো সময়। তবে সকালে খালি পেটে কলা খেলে আমাদের এসিডিটির সমস্যা হতে পারে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এজন্য সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া উচিত নয়। কলায় অনেক পুষ্টি গুন ও ভিটামিন আছে যেমন ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। একটা মাঝারি আকারের কলায় থাকে ১০৫ ক্যালোরি।

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়

কলা খুব সহজলভ্য একটা ফল কারণ এই ফল সবসময় পাওয়া যায় এবং এই ফলে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন থাকে যেটা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কলাতে আছে ফাইবার, খনিজ, আঁশ জাতীয় পদার্থ, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, শ্বেতসার, ভিটামিন বি৬ ইত্যাদি আরো পুষ্টিকর উপাদান। কলা হচ্ছে একটি সুস্বাদু ফল যেটা আমরা সবাই খেতে পছন্দ করি এবং খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে খালি পেটে কলা খেলে কি হয় অথবা খালি পেটে কি কলা খাওয়া

 
যায় এ সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদের বলব। খালি পেটে কলা খাওয়া ঠিক নয় এতে করে আমাদের অনেক সমস্যা হতে পারে তবে আমরা যদি অন্য যে কোন খাবারের সাথে এটা মিশিয়ে খায় তবে খাওয়া যাবে। কলা আমাদের দেহের শারীরিক ক্রিয়া-কলাপের জন্য অনেক প্রয়োজন পিএইচ এর ভারসাম্য রক্ষা, আমাদের দেহের পানির ভারসাম্য রক্ষা করতে, রক্তচাপ, হজম অথবা আমাদের পেশির সংকোচনের জন্য অনেক উপকারী এই কলা। নিউইয়র্কের পুষ্টিবিদ জেনিফার মায়েং বলেন, কলা

অল্প পাকা অথবা কাঁচা অবস্থাতে বেশি শ্বেতসার থাকে যেটা আঁশ এর মতো অনেকটা। কলা আমরা যত বেশি পাকা অবস্থায় খাব তত এতে আঁশ এর পরিমাণ কম হবে এবং শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকবে। খালি পেটে কলা খেলে এজন্য আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বাড়তে থাকে এর ফলে আমাদের শরীর ক্লান্ত লাগে। আবার আমরা যদি দুপুরে খালি পেটে এবং শরীরচর্চা করার আগে কলা খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীর ক্লান্ত লাগবে। তিনি আরো বলেন যে, সকালে দেহ রক্তে শর্করার মাত্রা

বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই এবং আমাদের শরীরে যদি ডায়াবেটিস না থাকে তাহলে এর ভারসাম্য রক্ষায় করার জন্য আরও বেশি ইনসুলিন উৎপাদন করে থাকে শরীর। আমাদের তাই সকালে খালি পেটে কলার মত সরল কার্বোহাইড্রেট এবং কম আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়। সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়তে পারে যার ফলে রক্তের শর্করার পরিমাণ কমতে থাকে এবং আমাদের এসিডিটি সমস্যা হতে পারে।

কলা খাওয়ার সঠিক সময়

আমরা সকলেই কমবেশি কলা খেয়ে থাকি কারণ কলা একটি সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর ও সুস্বাদু ফল। এতে অনেক ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ইত্যাদি আছে। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে শরীরে শক্তি যোগায়। কিন্তু আমরা অনেকেই কলা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জানি না আজকে এ ব্যাপারে আপনাদের বলব। আপনারা যারা কলা খেতে পছন্দ করেন তারা কলা খাওয়ার সঠিক সময় সম্পর্কে জানতে পারবেন

এবং উপকৃত হবেন। পুষ্টিবিদদের মতে কলা খাওয়া যেতে পারে নাস্তার সঙ্গে অথবা পরে। আমরা অনেকে সকালে নাস্তায় খাবারে শুধু কলা খেতে পছন্দ করে থাকি কিন্তু এই অভ্যাসটি আমাদের ত্যাগ করা উচিত। কারণ কলায় থাকে অনেক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও প্রাকৃতিক গ্লুকোজ। এজন্য কলা খাওয়ার ফলে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে এজন্য সকালের নাস্তায় আমাদের শুধু কলা খাওয়া উচিত নয়। আবার যাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে তাদের অনেক সমস্যা 

হতে পারে নাস্তায় শুধু কলা খাওয়ার ফলে। আবার কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন বেড়ে যেতে পারে কারণ কলা হচ্ছে উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার।

সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা খাওয়ার ফলে আমাদের অনেক উপকার হয় কারণ কলা হচ্ছে একটি পুষ্টি ও ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল এবং সহজলভ্য ফল সবসময়ই পাওয়া যায়। এতে আছে অনেক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ৬, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার ইত্যাদি ছাড়াও আরো পুষ্টি উপাদান যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। আমরা সকলেই দিনের যে কোন না যে কোন সময় কলা খেতে পছন্দ করে থাকি। সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা গুলো হচ্ছে

শক্তি প্রদান করে থাকেঃ সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে শক্তি আসে কারণ এতে থাকে কার্বোহাইড্রেট জা আমাদের শরীরে দ্রুত শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। এজন্য আমরা যদি সকালে কলা খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীর ক্লান্ত লাগবে না।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকেঃ কলাতে আছে অনেক ফাইবার যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে এজন্য যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা কলা খেতে পারেন সকালে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ কলাতে আছে অনেক পটাশিয়াম যা আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে। আপনাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হলে সকালে কলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ ভিটামিন বি৬ ও ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে থাকে। এজন্য আমরা যদি সকালে কলা খায় তাহলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।

অবসাদ কমাতেঃ কলাতে আছে ট্রিপটোফ্যান নামের এক ধরনের অ্যামিনো এসিড যেটা আমাদের ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে এজন্য আমাদের অবসাদ কমবে কলা খেলে সেই সাথে ভালো ঘুম হবে।

পেটের সমস্যা প্রতিরোধেঃ সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের পেটের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং অস্থির পেট নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এছাড়াও সকালে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের হৃদ রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মোড উন্নত করবে এবং স্টোকের ঝুঁকি কমাবে। তবে আমাদের সকালে খালি পেটে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকবে এটা খাওয়ার ফলে আমাদের এসিডিটি হতে পারে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এজন্য অন্য যে কোন খাবার বা পানীয়ের সাথে খাওয়া যাবে।

কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ 

কলা আমাদের সকলের কাছে একটা পরিচিত ফল যেটা বছরের সব সময় পাওয়া যায় এবং দামেও খুব সস্তা। কলাতে অনেক পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান আছে। এর পুষ্টিগুণের কথা আমরা বলে শেষ করতে পারবো না। আমরা ছোট বড় সকলে কলা খেতে খুব পছন্দ করি এটা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের অনেক উন্নতি ও উপকার পাওয়া যায় এটা আমাদের রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য অনেক সাহায্য করে থাকে।


কলাতে আছে ভিটামিন এ, সি, ই, বি ৬, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, ক্যালসিয়াম ও কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি। আমরা আজকে কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আপনাদের বলব। কলার উপকারিতা

হাড় শক্ত ও উন্নত করতেঃ কলার মধ্যে আছে অনেক ক্যালসিয়াম যা আমাদের শরীরের হাড় কে শক্ত করে তোলে এবং উন্নত করে এর পাশাপাশি দৃঢ় করতে সাহায্য করে। এটা আমাদের দাঁতের জন্যও অনেক উপকারী।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ কলাতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিক্যাল গুলোকে কম করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের শরীরের কোষ গুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে না। নিয়মিত কলা খাওয়ার ফলে আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন সি-এ এবং ই যা আমাদের ইমিউন ইউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রোগের সাথে লড়তে সহায়তা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেঃ কলায় থাকে অনেক পরিমাণে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ কলাতে আছে অনেক ফাইবার যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে এবং আমাদের পেট পরিষ্কার করতে ও সাহায্য করে থাকে।

পেটের সমস্যা দূর করতেঃ আপনাদের যাদের পেট খারাপের সমস্যা আছে তারা কাঁচা কলা খেতে পারেন এতে অনেক উপকার হবে।

অবসাদ কমাতেঃ কলাতে টিপটোফ্যান নামেরএক ধরনের অ্যমিনো এসিড আছে যেটা আমাদের ঘুমের হরমোন তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে এর ফলে আমাদের অবসাদ কমবে এবং ভালো ঘুম হবে।

ওজন বাড়াতেঃ যাদের শরীরের ওজন কম তারা কলা খেতে পারেন এতে করে আপনাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাবে কারণ কলায় আছে অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক বেশি ক্যালরি।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ কলাতে লেকটিন নামক প্রোটিন আছে যেটা আপনাদের লেকটিন ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করবে।

শক্তি সরবরাহ করেঃ আমরা যদি সকালে কলা খায় তাহলে আমাদের শরীরে শক্তি আসবে কারণ কলা হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় ফল যা আমাদের শরীরে তাড়াতাড়ি শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করবে। যার ফলে আমাদের শরীর ক্লান্ত লাগবেনা।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃ আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার মস্তিষ্কে স্মৃতিসক্তি বৃদ্ধি পাবে সেই সাথে এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আমাদের মগজের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের যোগান দিয়ে থাকবে।

রক্ত বৃদ্ধি করতেঃ কলাতে আছে ভিটামিন বি ৬ এটি আমাদের রক্তে থাকা লোহিত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে যার ফলে হাড় থেকে রক্তকণিকা উৎপন্ন হয় ভালো মাত্রায় এবং আমাদের রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে।

আলসার ভালো করেঃ আপনাদের পেটে আলসার ঘা হলে কলা খেতে পারেন কারণ কলার মধ্যে থাকা মিউসিলেজ আপনাদের পাকস্থলীর ভেতরের প্রাচীরের ক্ষতিগ্রস্ত মিউকাস পর্দা কে ভালো করে তুলতে সাহায্য করে।

কিডনি সুস্থ রাখতেঃ একটি গবেষণা থেকে দেখা যায় যে, যে সকল মানুষ প্রতিদিন কলা খেয়ে থাকেন কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৪০ ভাগ কম হয়ে থাকে তাদের। কারণ কলাতে থাকে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যেটা কিডনির কাজ সঠিকভাবে করতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও আমাদের কিডনি পাথর এবং মূত্রতন্ত্রের ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে থাকে ।

এতক্ষণ তো আমরা কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম এবার আমরা জানবো কলা খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে। যে কোন খাবারে আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় এতে করে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এজন্য আমাদের সকল খাবারে বুঝেশুনে খাওয়া উচিত নিয়ম মত। কলা খাওয়ার অপকারিতা গুলো হচ্ছে
  • রাতের বেলায় কলা খাওয়ার ফলে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দিতে পারে এজন্য রাতের বেলা কলা খাওয়া উচিত নয়।
  • যাদের ঠান্ডা লাগার সমস্যা আছে তারা কলা খাবে না। কলা খাওয়ার ফলে ঠান্ডা আরো বেশি লাগতে পারে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরও সচেতন হতে হবে।
  • অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে।
  • কলাতে সুগার ও কার্বোহাইড্রেট অনেক বেশি পরিমাণে থাকে তাই আমরা যদি কলা বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকে তাহলে আমাদের দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • সকালে খালি পেটে কলা খাওয়ার ফলে এসিডিটির সমস্যা হতে পারে। সেই সাথে আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
  • অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়ামের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে যার ফলে আমাদের হার্টের রোগ হতে পারে।
  • বেশি মাত্রায় কলা খাওয়ার ফলে যাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে তাদের এ সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
  • যাদের মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তারা কলা না খাওয়াই ভালো কারণ কলাতে টাইরামাইন নামের একটি উপাদান আছে যা মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ হতে পারে।
কলার অনেক পুষ্টিগণ আছে। কলা আমাদের সকলের কাছে একটি জনপ্রিয় ফল এই ফল সারা বছরই পাওয়া যায় এর ফলের অনেক উপকারিতা আছে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য। কলা খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, আমাদের হাড় ভালো থাকে, আমাদের কিডনি রোগের জন্য ভালো, আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের সমস্যা দূর করতে অনেক উপকারে আসে। কলাতে আছে প্রচুর পরিমাণে

কার্বোহাইডেট, ক্যালরি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ, সি, ই, বি ৬, ফাইবার, প্রাকৃতিক গ্লুকোজ ও আইরন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। একটি গবেষণা থেকে জানা যায় একটা কলায় থাকে ৫০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। একটা বড় মাপের কলা খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যেতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলাতে আছে
  • পানি-৭০.১%
  • ফ্যাট-০.৩%
  • আমিষ-১.২%
  • খনিজ লবণ-০.৮%
  • শর্করা-৭.২%
  • আঁশ-০.৪%
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কলার পুষ্টিগুণ নিচে দেখানো হলো
  • ক্যালরি আছে- ১০৯ কিলোক্যালরি
  • শর্করা আছে-২৫ মিলিগ্রাম
  • প্রোটিন আছে- ৭ মিলিগ্রাম
  • চর্বি আছে- ০.৭ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি ১ আছে-০.১০ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি ২ আছে-০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি আছে-২৪ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন এ আছে-৮০ মাইক্রগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম আছে-১৩ মিলিগ্রাম
  • লৌহ আছে-০.৯০ মিলিগ্রাম।

দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত

দিনে কয়টি কলা খাওয়া উচিত এ বিষয়ে হয়তো অনেকেই জানেন না আজকে তা জানতে পারবেন। কলা হচ্ছে একটি উচ্চ পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ একটি ফল যে ফলে অনেক পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ লবণ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালরি থাকে যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কলা খাওয়ার ফলে আমাদের হৃদরোগের ঝুকি কমে, কিডনি রোগের ঝুঁকি কমে, আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়, আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এছাড়াও আমাদের চুল ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারী উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের প্রতিদিন কতগুলো কলা খাওয়া উচিত এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। তবে আমাদের প্রতিদিন এক থেকে দুইটি কলা খাওয়া শরীরের জন্য যথেষ্ট মনে করা হয়ে থাকে। কলাতে দ্রবণীয় ফাইবার ফুকটোজ এবং বেশি কার্বোহাইড্রেট এবং অল্প পরিমাণে পানি থাকে এজন্য আমরা যদি বেশি পরিমাণে কলা খায় তাহলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে 

১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে এ বিষয়ে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা তা জানতে পারবেন। একটি ছোট সাইজের কলায় থাকে প্রায় ৯০ ক্যালরি। একটি মাঝারি আকারের কলায় থাকে ১০৫ ক্যালরি এবং একটি বড় কলাতে থাকে ১২১ ক্যালরি। ১০০ গ্রাম পরিমাণ কাঁচা কলায় আছে ৮০ থেকে ৯০ ক্যালরি। তবে কলার আকারের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সাইজের কলায় বিভিন্ন ক্যালরি থাকে। কলার আকার অনুযায়ী ক্যালরি এর পরিমাণ
  • ৬ ইঞ্চির চেয়ে ছোট কলাতে আছে ৭২ ক্যালরি
  • ৬ থেকে ৭ ইঞ্চির কলাতে আছে ৯০ ক্যালরি
  • ৭ থেকে ৮ ইঞ্চির কলাতে আছে ১০৫ ক্যালোরি
  • ৮ থেকে ৯ ইঞ্চির কলাতে আছে ১২১ ক্যালরি
  • ৯ ইঞ্চি অথবা এর বেশি আকারের কলাতে আছে ১৩৫ ক্যালোরি
  • এক কাপ কাঁটা কলাতে আছে ১৩৪ ক্যালোরি
  • ভর্তা করা এক কাপ কলাতে আছে ২০০ ক্যালোরি।

কলা খেলে কি ওজন বাড়ে

আমরা আগেই জেনেছি যে ১০০ গ্রাম কলাতে আছে মাত্র ৮০ থেকে ৯০ ক্যালরি আর ০.৩ থেকে ০.৪ গ্রাম ফ্যাট আছে। এই পরিসংখ্যান থেকে আপনারা সহজেই অনুমান করলে বলতে পারবেন যে কলা খাওয়ার সাথে ওজন বাড়ার সত্যি কোন সম্পর্ক নেই। কলা খেলে ফ্যাট বাড়ে বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে তারও কোন বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই বলে জানান পুষ্টিবিদ শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়। এজন্য আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় বা ডায়েটে কলা রাখেন এতে আপনার উপকার হবে।

কলা খেলে কি পেট ব্যথা হয়

ফ্রুক্টোজ হচ্ছে একটি সাধারণ চিনি যেটা কলা সহ আরও অনেক ধরনের ফলের মধ্যে থাকে। একটি কলায় এর রসের তুলনায় কম পরিমাণে ফ্রুক্টোজ থাকে তুলনামূলকভাবে। যাদের মধ্যে বংশগত ফ্রুক্টোজ পরিপাকতন্ত্র পরিচালনার সমস্যা আছে সে সকল ব্যক্তির প্রতি ফ্রুক্টোজ এর খারাপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে এর জন্য পেটে ব্যথা এবং ডায়রিয়া ও গ্যাস এর সমস্যা হতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে কলার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ ছাড়াও ১ টি কলায় কত ক্যালরি থাকে তারপর কলা খেলে কি ওজন বাড়ে ইত্যাদি কলা সম্পর্কিত আরো কয়েকটি বিষয়ে অনেক বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছে যেগুলো আপনারা পড়ার মাধ্যমে অনেক উপকৃত হবেন এবং সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। তাই এই পোস্টটি আপনারা বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিবেন আপনাদের পরিচিতদের মাঝে এবং কমেন্টে জানাবেন কেমন হয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Admin
    Admin August 28, 2024 at 6:56 AM

    অনেক সুন্দর একটা পোস্ট । ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url