পুরুষের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে পুরুষের জন্য
মেথি খাওয়ার
নিয়ম এবং ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকে অনেক তথ্য খোঁজাখুঁজি
করেছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি তাই আজকে আপনারা এই পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এ সকল
বিষয়ে সঠিক তথ্য পাবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আজকে আমি এখানে পুরুষের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম এবং ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার
নিয়ম ছাড়াও মেথির ক্ষতিকর দিক, খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেলে কি হয়, মেথির
পুষ্টিগুণ এবং মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা ইত্যাদি অনেক কয়েকটি বিষয়ে অনেক
বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছি যেগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন। মেথি
পুরুষের জন্য অনেক উপকারী এটা পুরুষের সেক্স পাওয়ার বাড়ায় এবং বীর্যের
শুক্রানু বাড়ায়।
ভূমিকা
মেথি হচ্ছে মশলা জাতীয় খাবার এটি আমাদের সকলের রান্নাঘরে পাওয়া যায়। এই মসলাটি
আমরা রান্নার কাজে খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করে থাকি আবার এর পাতা
আমরা শাক হিসেবে খেয়ে থাকি। এর অনেক পুষ্টিগুণ আছে আছে অনেক ভিটামিন উপাদান যেমন
ফাইবার, আইরন, ম্যাঙ্গানিজ, চর্বি, ক্যালোরি, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও
জিংক ইত্যাদি যেগুলো আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী উপাদান। মেথি
খাওয়ার ফলে আমাদের হজম শক্তি বাড়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়,
এসিডিটির সমস্যা দূর হয় আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য অনেক উপকারী কিডনি এবং
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী এ মেথি। এছাড়াও পুরুষদের জন্য মেথি অনেক
উপকারী কারণ মেথিতে থাকা এমন অনেক উপাদান আছে যেগুলো পুরুষের হরমোন অথবা সেক্স
পাওয়ার বাড়াতে কার্যকর এবং বীর্যের শুক্রাণু বাড়াতে অনেক কার্যকর। ডায়াবেটিস
রোগীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেথি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এটা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে দেয় না।
মেথির ক্ষতিকর দিক
আমার কমবেশি সকলেই জানি মেথি এর অনেক গুন আছে। আমাদের সকলের রান্নাঘরে এ
মশলাটি পাওয়া যায়। আমরা সকলে কমবেশি মেথির জল খেয়ে থাকে নানা রকম সমস্যার
সমাধান থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য মেথির জল
পান করে থাকে এতে করে আমাদের হজম ক্ষমতা বাড়তে থাকে, গাঁটের ব্যথা কমতে থাকে,
ওজন কমতে এবং মেদ গলানোর জন্য অনেক উপকারী এছাড়াও আমরা ডায়বেটিস এবং আমাদের চুল
পড়ার
অনেক সমস্যার জন্য মেথির জল খেয়ে থাকি। তবে আরেকটি বিষয় হচ্ছে মেথির ক্ষতিকর
দিক আছে এজন্য আমরা সকলেই মেথির জল খাব না এতে করে আমাদের নানা রকমের সমস্যা হতে
পারে। সকলের জন্য মেথির জল উপকারী নয়। আসেন জেনে নেওয়া যাক কাদের জন্য মেথির জল
উপকারী নয় এবং মেথির ক্ষতিকর দিকগুলো
- গর্ভবতী মহিলাদের মেথির জল খাওয়া উচিত নয় এতে করে তাদের গর্ভপাতের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
- যাদের হাঁপানি এর সমস্যা আছে তারা মেথির জল পান করা থেকে বিরত থাকবেন কারণ এতে আরো সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
- পেটের গন্ডগোল এর সমস্যা হলে মেথির জল খাওয়া উচিত না এতে পেটের সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
- মেথির জল খাওয়ার ফলে কারো কারো ত্বকে নানা রকমের এলার্জি সমস্যা দেখা দিতে পারে যাদের এমনটা হয় তারা মেথির জল এড়িয়ে চলবেন।
- মেথির জল খাওয়ার ফলে আমাদের পেটে ব্যাকটেরিয়া এর নানা রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে হঠাৎ পেটে খুব গ্যাস হতে পারে এ ধরনের সমস্যা গুলো দেখা দিলে মেথির জল খাওয়া উচিত না।
- যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কম তারা মেথির জল খাবেন না কারণ মেথির জল খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করা মাত্রা কমতে পারে।
- মেথির জল খাওয়ার ফলে আমাদের গায়ে অনেক সময় অদ্ভুত গন্ধ হয় এমনটা হলে মেথির জল না খাওয়াই ভালো।
- বাচ্চাদের মেথির জল না খাওয়ানো উচিত কারণ এটা খাওয়ানোর ফলে তারা অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
মেথি কি প্রতিদিন খাওয়া যাবে এবং কতটুকু খাওয়া যাবে
মেথি আমরা প্রতিদিন খেতে পারি তবে একটানা দীর্ঘদিন না খাওয়াই ভালো একটু বিরতি
দিয়ে খেলে ভালো হয়। আমারা প্রতিদিনমেতে এক চা চামচ থেকে পরিমাণে দুই চা চামচ
খেতে পারি একটানা তিন মাস। আমরা প্রতিদিন সকালবেলা আধা চা চামচ পরিমাণে এবং
রাতে
আধা চা চামচ পরিমাণে খেতে পারি। এছাড়া আমরা প্রতিদিন দিনে একবার করে এক চামচ
পরিমাণে মেথি খেতে পারি। ডাইবেটিস রোগীরা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মেথি গ্রহণ
করতে পারেন প্রতিদিন। মেথি আমরা শুকিয়ে
তারপরে সেটা চিবিয়ে ও খেতে পারি। গুঁড়ো করে রেখেও অনেক দিন ধরে আমারা ঘরে
সংরক্ষণ করে খেতে পারি। তবে মেথি ভিজিয়ে খাওয়াটাই অনেক সুবিধা হয়। মেথি সকালে
ভিজিয়ে রাখলে সেটা রাতে এবং রাতে ভিজিয়ে রাখলে সেটা সকালে খেতে হবে। মেথির
উপকারিতা পেতে প্রতিদিন নিয়মিত মেথি গ্রহণ করা অপরিহার্য তবে অনেকদিন ধরে এর
ব্যবহার নিরাপত্তা সম্পর্কে অল্প গবেষণায় আছে। কয়েক সপ্তাহ মেথি ব্যবহার করার
পর বিরতি নিয়ে তারপরে আবার ব্যবহার করার পরামর্শ দেন কিছু বিশেষজ্ঞরা।
পুরুষের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
পুরুষের জন্য মেথি অনেক উপকারী এ কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা আজকে আপনাদের এ
বিষয়ে জানাবো। পুরুষদের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা সম্পর্কে বলব।
মেথিতে অনেক উপকারী ও পুষ্টিগুণ আছে যেগুলো আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে আমাদের ত্বকের জন্য এবং চুলের জন্য উপকারী কিডনি ও
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বুকের দুধ বাড়ানোর জন্য বাত ব্যথা কমাতে
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে ইত্যাদি আরও নানা অসুখের হাত
থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি এই মেথির জন্য। এ সকল অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য
আমরা নিয়মিত মেথি খাবো। মেথি আমরা রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা সকালে
খালি পেটে খেতে পারি। পুরুষের জন্য মেথির অনেক কার্যকারিতা আছে সেগুলো হচ্ছে মেথি
খাওয়ার ফলে পুরুষের সেক্স পাওয়ার বেড়ে যায় এছাড়াও পুরুষের বীর্যের শুক্রাণু
বাড়ানোর ক্ষেত্রে ও অনেক কার্যকরী এই মেথি। মেথি রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে
তারপরে সেটা সকালে খালি পেটে মেথি সহ পানি
খেতে হবে এতে করে পুরুষের বীর্যের শুক্রানু বাড়ে এটা তিন মাস একই ভাবে খেতে হবে।
যাদের বাচ্চা হচ্ছে না পুরুষের সমস্যার জন্য তারা তাদের শুক্রাণু বাড়ানোর জন্য
তিন মাস গোটা মেথি অথবা মেথি গুড়া রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা সকালে
খালি পেটে খাবেন এতে শুক্রাণু বাড়বে। এই পরীক্ষাটি করা হয় ২০১৭ সালে বন্ধ্যাত্ব
রোগে ভুগছিল এমন ৫০ জন পুরুষের উপর। এ সকল পুরুষেরা তিন মাস মেথি পানি খাওয়ার
পরে দেখা যায় যে ৮৫% পুরুষের শুক্রাণু বেড়ে যায়। এছাড়া মেথিতে আছে সেপোনিন
এবং সেপোজেনিন নামের এই দুইটি উপাদান যা সেক্স ভিটামিন আর এই দুইটি উপাদান আপনারা
পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে পারেন মেথি গুড়াতে। যা আপনাদের সেক্স পাওয়ার অথবা হরমোন
বাড়ানোর ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী। আর যদি পুরুষের সেক্স হরমোন কম থাকে তাহলে
তাদের সেক্স করার ইচ্ছা অনেক কম হয় আর এটা বাড়ানোর জন্য তাই মেথি খান। মেথি
গুড়া আপনারা বাজার থেকে কিনতে পারেন কিন্তু বাজার থেকে কেনা এই গুড়াতে ভেজাল
থাকতে পারে এজন্য আপনারা বাড়িতেই ব্লেন্ডারের মেথি গুড়া করতে পারেন।
খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেলে কি হয়
আমরা কম বেশি সকলেই সকালে খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেয়ে থাকে অনেক উপকারিতা
পাওয়ার জন্য আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য আবার অনেকেই এই সম্পর্কে
বিস্তারিত ভাবে জানিনা। মেথির অনেক পুষ্টিগুণ আছে এ সকল পুষ্টির জন্য আমরা সকলে
মেথি খাওয়ার অভ্যাস করব। সকালে খালি পেটে মেঘে ভেজানো জল খাওয়ার অনেক উপকারিতা
আছে বা খেলে কি কি উপকারিতা পাওয়া যাই এসম্পর্কে বলবো
ওজন কমাতেঃ মেথি আমাদের দেহে ফাইবারের পরিমাণটা বজায় রাখতে সাহায্য করে
আর ফাইবার আমাদের ক্ষুধা বেশি লাগতে দেয় না। এর জন্য আমরা কম পরিমাণে খাবার খায়
যার জন্য আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
ওজন
কমতে থাকে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়ঃ মেথিতে থাকে স্টেরিওডাল সেপোনিনস উপাদান আছে
যা আমাদের শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। আর যদি কোলেস্টেরল এর পরিমাণ
বেড়ে যায় তাহলে এটি আমাদের হৃদক্রিয়া বন্ধ করে দিতে পারে। এছাড়াও মেথিতে
গ্লেকটোম্যানান আছে যা আমাদের হৃদ যন্ত্রের কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার দূরে রাখতেঃ মেথিতে আছে ট্রাইগ্লিসারাইড যা বেস্ট ক্যান্সার
সৃষ্টিকারী কোষ গুলোকে উদ্দীপিত করে এবং একটা সময় পুরোপুরি ভাবে নষ্ট করে দেয়।
মেথি আমাদের রক্তে ভেসে থাকা টক্সিক উপাদান গুলোকে আমাদের শরীর থেকে বের করে দিতে
সাহায্য করে এর ফলে আমাদের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম হয়। আমাদের রক্তে যদি
এই উপাদান গুলো বাড়তে থাকে তাহলে ক্যান্সার সেল গুলোর জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বুকের দুধ বাড়াতেঃ মেথিতে আছে ডায়োসজেনিন নামের এক ধরনের পদার্থ যা
আমাদের বুকের দুধ উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। এটাতে ভিটামিন, মিনারেল থাকায়
মাতৃদুগ্ধ পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। তবে এটি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়া ভালো
দুগ্ধ দানকারী মায়েদের।
বাতের ব্যথা কমাতেঃ আপনাদের মধ্যে অনেকেরই আছে বাতের ব্যথা এই ব্যথা থেকে
মুক্তি পাওয়ার জন্য মেথি অনেক উপকারে আসবে। এজন্য আপনারা মেথি খেতে পারেন।
কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ ক্যালসিয়াম অক্সালেট এর মত কিডনির পাথর
প্রতিরোধ করতে মেথি অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। মেথি খাওয়ার ফলে আমাদের কিডনির
মধ্যে কম ক্যালসিফিকেশন তৈরি হয়ে থাকে। মেথি দিয়ে চা তৈরি করে বা এর রস পান
করার ফলে আমাদের কিডনি পরিষ্কার এবং মুত্রথলি সুস্থ থাকে।
পিরিয়ডের ব্যথা দূর করতেঃ পিরিয়ডের সময় মহিলাদের বা মেয়েদের পেটে
ব্যথা করে এ সময় যদি মেথির গুড়া প্রথম তিনদিন ১৭০০ থেকে ২৭০০ মিলিগ্রাম এবং পরের
দিনগুলোই ৯০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ করে দৈনিক তিনবার খাওয়া যায় তাহলে এর ব্যথা থেকে
উপশম পাওয়া যাবে।
মেথির পুষ্টিগুণ
মেথি আমরা মসলা হিসেবে খেয়ে থাকি আবার এর পাতা আমরা শাক হিসেবে খেয়ে থাকি। এর
অনেক পুষ্টি গুণ আছে। মেথিতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, প্রোটিন, ফাইবার,
কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি ইত্যাদি। মেথিতে অনেক পুষ্টি উপাদান থাকার জন্য আমরা মেথি
খেয়ে থাকে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য। আমরা যদি প্রতিদিন পরিমাণ মতো
মেথি খেয়ে থাকি তাহলে আমরা এই সকল পুষ্টি পাব। এর পুষ্টি উপাদান হচ্ছে এক টেবিল
চামচ পরিমাণ মেথিতে আছে ৩৫ ক্যালোরি
- প্রোটিন-৩ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট-৬ গ্রাম
- ফাইবার-৩ গ্রাম
- চর্বি- ১ গ্রাম
- ক্যালোরি-১১.১ (গ্রাম এক টেবিল চামচ পরিমাণ মেথিতে)
- ম্যাঙ্গানিজ-৭% (প্রতিদিন যতটুকু প্রয়োজন তার)
- আয়রন-২০% ( প্রতিদিন যতটুকু প্রয়োজন তার)
- ম্যাগনেসিয়াম-৫% (প্রতিদিন যতটুকু প্রয়োজন তার)
ডায়াবেটিসে মেথি খাওয়ার নিয়ম
ডায়াবেটিসের জন্য আমাদের শরীরে নানা রকমের অসুখ খুব সহজেই বাসা বাঁধতে পারে।
মেয়েটি আমাদের রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য কিন্তু
এটা শুধু স্বাদ এবং রান্নার জন্যই নয় বরং এটা আমাদের
ডায়াবেটিস
সামলাতেও অনেক পারদর্শী। ডায়াবেটিসের কারণে আমাদের দেহে বাসা বাঁধে থাইরয়েড
উচ্চ রক্তচাপের মত রোগ এবং কোলেস্টেরল ইত্যাদি আরো নানা রোগ। কিন্তু ডায়াবেটিস
জব্দ করা অত সহজ নয় নিয়মিত খাবার দাবার গ্রহণ করার পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ
অনুযায়ী
আরো পড়ুনঃআম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন
ঔষধ করলে এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়াও আমারা কিছু ঘরোয়া উপায় আছে
যেগুলো ব্যবহার করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। এর জন্য আপনারা মেথির ওপর
ভরসা রাখতে পারেন কারণ মেথিতে আছে ফলিক অ্যাসিড, থায়ামিন, নিয়াসিন এবং
রাইবোফল্যাভিন এর মত নানা উপকারী উপাদান। আরো আছে পটাশিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ,
সেলেনিয়াম মেথি আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য তাই মেথি মহা ঔষধ। এর জন্য আমরা মেথি যেভাবে ব্যবহার করব তা হচ্ছে
- ১০ গ্রাম পরিমাণে মেথি আমরা এক গ্লাস গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখবো রাতে তারপরে সেই পানি সকালে থেকে নিয়ে খালি পেটে খেয়ে নিব এটা ডায়াবেটিসের জন্য অনেক উপকারে আসবে।
- আমার মেথি চা ও পান করতে পারি। কেটলিতে গরম পানি করতে দিতে হবে তারপরে সেটাতে এক চামচ পরিমাণ মেথি গুঁড়ো দিতে হবে এর সঙ্গে আমরা মধু এবং তুলসী পাতা মেশাতে পারি। সব কয়েকটি উপকরণ একসাথে পাঁচ মিনিট ধরে ফুটিয়ে নেওয়ার পরে সেটা ছেঁকে নিয়ে তারপরে অল্প ঠান্ডা করে আমরা পান করতে পারি এতে করে ও আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ অথবা হাতের মুঠোয় থাকবে।
- মেথি পানি অনেকটাই তেতো হয় এজন্য অনেকেই এটা খেতে পারে না এক্ষেত্রে আমরা মেথি ভিজিয়ে রাখলে সেটা অংকুর হলে সালাতের সাথে আমরা এটা খেতে পারি। লেবু এবং লবণ দিয়ে খেলেও তেতো লাগে না অতটা। এছাড়া আমরা মেথি তাওয়ায় ভেজে রেখে দিতে পারি। এটা রান্নায় বেশি ব্যবহার করতে পারেন এভাবে খাওয়ার ফলে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য কি খাওয়া উচিত
আমাদের সকলেরই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে এটা হয় খাবারের জন্য। আমরা লোভনীয় সব
খাবার খেয়ে থাকি যেগুলো ভাজাপোড়া তেলে ভাজা মসলা জাতীয় খাবার আর এগুলো খাওয়ার
ফলে আমাদের হজমের সমস্যার সঙ্গী গ্যাস্ট্রিক হয়। আর এর জন্য আমার অনেক সমস্যার
সম্মুখীন হয় আমাদের বুক জ্বালাপোড়া করে। এর জন্য আমরা অনেক সময় বিভিন্ন রকম
গ্যাসের ওষুধ খেয়ে থাকি। আমরা ওষুধ না খেয়ে অনেকগুলো খাবার আছে যেগুলো প্রতিদিন
নিয়ম
করে খেলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে আর এ কাজগুলো আমরা ঘরে
বসেই করতে পারি। এই গ্যাস্টিকের সমস্যা অনেকদিন ধরে চলতে থাকলে এটা আমাদের শরীরের
উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এজন্য আমাদের অল্পতেই এর সমাধান করা উচিত তবে আমরা ভালো
থাকবো এর জন্য যে খাবারগুলো খাওয়া উচিত যার জন্য আমরা সাথে সাথে ভালো ফল পাব
সেগুলো হচ্ছে
জিরাঃ জিরা আমাদের সবার রান্নাঘরে থাকে এটি একটি মসলা। এটি আমার সকল
রান্নার কাজে ব্যবহার করে থাকি এর অনেক উপকারিতা আছে। গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তি
পাওয়ার জন্য আমরা এই জিরা খেতে পারি। এটি আমাদের হজম রসকে উদ্দীপিত করে তোলে এর
ফলে আমাদের বদহজম এবং এসিডিটির সমস্যা দূর হয়। আমরা জিরাপানি ও খেতে পারি।
মৌরিঃআমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আমরা মৌরি ব্যবহার করতে পারি।
এটি গ্যাস্টিকের সমস্যা দূর করবে তাই নয় এটি আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে অনেক
কাজে লাগে।মৌরি আমাদের পাকস্থলী ও অন্ত্রের পেশির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে এর ফলে
আমাদের এসিড রিফ্লাক্সের কারণে যে গ্যাসের সৃষ্টি হয় তা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
করে।
তুলসী পাতাঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ঔষধ ছাড়া দূর করার জন্য আমরা
তুলসী পাতা
খেতে পারে এতে করে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। এছাড়া আমরা পেটের যেকোন
রকমের সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতা অথবা তুলসী পাতার রস ব্যবহার করে অনেক উপকারিতা
পেতে পারি।
পুদিনাঃ আপনার যদি পেট ফাঁপা সমস্যা থাকে তাহলে আপনি প্রতিদিন প্রতি না
পাতা খেতে পারেন এটি একটি ভেষজ খাবার যা আপনার পেটে গ্যাস জমতে দেবে না। অ্যান্টি
ব্যাকটেরিয়াল যৌগ এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি থাকে পেপারমিন্ট অয়েলে যা আমাদের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে অনেক সাহায্য করে।
মেথিঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আমরা মেথি খেতে পারি এতে করে
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে
অথবা এক গ্লাস পানির সাথে মেথি রাতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা সকালে খালি পেটে
খেলে অনেক আরাম পাওয়া যায়। এভাবে আমরা ছয় সপ্তাহ প্রতিদিন দুইবার করে মেথির রস
পান করতে পারি।
মেথি খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা
আমাদের সকলের রান্না ঘরে মেথি পাওয়া যায় কারণ এটি মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়
রান্নার কাজে। এর ব্যবহার অনেক দিন থেকে হয়ে আসছে এছাড়াও আমরা আমাদের
স্বাস্থ্যের নানা রকমের উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমরা মেথির জল খেয়ে থাকে বা মেথি
ও খেয়ে থাকি এতে করে আমরা নানা রকমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাই। মেথি সহজেই আমাদের
বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না, আমাদের ওজন কমাতে, কৃমি দূর করতে এবং হজম ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে ইত্যাদি আরও নানা উপকারে আসে।
তবে আমরা যে কোন প্রকারে মেথি খেলে তা আমাদের উপকারে আসবে না এটা খাওয়ারও একটা
নিয়ম আছে। এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা যেমন সে এমন ভাবে খেলে এর উপকারিতা
আমাদের নাও মিলতে পারে তাহলে আসন জানা যাক মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। প্রথমে
এক গ্লাস বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে তারপরে এই পানির মধ্যে এক চা চামচ পরিমাণে মেথি
ভিজিয়ে রাখতে হবে সারারাত। তারপরে সকালে উঠে খালি পেটে সারারাত ভিজিয়ে রাখা
মেথির পানি পান করতে হবে।
আবার আপনি সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়েও খেতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া
যাবে। আমরা চাইলে মেথি ভেজানো পানির সাথে মধু এবং লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে পান
করতে পারি। এর পাশাপাশি আমরা পরোটা, ঝোল তরকারি, রুটি, মাছ এবং সালাদ ব্যবহার
করতে পারে মেথির সাথে এতে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। এতক্ষণ তো আমরা মেথি
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানলাম এবার আমরা জানবো মেথির উপকারিতা সম্পর্কে
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেঃমেথিতে দ্রবণীয় ফাইবার থাকে এর ফলে আমাদের শরীরের
খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমান কমানো সহজ হয়ে যায়। আমরা যদি প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে
সকালে খালি পেটে মেথি খেয়ে থাকি তাহলে তা আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ
নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
ওজন কমাতেঃ আপনারা যারা আপনাদের শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং চর্বি কমাতে চান
তারা মেথি খেতে পারেন। বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রমাণিত হয় নিয়ম করে প্রতিদিন মেথি
খেলে তা আমাদের ওজন কমাতে এবং চর্বি কমাতে অনেক সাহায্য করে।
কৃমি দূর করতেঃ আমাদের মধ্যে অনেকেরই কৃমির সমস্যা আছে এটা ছোট বাচ্চাদের
আরও বেশি হয় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা মেথি খেতে পারেন।
পেটের সমস্যা দূর করতেঃ আমরা কম বেশি সকলে পেটের নানা রকমের সমস্যায় ভোগে
থাকে এ থেকে মুক্তির জন্য আমরা মেথি ভেজানো পানি বা মেথি খেতে পারি। প্রতিদিন
মেথি খেলে আমাদের নানা রকম সমস্যা গ্যাস্ট্রিক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
ত্বকের দাগ দূর করতেঃ আমরা আমাদের ত্বকে নানা রকমের দাগের জন্য অনেক
অস্বস্তি বোধ করি এটা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা মেয়েটি খেতে পারেন এতে
করে আপনাদের ত্বকের নানা রকমের দাগ ছোপ সহজেই দূর হয়ে যাবে এবং আপনাদের ত্বক
উজ্জ্বল হবে ভেতর থেকে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যঃ মেথিতে হজম শক্তি বৃদ্ধির এবং আমাদের শরীরের
কার্বোহাইড্রেট এছাড়া সুগার শোষণ করার ক্ষমতা থাকে। মেথি খাওয়ার ফলে আমাদের
শরীরের ইনসুলিন নিঃসরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে থাকে বহু গুনে। কারণ মেথিতে থাকে
অনেক ফাইবার এবং অনেক পুষ্টি উপাদান যা আমাদের রক্তের গ্লুকোজ এর মাত্রা কমতে
সাহায্য করে থাকে এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
চুলের জন্যঃ চলে নানা রকমের সমস্যা থেকে যেমন চুলের গোড়া মজবুত করতে চুল
পড়া কমাতে মেথি এর অনেক জুড়ি আছে। কারণ মেথিতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এগুলো
আমাদের চুলকে অনেক শক্তিশালী করে এবং আমাদের চুল পড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
যৌন শক্তির মহাঔষধঃ মেথির রসে আছে সাপোনিস বা ডাইওসজেনিন নামের এক ধরনের
পদার্থ যা মানব দেহের হরমোন স্তর এবং এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে অনেক সাহায্য করে
থাকে। পুরুষদের জন্য মেথি অনেক উপকারী এটি পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যৌন শক্তি বাড়ানোর জন্য মেথি অনেক উপকারী নারী ও
পুরুষের জন্য।
লেখক এর মন্তব্য
ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে পুরুষের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম এবং ডায়াবেটিসে মেথি
খাওয়ার নিয়ম ছাড়াও খালি পেটে মেথি ভেজানো জল খেলে কি হয়, মেথি খাওয়ার নিয়ম
ও উপকারিতা সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছে। আপনারা যদি মেথি খেয়ে
থাকেন তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই পড়বেন তাহলে অনেক তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানতে
পারবেন। এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আপনারা এই পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার
করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url