ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আপনারা হয়তো আগে ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবং টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয় এছাড়াও আরো অনেক ডাবের পানি সম্পর্কিত তথ্য খোঁজাখুঁজি করেছেন এবং জানার চেষ্টা করেছেন আজ আমি আপনাদের এই সকল বিষয়ে অনেক তথ্য দেব তাই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম জানুন
আমরা সকলে ডাবের পানি খুব পছন্দ করে থাকি কারণ ডাবের পানিতে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং উপাদান আছে যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। শুধু আমাদের জন্যই নয় এটা বয়স্ক থেকে ছোট বাচ্চাদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনেক উপকারী। তাই আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম এবং টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয় এ সকল বিষয় ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে জানতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

ভূমিকা

শীত শেষ হলেই আমরা গরমে অস্বস্তি কর অবস্থায় পড়ি কারণ গরমে আমাদের নানা রকমের রোগের সম্মুখে পড়তে হয়। এবং আমাদের শরীর থেকে অনেক পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা সাধারণ পানির পাশাপাশি ডাবের পানি পান করতে পারি। এতে করে আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর হবে আমাদের শরীর ও ত্বক আদ্র থাকবে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো। ডাবের পানিতে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন যেমন ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম,


সোডিয়াম, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এমাইনো এসিড ইত্যাদি অনেক উপাদান আছে তাই আমাদের সকলেরই ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে শরীরে শক্তি যোগায় কোষ্ঠকাঠিন্য এবং গ্যাস অম্বল এর সমস্যা দূর হয় হজমে সাহায্য করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে ইত্যাদি আরো অনেক উপকারিতা আছে। এটা গর্ভবতী মহিলাদের জন্যেও এবং তার গর্ভের বাচ্চার জন্যেও জন্য অনেক উপকারী।

খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা

আমরা সকালবেলা কোন খাবার খেলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং কোন ধরনের খাবার খেলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য এর জন্য খারাপ হবে এ বিষয়ে আমরা অনেকেই নিশ্চিন্ত ভাবে জানি না। আমরা অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে চা এবং কফি খেয়ে থাকি আবার অনেকে আছে যারা একগ্লাস পানি পান করে থাকেন খালি পেটে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং উত্তম কিন্তু আমরা সকালবেলা খালি পেটে যদি ডাবের পানি খেতে


পারি তাহলে অনেক বেশি উপকার পাব। কারণ ডাবের পানিতে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি গুণ থাকে যেমন ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম , ক্যালোরি, সোডিয়াম, ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম ইত্যাদি। ডাবের পানি আমরা কঠোর পরিশ্রম করার পরে অথবা ওয়ার্ক আউট এর পরেও ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা। গরমের সময় স্বস্তি পাওয়ার জন্য অনেকেই ডাবের পানি পান করে থাকি এটা  স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তবে আসুন জানা যাক খালি পেটে ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে

প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করেঃ ডাবের পানিতে অনেক প্রয়োজনীয় পোষ্টটি গুণ আছে যেগুলো আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। ডাবের পানি খাওয়ার ফলে তা আমাদের দেহে অনেক পুষ্টি পৌঁছে দিয়ে থাকে এবং খাবার খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়। সেই সাথে আমাদের দেহে ক্যালসিয়াম ফসফরাস পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম এর সরবরাহ করে থাকে সমান ভাবে। এজন্য যারা শরীরচর্চা করে থাকেন এবং ওয়ার্কআউট করার পরে আপনারা ডাবের পানি পান করতে পারেন।

পর্যাপ্ত ম্যাগনেসিয়াম থাকেঃ ডাবের পানিতে অনেক বেশি পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকে তাই আপনি যদি ডাবের পানি পান করেন তাহলে আপনার শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ ঠিক থাকবে এবং আপনার ব্লাড সুগারের মাত্রা ও কম হবে। ডাবের পানি পান করার ফলে আপনি সহজেই গ্লুকোজের মাত্রা আয়ত্বে রাখতে পারবে।

শরীরকে আর্দ্র রাখেঃ আমাদের শরীরে পানির অভাব দেখা দিলে পানি শূন্যতার সমস্যা হয় আর এটা থেকে আমাদের অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর জন্য কিডনিতে পাথর হতে পারে তাই আমাদের নিয়মিত বেশি বেশি করে পানি পান করা উচিত। আর আপনি যদি সকালে উঠে খালি পেটে ডাবের পানি পান করতে পারেন তাহলে আপনার শরীরকে তা আর্দ্র রাখতে সাহায্য করবে।

শরীরচর্চা করার পরেঃ আমরা কঠোর পরিশ্রম করার পরে অথবা শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করার পরে আমাদের শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক পানি বের হয়ে যায় এতে করে আমাদের শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে আর এটার অভাব দূর করতে পারে ডাবের পানি। এই ডাবের পানি ইলেকট্রোলাইট ফিরিয়ে আনতে পারে।

ডাইবেটিস রোগীদের জন্যঃ ডাবের পানি চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তাই গবেষণা বলছে যে নিয়মিত ডাবের পানি পান করার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের এইচবিএ১ সি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এবং যাদের লো প্রেসার আছে তাদের জন্য এই ডাবের পানি অনেক কার্যকরী।

টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয়

শীত বিদায় নেওয়ার সাথে সাথে চলে আসে গরম আর গরমে আমাদের নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়। গরমের কারণে আমাদের শরীরে পানির অভাব দেখা দেয় এবং আমাদের শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যায় এছাড়াও নানা ধরনের রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে তাই এ সময় আমাদের আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুব যত্ন নেওয়া উচিত। এ সময় আমাদের বেশি বেশি করে পানি পান করা উচিত এবং পানি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমরা ডাবের পানি এবং পানি পান করতে পারি


এতে করে আমাদের শরীরে পানির অভাব দেখা দিবেনা। এ সময় আমরা অনেকেই আছে ডাবের পানি পান করে থাকি কঠোর পরিশ্রম করার পরে আমরা রাস্তায় বের হওয়ার সময় হাতে করে পানি নিব যাতে করে আমরা একটু পর পরে পানি পান করতে পারি সেই সাথে আমরা ডাবের পানিও খেতে পারি। কারণ ডাবের পানিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এমাইনো এসিড ,ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালরি ইত্যাদি যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য

অনেক উপকার করে থাকে। আজকে আমি আপনাদের জানাবো টানা সাত দিন ডাবের পানি খেলে কি হয় এ বিষয়ে
  • ডাবের পানি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পানির ভারসাম্য ঠিক থাকে।
  • ডাবের পানি হচ্ছে প্রাকৃতিক স্যালাইন যারা রোদ্রে কাজ করেন তারা ডাবের পানি পান করে থাকেন।
  • ডাবের পানিতে অনেক উপকারী এনজাইম আছে যা আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
  • ভারী খাবার খাওয়ার পরে আমরা ডাবের পানি পান করতে পারি এতে করে খাবার সহজে হজম হয়ে যাবে।
  • ডাবের পানিতে আছে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম অনেক যা আমাদের শরীরে খনিজের অভাব দূর করতে পারে।
  • ডাবের পানিতে আছে মুত্রবর্ধক উপাদান এটি আমাদের ইউরিনারি ট্র্যাক্ট পরিষ্কার করতে সাহায্য করে থাকে।
  • আমাদের শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে থাকে এই ডাবের পানি। আবার এই ডাবের পানি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনকে বাড়াতে পারে।
  • কঠোর পরিশ্রম করার পরে অথবা শরীর চর্চা করার পরে আপনারা এক গ্লাস ডাবের পানি পান করার ফলে আপনাদের শরীরে আবার শক্তি ফিরে আসবে।
  • প্রতিদিন ডাবের পানি পান করার ফলে আপনার ত্বক আদ্র থাকবে এবং আপনার ব্রণের সমস্যা থাকলে তা কমে যাবে।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ডাবের পানি পান করার ফলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
  • আপনাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে ডাবের পানি।

ডাবের পানি সংরক্ষণের উপায়

ডাবের পানিতে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান আছে যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য এবং ত্বকের সুরক্ষার জন্য খুবই উপকারী। ডাবের পানি আমরা ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করে রাখতে পারি দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত। কিন্তু এর থেকে বেশি দিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে না এতে করে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যাবে এবং তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। উন্নত দেশে ডাবের পানিকে কোমল এবং সতেজ পানীয় হিসেবে ব্যবহার এবং পান করা হয়। ডাবের পানি শরীরকে

ঠান্ডা রাখে এবং আমাদের দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এই ডাবের পানি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মানুষের জন্য এবং বয়স্ক ছোট বাচ্চাদের সকলের জন্যই অনেক উপকারী। প্রক্রিয়া জাতকৃত ডাবের পানির বাণিজ্যিক চাহিদা আছে অনেক দেশে আবার এই ডাবের পানি প্রক্রিয়াজাত করার জন্য প্রথমে আপনাকে গাছ থেকে ভালো মানের কচি ডাব সংগ্রহ করে তারপরে সেটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপরে সেটা থেকে পানি বের করে একটা মসৃণ কাপড়

দিয়ে থেকে নিতে হবে যাতে করে সেই পানিতে কোন রকমের শাঁস না থাকে। তারপরে এই ডাবের পানি পরিষ্কার কাচের বিকার বা কনটেইনারে করে ৯৫ থেকে ১০০০ সেন্টিগ্রেট তাপমাত্রায় রেখে দশ মিনিট সময় নিয়ে পাস্তুরাইজেশন করতে হবে। পাস্তুরাইজেশন কৃত ডাবের পানির সাথে পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট দিতে হবে ১০০ পিপিএম আবার কার্বক্সিমিথাইল সেলুলোজ যোগ করতে হবে ০.০৫%। এগুলো যোগ করার অর্থ হচ্ছে যদি অবশিষ্ট দ্রব্যাদি বোতলের নিচে

পড়ে থাকে তাহলে সেগুলো আর পড়ে থাকবে না। তারপরে ফুটানো কাঁচের বোতলে গরম অবস্থাতেই ডাবের পানি দিয়ে ভর্তি করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ঠান্ডা জায়গায় রেখে দিতে হবে আর এভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায় ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত ডাবের পানি।

ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

আমরা সকলে গরমের সময় কম বেশি ডাবের পানি পান করে থাকে আবার অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের ডাবের পানি স্যালাইনের মত কাজ করে। ডাবের পানিতে অনেক পুষ্টিকর উপাদান এবং ভিটামিন আছে যাআমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। ডাবের পানিতে আছে আন্টিঅক্সিডেন্ট ,এমাইনো এসিড, পটাশিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম,রাইবোফ্লবিন, থিয়ামিন, নিয়াসিন এবং পাইরিডক্সিন ইত্যাদি। আজকে আমরা এই ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব
  • ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে কারণ ডাবের পানিতে আছে থিয়ামিন,রাইবোফ্লবিন এবং পাইরিডক্সিন উপাদান যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ডাবের পানিতে পটাশিয়াম আছে এবং এই পানীয় লো ক্যালোরিযুক্ত তাই এটি আমাদের শরীরের চর্বি বার্ন করে থাকে এবং পেশী গঠনে সাহায্য করে থাকে।
  • ডাবের পানিতে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন সি থাকায় এটি আমাদের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে থাকে।
  • ডাবের পানি আমাদের ত্বকের ইনফেকশন এবং ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করতে সাহায্য করে থাকে সেই সাথে আমাদের ব্রণের সমস্যা দূর করে।
  • বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মুখের কালো দাগ চোখের নিচের কালো দাগ মেছতা দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
  • ডাবের পানিতে অনেক পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে যা আমাদের হাড়কে মজবুত রাখার জন্য দরকার।
  • ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের শরীর এবং ত্বক আদ্র থাকে। আমাদের পানি শূন্যতা দূর হয়। অর্থাৎ আমাদের শরীরকে ডি হাইড্রেশন এর মত সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে এ ডাবের পানি।
  • ডাবের পানি আমাদের শরীরে শক্তি বাড়াতে পারে এজন্য কঠোর পরিশ্রম করার পরে অথবা শরীর চর্চা করার পরে বিশেষজ্ঞরা ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  • ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের অনেক সময় ধরে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা থাকে না অর্থাৎ পেট ভরা রাতে সাহায্য করে ডাবের পানি এতে করে আমাদের ক্ষুধার প্রবণতা কম হয়।
  • ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে কারণ ডাবের পানিতে চর্বি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে কারণ এটি আমাদের শরীরের অতিরিক্ত চিনির মাত্রা শোষণ করে নিতে পারে।
  • ডাবের পানি আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত অথবা টক্সিন জাতীয় পদার্থ বের করে দিতে পারে।
  • এই পানিতে আছে অনেক ফাইবার যা আমাদের পাচনতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে ফলে হজম শক্তি বেড়ে যায়।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের এসিডিটির সমস্যা কম হবে অর্থাৎ রক্ষা পাওয়া যাবে।
  • ডাবের পানিতে ফাইবার থাকার কারণে আমাদের কোষ্ঠকাঠিনের সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।
  • ডাবের পানিতে ডাই ইউরেটিক উপাদান আছে যা আমাদের ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে সেই সাথে আমাদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলার কাজ করে থাকে।
  • এছাড়া ডাবের পানিতে আছে ভিটামিন এ এবং সি যা আমাদের চুলের গোড়া মজবুত ও শক্ত করতে সাহায্য করে থাকে।
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমরা ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি এবার আমরা জানবো ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আমরা নানাভাবে ডাবের পানি খেতে পারি ডাবের পানি পান করার ফলে আমাদের নানারকম রোগ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি এবং এটাতে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং খনি যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই ডাবের পানি আমরা চুমুক দিয়ে খাওয়া ছাড়াও আরো নানাভাবে খেতে পারি আসল জানা যাক সে সম্পর্কে

স্বাভাবিকভাবে পানঃ ডাবের পানি আমরা স্বাভাবিকভাবে চুমুক দিয়েই পান করতে পারি। আমরা বাজার থেকে কচি ডাব কিনে এনে তার পরে এটাকে কেটে নিয়ে গ্লাসে বা মগে করে অথবা ডাবের মুখটি কেটে একটি পাইপ দিয়ে আমরা খেতে পারি।

স্মুদিতে ব্যবহার করেঃ ডাবের পানি খেতে অনেক সুস্বাদু হয় এবং এতে অনেক পুষ্টিগুণ আছে তাই এই ডাবের পানি আমরা যে কোন রকমের স্মুদি তৈরিতে সাধারণ পানি ব্যবহার করার পরিবর্তে ডাবের পানি ব্যবহার করতে পারি। পছন্দের সবজি এবং ফল এর সাথে আমরা ডাবের পানি ব্যবহার করে পুষ্টিকর স্মুদি তৈরি করে খেতে পারি।

ফলের জুসের সাথেঃ আমরা সকালের নাস্তা করার সময় যে কোন রকমের তা যা ফলের সাথে ডাবের পানি ব্যবহার করে জুস বানিয়ে পান করতে পারি। আমরা আনারস ,তরমুজ, কমলা সহ অন্য কোন ফলের সাথে ডাবের পানি ব্যবহার করে অনেক মজাদার ফলের জুস তৈরি করে খেতে পারি এতে করে এটা অনেক মজাদার হবে এবং আমাদের শরীরে পুষ্টির যোগান দেবে এবং শরীরকে আদ্র রাখবে।

বরফ তৈরি করেঃ ডাবের পানি গরমের সময় পান করা অনেক ভালো এটা আমাদের অনেক উপকারিতা দেবে স্বাস্থ্যের জন্য। এজন্য আমরা ডাবের পানি আইস বক্সে করে রেখে দিয়ে বরফ তৈরি করে নিয়ে তারপর সেটা নানা রকমের ঠান্ডা পানীয় তৈরি করার ক্ষেত্রে অথবা ফলের রস দিয়ে ঠান্ডা পানীয় তৈরি করার সময় ব্যবহার করে খেতে পারি।

রান্নায় ব্যবহার করেঃ ভাত রান্না করার সময় আমরা সাধারণ পানির পরিবর্তে ডাবের পানি ব্যবহার করতে পারি এতে করে স্বাদ এবং ঘ্রাণ বেড়ে যাবে এবং পুষ্টিগণ ও বৃদ্ধি পাবে তাই এই ডাবের পানি রান্না করেও আমরা খেতে পারি।

মেরিনেইট ও ড্রেসিং এ ব্যবহার করেঃ এই ডাবের পানি আমরা খাবার মেরিনেইট অথবা ড্রেসিং হিসেবে ও ব্যবহার করতে পারি। ভেষজ এবং মসলার সাথে এই পানি ব্যবহার করে আমরা মাংস বা টফু মেরিনেইট করে খাবারের স্বাদের ভিন্নতা আনতে পারি। আবার আমরা সালাদের ড্রেসিং হিসেবেও ডাবের পানি ব্যবহার করলে অনেক উপকারিতা পাবো।

ললি আইসক্রিম তৈরি করতেঃ আমাদের দেশের ললি আইসক্রিম নামে এবং বাহিরের দেশে পপসিকল নামে পরিচিত। আর এই ললি আইসক্রিম তৈরি করার জন্য ডাবের পানি ব্যবহার করা হয়। যেকোন রকমের ফলের টুকরো ডাবের পানির সাথে মিশিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে এভাবেই আইসক্রিম তৈরি করা হয় আর এটা আমাদের দেহের আদ্রতা যোগাতে সাহায্য করে এবং পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় আমরা অনেকেই ডাবের পানি পান করে থাকে কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানি না যে গর্ভাবস্থায়য ডাবের পানি পান করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। ডাবের পানিতে অনেক পুষ্টিকর ভিটামিন এবং উপাদান থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় এবং তার সন্তান ও মায়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। গর্ভবতী মহিলাদের ডাবের পানি খাওয়ার ফলে শরীরে ইলেকট্রোলাইটস এবং তরল পদার্থের পরিমাণের অংশটা বেশি তৈরি হয়।

তাই গর্ভবতী মহিলাদের ৩ মাস পর থেকেই ডাবের পানি পান করা উচিত। এ সময় মহিলাদের পুষ্টির প্রয়োজন বেশি হয় আর ডাবের পানিতে অনেক পুষ্টিগুণ আছে যা দুজনের স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী হতে পারে। তাহলে আসুন জানা যাক গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা সম্পর্কে
  • এ সময় ডাবের পানি পান করার ফলে শিশুর মস্তিষ্ক ভালো থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ডাবের পানি পান করা উচিত এক গ্লাস করে। এতে করে মা ও শিশুর দুজনেরই স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ দিবে।
  • এই সময় ডাবের পানি পান করার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আবার শরীরের রক্ত বাড়াতে পারে এবং মুত্রাশয় থেকে কোন রকমের সংক্রমণ আসলে তার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
  • কোন গর্ভবতী মহিলার যদি বুক জ্বালাপোড়া করার সমস্যা থাকে তাহলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ডাবের পানি পান করতে পারেন।
  • এই সময় মহিলারা সকালে ওঠার পরে তাদের শরীরটা অনেকটা দুর্বল মনে হয় এটা থেকে রক্ষা পেতে তারা ডাবের পানি পান করতে পারেন এটা অনেক উপকারী।
  • ডাবের পানিতে থাকা ফাইবার এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড মা এবং শিশু দুজনার জন্যই অনেক ভালো কাজ করে।
  • গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি পান করার ফলে গর্ভবতী মহিলাদের পানি শূন্যতা থেকে সহজেই প্রতিরোধ করতে পারা যায়।
  • এ সময় ডাবের পানি পান করলে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এবং এসিডিটির সমস্যা এবং হজমের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
  • ডাবের পানিতে আছে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম তাই ডাবের পানি পান করার ফলে এ সময় মহিলাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

বাচ্চাদের ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম

ছোট বাচ্চাদের অর্থাৎ ৬ মাস বয়স এরপর থেকেই বাচ্চাদের ডাবের পানি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। ডাবের পানিতে আছে মোনোলৌরিন নামের এই যৌগটি যার জন্য বাচ্চারা বিভিন্ন ধরনের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। ঠান্ডা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ থেকে বাঁচতে সক্ষম এই ডাবের পানি পান করার ফলে বাচ্চারা। ডাবের পানিতে যে অনেক পুষ্টিকুণ আছে তা হলো ক্যালসিয়াম ভিটামিন সি পটাশিয়াম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সোডিয়াম ক্যালোরি ও শক্তি ইত্যাদি।

বাচ্চাদের ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম আছে সে সম্পর্কে আপনাদের বলব। বাচ্চাদের ডাবের পানি খাওয়ানোর ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকতে হবে। বাচ্চাদের একেবারে একসাথে করে ডাবের পানি খাওয়ানো যাবে না আস্তে আস্তে এক ঢোক করে খাওয়াতে হবে। ছোট বাচ্চাদের শীতের সময় ডাবের পানি খাওয়ানো উচিত না কারণ এ সময় বাচ্চাদের ঠান্ডা লাগতে পারে। ছোট বাচ্চাদের সব সময় ফ্রেশ ডাবের পানি খাওয়ানো উচিত। যদি কোন বাচ্চার ফল অথবা বাদামে এলার্জি থাকে 

তাহলে তাকে ডাবের পানি থেকে বিরত রাখুন। ডাবের পানি পান করার ফলে বাচ্চারা পেটে নানা রকমের অসুখ যেমন কোষ্ঠকাঠিন্য, আলসার এবং পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পেতে পারে। ছোট বাচ্চারা মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং কিডনির পাথর দূরীভূত করতে পারে। বাচ্চাদের বদহজম এবং ডায়রিয়ার জন্য অনেক উপকারী এই ডাবের পানি ডাবের পানি পান করার ফলে বাচ্চাদের শরীরের পানি শূন্যতা দূর হয় এছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা পাওয়া যায় বাচ্চাদের ডাবের পানি পান করার ফলে।

আপনি আপনার বাচ্চাকে চাল বা সেদ্ধ সবজির সাথে ডাবের জল মিশিয়ে তারপরে সেটা খাওয়াতে পারেন। ফ্রিজে রাখলে ফ্রিজে রাখা ঠান্ডা ডাবের পানি বাচ্চাকে পান করাবেন না বাচ্চাকে ডাবের পানি খাওয়ার আগে সেই ডাবের পানি ভালোভাবে পরিষ্কার করে ছেকে নিয়ে খাওয়াবেন যাতে করে এটার মধ্যে কোন রকমের শাঁস না থাকে আর যদি থাকে সেটা বাচ্চার গলায় আটকে যেতে পারে তাই এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন।

লেখকের মন্তব্য

ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের জন্য ডাবের পানি সম্পর্কিত কয়েকটি তথ্য দিয়েছেন অনেক বিস্তারিত ভাবে যেমন ডাবের পানির উপকারিতা ও ডাবের পানি খাওয়ার নিয়ম এবং টানা ৭ দিন ডাবের পানি খেলে কি হয় ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে যেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন এবং সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। তাই এই পোস্টটি পড়ে আপনারা বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিবেন পরিচিতদের মাঝে এবং নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইট ভিজিট করুন প্রতিদিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url