গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমি আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি
খাওয়ার নিয়ম
এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে অনেক তথ্য দিবো এগুলো সম্পর্কে আপনারা
হয়তো আগে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু সঠিক তথ্য পাননি আমার এই পোষ্টের
মাধ্যমে আজকে আমি তা বলব আশা করি আপনারা এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়বেন।
আমাদের অনেকেরই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে এর জন্য আমাদের পেট ব্যথা করে,
অম্বল হয়, বদহজমের মতো সমস্যা হয় এবং বমি বমি ভাব ইত্যাদি হয়। এর জন্য আমরা
অনেক অস্বস্তিতে পড়ে থাকি। কিন্তু এই সমস্যা গুলো আমরা ঘরোয়া ভাবে আবার
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করার ফলে দূর করতে পারি। আজকে আমি আপনাদের
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় সম্পর্কে
অনেক তথ্য দেব যেগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
আমাদের সকলের কাছে পরিচিত হচ্ছে গ্যাস্ট্রিক নামের এই সমস্যাটি। এখন আমাদের ছোট
বড় সবারই এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। এই সমস্যাটি আমাদের সকলকেই অসস্তিতে এবং
কষ্টদায়ক করে তোলে। এটার কারণ হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, মদ্যপান ,ধূমপান
,বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়া, খাবার হজম না হওয়া তেলে ভাজা এবং অতিরিক্ত
মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। এটার জন্য আমরা অনেকেই
ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অনেক ধরনের ওষুধ সেবন করে থাকি। আবার আমরা
অনেকেই আমাদের ঘরে থাকা কিছু উপকরণ দিয়েই ঘরোয়া ভাবে নানা ধরনের টোটকা তৈরি করে
সেটা পান করার ফলে এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি। এর জন্য আমরা
মেথি পানির সাথে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেই মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারি। আবার
আমরা জিরা, পুদিনা, দই, শসা ,তুলসীপাতা ইত্যাদি খেতে পেতে পারি। গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা হলে আমাদের পেটে ব্যথা হতে পারে পেট ফুলে যেতে পারে বমি বমি ভাব হতে পারে
কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এবং পাতলা পায়খানা ও হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
আমরা বাঙালিরা অত্যন্ত ভোজন রসিক খাবার খেতে খুব পছন্দ করি সে যেকোনো রকমের
খাবারই হোক না কেন। আমরা বেশি পরিমাণে তেল মশলা ব্যবহার করে খাবার কষিয়ে রান্না
করে খেতে পছন্দ করি কিন্তু এভাবে খাওয়ার ফলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা
দিতে পারে। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে আমাদের বদহজম, পেট ফাঁপা, হেঁচকি ,অম্বল,
পেটে ব্যথা করা ও বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। আর এই
সমস্যাগুলো হতে পারে অতিরিক্ত তেল মশলা জাতীয় খাবার খেলে, ধূমপান করলে,
অ্যালকোহল পান করার ফলে
এবং বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়ার ফলে। এছাড়াও আরো আমাদের খাবার তালিকায় ফাইবারের
মাত্রা কম হলে, নিয়মিত টয়লেট না হলে, দুগ্ধজাত দ্রব্য বেশি পরিমাণে খাওয়ার
ফলে, মহিলারা গর্ভবতী হলে এবং অতিমাত্রায় ডায়রিয়ার ওষুধ খাওয়ার ফলে
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু এগুলো দূর করার জন্য অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিক
দূর করার বিভিন্ন রকমের উপায় আছে। এই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আপনি ঘরোয়া ভাবে দূর
করতে পারেন আবার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করার ফলে দূর করতে পারেন।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় নিচে আলোচনা করা হলো
ঠান্ডা দুধঃ আপনি যদি একগ্লাস ঠান্ডা চিনি এবং চর্বি মুক্ত দুধ খেতে পারেন
তাহলে আপনার এসিডিটি রিফ্লাক্সের সময় যে আপনার জ্বালা পোড়া অনুভূত হয় সেটা
থেকে আপনি তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পেতে পারেন। কারো দুধে আছে ক্যালসিয়াম যা এসিডকে
নিরপেক্ষ করে এবং এর উৎপাদনকে বাধা প্রদান করে থাকে।
ভেষজ চাঃ আপনাদের মধ্যে অনেকেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় ঘন ঘন আর এ
সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে আইবিএস সংক্রমণ এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। এই
সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা এক কাপ গরম করতে পারেন। আর এই চা আপনারা
ঘরে থাকা কিছু ভেষজ উপকরণ দিয়ে তৈরি করতে পারেন যথা আদা এবং মৌরি ইত্যাদি। এই
উপকরণগুলো দিয়ে চা তৈরি করে পান করলে আপনাদের গ্যাস বুক জ্বালা করা ফোলা ভাব
ইত্যাদি সমস্যা গুলো দূর হবে এবং আপনার ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করবে।
লেবু পানিঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পাওয়ার জন্য
আপনারা লেবু পানি এবং লেবু চা তৈরি করে খেতে পারবেন এতে করে অনেক তাড়াতাড়ি উপশম
পাওয়া যাবে। এই লেবু পানির সাথে আবার আপনি ভাজা জিরা গুঁড়ো করে তারপরে এর সাথে
এক চিমটি পরিমাণে কালো লবণ আজওয়াইন যোগ করে খেতে পারেন। আবার আপনারা লেবু পানির
সাথে বেকিং সোডা পরিমাণে এক চিমটি যোগ করে খেতে পারেন এতে করে আপনাদের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমবে এবং আপনাকে হজমে সাহায্য করবে।
এলাচঃ এলাচ গুঁড়ো করে তারপরে সেটা খেলে আপনার অম্বলের সমস্যা থেকে আপনি
মুক্তি পাবেন এবং এটা দূরে থাকবে।
লবঙ্গঃ আপনি যদি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি লবঙ্গ মুখে দিয়ে তারপর সেটা
চুষলে আপনার মুখের দুর্গন্ধ দূর হবে এবং আপনার বুক জ্বালা বমি বমি ভাব এবং
গ্যাসের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ইসবগুলঃ ইসবগুল আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে বিস্ময়কর ভাবে সমাধান করতে
পারে এটি অনেক কার্যকরী। দইয়ের সাথে ইসবগুল খেলে আপনাদের পেট খারাপ বদহজম এর মত
সমস্যা দূর হয়ে যাবে। ঠান্ডা দুধের সাথে ইসবগুল খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
দূর হবে এবং গরম দুধের সাথে এসব ভুল খাওয়ার ফলে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।
পেঁপেঃ আপনারা যদি নিয়মিত পেঁপে খাবার অভ্যাসে করেন তাহলে আপনাদের
গ্যাসের সমস্যা দূর হবে কারণ পেপেতে আছে পাপায়া নামের একটি এনজাইম যা আপনাদের
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে এবং গ্যাসের সমস্যা সমাধান করবে।
শসাঃ শসা খাওয়ার ফলে আপনাদের পেট ঠান্ডা থাকবে কারণ শসা তে আছে
ফ্লেভানয়েড এবং এন্টি ইনফ্লেমেটরি নামের উপাদান যা আপনাদের পেটে গ্যাসের উদ্রেক
জনিত সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে।
চিয়া বীজঃ চিয়া বীজ ফাইবার এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অনেক
পুষ্টি আছে এই বীজ আমাদের প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং এটি গ্যাসের চিকিৎসায়
ব্যবহার করা হয়। এই বীজটি আপনারা পুডিং, দই, ফলের রস এবং ঠান্ডা পানীয় সাথে
মিশিয়ে খেতে পারেন।
পুদিনার জুসঃ আপনারা যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগেন তাহলে পুদিনার জুস
বা পুদিনার রস অথবা পুদিনার চা খেতে পারেন এতে করে আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
থেকে মুক্তি পাবেন। এটি খাবার ফলে আপনাদের পেটের ব্যথা অনেক কমে যাবে।
দইঃ দই আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে । এটা খাওয়ার ফলে
অনেক দ্রুত খাবার হজম হয় যার ফলে আপনাদের পেটে গ্যাস হবার সম্ভাবনা অনেক কম হবে।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়
আমাদের সব মানুষের মধ্যে অর্থাৎ ছোট বড় নারী পুরুষ সবার মধ্যেই গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন ধূমপান করা ভেজাল খাবার
খাওয়া তেলে ভাজা ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া ইত্যাদি খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা হয়। এসব খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের পাকস্থলীতে খাবার হজম করতে অনেক বেশি
এসিডের দরকার হয় যার ফলে হাইড্রোজেন ক্ষরিত হয় অনেক বেশি আর এই হাইড্রোজেন
ক্লোরিনের সাথে মিলে হাইড্রোক্লোরিক
অ্যাসিড উৎপন্ন করে।গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আমাদের শরীরে যেকোনো জায়গায়
ব্যথা হতে পারে কিন্তু সেটা বুঝতে পারা যায় না যে এটা কিসের ব্যথা সেজন্য আজকে
আমি আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয় সে সম্পর্কে বলবো।
গ্যাস্ট্রিক হচ্ছে পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে যাওয়া এবং অবশেষে
পাকস্থলীতে ক্ষতের সৃষ্টি করা। তাহলে আসল জানা যাক গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায়
কোথায় হয়
- আমাদের বুকের ডান পাশে ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা খোঁচানোর মত মনে হয়।
- আবার পেটের উপরের দিকে অল্প অল্প পরিমাণে ব্যথা হতে পারে সারাদিন।
- খাবার খাওয়ার পরে এই ব্যথা বাড়তে পারে।
- পেট খালি থাকার ফলে বুকে এবং পিঠের দিকে ব্যথা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
- বুকের মাঝখানেও গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা হতে পারে।
- এই ব্যথা কিন্তু সবার এক রকমের হয় না।
- আবার কোন কোন সময় পেটের মাঝখানে ব্যথা হতে পারে চিন চিন করে।
গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার লক্ষণ
আমাদের মধ্যে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারাই জানে এটা কতটা অস্বস্তিকর এবং
যন্ত্রণাদায়ক। তেলে ভাজা খাবার খেলে মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে এবং বেশি
পরিমাণে চা কফি খাওয়ার ফলে পচা বাসি খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে
পারে। আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হলে অনেক সময় ব্যথা হতে পারে পেটে এর ফলে আমাদের
বুকে , গলায় জ্বালাপোড়া হতে পারে। তবে আসল জানা যাক গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার লক্ষণ
অর্থাৎ গ্যাস্ট্রিকের কি কি লক্ষণ আছে
- গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণের মধ্যে হচ্ছে খিদে কম পাওয়া।
- পেটে গ্যাস হওয়া।
- গলায় এবং বুকে জ্বালাপোড়া করা।
- পেটের মাঝখানে ব্যথা অনুভূত হবে চিনচিন করে।
- পেটে অথবা বকে চাপ অনুভূত হয়।
- হজমে অর্থাৎ খাবার হজমে অসুবিধা হয়।
- বমি হওয়া।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার
খাবার হজমে সমস্যা দেখা দিলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় আর এ সমস্যাটা অনেক
বড় একটা সমস্যা এটার জন্য আমরা অনেকেই অনেক কষ্ট পাই। আমাদের পেট ব্যথা করে বুকে
ও পিঠে ব্যথা করে পেটের মাঝখানে ব্যথা করে আমরা শান্তি পাই না। আর এই সমস্যাটা
হয়ে থাকে ধূমপান করলে তেলে ভাজা এবং মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ইত্যাদি আরও
অনেক খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। কিন্তু খাবার
খাওয়ার ফলে
যেমন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয় তেমনি কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো খাওয়া থেকে
বিরত থাকলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কারণ এই সমস্যাটা অনেকদিন
ধরে চলতে থাকলে আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতি হতে পারে। আমরা যদি এই খাবারগুলো
নিয়মিত খাই তাহলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে কোনরকম ঔষধ সেবন না
করে। তাহলে আসুন জানা যাক গ্যাস্ট্রিক দূর করার খাবার কোনগুলো
মৌরিঃ মৌরি আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
খাবার। এটি খাওয়ার ফলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং আমাদের গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা ও অনেকটাই দূর হয়ে যায়। এটা পাকস্থলী ও অন্ত্রের পেশিগুলোতে ভালো প্রভাব
ফেলতে পারে। এর জন্য এসিড রিফাক্সের কারণে যে গ্যাসের সৃষ্টি হয় তা দূর করতে
সাহায্য করে।
জিরাঃ আমাদের সবার রান্নাঘরেই জিরা থাকে এই জিরা আমারা সব রকমের রান্নায়
ব্যবহার করে থাকি এবং এটা আমাদের জন্য অনেক উপকারী একটা খাবার। এই জিরা আমাদের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে অনেক কার্যকরী। জিরা খাওয়ার ফলে আমাদের বদ হজমের
সমস্যা দূর হয় কারণ এটা হজম রসকে উদ্দীপিত করে থাকে। আবার আমরা জিরা পানি খেতে
পারি গ্যাসের সমস্যা দূর করার জন্য।
পুদিনাঃ পুদিনা পাতা খেতে পারেন আপনারা নিয়ম করে প্রতিদিন পেট ফাঁপার মতো
সমস্যা হলে। এই ভেষজ খাবারটি আপনাদের পেটে গ্যাস জমতে দিবে না। কারণ এতে আছে
পেপারমিন্ট অয়েল যাতে আছে এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা
আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।
ভেষজ চাঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার জন্য আরেকটি কার্যকরী খাবার
হয়েছে ভেষজ চা এইটা নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনাদের ওষুধ ছাড়াই গ্যাসের সমস্যা দূর
হয়ে যাবে। খাওয়ার ফলে আপনাদের প্রদাহ কমবে এবং আপনারা আলসার থেকে মুক্তি পাবেন।
আপনারা যদি প্রতিদিন এই ভেষজ এক কাপ পরিমাণে পান করেন তাহলে আপনাদের হজম ক্ষমতা
বেড়ে যাবে আর হজম ক্ষমতা বাড়লে আপনাদের গ্যাসের সমস্যা হবে না।
তুলসী পাতাঃ আপনারা পেটের যে কোন রকম সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতা
ব্যবহার করতে পারেন একটি গবেষণা থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে তুলসী পাতার রস
গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত হওয়া ইঁদুরের গ্যাস্ট্রিক মিউকোসার ব্যথা কমাতে
কার্যকরী হয়। তাই আপনারা যদি নিয়মিত তুলসীপাতা খেতে পারেন তাহলে আপনাদের
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে কোনরকম ওষুধ ছাড়া।
গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ধূমপান অ্যালকোহল জাতীয় খাবার খাওয়া এবং তেলে
ভাজা মসলা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় আর এই সমস্যা
আমাদের অনেক অস্বস্তিতে ফেলে এবং বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে যেমন ক্যান্সার।
এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের জন্য আমাদের শরীরে নানা রকম ব্যথা অনুভূত হয় যার জন্য
আমার অনেক কষ্ট পায় কিন্তু ঘরে থাকা মেথি খাওয়ার ফলে আমাদের এই গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা দূর করা সম্ভব। এই খাবারটি যদি আমরা নিয়ম করে
প্রতিদিন খায় তাহলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অনেকটাই সমাধান হবে এছাড়াও
অনেক রোগের ঔষধ হিসেবে মেথি ব্যবহার করা হয়। ঘরে থাকা এই উপকরণ দিয়েই আমরা
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার মত আরও অনেক রোগের উপশমকারি ঔষধ তৈরি করতে পারি। কারণ
মেথিতে আছে অনেক গুণ যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। আজকে আমি
আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বলবো
- আমরা প্রথমে মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিবো একটি পরিষ্কার এক গ্লাস পানিতে ১০ মিনিট পরে সেই মেথি ভেজানো পানি পান করতে পারেন আপনারা এর সাথে স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনারা মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে একসাথে করে পান করতে পারেন।
- পরিমাণে এক গ্লাস পানিতে অথবা গরম পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখতে হবে ১০ মিনিট ধরে তারপরে সেই ভেজানো পানি পান করতে পারেন আপনারা এতে করে আপনাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আপনারা খালি পেটে মেথি পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপরে সেটা খেতে পারেন।
- গবেষণা থেকে পাওয়া যায় যে আপনারা যদি ছয় সপ্তাহ প্রতিদিন ২বার করে মেথির রস পান করতে পারেন তাহলে আপনারা অনেক উপকারিতা পাবেন।
- আর মেথি গোটা খেতে না পারলে মেথি পেস্ট করে তারপর সেটা ভাতের সাথে মেখে খেতে পারেন এতেও অনেক কার্যকারিতা পাওয়া যাবে।
পেটে গ্যাস হলে কি কি সমস্যা হয়
অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার খেলে মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে মদ্যপান ও ধূমপান
করার ফলে এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করার ফলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দেয় আমাদের
পেটে যার জন্য আমরা অনেক অসস্তিতে এবং কষ্টে জীবন যাপন করতে থাকি। এর জন্য আমরা
অনেকেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করে থাকি। এর ফলে আমাদের হজমের
সমস্যা হয় আর হজমের সমস্যা হলে আমাদের পেটে গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায় অর্থাৎ
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়।
আর হজমের সমস্যা হলে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং বদ হজম হতে পারে। এর জন্য আমাদের
পেটে অনেক রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে শুধু যে পেটে সমস্যা দেখা দেয় তা নয়
আমাদের বুকে, পিঠে এবং পেটের মাঝখানে ব্যথা অনুভূত হয় যার জন্য আমাদের অনেক কষ্ট
হয়। তাই আজকে আমি আপনাদের কেটে গ্যাস হলে কি কি সমস্যা হয় এগুলো বলবো তবে আসল
জানা যাক
- পেটে গ্যাস হলে আমাদের পেটে ফুলে যেতে পারে।
- আমাদের পেট খারাপ হতে পারে এবং বদ হজম হতে পারে।
- পেটে ব্যথা অনুভূত হয়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাতলা পায়খানা হতে পারে।
- পেটের ভিতরে পুটপুট বা বুটবুট ইত্যাদি শব্দ হতে থাকে।
- পেট ফাঁপার মত সমস্যা হতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবে না
আমাদের মধ্যে সকলেরই অর্থাৎ ছোট বড় সকলেরই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে
এই সমস্যাগুলো হতে পারে অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন ধূমপান মধ্যপান তেলে ভাজা এবং
মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে। জিরা, মেথি তুলসী পাতা পুদিনা ইত্যাদি খাবার
খাওয়ার ফলে যেমন আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যায় তেমনি অনেকগুলো
খাবার আছে যেগুলো খাওয়ার ফলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। তাই আমাদের
প্রতিদিনের খাবার
তালিকায় এই খাবারগুলো না থাকাই ভালো। কারণ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা মানে আমাদের
জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা। আমরা যদি এই খাবারগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকে তাহলে
আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আর হবে না। তাই আজকে আমি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে
আপনাদের গ্যাস্ট্রিক হলে কি কি খাওয়া যাবেনা সে সম্পর্কে বলবো
পপকনঃ পপকন আমরা সকলেই পছন্দ করি। এই খাবারে আছে অনেক বেশি পরিমাণে ফাইবার
আর এই ফাইবার থাকার কারণে এই খাবারটি আমাদের হজমে সমস্যার সৃষ্টি করে। পপকনে থাকা
ফাইবার আমাদের পেটে গ্যাস এবং পেট ফাঁপার মত সমস্যা সৃষ্টি করে। এই খাবারটি
আমাদের পরিপাক ক্রিয়ায় বেশি পরিমাণে বায়ু যোগ করতে থাকে তাই গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা থাকলে এই খাবারটি এড়িয়ে চলুন।
পেঁয়াজঃ যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা খাবার তালিকা থেকে পেঁয়াজ
বাদ দিতে পারেন কারণ পেঁয়াজে যেমন উপকারিতা আছে তেমনি এর অনেক ও ক্ষতিকর কিছু
দিক আছে। পেঁয়াজে থাকা কার্বোহাইড্রেড ফ্রুক্টন আমাদের অনেকের শরীরই এটা হজম
করতে পারে না। এটা আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পরে তা ভাঙতে অনেক গ্যাস তৈরি হয় আর
এজন্য অনেকে শরীরে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কাঁচা সবজিঃ আমরা অনেকে
কাঁচা সবজি
সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকি কিন্তু এতে আছে সালফার যৌগ যা আমাদের হজমের সমস্যা
সৃষ্টি করে। তাই কাঁচা সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে যাদের গ্যাস্ট্রিকের
সমস্যা হয় কাঁচা সবজি খাওয়ার ফলে এদের।
আপেলঃ আপনাদের মধ্যে যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা আপেল খাওয়া
থেকে বিরত থাকুন কারণ আপেলে আছে ফ্রুক্টোজ আর এর পরিমাণ অনেক বেশি থাকে যার জন্য
আমাদের শরীরে গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে তাই গ্যাসের সমস্যা হলে আপেল না
খাওয়াই ভালো।
চুইংগামঃ আমরা অনেকে চুইংগাম খেয়ে থাকি। খাওয়ার ফলে আমাদের বদহজমের
সমস্যা দেখা দিতে পারে।চুইংগাম খাওয়ার সময় আমাদের মুখের ভেতর দিয়ে বেশি বাতাস
আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে যার ফলে আমাদের গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।তাই
যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে তারা চুইংগাম খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
লেখকের মন্তব্য
ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে আপনাদের জন্য আজকে গ্যাস্ট্রিকের জন্য মেথি খাওয়ার নিয়ম
এবং গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় এছাড়াও আরো অনেক কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
নিয়ে আলোচনা করেছে যেগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হতে পারবেন। তাই এই পোস্টটি
পড়ে যদি আপনাদের কাছে ভালো লাগে তাহলে আপনারা অবশ্যই এই পোস্টটি আপনাদের
আত্মীয়দের এবং পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন এবং কমেন্টে জানাবেন কেমন
হয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url