আখের গুড়ের উপকারিতা ও আখের গুড় চেনার উপায় জানুন

 আসসালামু আলাইকুম, আপনারা আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আখের গুড়ের উপকারিতা ও আখের গুড় চেনার উপায় এবং আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা এবং আরো কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারবেন। তাই এ সকল বিষয়ে সঠিক তথ্য পেতে দয়া করে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। 

আখের গুড়ের উপকারিতা ও আখের গুড় চেনার উপায়
আখের গুড়ের উপকারিতা ও আখের গুড় চেনার উপায় সম্পর্কে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না আবার আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো অনেকের জানা নেই। তাই আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে এ সকল বিষয় ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয় যেমন আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম আখের গুড়ের অপকারিতা এবং আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে এ সকল বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছি। এগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং সঠিক তথ্য জানতে পারবেন তাই শেষ পর্যন্ত পড়বেন।

ভূমিকা

প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের সকলের কাছে আখের গুড় খুব উপকারী একটা খাবার এবং আখের গুড় আমরা নানারকম ভাবে খেয়ে থাকি। আমরা অনেকেই আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য আখের গুড়ের শরবত লেবুর সাথে অথবা আদার সাথে মিশিয়ে খেয়ে থাকি এবং এতে করে আমরা অনেক উপকার ও পেয়ে থাকি। এ সকল উপকারিতা ছাড়াও আখের গুড়ের অনেক উপকারিতা আছে যেমন স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে, হজমের সমস্যা সমাধানে ,গ্যাস বা অম্বলের সমস্যা দূর করতে পারি।


প্রদাহ দূর করতে ,ব্যথা কমাতে ও বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক সমস্যা সমাধানে আমরা আখের গুড় খেয়ে থাকি। আখের গুড় খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আমরা অনেকেই আখের গুড় চিনতে পারিনা আখের গুড় চেনার জন্য আমাদের অনেক সতর্ক থাকতে হবে। কেনার সময় আমাদের আখের গুড়ের দুই ধার পরখ করে কিনতে হবে দেখতে হবে আখের গুড়টা শক্ত কিনা যদি শক্ত হয় তাহলে বুঝবেন সেটা ভালো। আখের গুড় তিতা হবে না এবং নোনতাও হবে না মিষ্টি স্বাদের হবে।

আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম

আখের গুড় আমরা সবাই চিনি এবং আমরা এই গুড় খেতে পছন্দও করি। কারণ এই ঘুরে আছে অনেক পুষ্টি ও ভিটামিন যা আমাদের শরীরের পক্ষে খুব উপকারী। চিনির চাইতে আখের গুড় অনেক ভালো এবং এতে অনেক পুষ্টি উপাদান এবং শরীরের পক্ষে দিক থেকে অনেক গুনাগুন আছে। আপনারা অনেকে আখের গুড়ের উপকারিতা জানলে ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। তাই আজকে আমি আপনাদের আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বলবো

আখের গুড়ের শরবতঃ আমরা সকলেই রোজার মাসে ইফতারিতে এবং অন্য যেকোনো সময় ও শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য এবং পানি শূন্যতা দূর করার জন্য এই আখের গুড়ের শরবত করে খায় এর সাথে আবার অনেকেই লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পছন্দ করে। কারণ এর মধ্যে অনেক পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন আছে যেমন ফসফরাস ,সোডিয়াম ,পটাশিয়াম ও আয়রন ইত্যাদি যে সকল পদার্থগুলো আমাদের শরীরের ভেতর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। এর ফলে আমাদের শরীরের ক্লান্তি ভাব তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যায়।

পিঠা পায়েস তৈরি করেঃ আমরা অনেকেই বিভিন্ন রকমের পিঠা এবং পায়েস তৈরি করে খায় আখের গুড় দিয়ে এছাড়াও লাড্ডু তৈরি করে থাকে এভাবে আমরা সকলেই খেতে খুব পছন্দ করি এবং শীতের সময় তো এগুলোর উৎসব হয়ে থাকে। এভাবে খেলে আপনারা আখের গুড়ের সকল পুষ্টি উপাদানের উপকারিতা গুলো পেতে পারেন।

আখের গুড় ও কাঁচা হলুদঃ প্রাচীনকাল থেকে হলুদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে কারণ হলুদে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ কারকিউমিন ইত্যাদি এগুলো আমাদের সর্দি-কাশি, ব্যথা, ওজন বৃদ্ধি ,লিভার সুস্থ রাখার জন্য এবং ত্বক ভালো রাখার জন্য ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও আপনারা যদি খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন নিয়ম করে কাঁচা হলুদ এবং আখের গুড় একসাথে খেতে পারেন তাহলে এ সকল সমস্যা অল্প সময়ের মধ্যে দূর করতে পারবেন।

আখের গুড় ও কাঁচা ছোলাঃ আখের গুড় এবং কাঁচা ছোলা এই দুইটি উপাদান আমাদের জন্য খুবই পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ খাবার। আপনারা যদি ওজন কমাতে চান এবং গ্যাস এর সমস্যা দূর করতে চান তাহলে এগুলো খেতে পারেন। আবার আপনারা আপনাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য নিয়ম করে কাঁচা ছোলা এবং আখের গুড় খেতে পারেন সকালে খালি পেটে।

আখের গুড় এবং ইসবগুলঃ অনেক প্রাচীনকাল থেকে আখের গুড় এবং ইসবগুল পেটে সমস্যার জন্য এবং এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য খাওয়া হয় এবং এটা বেশ উপকারী খাবার। এই দুইটি উপাদান যদি আপনারা একসাথে মিশিয়ে শরবত করে খান তাহলে আপনাদের হজম ক্রিয়া সহজ হবে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও বদহজম থেকে সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। আরো শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য শরীরের পানি ঘাটতি দূর করার জন্য এটা খুব উপকারী।

আখের গুড় ও দুধঃ দুধ আপনাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী সেটা আপনারা সকলেই জানেন কিন্তু অনেকেরই দুধ খাওয়ার ফলে পেটের নানা রকম সমস্যা হতে থাকে এটা থেকে মুক্তির জন্য অনেকে দুধের সাথে চিনি মিশিয়ে খেয়ে থাকেন কিন্তু চিনি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো না। এই চিনির পরিবর্তে আপনি যদি আখের গুড়ের সাথে দুধ মিশিয়ে খান তাহলে আপনি অনেক উপকারীতা পাবেন। এতে করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা

আখের গুড়ের শরবতে খেতে আমরা সকলে পছন্দ করি। গরম কিংবা ঠান্ডা এবং ইফতারের সময় আমরা শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর করার জন্য এবং শরীরকে ঠান্ডা এবং সতেজ রাখতে ও দুর্বলতা কাটাতে আমরা সকলে আখের গুড়ের শরবত খেয়ে থাকি। অনেকেই আবার আখের গুড়ের সাথে ইসবগুল, এলাচ ও আদা ইত্যাদি অনেক উপকরণ মিশিয়ে শরবত করে খায়। কারণ আখের গুড়ে থাকে মিনারেল, খনিজ পদার্থ ,ফাইবার ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান। আসন জানা যাক আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা

রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করতেঃ আমরা যদি প্রতিদিন নিয়ম করে আখের গুড়ের শরবত খায় তাহলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। কেননা আখের গুড়ে আছে অনেক মাত্রার পুষ্টি উপাদান যেমন ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,খনিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১, বি২ এবং বি ৬ এগুলো আমাদের শরীরের মধ্যে উৎপন্ন অনুজীব ধ্বংস করতে সাহায্য করে থাকে।

ওজন কমানোর জন্যঃ আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে নিয়মিত আখের গুড়ের সাথে লেবু ও হালকা কুসুম গরম পানি মিশিয়ে শরবত করে খেতে পারেন এতে করে আপনার মেটাবলিজম বৃদ্ধি পাবে যার জন্য আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আবার আপনি ভিজিয়ে রাখা কাঁচা ছোলা, আদা এবং আখের গুড় খেতে পারেন এতে করে আপনাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে।

শরীর উষ্ণ রাখতেঃ আখের গুড়ের শরবত খেলে আপনাদের শরীরের তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকবে। আখের গুড়ে আছে ক্লোরোফিন যেটা আমাদের শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে এবং শক্তি যোগাবে।

এনার্জি বৃদ্ধি করতেঃ গরমের সময় আমাদের শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক পানি ও লবণ বের হয়ে যায় যার জন্য আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। এই ক্লান্তি ভাব দূর করার জন্য আপনারা আখের গুড়ের শরবত খেতে পারেন। আখের গুড়ের সাথে লেবু ও পুদিনা পাতা মিশিয়ে একসাথে করে শরবত বানিয়ে খেতে পারেন এতে করে আপনাদের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হবে এবং শরীর দ্রুত ক্লান্তি ভাব দূর করবে এবং আপনাদের শরীরে এনার্জি ফিরে আসবে।

হাঁপানি রোধ করতেঃ গুড়ে এমন বৈশিষ্ট্য আছে যা এলার্জি বিরোধী এবং ঠান্ডা জনিত অনেক রোগ গুলোর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে। গবেষণা থেকে জানা যায় যে ঠান্ডা জনিত অনেক রোগ যেমন কাশি হাঁপানি ফুসফুস পরিষ্কার ধুলাবালির কারণে হয়ে থাকা বিভিন্ন সংক্রমক রোগ নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় যে আওয়াজ হয় সেটা থেকে অর্থাৎ এগুলোর লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে থাকে।

সংক্রমণ রোগ থেকে বাঁচাতেঃ আখের গুড় শরীরের বিভিন্ন অনুজীব গুলোর বিদ্ধি হতে বাধা দেয় যার জন্য আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস জনিত অসুখ থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। সর্দি -কাশি ইত্যাদি ভাইরাস জনিত সংক্রমণ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে।

রক্তের বিশুদ্ধতাঃ আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ দ্রুত বের করে দিতে সাহায্য করে থাকে আখের গুড় এর ফলে আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে এবং হজমে সহায়তা করে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত করতেঃ যাদের রক্তস্বল্পতা আছে তাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নতি করার জন্য প্রয়োজন হয় লৌহ সমৃদ্ধ খাবারের এবং আখের গুড়ে আছে লৌহ তাই আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা উন্নত হয় যার ফলে রক্তস্বল্পতা দূর হতে থাকে।

মিনারেল এর সোর্সঃ সুস্থ ব্যক্তির শরীরের জন্য যে পরিমাণ মিনারেল এর প্রয়োজন হয় তার অনেকটাই পূরণ করতে পারে গুড়। কারণ গুড়ে আছে অনেক মিনারেল যেমন ১০ গ্রাম গুড়ে আছে ১৬ মিলিগ্রাম মিনারেল।

ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণেঃ আখের গুড়ে আছে পটাশিয়াম ও সোডিয়াম যেগুলো আমাদের শরীরের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণের জন্য সাহায্য করে থাকে।

মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করতেঃ আখের গুড়ে আছে অনেক পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ যেগুলো আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটার রিসেপ্টরের ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ম্যাঙ্গানিজ এটি একটি গবেষণা থেকে জানা গেছে। প্রতিদিন আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং মাথা ঠান্ডা রাখতে ও স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সাহায্য করে থাকে।

শরীর ডিটক্স করতেঃ আমাদের শরীরের তন্ত্রের ভেতর থেকে যেমন শ্বাসতন্ত্র, ফুসফুস ,পাকস্থলী ও পরিপাকতন্ত্র এগুলো থেকে বিষাক্ত পদার্থ বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে এবং এগুলোকে সুস্থ রাখে আখের গুড়।

মহিলাদের জন্য দরকারঃ মহিলাদের নানারকম সমস্যা যেমন রক্তস্বল্পতা, ঋতুস্রাবের সময় পেট ব্যথা করা ,মাথাব্যথা ,হাড়ের ক্ষয়, মেজাজ খিটখিটে হওয়া এবং পেশির সংকোচন ইত্যাদি সমস্যা গুলো হয়ে থাকে। এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা আখের গুড়ের শরবত খেতে পারেন। কেননা আখের গুড়ে আছে লৌহ, ক্যালসিয়াম ,প্রোটিন ও আইরন ইত্যাদি উপাদান যেগুলো আমাদের এ সকল সমস্যা থেকে সাহায্য করে থাকবে।

আখের গুড়ের শরবত আর কি কি উপকরণ দিয়ে প্রস্তুত করা যায় এবং এগুলো খেলে আপনারা বেশি উপকৃত হবেন তবে আসন জানা যাক আখের গুড়ের শরবত প্রস্তুত করার কিছু প্রণালী

আখের গুড় এবং আদার শরবত প্রস্তুত প্রণালী ও উপকরণ
  • আখের গুড়
  • আদার রস
  • স্বাদমতো লবণ বা পরিমাণ মতো লবণ
  • লেবু
প্রস্তুত প্রণালীঃ একটি পরিষ্কার গ্লাসে এক গ্লাস পানি নিতে হবে এবং তার সাথে মেশাতে হবে এক টুকরো আখের গুড়, লেবুর রস এক চামচ, আদার রস এক চামচ পরিমাণে এবং স্বাদমতো বা পরিমান মত লবণ এ সকল উপকরণ গুলো একসাথে ব্লেন্ড করে শরবত তৈরি করতে হবে। এভাবে তৈরি করে আপনারা এই শরবতটি খেতে পারেন এতে অনেক উপকারিতা পাবেন।

আখের গুড় এবং এলাচের শরবত প্রস্তুত প্রণালী ও উপকরণ
  • আখের গুড়
  • লেবু
  • অল্প পরিমাণে লবণ এবং
  • এলাচ
প্রস্তুত প্রণালীঃ একটি পরিষ্কার গ্লাসে এক গ্লাস পানি নিতে হবে এবং তার সাথে মেশাতে হবে লেবুর রস এলাচ গুঁড়ো এবং এক টুকরো আখের গুড় এই সবগুলো উপাদান একসাথে করে ভালোভাবে মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খেতে হবে। ঘুম থেকে ওঠার পরে খালি পেটে খেলে সমস্যা দূর হবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

আখের গুড় ও চিয়া সিড এর শরবত প্রস্তুত প্রণালী ও উপকরণ
  • আখের গুড়
  • চিয়া সিড
  • ইসবগুল
  • লেবু এবং
  • সামান্য পরিমাণে লবণ
প্রস্তুত প্রণালীঃ প্রথমে চিয়া সিড ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপরে আখের গুড় ইসবগুল সামান্য পরিমাণে লবণ এবং লেবুর রস একসাথে করে মিশিয়ে একটি শরবত তৈরি করতে হবে এবং এটি খেতে হবে এতে করে আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পাবেন এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি হবে।

আখের গুড়ের পুষ্টিগুণ

আমাদের সকলের কাছে আখের গুড় বেশ পরিচিত। কারন আমরা আখের গুড় গরমের সময় এবং ইফতারের সময় শরবত করে খেয়ে থাকি শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য এবং এটা আমাদের বিভিন্ন রোগের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে থাকে। আখের গুড় আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। কেননা আখের গুড়ে অনেক পুষ্টিগুণ এবং ভিটামিন থাকে। ১০০ গ্রাম আখের গুড় থেকে আপনারা ১৯০ কিলো ক্যালরি খাদ্য শক্তি পেতে পারেন।


এজন্য যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আখের গুড় রাখতে পারেন। এগুলো বাদেও আখের গুড়ে আছে ফলেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন ,ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ,ক্যারোটিন, সুক্রোজ ,আমিষ ,শর্করা, চর্বি, নিয়াসিন, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি ৬ ইত্যাদি আছে আরো অনেক পরিমাণে মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট উপাদান। যেগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, শরীরের ক্লান্তি দূর করতে, দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে, রক্তক্ষরণ দূর করতে ও ব্যথা কমাতে ইত্যাদি

আরো অনেক জটিল রোগের সমাধান থেকে আমাদের সাহায্য করে থাকে। প্রতিদিন আমাদের ন্যূনতম ৩৫.৬২ গ্রাম গুড় অথবা চিনি খাওয়া উচিত কিন্তু আমরা গুড়ের চেয়ে চিনি বেশি খেয়ে থাকি কারণচিনির থেকে গুড়ের পুষ্টি উপাদান বেশি থাকে এবং গুড়ের চাহিদা ও বেশি আমাদের সবার কাছে। আখের গুড়ের খাদ্য উপাদান যথা
  • চর্বি ০.১ গ্রাম
  • খনিজ লবণ ০.৬ গ্রাম
  • আমিষ ০.৪ গ্রাম
  • শর্করা ৯৫.০ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম ৮০.০ মিলিগ্রাম
  • আয়রন ১১.০৪ মিলিগ্রাম
  • ফসফেট ৪০.০ মিলিগ্রাম
  • ক্যারোটিন ১৬৪.০
  • থায়ামিন ০.০২ মিলিগ্রাম
  • রাইবোফ্লাবিন ০.০৪ মিলিগ্রাম থাকে।

আখের গুড় চেনার উপায়

আমরা পিঠাপুলি, পায়েস ,সেমাই ও লাড্ডু ইত্যাদি অনেক মজাদার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরি করতে আখের গুড় ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এই আখের গুড় আমরা কি সকলেই চিনতে পারে কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ এটা আমরা অনেকেই চিনতে পারিনা বা বুঝতে পারি না কেনার সময় ভুল করে থাকি। বাজারে এখন সোনালী রঙের আখের গুড় পাওয়া যায় কিন্তু এটাতে হাইড্রোজ মেশানো থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই আমি আপনাদের আখের গুড় চেনার উপায় সম্পর্কে বলবো

  • আখের খাঁটি গুড়ে কোন প্রকার তিতা ভাব থাকে না।
  • আখের খাঁটি গুড় সবসময় মিষ্টি স্বাদযুক্ত হয়।
  • খাঁটি আখের গুড়ে নোনতা ভাব থাকে না।
  • যদি নোনতা ভাব থাকে তাহলে বুঝবেন তাতে কিছু মেশানো আছে।
  • গুড় কেনার সময় খেয়াল রাখবেন যাতে করে গুড়ের দুই ধার নরম হয় এবং নরম যদি হয় তাহলে বুঝবেন সেটা ভালো।
  • গুড়ের মধ্যকার অংশটা হবে শক্ত বা কঠিন এবং যদি নরম হয় তাহলে বুঝবেন সেই গুড়ে ভেজাল আছে।
  • আখের গুড়ে যদি চিনি বা হাইড্রোজ নামক রাসায়নিক পদার্থ মেশানো থাকে তাহলে বুঝবেন সেই গুড়টা চকচকে এবং সোনালী রঙের হবে। কিন্তু আসল খাঁটি আখের গুড়ে রং সোনালী রঙের হয় না।
  • খাঁটি আখের গুড় সহজে ভাঙা যায় না কারণ এটা শক্ত হয়।
  • খাঁটি আখের গুড় পানিতে দেওয়ার সাথে সাথে আস্তে আস্তে পানির সাথে মিশে যাবে। আর যদি না মিশে তাহলে বুঝবেন সেটা নকল।

আখের গুড়ের উপকারিতা

আখের গুড়ের মধ্যে আছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান এবং ভিটামিন যেগুলো আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব উপকারী। আখের গুড় খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে ও স্মৃতিশক্তি উন্নত হয় আমরা বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে রক্ষা পায় ইত্যাদি ছাড়াও আরো অনেক উপকারিতা আছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা তাই আজকে আমি আপনাদের ঘরের উপকারিতা সম্পর্কে জানাবো

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ আখের গুড়ে আছে ম্যাগনেসিয়াম যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিকর জীবাণুর সাথে যুদ্ধ করে থাকে যার ফলে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

রক্তশূন্যতা দূর করতেঃ আখের গুড়ে আছে আইরন যা আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা বা অ্যানিমিয়া রোগ থেকে আমাদের সাহায্য করতে পারে।

লোহিত রক্তকণিকার বৃদ্ধিঃ যে সকল ব্যক্তির রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ কম আবার যে সকল ব্যক্তির রক্তে সে তো রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তারা আখের গুড় খেতে পারেন এতে করে তাদের রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ও বৃদ্ধি পাবে।

ওজন বৃদ্ধিতেঃ আমাদের শরীরের ওজন কমানোর জন্য আমরা আখের গুড় খেতে পারি কিন্তু আবার যদি অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে খায় তাহলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পাবে।

স্মৃতিশক্তির উন্নতিঃ আমরা যদি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে আখের গুড় খায় তবে আমাদের স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটবে অর্থাৎ আমাদের স্মৃতি শক্তি উন্নত হবে।

হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভাবনা কমায়ঃ আখের গুড়ে থাকে পটাশিয়াম যার ফলে আমাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা এবং হার্ট অ্যাটাক এর সম্ভাবনা কম হয়।

সর্দি কাশি থেকে মুক্তিঃ আমাদের সকলেরই অর্থাৎ ছোট-বড় সকলেরই ঠাণ্ডা সর্দি-কাশি জ্বর ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে এগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা আখের গুড় খেতে পারি এতে অনেক উপকার হবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আমরা আখের গুড় খেতে পারি কারণ আখের গুড়ে আছে ফাইবার।

শরীরের টক্সিন বের করতেঃ আমাদের শরীরে বিষাক্ত বা টক্সিন জাতীয় পদার্থ আছে যেগুলো আখের গুড় নিয়মিত খাওয়ার ফলে প্রসাবের সাথে আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায় আর এটার ক্ষেত্রে আখের গুড় আমাদের সাহায্য করে থাকে।

অর্গান সুস্থ রাখতেঃ আখের গুড়ে আছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যেগুলো আমাদের পাকস্থলী ফুসফুস এবং খাদ্যনালির সব রকম সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের শরীরের অর্গান গুলো সুস্থ থাকে।

শরীর উষ্ণ রাখতেঃ আখের গুড় আমাদের শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। শীতকালে আমাদের শরীরে নানা রকম রোগের আবির্ভাব ঘটে এ সময় আমাদের শরীরে ঠান্ডা লাগে তাই শীতকালে শরীর উষ্ণ রাখতে আখের গুড় খেতে পারেন।

শ্বাস যন্ত্রের সমস্যা থেকেঃ শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা যেমন হাঁপানি-শ্বাসকষ্ট আবার ধুলাবালির জন্য এলার্জিজনিত সমস্যা এবং ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আখের গুড় খাওয়া অনেক উপকারে আসে।

ব্যথা নিরাময়েঃ আখের গুড় খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে জয়েন্ট এর ব্যথা বাত ব্যথা নিরাময় হয় কারণ আখের গুড়ে আছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। এছাড়া গলা ব্যথা ব্যথা জনিত নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আখের গুড় অনেক উপকারী।

ত্বক উজ্জ্বল রাখতেঃ আমাদের ত্বক উজ্জ্বল রাখতে আখের গোড় অনেক উপকারী এই গুড়ে থাকা উপস্থিত গ্লাইকোলিক এসিড আমাদের ত্বকের দাগ ও বলিরেখা দূর করতে এবং ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

লিভার সুস্থ রাখতেঃ লিভার সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে আখের গুড়ের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। কেননা আখের গুড় খাওয়ার ফলে লিভার সুস্থ থাকে এবং লিভারের চর্বি জনিত সমস্যা লিভার সিরোসিস এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

জন্ডিসের ক্ষেত্রেঃ আমাদের রক্তে যখন বিলিরুবিন এর মাত্রা বেড়ে যায় তখন জন্ডিস এর মত অসুখ দেখা দেয়। এ সময় আমরা যদি আখের গুড় খায় তাহলে আমাদের রক্তের বিলিরুবিনের মাত্রা কম হবে।

প্রদাহ কমাতেঃ যে সকল ব্যক্তির প্রসাবের জ্বালা পোড়া বা ইনফেকশন আছে তারা এ সমস্যা থেকে উপশম পাওয়ার জন্য আখের গুড় খেতে পারেন তাহলে অনেক আরাম পাবেন।

ক্লান্তি দূর করতেঃ ইফতারে এবং গরমের সময় কাজ করে আমাদের শরীর অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়ে এ সময় আমরা শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য আখের গুড় বা আখের গুড়ের শরবত খেতে পারি এতে করে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং শক্তি যোগাবে।

মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতেঃ যাদের মানসিক রোগের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত আখের গুড় খেতে পারেন এতে করে তাদের শরীরে একটি সুখী হরমোন নিঃসৃত হবে যার ফলে আপনার মানসিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।

ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যঃ শরীরে বিপাক ক্রিয়া বজায় রাখার জন্য আমাদের ইলেকট্রোলাইটের প্রয়োজন আর আখের গুড়ে পটাশিয়াম থাকায় তা আমাদের শরীরের ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে।

সংক্রমণঃ বিভিন্ন ধরনের অন্ত্রের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আখের গুড় আমাদের খুব উপকার করতে পারে কারণ আখের গুড়ে আছে ম্যাগনেসিয়াম।

অম্বলের সমস্যা রোধেঃ আমরা যদি সকালে খালি পেটে আখের গুড়, আদা এবং তার সাথে ভেজানো কাঁচা ছোলা একসঙ্গে করে খায় তাহলে আমাদের খুব সহজেই অম্বলের সমস্যা এবং গ্যাস খাবারের অরুচি ইত্যাদি থেকে মুক্তি পেতে পারি।

দাঁতের সমস্যা সমাধানেঃ যাদের দাঁতের ব্যথা মাড়ি ব্যথা এবং দাঁতের নানা রকম সমস্যা আছে তাদের জন্য আখের গুড় এবং কাঁচা ছোলা অনেক উপকারী। যারা দাঁত এবং দাঁতের মাড়ি শক্ত মজবুত করতে চান তারা এটা খেতে পারেন।

ঋতুস্রাবের ব্যথাঃ মহিলাদের ঋতুস্রাব এর ব্যথা কমানোর জন্য আখের গোড় অনেক উপকারী। আখের গুড়ে থাকা প্রোটিন এ সময় শরীরে শক্তি যোগাবে এবং আইরনের ঘাটতি পূরণ করবে।

পেশি মজবুত করতেঃ আখের গুড় এবং কাঁচা ছোলা খেলে পেশি মজবুত হয় কারণ এগুলোতে আছে প্রোটিন, উচ্চ ফাইবার, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের পেশি মজবুত করবে এবং দুর্বলতা কাটাবে। 

আখের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে

আমরা সকলে চিনির বিকল্প পথ হিসেবে গুড় খেয়ে থাকি। চিনি যেমন আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর তেমনি গুড় ও আমাদের শরীরের পক্ষে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে যদি আপনি তা মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বেশি খেয়ে থাকেন তাহলে। আপনি যদি নিয়ম করে আখের গুড় খান তাহলে সেটা আপনার শরীরের পক্ষে ভালো সেটা আপনার শরীরের কোন ক্ষতি করবে না। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে তাহলে খেজুরের গুড় খেলে কি ওজন বাড়ে, না বাড়ে না। গুড় আমাদের শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু যদি


আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে সকালে খালি পেটে গুড়ের সাথে লেবু মিশিয়ে শরবত বানিয়ে খান তাহলে এটা আপনার শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এটা আপনার শরীরের মেটাবলিজম কে ভালো রাখতে সাহায্য করে যদি মেটাবলিজম ভালো থাকে তাহলে আপনার পাকস্থলীর হজম প্রক্রিয়ায় উন্নতি ঘটবে এবং এটার ফলে আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে আসবে। গুড়ে আছে ক্যালরি তাই আপনি যদি অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে গুড় খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে।তাই অতিরিক্ত বেশি গুড় খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

আখের গুড়ের অপকারিতা

আমরা সকলেই তো আখের গুড় খেয়ে থাকি এটা আমাদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু আখের গুড়ের যে অপকারিতা আছে এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। আখের গুড় বেশি পরিমাণে খেলে আমাদের শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং এটা আমাদের শরীরও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই আজকে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব আখের গুড়ের অপকারিতা সম্পর্কে

ডায়াবেটিসের ঝুঁকিঃ আখের গুড় হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় খাবার কিন্তু এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তেমন ক্ষতি করে না কিন্তু আমরা যদি বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। আবার যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের আখের গুড় খাওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। আপনি যদি বেশি পরিমাণে আখের গুড় খান তাহলে আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা এটা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ এটা খাওয়ার ফলে তাদের অনেক ক্ষতি হতে পারে।

ওজন বৃদ্ধিতেঃ আখের গুড় আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে কিন্তু আমরা যদি বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের ওজন কমার পরিবর্তে বরং ওজন বেড়ে যাবে। এখন অনেক গুড় তৈরি করতে চিনি ব্যবহার করে থাকে যার জন্য এটা খাওয়ার ফলে আমাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধিঃ আমরা চিনির পরিবর্তে গুড় খেয়ে থাকি এবং গুড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আবার দেখা যায় যে ১০ গ্রাম গুড়ে মিশানো থাকে ৯ গ্রাম চিনি। তাই আপনারা যদি বেশি মাত্রায় গুড় খান তাহলে আপনাদের শরীরে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাঃ গুড়ে নানা রকমের জীবাণু থাকে তাই গুড় খাওয়ার ফলে আমাদের ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কারণ গুড় তৈরী করা হয় অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ও ভুল পদ্ধতিতে যার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং গ্যাস্ট্রিকের ও পেটের সমস্যা বদহজম হতে পারে।

রক্তক্ষরণঃ গুড় আমাদের শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করে থাকে এবং আমাদের শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর শরীরকে সতেজ ও ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। আমরা প্রচন্ড গরমে কাজ করে তারপর গরম থেকে এসে গুড়ের শরবত বা গুড়ের রস খেয়ে থাকি যার ফলে আমাদের নাক থেকে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে। তাই সরাসরি গরমে কাজ করে এসে গুড়ের শরবত খাওয়া ঠিক না একটু আরাম করে তারপরে খেতে হবে।

বিভিন্ন সংক্রমণেঃ অনেকেই গুড় তৈরি করে থাকেন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যার ফলে গুড়ের মধ্যে বিভিন্ন জীবাণু থাকতে পারে। আমরা এই গুড় খেলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগ হতে পারে। আবার গুড়ে অনেক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ভেজাল পদার্থ মিশিয়ে থাকেন যা আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ক্ষতিকর। তাই গুড় কেনার আগে বিশুদ্ধতা যাচাই করে নেওয়া উচিত।

লেখকের মন্তব্য

ম্যাক্সিমো ইনফো এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের আখের গুড়ের উপকারিতা ও আখের গুড় চেনার উপায় এবং আখের গুড়ের শরবত খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও আখের গুড় খাওয়ার নিয়ম আখের গুড়ের অপকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছে যেগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন। আপনাদের যদি এই পোস্টটি ভালো লাগে তাহলে আপনারা সবার মাঝে এই পোস্টটি শেয়ার করে দিবেন এবং প্রতিদিন নতুন তথ্য পেতে এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url