আজওয়া খেজুরের দাম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন

আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের আজওয়া খেজুরের দাম ও উপকারিতা সম্পর্কে এবং সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে অনেক তথ্য দিয়ে থাকব আশা করি আপনারা এ সকল তথ্য পড়ে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন তাই এ সকল তথ্য জানার জন্য এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আজওয়া খেজুরের দাম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের আজওয়া খেজুরের দাম ও উপকারিতা সম্পর্কে এবং সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয় যেমন মরিয়ম খেজুর চেনার উপায় মরিয়ম খেজুরের দাম আজওয়া খেজুর চেনার উপায় কোন খেজুর বেশি উপকারী ইত্যাদি ছাড়াও অনেক খেজুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। আশা করি এ সকল বিষয়গুলো পড়ে আপনারা সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। কারো যদি এ সকল বিষয়ে জানা না থাকে তাহলে বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য গুলো পড়ুন তাহলে উপকৃত হবেন।

ভূমিকা

খেজুর কে সুপার ফুড বলা হয় কারণ খেজুরে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন যা আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। শুধু যে আমাদের শরীর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তাই নয় এটা আমাদের ত্বক ও চুলের জন্যও অনেক দরকারি। ইসলাম ধর্মে খেজুরের যেমন অনেক উপকারী তার কথা বর্ণনা করা হয়েছে তেমনি গবেষণায় ও প্রমাণিত হয়েছে এর উপকারিতার কথা। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের মহা ঔষধ


হিসেবে খেজুর খাওয়া হয় বা ব্যবহার করা হয়। এজন্য অর্থাৎ এর সকল পুষ্টি উপকারিতা এবং রোগ নিরাময়ের জন্য আমরা সকলেই খেজুর খেয়ে থাকি এছাড়াও গর্ভবতী মহিলাদের জন্যও খেজুর খুবই উপকারী। আমরা অনেকেই আজওয়া খেজুর খেয়ে থাকি কিন্তু এটা চেনার উপায় আমরা অনেকেই জানিনা এজন্য কিনার সময় আমরা অনেকেই সঠিক টা কিনতে পারি না এবং এর দাম ও না জেনে কিনে থাকি। আমরা সকলে সকালে খেজুর

খেয়ে থাকি কিন্তু সকালে খেজুর খাওয়ার ফলে আমরা যে সকল উপকারিতা আমরা পেয়ে থাকি তা হয়তো অনেকেই জানি না আজকে আপনাদের এ সকল বিষয়ে জানাতে চলেছি। এছাড়াও আরো অনেক বিষয় আছে যা আপনারা এই পোস্টটি পড়লে জানতে পারবেন।

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায়

আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় অনেকগুলো আছে। আজওয়া খেজুর সৌদি আরবে জন্মে থাকে। এটি একটি বিশেষ ধরনের জাতের খেজুর যার অনেক উপকারিতা আছে। আসুন তবে জানা যাক আসল আজওয়া খেজুর চেনার উপায় গুলো কি কি।
  • আসল আজওয়া খেজুর দেখতে কালো কুচকুচে হয়।
  • আজওয়া খেজুর দেখতে বড় আকারের হয়।
  • তবে কিছু কিছু খেজুর হালকা ছোট আকারের হতে পারে।
  • আজওয়া খেজুর খেতে বেশি মিষ্টি হয় না গন্ধ মিষ্টি হয়।
  • আজওয়া খেজুর নরম এবং নমনীয় হয় কিন্তু শক্ত বা শুকনো নয়।
  • আসল আজওয়া খেজুরের নিচের দিকে সাদা সূক্ষ্ম রেখা থাকে।
  • এই খেজুরটি বাদামি রঙের হয় এবং কোন প্রকার বাদামী দাগ থাকে না।
  • এই খেজুরের একপাশে অনেক সূক্ষ্ম সাদা রেখা থাকে।
  • এই খেজুরের বিচি ছোট এবং মোটা ও চ্যাপ্টা হয়।
  • এই খেজুরে বোটা থাকে আর যদি না থাকে বুঝবেন সেটা আসল না।
  • আজওয়া খেজুর লাল রঙের হয়না কখনোই।
  • আজওয়া খেজুরের গায়ের ডোরাকাটা শিরা গুলো কোঁকড়ানো থাকে।
  • মদিনা শহরের আসল আজোয়া খেজুর চেনার ভালো উপায় হল এই খেজুরের গায়ে ডোরাকাটা দাগ থাকে।
  • এই খেজুরের গা মসৃণ হয় না।
  • আজওয়া খেজুর মাঝারি আকারের এবং গোলাকার হয়ে থাকে।
  • এই খেজুরের গায়ে যে ডোরাকাটা দাগ থাকে সেগুলো দেখতে লালচে রংয়ের হয়ে থাকে।
  • আজওয়া খেজুর ভাঙার সময় যদি দেখেন তার ভেতরে রংটা সাদা তাহলে বুঝবেন সেটা ভালো এবং কয়েকদিন আগে এই খেজুরগুলো প্যাকিং করা হয়েছে। আবার যদি ভেতরটা সাদা কালো থাকে তাহলে বুঝবেন সেটা অনেক দিন আগের এবং পোকা ধরা।

কোন খেজুর উপকার বেশি

আমরা সকলেই অতি প্রাচীন কাল থেকে খেজুর খেয়ে থাকি কারণ খেজুরে থাকে অনেক পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা যা আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা এখন বাজারে বিভিন্ন প্রকারের খেজুর দেখতে পায় যেমন-মরিয়ম, আজওয়া, আনবারা, খালাস,বেরহি,শালাবি, ডেইরি ও খুদর ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে আমরা সকলেই আজওয়া এবং মরিয়ম খেজুর পছন্দ করে থাকি এবং জনপ্রিয় খেজুর।


এগুলো খুবই সুস্বাদু হয় এবং এই দুটো খেজুরি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খেজুর। উপকারিতার দিক থেকে সকল খেজুরের মধ্যে থেকেও মরিয়ম খেজুরটি বেশ জনপ্রিয়। গবেষকদের মতে শুকনা খেজুরের মধ্যে বেশি উপকারী এবং পুষ্টিগুনে সম্পূর্ণ খেজুর হচ্ছে মরিয়ম খেজুর। আমরা যদি রমজান মাসে রোজা রাখার পরে এই মরিয়ম খেজুর খায় তাহলে এই খেজুরের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারে আসবে। তবে আমাদের ইসলাম ধর্মে রোজার মাস ছাড়াও

অর্থাৎ রমজান মাস ছাড়াও নিয়মিত খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদের নবী (সাঃ) নিজে প্রতিদিন সাতটি করে খেজুর খাওয়ার কথা বলেছেন। এতে করে আমরা নানারকম রোগবালায় বিষাক্ত জিনিস জাদু থেকে মুক্তি পাবার জন্য এই খেজুর খেতে পারি। এই খেজুরে আছে ক্যালসিয়াম প্রোটিন ভিটামিন আইরন ফাইবার ইত্যাদি। এই মরিয়ম খেজুর খেলে আমাদের স্নায়বিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। আমাদের শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য আমরা মরিয়ম খেজুর খেতে পারি

কারণ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধ করতে এবং ফুসফুসের সুরক্ষা দিয়ে থাকে এই খেজুর এবং আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মরিয়ম খেজুর আমাদের মস্তিষ্ক কে প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে ইত্যাদি আরো অনেক উপকারিতা আছে। এ সকল উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য আমরা মরিয়ম খেজুর খাব তবে আমরা সুস্থ থাকবো।

আজওয়া খেজুরে কোন ভিটামিন থাকে?

আজওয়া খেজুরে অনেক পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন থাকে কিন্তু কি কি পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন থাকে এ সকল বিষয়ে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন না আজকে আমার এ পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা এই সকল বিষয়ে জানতে পারবেন তাহলে আসুন জানা যাক আজওয়া খেজুরে কোন ভিটামিন কি কি অনুপাতে থাকে তা জানা যাক
ভিটামিনের পরিমাণ থাকে
  • ভিটামিন এ-১০ আন্ত ইউনিট
  • ভিটামিন সি- ০.৪ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন ই-০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন কে - ২.৭ মাইক্রগ্রাম
  • ভিটামিন বি- ৬-০.১৬৫ মিলিগ্রাম
  • নায়াসিন (বি ২)-১.২৭ মিলিগ্রাম
  • ফোলেট (বি৯)-১৯ মাইক্রগ্রাম।
খনিজের পরিমাণ থাকে
  • ক্যালসিয়াম-৩৯ মিলিগ্রাম
  • লৌহ-১.০২ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম- ৪৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাঙ্গানিজ-০. ২৬ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়াম-৬৫৬ মিলিগ্রাম
  • জিংক-০.২৯ মিলিগ্রাম
  • ফসফরাস-৬২ মিলিগ্রাম
  • পানি- ২০.৫৩ মিলিগ্রাম।
পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ থাকে
  • শর্করা-৭৫.০৩ গ্রাম
  • শক্তি-১১৭৮ ক্যালরি
  • চিনি-৬৩.৩৫ গ্রাম
  • খাদ্য আঁশ-৮ গ্রাম
  • প্রোটিন-২.৪৫ গ্রাম
  • স্নেহ-০.৩৯ গ্রাম

সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

আমরা অনেকেই আছি যারা সকালে খেজুর খেতে পছন্দ করি বা খেয়ে থাকি এতে করে আমাদের অনেক উপকার হয় এটা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা তাই আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনারা সেই সকল উপকারিতার কথা জানতে পারবেন। আমরা সকলেই খেজুর খেতে পছন্দ করি কারণ খেজুর খেতে সুস্বাদু হয় এবং এর অনেক পুষ্টিগুণ আছে যেগুলো আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য


এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়াও আরো অনেক উপকারী তার কথা আছে যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না তবে আসন জানা যাক সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আমরা খেজুর খেতে পারি। কারণ খেজুরে আছে ফাইবার যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদ হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে। এছাড়াও মুখের লালা কে খাবারের সাথে ভালোভাবে মিশতে সাহায্য করে থাকে এই খেজুর এর ফলে আপনাদের বদহজম অনেকটাই দূর হয়ে যাবে। খেজুর সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনারা যারা ওজন কমাতে চান তারা খেজুর খেতে পারেন কারণ খেজুরে থাকে ফাইবার যা আমাদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে এবং অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে খাওয়া এড়াই এবং আমাদের পেট ভর্তি রাখে তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা খেজুর খেতে পারেন।

মস্তিষ্ক সচল রাখতেঃ খেজুর খেলে আমাদের মস্তিষ্ক সচল থাকে এবং এই খেজুর খাওয়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্ককে প্রাণবন্ত হয়। আমাদের ক্লান্তি ভাব দূর হয় এবং শক্তির যোগান দেয় এই পুষ্টিকর ফল।

হিমোগ্লোবিন বাড়ায়ঃ খেজুরে থাকে অনেক পরিমাণে আইরন যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সাহায্য করে এবং রক্ত সরবরাহ করে থাকে। আপনারা যদি খালি পেটে খেজুর খান তাহলে আপনাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ বেড়ে যাবে।

হার্টের সমস্যা দূর করতেঃ আপনাদের মধ্যে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য খেজুর একটি উপকারী ফল কেননা আপনাদের দুর্বল হার্টকে মজবুত করে। খেজুর খেলে আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকিও কম হবে।

খুসখুসে কাশি দূর করতেঃ আপনাদের মধ্যে যাদের খসখুসে কাশি আছে তারা এক থেকে দুইটি খেজুর এক গ্লাস পানিতে ভিজে রাখতে পারেন তারপরে সকালে সেই পানি সহ খেজুর খেতে হবে এতে করে ১৫ দিনের মধ্যেই খুসখুসে কাশি থেকে উপকার মিলবে।

ত্বককে টান টান করতেঃ আপনাদের বয়স বাড়ার ফলে মুখের চামড়াগুলো কুঁচকে যায় এবং মুখে দাগ দেখা দেয় এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাবার জন্য আপনারা প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন এতে করে ধীরে ধীরে দাগগুলো মিলে যাবে কারণ খেজুরে আছে ভিটামিন বি যা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী।

গর্ভবতী মহিলাদের জন্যঃ খেজুর গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী কারণ খেজুরে আছে আয়রন যা মহিলাদের রক্তে ভরপুর করে তুলবে। গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব এর সময় সাহায্য করতে পারে এই খেজুরে থাকা উপকারে গুণগুলো রক্ত শূন্যতা দূর করবে তাই গর্ভবতী মহিলারা এক থেকে দুইটি খেজুর খেতে পারেন।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেঃ ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে খেজুর খেজুরে থাকে এন্টি অক্সিডেন্ট। এটা মুখ গহবরের ক্যান্সার রোধ করতেও বেশ কার্যকরী।

চুলের গোড়া মজবুত করতেঃ অনেক সময় আপনাদের চুলের উজ্জ্বলতা হারিয়ে থাকেন আপনারা চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায় এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা খেজুর খাওয়া শুরু করতে পারেন কারণ খেজুরে থাকে তেলে যা অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ চুলের জন্য। চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুল পড়া রোধ করতে দারুন উপকার করে থাকে খেজুর।

কর্মশক্তি বাড়ায়ঃ খেজুরে থাকে প্রাকৃতিক চিনি যা আমাদের খুব তাড়াতাড়ি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে থাকে। আমরা সারাদিন রোজা রাখার পর যদি ইফতারের দুইটি খেজুর খায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে এবং আমরা কর্মশক্তি ফিরে পাবো।

রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করতেঃ খেজুরে আছে অনেক মিনারেল এবং আইরন যা আমাদের রক্তশূন্যতা রোধ করতে সাহায্য করে।

সংক্রমণেঃ আপনাদের যকৃতের সংক্রমণের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। আবার গলা ব্যথা সর্দি জ্বর এবং ঠান্ডা জনিত সমস্যায় খেজুর অনেক উপকারী এবং অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ার জন্য খেজুর উপকারী। পানিতে ভিজিয়ে রাখা খেজুর খেলে বিষক্রিয়ায় তাড়াতাড়ি কাজ করে।

প্রদাহ প্রতিরোধ করতেঃ আমাদের শরীরে ব্যথা ও প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করার জন্য বা প্রতিরোধ করতে খেজুর অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই খেজুর খাওয়া ভালো।

হাড় ভালো রাখতেঃ আমাদের হাড় মজবুত রাখতে এবং ভালো রাখতে খেজুর খাওয়া শুরু করুন আজ থেকেই কারণ খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট, কার্বোহাইড্রেট ,পটাশিয়াম ,জিংক, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ইত্যাদি এগুলো আমাদের হাড় মজবুত এবং ভালো রাখতে সাহায্য করবে।

১০০ গ্রাম খেজুরে কত ক্যালরি থাকে

১০০ গ্রাম খেজুরে ২৩০ ক্যালরি অর্থাৎ ৯৬০ জুল শক্তি উৎপাদন করে থাকে এটা প্রতি ১০০ গ্রাম পরিস্কার ও তাজা খেজুর থেকে। এটাতে ভিটামিন সি রয়েছে যা থেকে ২৩০ ক্যালরি শক্তি উৎপাদন করে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রামে পুষ্টি থাকে
  • শক্তি ১১৭৮ কিজু
  • শর্করা ৭৫.০৩ গ্রাম
  • খাদ্য আঁশ ৮ গ্রাম
  • চিনি ৬৩.৩৫ গ্রাম
  • স্নেহ পদার্থ ০.৩৯ গ্রাম
  • প্রোটিন ২.৪৫

আজওয়া খেজুরের দাম ও উপকারিতা

সবচেয়ে দামি এবং সুস্বাদু পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং ভরপুর হচ্ছে আজওয়া খেজুর। এই খেজুরের দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে কারণ এই খেজুরটি মিশর, সৌদি আরব, ইরান ইত্যাদি দেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। বর্তমানে আজওয়া খেজুরের দাম বাজারে বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে এর বিভিন্ন কোয়ালিটির ওপর ভিত্তি করে। অনেক রকমের কোয়ালিটি আছে এই খেজুরের। এখন বর্তমানে অনলাইনে ও বিক্রি করা হয়ে থাকে এই খেজুর। কিন্তু তার মধ্যে ভালো

আজওয়া খেজুর ১০০০ থেকে১২০০ টাকা ধরে বিক্রি করা হয় সব জায়গায়। এখন আমাদের দেশে আজওয়া খেজুর পাওয়া যায় বিভিন্ন দামে এবং এই খেজুরের চাহিদা অনেক বেশি রমজান মাসে। কারণ এই খেজুরে অনেক পুষ্টি উপাদান ও গুণ রয়েছে যা আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য জরুরী এবং এটা আমাদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে থাকে। এখন পুরো পৃথিবী জুড়ে প্রায় তিন হাজার এরও বেশি প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। এই আজওয়া খেজুর পৃথিবীর বিভিন্ন

দেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে আমাদের বাংলাদেশ তাই এর দামও একটু বেশি পড়ে আমাদের দেশে। তবে এর দাম এর কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে আমাদের দেশে বিক্রি করা হয় ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত। এই খেজুর চারটি কোয়ালিটির ওপর ভিত্তি করে বিক্রি করা হয়ে থাকে। আপনারা যদি ভিআইপি কোয়ালিটির নিতে চান তবে এর দাম বেশি পড়বে আবার আপনারা যদি একটু কম গ্রেডের নিতে চান তাহলে এর দাম কিছু কম হবে।

আজওয়া খেজুরের অনেক উপকারী তার কথা আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না। আজওয়া খেজুরের অনেক উপকারীতা রয়েছে। যেগুলো জানা থাকলে আপনারা অনেকেই উপকৃত হতে পারবেন এবং আপনাদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য এগুলো খুবই উপকারী তবে আসন জানা যাক আজো খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেঃ এখন বর্তমান যুগে হার্ট এটাকের মত রোগটি বেশি দেখা যায় আপনারা যদি নিয়মিত আজোয়া খেজুর খান তাহলে আপনাদের রক্ত নালী সংকুচিত হওয়া বন্ধ হয়ে যাবে এবং অন্ত্রকে শক্তিশালী করবে আবার অন্তরের কার্যকারিতা ও অনেক উন্নত করতে সাহায্য করবে। কারণ আজওয়া খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি যা আমাদের রক্তের ক্ষতিকারক হোমোসিস্টাইনের মাত্রাকে অপসারণ করতে সাহায্য করে থাকে এবং এতে থাকা পুষ্টিগুণ হৃদপিন্ডের ছন্দ বজায় রাখে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ এই খেজুরে থাকে অনেক পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তিকে অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি করে থাকে এটা আমাদের পাচনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য খুব দরকারি। এর ফলে আমাদের পেটের গঠন বজায় থাকে এবং ডাইজেস্টিভ সিস্টেমের জন্য ভালো এটা আমাদের পাচনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর ফলে আমাদের লিভার এবং পাকস্থলী থাকে সুস্থ আবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করেঃ আজওয়া খেজুরে রয়েছে অনেক পরিমাণে ভিটামিন এ যা আমাদের চোখের পিগমেন্ট উৎপাদন ও রোডোপসিন তৈরি করতে সাহায্য করে যা আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে থাকে। আবার এই রোডোপসিন আমাদের চোখের অনুমোদনকে বৃদ্ধি করে থাকে এবং এটা আমাদের স্বাভাবিক দৃষ্টি শক্তির জন্য খুব প্রয়োজন।

হাড় এবং দাঁতের জন্যঃ এই আজওয়া খেজুরে থাকে ধাতব ও ফসফরাস যা আমাদের দাঁত এবং হাড়কে অনেক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে। অনেক পুষ্টিগুণ এবং খনিজ থাকে এজন্য অনেকেই এই খেজুর কে সুপার ফুড বলে। এই খেজুর আমাদের বেদনাদায়ক অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা দেয় এবং আমাদের হাড় এবং দাঁতকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে।

পুষ্টি উপাদানঃ আজওয়া খেজুরে রয়েছে অনেক উচ্চ মাত্রার পুষ্টি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ। রয়েছে ফাইবার ভিটামিন এ বি পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি আরো অনেক পুষ্টি। এ সকল পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন আমাদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

ডায়াবেটিসেঃ খেজুরে থাকে অনেক পরিমাণে প্রাকৃতিক শর্করা যেমন লেভুলোজ,স্যাকারোজ ও অ্যালডোহেক্সোজ। এগুলো আমাদের রিয়েল টাইমে শক্তির মাত্রা অনেক পরিমাণে সাহায্য করে থাকে যার ফলে পলিজেনিক ডিসঅর্ডার এ জর্জরিত ব্যক্তিরা অনেক উপকারিত হয়। এটি খাওয়ার ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায় না তবে এটা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেঃ এই খেজুরে রয়েছে অনেক পরিমাণে প্রতিষেধক এবং রাসায়নিক উপাদান ও বিভিন্ন মাত্রার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা আমাদের ক্যান্সার হওয়া থেকে বিরত রাখতে সাহায্য করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যদি এটি থাকে তাহলে আমাদের শরীরকে সহায়তা করবে সিস্টেমের কার্যকারিতা সংশোধন করে। এটি আমাদের বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ থেকে রক্ষা করবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে ও শক্তিশালী করে তুলবে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ খেজুরে রয়েছে অনেক পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ । ভিটামিন এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং খনিজ সরবরাহ করে থাকে এই খেজুরআমাদের শরীরে । এতে থাকা ফাইবার এবং ভিটামিন আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রার পরিমাণ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে থাকে।

ত্বকের সমস্যা সমাধানেঃ খেজুর এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা আমাদের শরীরের প্রদাহ এবং ত্বকের নানা রকম সমস্যা যেমন পিম্পল চর্মরোগ ইত্যাদি চিকিৎসায় অনেক সাহায্য করে থাকে। এটা চর্মরোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া গুলোকে মেরে ফেলতে সাহায্য করে আবার ব্রণ হওয়া থেকে রক্ষা করে। আমরা খেজুরের মাস্ক তৈরি করে মুখে ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমাদের মুখের কালো দাগ গুলো হালকা করতে এবং পিগমেন্টেশন নির্মূল করার জন্য অনেক উপকার হবে।

মুখের যত্নেঃ মুখের যত্নের জন্য আমরা আজওয়া খেজুর খেতে পারি কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি এবং অ্যাক্সেরোফথল যেগুলো আমাদের কোষের আঘাত গুলোকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বককে চকচকে এবং সুন্দর করে তুলে। টিস্যুর কার্যক্ষ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং মুখের ব্রণ ও সূক্ষ্ম রেখা দাগগুলো অনেকটাই দূর করতে সাহায্য করে থাকে আমাদের।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আজওয়া খেজুরের অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টিগুণ রয়েছে যা আমাদের ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

চুলের যত্নের ক্ষেত্রেঃ খেজুরে থাকা আইরন আমাদের রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং যার ফলে আপনার মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পাবে। আবার চুলের গোড়া মজবুত ও শক্তিশালী হবে এবং চুলের শিকড় শক্তিশালী হবে। এর ফলে আপনার চুল অনেক মজবুত ও চকচকে হবে।

গর্ভাবস্থায় উপকারিতাঃ গর্ভাবস্থায় এই আজওয়া খেজুর খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যাবে। প্রতিদিন খেলে আপনাদের জরায়ুর বেশি গুলোকে সক্রিয় করে তুলবে এবং প্রসবের সময় প্রসব ব্যথা কমাবে, রক্তক্ষরণ কমাবে ও প্রসব এর সময় অনেক সহায়তা করে থাকবে।

মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবেঃ এই খেজুর আমাদের মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটাবে এবং হতাশা থেকে মুক্তি দিবে। আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে ,ঘুমের সমস্যার সমাধান করবে, আপনাদের স্নায়ু কোষের আঘাতগুলোকে প্রতিরোধ করবে এবং আপনাদের উদ্বেগ এবং বিষন্নতা কে অনেকাংশে কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। বিভিন্ন মাত্রার পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন গুলো আমাদের শরীরকে করবে নিরাময় ও কর্মক্ষম।

তারুণ্য ধরে রাখতেঃ আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কর্মব্যস্ততার কারণে খাবার খান না আবার পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারেন না সময় না পাওয়ার কারণে কিন্তু এ সকল কারণে আপনাদের মাঝে এখন অল্প বয়সেই মনে হয় আপনার অনেক বয়স হয়ে গেছে এবং বয়সের ছাপ পরিলক্ষিত হয়। আপনার কুচকে যাওয়া চামড়া, উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া ,চেহারায় মলিনতা দেখা দেওয়া ও বয়সের ছাপ ইত্যাদির জন্য আপনাদের প্রয়োজন এনটিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি যুক্ত খাবার যা তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

রক্তক্ষরণ কমায়ঃ আপনাদের মধ্যে বাচ্চা প্রসব করার সময় অতিরিক্ত পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয় এবং পরবর্তী সময়ে আপনাদের বিভিন্ন সমস্যা যেমন জরায়ু সমস্যা পাইলস ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয় আর এ সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা আজওয়া খেজুর খেতে পারেন। আপনারা প্রসব পরবর্তী সময়ে আপনাদের রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য এই খেজুর খেতে পারেন কারণ এতে আছে অনেক কপার, বিভিন্ন খনিজ পদার্থ, ক্যালসিয়াম ও আয়রন ইত্যাদি যা আপনাদের আবার নতুন রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করবে।

পেটের গ্যাস দূর করতেঃ আপনারা যদি পেট থেকে গ্যাসের সমস্যা দূর করতে চান এবং আপনাদের পাচনতন্ত্রের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চান বা বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আপনাদের খাওয়া উচিত ফাইবার যুক্ত খাবার আর এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আপনারা আজওয়া খেজুর খেতে পারেন কারণ এই খেজুরে আছে অনেক পরিমাণে ফাইবার। যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য পেটের হজম ক্রিয়া ভালো রাখতে গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করবে।

ওজন কমাতেঃ আজওয়া খেজুরে আছে অনেক পরিমাণে ফাইবার আর এই ফাইবার জাতীয় খাবারগুলো আমাদের কেটে অনেকক্ষণ থাকে অর্থাৎ অনেকক্ষণ আমাদের পেট ভরা রাতে সাহায্য করে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে যার জন্য আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ হয় বা আমাদের ওজন কমে যায়।

স্নায়ুবিক শক্তি বৃদ্ধি করতেঃ এই খেজুরে আছে পটাশিয়াম ,অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ,ফ্লেভোনয়েডস যেগুলো আমাদের স্নায়ু কোষের দুর্বলতা কাটায় এবং স্নায়ুর বিভিন্ন সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। আবার স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং ডিমেনশিয়া ইত্যাদি মারাত্মক স্নায়ুর রোগ গুলো থেকে আমাদের প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এই খেজুর।

শুকনো কাশি এবং কফ দূর করতেঃ শুকনো কাশি এবং বুকের ভেতরে অনেক দিন ধরে জমে থাকা ইত্যাদি সমস্যা গুলো পুষ্টির অভাবের কারণে হয়ে থাকে ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে আপনাদের অল্প দিন পর পর সর্দি-কাশি জ্বর ইত্যাদি সমস্যা হয়ে থাকে এগুলো দূর করতে হলে খেজুর খান।

আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম

আমরা সকলে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আজওয়া খেজুর বা যে কোন রকমের খেজুরি হোক না কেন খেয়ে থাকি এতে করে আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদার পূরণ হয় আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং আমরা অনেক পুষ্টি ও ভিটামিন খনিজ পদার্থ পেয়ে থাকি এতে করে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং আমরা কাজ করার জন্য কর্ম শক্তি পেয়ে থাকি। আর এই আজওয়া খেজুরের অনেক উপকারিতা রয়েছে এবং এই খেজুর খাওয়ার অনেক নিয়ম ও আছে। আমাদের নবী করিম

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খুরমা খাবে সে ব্যক্তির শরীরে কোন প্রকার বিষ ও জাদু কোন ক্ষতি করতে পারবে না"। (বুখারী ,হাদিস :৫৪৪৫)। আজকে আমারে পোস্টের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে তবে আসন জানা যাক সেই নিয়ম গুলো

সকালে খালি পেটেঃ আপনারা যদি সকালে খালি পেটে আজোয়া খেজুর খান তাহলে আপনারা সারাদিন কাজ করার শক্তি পাবেন। আবার আপনারা যদি ব্যায়াম করার আগে বা পরে এই খেজুর খান তাহলে আপনাদের শরীর থেকে ধর্ষিত পদার্থগুলো বের হয়ে যাবে। আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সকালে খালি পেটে মদিনার উঁচু ভূমি থেকে আজোয়া খেজুর খেলে সে ব্যক্তির সেই দিন কোন প্রকার জাদু অথবা বিষক্রিয়া আরোগ্য করতে পারবে না।(মুসনাদে আহমাদ: ২৩৫৯২)

রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেঃ আপনারা যদি সারাদিনের কর্মব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে চান তাহলে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৬ থেকে ৭টি এই আজওয়া খেজুর খেতে পারেন তাহলে আপনারা সতেজ এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠবেন।

ভিজিয়ে আজওয়া খেজুর খাওয়ার নিয়মঃ আপনারা যদি রাতে সাত থেকে আটটি আজওয়া খেজুর একটি গ্লাসে ভিজিয়ে রাখেন বিচি বাদে এতে করে আপনারা সকল পুষ্টি পাবেন। কারণ খেজুর সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখার ফলে এর গুনাগুন আরো অনেক গুনে বেড়ে যায়। এভাবে আপনারা সকালে খেতে পারেন।

আজওয়া খেজুরের বিচি সহ বড়ি তৈরি করেঃ কুরআনে এই খেজুরের অনেক উপকারীতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে অনেকবার এবং গবেষণায় ও প্রমাণ করা হয়েছে। এই খেজুর আপনাদের হৃদরোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। হযরত সা’দ (রাঃ) বর্ণিত, আমি একবার বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ি। এইঅসুস্থতার কথা শুনে মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন এবং আমাকে দেখে তিনি আমার বুকের ওপর হাত রাখেন ফলে আমার হৃদয়ে শীতলতা অনুভূত হয়।

নবী করিম (সাঃ) বলেন তুমি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছ এটি সারানোর জন্য হারিশা ইবনে কাওলাদার এর কাছে যাও তিনি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। নবীজির কথা শুনে হযরত সা’দ (রাঃ) কাছে যান এবং তিনি মদিনার সাতটি আজওয়া খেজুর বিচিসহ চূর্ণ করে সাতটি বড়ি তৈরি করে দেন"।(আবু দাউদ: ৩৮৩৫)। এটা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে আজওয়া খেজুরের বিচির ও অনেক উপকারিতা আছে।

খেজুর ও দুধঃ খেজুর এবং দুধের দুইটি খাদ্যই বেশ উপকারী এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার। এই দুটি খাবার যদি আমরা একসাথে খায় তাহলে আমাদের শরীরের অনেক ধরনের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে এবং আমাদের চোখের অনেক সমস্যা দূর করা সম্ভব। দুধ এবং আজওয়া খেজুর বিচি ছাড়িয়ে একসাথে চুলায় জাল করতে হবে তারপরে এর কালার টা যখন একটু লালচে হবে তখন চুলা বন্ধ করে ঠান্ডা করার পরে সেটা আমরা খেতে পারি এতে অনেক উপকার হবে।

মরিয়ম খেজুর চেনার উপায়

আপনারা অনেকেই মরিয়ম খেজুর ঠিকমতো চেনেন না যার কারণে বাজারে কিনতে গিয়ে ঠকে যান বা প্রতারণার শিকার হন। তাই আপনাদের এই কথাগুলো মাথায় রেখে আজকে আমি মরিয়ম খেজুর চেনার সহজ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে আপনাদের বলব। অনেক ব্যবসায়ী বা দোকানদার আছেন যারা মরিয়ম খেজুরের নাম করে অন্যান্য খেজুর বিক্রি করে থাকেন চড়া দামে কিন্তু ক্রেতারা তা বুঝতেই পারেনা মরিয়ম খেজুর না চেনার জন্য। তাহলে আসুন জানা যাক মরিয়ম খেজুর চেনার উপায়
  • মরিয়ম খেজুর গুলো কেনার সময় লক্ষ্য করবেন এগুলো পাকিস্তান আলজেরিয়ার অথবা সৌদি আরবের কিনা
  • মরিয়ম খেজুর কেনার সময় এর স্বাদ যাচাই করে নিন।
  • মরিয়ম খেজুর কুচকানো হবে এবং কোন রকমের পোকামাকড় থাকবে না।
  • মরিয়ম খেজুর আকারে ছোট এবং মাঝারি আকারের হয়।
  • মরিয়ম খেজুর দেখতে গারো বাদামি রঙের হয়।
  • মরিয়ম খেজুর মিষ্টি স্বাদ এবং রসালো হয়।
  • মরিয়ম খেজুর ডিম্বাকৃতির এবং লম্বাটে হয়।
  • এই খেজুরের চামড়া চকচকে এবং মসৃণ হয়।
  • এই খেজুর তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা হয়।

মরিয়ম খেজুর এর দাম

অনেক ব্যবসায়ীরা বা দোকানদাররা মরিয়ম খেজুর বিক্রি করে থাকেন বিভিন্ন দামে কারণ মরিয়ম খেজুর একটি অত্যন্ত ভালো এবং উপকারী খেজুর তাই এই খেজুরের দাম অনেকটাই বেশি হয়ে থাকে। রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা একটু বেশি হয় এছাড়া সারা বছর এই খেজুরের চাহিদা আছে এর ওপর ভিত্তি করেও খেজুরের দাম ওঠা নামা করে। অন্যান্য খেজুরের চেয়ে মরিয়ম খেজুরের দামটা একটু বেশি পরে। কারণ এই খেজুরগুলো অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে।

মরিয়ম খেজুর আপনারা কিনতে পারবেন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আবার সবচেয়ে ভালো মানের উৎকৃষ্ট ৫০০ গ্রাম মরিয়ম খেজুরের দাম হবে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। এছাড়াও অনলাইনে বিক্রি করা হয়ে থাকে এই খেজুর অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রিত ৫০০ গ্রাম খেজুরের দাম হবে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এই খেজুরের দাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দামের এক কেজি ১৪০০ টাকা হয়ে থাকে।

লেখকের মন্তব্য

আজকে আপনারা আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আজওয়া এবং মরিয়ম খেজুরের দাম এবং উপকারিতা ছাড়াও আরো অন্যান্য যেমন সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা আজওয়া এবং মরিয়ম খেজুর চেনার উপায় আজওয়া খেজুরের উপকারিতা ইত্যাদি অনেক কয়েকটি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি আশা করি আপনারা এ সকল তথ্য পড়ে উপকৃত হবেন এবং অন্যকে উপকৃত করতে পারবেন। তাই আপনারা এই পোস্টটি বেশি বেশি করে শেয়ার করবেন এবং অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url