কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় এ বিষয়ে জেনে নিন
আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন আজকে আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে
আমি আপনাদের কি কি কারণে
রোজা
ভেঙে যায় এ বিষয়ে এবং রোজা রেখে নখ কাটা যাবে কি ছাড়াও আরো কয়েকটি বিষয়ে
রোজা সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে চলেছি আশা করি আপনারা অনেক উপকৃত হবেন
তাই দয়া করে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি সকলকে।
আজকে আমি আপনাদের রোজা সম্পর্কিত কয়েকটি বিষয়ে অনেক তথ্য জানাবো আশা করি আপনারা
এ সকল বিষয়ে পড়ে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। তাই আজকে আমি আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে
কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় এ বিষয়ে এবং রোজা রেখে নখ কাটা যাবে কি,
মেয়েদের
রোজা ভঙ্গের কারণ ,সপ্তাহে কোন দিন রোজা রাখা নিষেধ ইত্যাদি কয়েকটি বিষয়ে অনেক
তথ্য দিয়েছি। সকল বিষয়ে তথ্য জানতে হলে আপনাদের এই পোস্টটি পড়তে হবে তাই সকলকে
অনুরোধ করব শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
ভূমিকা
আমাদের সকলেরই রোজা রাখা উচিত বিশেষ করে মুসলমান ধর্মের লোকের রোজা রাখা ফরজ। তবে
রোজা রাখার বিষয়ে অনেকগুলো তথ্য আছে যেগুলো আমরা সকলেই জানিনা কিছু কারণ আছে
যেগুলোর জন্য রোজা ভেঙে যায় আবার বছরের অনেকগুলো দিন আছে যে দিনগুলোতে রোজা রাখা
নিষেধ করা হয়েছে। এ সকল বিষয়ে আজকে আমি আপনাদের জানিয়েছি। রোজা ভেঙে যায়
ইচ্ছে করে বমি করলে, স্বামী স্ত্রী সহবাস করলে, রোজাদার ব্যক্তিকে কেউ জোর করে
কোনরকম খাবার খাওয়ালে, কান বা নাক দিয়ে কোনরকম ওষুধ প্রবেশ
আরো পড়ুনঃঅনলাইন বাস টিকেট বুকিং বাংলাদেশ ২০২৪
করানো হলে ইত্যাদি আরো কারণ আছে যেগুলোর জন্য রোজা ভেঙে যায়। আবার মেয়েদের
হায়েজ ও নিফাহ হলে রোজা ভেঙে যাবে। আবার রোজার সময় আমাদের ইফতারে ও সেহরিতে
পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া উচিত যাতে করে আমাদের শরীর সারাদিন শক্তি ও পুষ্টির
চাহিদার যোগান দিতে পারে। অপরদিকে তেলে ভাজা মসলাদার ও ঝাল খাবার খাওয়া উচিত না
এতে করে আমাদের পেটের সমস্যা বদহজম পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা গুলো হতে পারে।
এজন্য সেহেরি ও ইফতারের খাবারের সময় আমাদের বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
রোজার সময় ইফতারে কি খাওয়া উচিত
আমাদের সকলেরই উচিত ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া কারণ এই স্বাস্থ্যকর খাবার
গুলো আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। ইফতারের সময় বেশি তাড়াহুড়ো করে
খাবার খাওয়া যাবেনা একটু সময় নিয়ে আস্তে আস্তে খাবার খেতে হবে। প্রথমে দুই
তিনটা খেজুর খেতে হবে এবং
পানি পান
করতে হবে। এরপরে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় অপেক্ষা করে ভারী কোন খাবার খেতে হবে।
খেজুর মিষ্টি জাতীয় ফল তাই এটি খুব তাড়াতাড়ি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে
দিতে পারে আবার এতে থাকা এনজাইম আমাদের খাবারগুলোকে
সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে। তাই আমাদের খাবারের শুরুতে খেজুর খাওয়া উচিত
এটা পরিপাকের জন্য খুব উপকারী হয়। এছাড়া ইফতারে আমরা পানি জাতীয় খাবার গুলো
খেতে পারে যেমন-ফলের রস, শরবত , সুপ ইত্যাদি। তবে আরেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত
একেবারে বেশি পরিমাণে পানি পান করা ঠিক না এটা আমাদের কিডনির ওপর চাপ বাড়াতে
পারে তাই ইফতারের পর থেকে কিছু সময় পর পর অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত।
ইফতারিতে বেশি তেলে ভাজা খাবার খাওয়া ঠিক না
আবার খুব ভারি খাবার যেমন বিরিয়ানি কষানো মাংস কাচ্চি ইত্যাদি খাবারগুলো না
খাওয়াই ভালো এগুলো আমাদের পেটের সমস্যা ও গ্যাস সৃষ্টিতে এবং হজমে সমস্যা দেখা
দিতে পারে। আবার আমরা ইফতারের ফল ও সবজি ধরনের খাবার খেতে পারি এ সকল খাবার গুলো
আমাদের দেহ থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে। আমরা ইফতারে পেয়ে ঠান্ডা থাকে এমন
খাবারগুলো ও খেতে পারি যেমন-দই-চিড়া, মুড়ি ,দুধচিড়া, কলা ,ছোলা ওডাবের পানি
ইত্যাদি খেতে পারি এগুলোতে থাকা শর্করা আমাদের রক্তে শর্করার ভারসাম্য ঠিক
রাখতে সাহায্য করবে। ইফতারের পর আমরা আমাদের শরীরটা বেশি দুর্বল লাগলে এবং যাদের
উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমূত্র ইত্যাদি সমস্যা গুলো নেই তারা এক গ্লাস গ্লুকোজ বা
স্যালাইন খেতে পারেন। এবং আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার খেতে হবে। আমাদের
খাদ্য তালিকায় সব ধরনের খাবার থাকতে হবে যেমন-আমিষ শর্করা খাইবার সমৃদ্ধ মিনারেল
ভিটামিন ফ্যাট ইত্যাদি। আমার ফলের মধ্যে খেতে পারি পেয়ারা, আপেল, তরমুজ ইত্যাদি।
রোজার সময় সেহরিতে কোন খাবার খাওয়া উচিত
আমার আর রমজান মাসে রোজা থাকি ভোর বেলায় অর্থাৎ সেহরি খেয়ে এবং সন্ধ্যা সময়
ইফতার করি। এতে অনেক সময় ধরে আমাদের না খেয়ে থাকতে হয় এজন্য সেহরিতে আমাদের
খাদ্য তালিকায় বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত যাতে করে আমরা সারাদিন শক্তি পায় ও
পুষ্টির যোগান দিতে পারে খাবারগুলো। কিন্তু আরেকটি বিষয় সারাদিন না খেয়ে রোজা
থাকতে হবে বলে সেহরিতে একেবারে বেশি খাওয়া উচিত না এটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
ভালো হবে না।
আমাদের উচিত যে খাবারগুলো আমাদের দেহে শক্তি এবং পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারবে সে
সকল খাবার খাওয়া তাহলে আমরা সারাদিন রোজা থাকতে পারবো এবং আমাদের শরীর এবং
স্বাস্থ্যের কোন সমস্যা দেখা দিবে না। তাহলে আসুন জানা যাক রোজার সময় সেহরিতে
কোন খাবার খাওয়া উচিত।
ভাত এবং রুটিঃ রোজা থাকার জন্য সেহেরিতে আমাদের খাবার খাওয়া খুব প্রয়োজন
তাই সেহরিতে আমাদের লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস ,বার্লি, ঢেকিছাটা
চালের ভাত
ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত। কারণ খাবারগুলোতে কার্বোহাইড্রেট থাকে এবং আস্তে
আস্তে হজম হয় এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত কর্মশক্তি ধরে রাখতে আমাদের সাহায্য করে
থাকে। খাবারগুলো হজম হতে প্রায় আট ঘন্টা লাগে এবং এই খাবারগুলো খেলে আমাদের
ক্ষুধা কম লাগে। খাবারগুলো খেলে আমরা সারাদিন সুস্থ থাকতে পারবো এবং কর্মক্ষম
থাকবো।
তাজা শাকসবজিঃ সেহরিতে তাজা শাকসবজি খাওয়া উচিত কারণ শাকসবজিতে প্রচুর
পরিমাণে পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন থাকে এগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই
দরকারি। তবে সেহরিতে ভারী আঁশ যুক্ত সবজি খাওয়া ঠিক না এতে করে আমাদের পেটে
হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমাদের মাঝারি আঁশযুক্ত সবজি যেমন-লাউ ,পেঁপে,
চাল কুমড়া ,ঝিঙে, চিচিঙ্গা ও গাজর প্রভৃতি সবজি খাওয়া উচিত সেহরিতে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ আমরা যদি সেহরিতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খায় তাহলে
আমাদের শরীরে তা প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদার এবং শক্তির যোগান দিবে। সেহরিতে
আমরা তরল দুধ ,গুড়া দুধ, মাছ, মাংস, ডিম,ও ডাল ইত্যাদি খাবার খেতে পারে এগুলো
প্রোটিনের ভালো যোগান দিবে। এছাড়াও আছে ফসফরাস, জিংক, আইরনও ক্যালসিয়াম ইত্যাদি
পুষ্টি উপাদান আমাদের হাড়ের সুস্থতার জন্য দরকার। এছাড়া বিশেষভাবে দুধ
,দই,ছানা, আম, কলা সহ দুধ ভাতখেতে পারি। সেহেরিতে ডিম থাকে তাহলে তা ভালো শক্তির
যোগান দিবে।
এছাড়াও সেহরিতে তৈলাক্ত মসলাদার এবং ঝাল খাবার যেমন- বিরিয়ানি পোলাও তেহারি
ইত্যাদি খাবারগুলো খাওয়া ঠিক না। এ সকল খাবার খেলে আমাদের পেটের সমস্যা বদহজম
বুক জ্বালাপোড়া করা ইত্যাদি সমস্যা গুলো হতে পারে। এছাড়া অনেক কিছুই দিতে কফি
বা চা ও কোল্ড ড্রিংকস খেয়ে থাকেন এগুলো খাওয়া ঠিক না এতে করে এগুলোতে থাকা
ক্যাফেইন মূত্রের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে এর ফলে আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত
পানি বের হয়ে যায় এবং খুব তাড়াতাড়ি পানি তৃষ্ণা পায়।
কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায়
অনেকগুলো কারণ আছে যেসব কারণের জন্য রোজা ভেঙে যায় আসুন তাহলে জানা যাক কি কি
কারণে রোজা ভেঙে যায়
- মুখ ভর্তি করে বমি করলে।
- রোজাদার ব্যক্তিকে কেউ ইচ্ছা করে জোর পূর্বক কিছু খাওয়ালে।
- কুলি করার সময় যদি অনিচ্ছাকৃত গলার ভেতরে পানি প্রবেশ করে তাহলে।
- জোরপূর্বক স্বামী- স্ত্রী সহবাস করার ফলে।
- সময় আছে বলে সুবহে সাদেকের পরে খাবার খাওয়া।
- ইফতারের সময় হয়ে গেছে বলে ইফতারের আগে কোন প্রকার খাবার খাওয়া।
- প্রস্রাব বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনরকম ঔষধ শরীরের মধ্যে প্রবেশ করালে।
- ভুল করে কোন কিছু খেলে তারপরে আবার ইচ্ছে করে কোন কিছু খেলে।
- নাকের ভেতর বা কানের ভেতর দিয়ে ওষুধ ঢুকালে।
- দাঁতের ফাঁকে কোনরকম খাবার লেগে থাকলে তা খেলে।
- বৃষ্টির পানি যদি মুখে পড়ে তাহলে তা খেলে।
- যদি কারো অল্প পরিমানে বমি মুখে আসে তারপরে যদি সে ইচ্ছাকৃতভাবে তা খেয়ে ফেলে তাহলে।
- ইচ্ছা করে কোন প্রকার খাবার বা ঔষধ বা ধূমপান করলে।
- কৃত্রিম উপায়ে খাদ্য গ্রহণ করলে অর্থাৎ রোজাদার কোন ব্যক্তি যদি রক্ত গ্রহণ স্যালাইন গ্রহণ গ্লুকোজ ইনজেকশন ইত্যাদি গ্রহণ করে তাহলে।
- সঙ্গম ব্যতীত যদি কেউ অন্য পন্থায় বীর্যপাত করে তাহলে রোজা ভেঙে যায়।
- মহিলাদের হায়েজ -নেফাস হলে বা ইফতারের কিছু সময় আগে যদি হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।
- রোজা রাখার সময় রোজার নিয়ত করতে হবে এবং এবং সেই নিয়ত রাখতে হবে তা না হলে রোজা ভেঙে যাবে।
- কোন রোজাদার ব্যক্তি যদি ফজর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বেহুশ থাকে তাহলে তার রোজা শুদ্ধ বলে গণ্য হবে না এর জন্য তাকে কেবল ওইদিনের রোজা কাজা করে রাখতে হবে।
সেহরি না খেলে রোজা হবে কি?
সেহরি হচ্ছে অত্যন্ত বরকতময় একটি খাবার এবং সেহেরি খাওয়া আমাদের সকলের ওপর
সুন্নত করা হয়েছে। আমরা যদি কেউ ভোর রাতে সেহরি না খায় তাহলে কি আমাদের রোজা
আদায় হবে? সেহরি না খেলে রোজা আদায় জায়েজ হবে এতে কোন প্রকার আপত্তি নেই। তবে
আমাদের সেহরির সময় যেকোনো প্রকার খাবার খাওয়ায় ভালো এতে বরকতময় হবে। আমাদের
নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন," তোমরা সেহেরি খাও
কেননা সেহরিতে
আল্লাহ তা'আলা বরকত রেখেছেন"। পেট ভরে যে খেতে হবে এমন কোন শর্ত দেওয়া নেই মাছ
দুধ খেজুর বা অন্য যেকোন রকম হালকা খাবার সেহেরিতে খাওয়া যেতে পারে। আমরা যদি
কেউ সেহরিতে উঠতে বা জাগা না পাই তাহলে সেই ব্যক্তি ও রোজা থাকতে পারবে। সেহেরি
খাওয়ার অনেক ফজিলত বর্ণিত আছে হাদিস শরীফে।
বমি করলে কি রোজা ভেঙে যায়?
কোন মানুষ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভোরে বমি করে তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে আর যদি
কেউ অনিচ্ছায় বমি করে তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে না আবার যদি কেউ অনিচ্ছায় বমি
হওয়ার পরে যদি শারীরিকভাবে অসুস্থতা দেখা দেয় এবং শরীরটা যদি অতিরিক্ত দুর্বল
হয়ে যায় আর রোজা রাখতে না পারে এমন অবস্থায় যদি সেই ব্যক্তি রোজা ভেঙ্গে ফেলে
তাহলে তাকে সেই রোজার জন্য কাজা আদায় করতে হবে না। আর যদি কেউ ইচ্ছাকৃত
ভাবে
বমি করে তাহলে তাকে সেই রোজার জন্য কাজা করতে হবে এগুলো হাদিস শরীফে বর্ণিত
হয়েছে। আবার কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে আঙ্গুল দিয়ে অথবা অন্য কোন পদ্ধতি
অবলম্বন করে ইচ্ছাকৃত মুখ ভর্তি করে বমি করে তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে।
মেয়েদের রোজা ভঙ্গের কারণ
এমন অনেকগুলো কারণ আছে যে সকল কারণের জন্য মেয়েদের রোজা ভেঙে যায়। মেয়েদের যদি
হায়েজ ও নিফাস হয় তাহলে তাদের রোজা ভেঙে যাবে। আবার যদি হায়েজ ইফতারের অর্থাৎ
সূর্যাস্তের কিছু সময় আগে হয়ে থাকে তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে তবে যদি কোন নারীর
সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোন রকম রক্ত বের না হয় তাহলে তার রোজা শুদ্ধ হবে। এজন্য
সেদিনের রোজার জন্য তাকে কাজা করতে হবে না। আর যদি কোন কারণে রোজা ভেঙে যায়
তাহলে তাকে
সেদিনে সেই রোজার জন্য পরে কাজা আদায় করতে হবে তবে কাফফারা আদায় করতে হবে না।
আবার মাসিক অবস্থায় যে নামাজ কাজা হয়ে গেছে তা পরে কিন্তু আর আদায় করতে হবে
না। এছাড়াও আরো কিছু কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে সেগুলো হচ্ছে ইচ্ছে করে মুখ
ভর্তি করে বমি করলে, ইসলাম ত্যাগ করলে, নাক অথবা কান দিয়ে কোনরকম ঔষধ প্রবেশ
করালে, রোজাদার ব্যক্তিকে ইচ্ছে করে জোর করে কেউ কিছু খাবার খাওয়ালে, স্বামী
স্ত্রী সহবাস করলে
এবং মুখে বমি আসার পরে তা ইচ্ছে করে গিলে খেলে ইত্যাদি আরো অনেকগুলো কারণে রোজা
ভেঙে যেতে পারে। এ সকল কারণগুলো সকলের ক্ষেত্রেই রোজা ভাঙ্গার কারণ হতে পারে
কিন্তু মেয়েদের বিশেষ করে হায়েজ ও নিফাস শুরু হলে রোজা ভেঙ্গে যাবে।
সপ্তাহে কোন দিন রোজা রাখা নিষেধ
ইসলামের মূল স্তম্ভের মধ্যে রোজা একটি স্তম্ভ। মুসলমান সকল নারী-পুরুষদের ওপর
রোজা ফরজ করা হয়েছে। আমরা বছরের যে কোন সময় বা সপ্তাহে বা মাসে রোজা রাখতে
পারি। ফরজ রোজা বাদে কিছু নফল রোজা আছে এগুলো আমরা যেকোনো সময় রাখতে পারি। তবে
রমজান মাসের ফরজ রোজার দিনগুলো বাদে অন্য যেকোনো দিনে আপনি নফল রোজা আদায় করতে
পারবেন। তবে আরেকটি বিষয় হচ্ছে যে বছরে এমন পাঁচটি দিন আছে এই দিনগুলোতে ফরজ নফল
কোন রোজায় আদায় করা যায় না।
- ঈদুল ফিতরের দিন
- ঈদুল আযহার দিন
- আবার জিলহজ মাসের ১১-১২ ও ১৩ তারিখের দিন রোজা রাখা নিষেধ।
এই পাঁচদিন আমাদের সকল ধরনের রোজা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার বিরামহীন ভাবে কোন
মানুষ যেন সারা বছর রোজা না রাখে এ বিষয়েও নিষেধ করা হয়েছে। কোন মানুষ যদি
ছাড়া বছর নফল রোজা আদায় করতে চায় তাহলে তাকে একদিন পরপর রোজা রাখতে হবে নবী
করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পদ্ধতিকে উত্তম পদ্ধতি হিসেবে আখ্যায়িত
করেছেন। সহিহ বুখারী হাদিসঃ১৯৯২ আয়াতে নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈদুল ফিতর ও
ঈদুল আযহার দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন। ফেকাহবিদদের মতে শুক্রবার এর দিন
নির্দিষ্ট করে রোজা রাখা উচিত না তবে এর আগে ও পরের দিন মিলিয়ে দুটি রোজা রাখা
যাবে। আবার শাবানের ৩০ তারিখ যদি রমজান মাসের চাঁদ দেখা না যায় এবং এ বিষয়ে যদি
গ্রহণযোগ্য নিশ্চয়তা না থাকে তাহলে এই দিন রোজা রাখা যাবে না। কারণ এটিকে
সন্দেহের দিন বলা হয় কারণ এই দিন শাবান মাসের ৩০ তারিখ না রমজান মাসের ১ম তারিখ
এ বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায় । তাই এই দিন রোজা রাখা নিষেধ।
রোজা রেখে নখ কাটা যাবে কি?
রমজান মাসে রোজা রেখে নখ কাটা যাবে কি? বা রোজা ভেঙে যাবে কি? না রমজান মাসের
রোজা রেখে নখ কাটলে রোজা ভেঙে যাবে না। খালি নখ না চুল কাটলে বা আমাদের শরীরের
অযাচিত পশম পরিষ্কার করলে রোজা ভেঙে যাবে না। রোজা রেখে নখ, চুল ,দাড়ি কাটা ও
শরীরের অযাচিত লোম পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজগুলো করলে রোজার কোন প্রকার ক্ষতি হবে
না। রমজান মাসে রোজা রেখে কাজগুলো করা জায়েজ আছে।আমাদের উচিত ফরজ ,ওয়াজিব
ও সুন্নতের খেলাফ কাজগুলো না করা করলে বেশি ক্ষতি হবে।
লেখক এর মন্তব্য
ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে কি কি কারণে রোজা ভেঙে যায় এবং রোজা রেখে নখ কাটা যাবে কি
ছাড়াও আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অনেক সঠিক তথ্য দিয়েছে রোজা বিষয়ে। এই
বিষয়গুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং অন্য কেউ এ সকল বিষয়ে তথ্য দিতে
পারবেন তাই এই পোস্টটি পড়ে আপনাদের ভালো লাগলে অবশ্যই আপনারা আপনাদের পরিচিতদের
সাথে শেয়ার করে দিবেন কমেন্টে জানাবেন কেমন হয়েছে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url