খাবার পচনশীল রোধে প্রিজারভেটিভস খাদ্যবস্তুকে সংরক্ষণ করে কিভাবে
আসসালামু আলাইকুম, আমি এখানে খাবার পচনশীল রোধে প্রিজারভেটিভস খাদ্যবস্তুকে সংরক্ষণ করে কিভাবে এবং খাদ্য পচন রোধ করে কোনটি খাদ্য পচনের কারণ এবং আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। এগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন ও সঠিক তথ্য পাবেন। তাই দয়া করে সবাইকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি।
প্রতিদিন কিছু না কিছু পরিমাণে খাবার নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ এর মাধ্যমে সংরক্ষণ করে রেখে পচনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। এর জন্য আমরা লবণ এবং চিনি রোদে শুকিয়েও সংরক্ষণ করে রাখতে পারি। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক এবং অনু জীবের দ্বারা খাদ্য পচে যায়। এছাড়া আমরা আরো বিভিন্ন উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণ করে রেখে এর গুণগত মান ও স্বাদ বজায় রাখতে পারি। এ সকল বিষয়ে জানার জন্য আপনাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ করছি।
ভূমিকা
আমাদের খাবারগুলো প্রতিদিন কিছু না কিছু পরিমাণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এই খাবারগুলো নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক এবং অণুজীবের কারণে কিন্তু আমরা যদি একটু লক্ষ্য করি তাহলে এই খাবারগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংরক্ষণ করে রাখতে পারে এবং পচনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারি। রোদে শুকিয়ে, পানি অপসারণ করে, চিনি এবং লবণ ব্যবহার করার মাধ্যমে, ভিনেগার ব্যবহার করার মাধ্যমে, ফ্রিজে রেখে এবং টিন জাত ও সেদ্ধ করে রান্না করে খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারি।
আরও পড়ুনঃফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম এবং ফ্রিজের উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
ও পচন রোধ করতে পারি। এগুলোর মাধ্যমে খাবার সংরক্ষণ করলে খাবারে থাকা পানি শুকিয়ে যায় এবং খাবারে থাকা অণুজীব ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি হয় না এবং মারা যায় এতে করে বহুদিন খাবার ভালো থাকে। এছাড়াও আমরা বিভিন্ন রাসায়নিক এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ ব্যবহার করে এবং শীতলীকরণ করে ও খাবার সংরক্ষণ করতে পারি। এই পদ্ধতি গুলো অনেক দিন আগে থেকেই মানুষ ব্যবহার করে খাবার সংরক্ষণ করে থাকে।
খাদ্য পচন রোধ করে কোনটি খাদ্য পচনের কারণ
আমাদের খাবারগুলো বিভিন্ন কারণে নষ্ট হতে বা পচে যেতে পারে এগুলো বিভিন্ন জীবাণু, তাপ, তাপমাত্রা, আলো, আদ্রতা এবং ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি দ্বারা ও ছত্রাকের দ্বারা হতে পারে। খাবারের বিষয়ে আমরা যদি একটু সচেতন হই এবং এ পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করি তাহলে আমরা খাদ্য পচন রোধ করতে পারব। খাদ্য পচন রোধ করার জন্য আমরা বিভিন্ন পদ্ধতি বা জিনিস ব্যবহার করতে পারি এ আমাদের খাবার আর নষ্ট হবে না এবং পচে যাবে না খাবারের গুণগত মান এবং পুষ্টিগুণ ঠিক থাকবে।
- রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারি।
- বরফ জমিয়ে বা বায়ু শূন্য করে পচন রোধ করতে পারি।
- পানি অপসারণ করার মাধ্যমে খাবার পচন রোধ করা যেতে পারে।
- চিনি, লবণ ,মসলা এবং ভিনেগার ব্যবহার করে পচন রোধ করা যায়।
- সেদ্ধ বা রান্না করে এবং টিন জাত ও প্যাকেটিং করে খাবার পচন রোধ করা যায়।
- বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে সংরক্ষণ করে পচন রোধ করা যায়।
- প্রিজারভেটিভস এর মাধ্যমে খাদ্য পচন রোধ করা যায়।
- ফরমালিন এর ব্যবহার করে খাদ্য বস্তু পচন রোধ করা সম্ভব।
শুকানোর মাধ্যমে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায় কারণ
শুকানোর মাধ্যমে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায় এটা অনেকদিন আগে থেকেই প্রচলিত আছে। আগে কারদিনে মানুষ এই পদ্ধতি অবলম্বন করে খাদ্য সংরক্ষণ করে রাখতো এতে করে খাবারের থাকা পানি শুকিয়ে যেত এবং অনেকদিন পর্যন্ত খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারতো। এই পদ্ধতির মাধ্যমে খাবারে জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায় তাপের সাহায্যে। রোমানরা আগেকার দিনে যখন আবহাওয়ার তারতম হতো তখন আগুন জ্বালিয়ে তারা খাবার শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখতো।
খাদ্য পচনের জন্য পানি দরকার হয় কিন্তু যখন আমরা রোদে শুকিয়ে খাবার সংরক্ষণ করি তাতে পানি থাকে না শুকনো খাবারে আবহাওয়ার কোনরকম বিরূপ প্রভাব পড়ে না এতে খাবার ভালো থাকে। আঙ্গুর, খেজুর,মাছ, মাংস শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। মধ্যযুগের মানুষ শাকসবজি এবং ভেষজ ও ফল এগুলো তারা শুকিয়ে খেতে পছন্দ করত এতে করে অনেক দিন খাবার ভালো থাকে নষ্ট বা পচে যায় না।
কীভাবে আমরা খাদ্য সংরক্ষণ করতে পারি
আমরা আমাদের খাবার কে জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়া ছত্রাকের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে খাদ্য সংরক্ষণ করে রাখতে পারি অনেকদিন পর্যন্ত। এতে করে আমাদের খাবার নষ্ট হয়ে বা পচে যাবে না এবং আমরা ভালো খাবার ও খেতে পারব। খাবার সংরক্ষণ করার বিভিন্ন পদ্ধতি গুলো হল
- আমরা খাবারগুলোকে রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে পারি এতে করে পানি শুকিয়ে যাবে জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি হবে না।
- নিম্ন তাপমাত্রায় অর্থাৎ ফ্রিজে রেখে আমরা খাবার সংরক্ষণ করতে পারি কারণ এতে অনুজীবের বংশবিস্তার কম হয়।
- বায়ু শূন্য পরিবেশে খাবার রাখলে তাতে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না ফলে ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব খাদ্যকে নষ্ট করতে পারে না।
- লবণ এর মাধ্যমে আমরা খাবার অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখতে পারে লবণে থাকা ক্লস্ট্রিডিয়াম বোটুলি নাম অনুজীব বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং বৃদ্ধি হতে দেয় না।
- খাবারের চিনি যুক্ত করে খাবার সংরক্ষণ করা যায়।
- পিকলিং অর্থাৎ খাবার কে কোন তরলের মধ্যে ডুবিয়ে রেখে এর ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব ধ্বংস করার মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়।
- জেলি করনের মাধ্যমে খাবার সংরক্ষণ করা যায়। এতে খাবার একটি পদার্থের সাথে মিশিয়ে রান্না করা হয় এবং তারপর একে শক্ত জেলির মত তৈরি করা হয়।
- খাবার কে ধোয়া তৈরি করে তাতে উন্মুক্ত করে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
- বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় রশ্মি ব্যবহার করে খাবার সংরক্ষণ করা যায় এতে অনুজীব বংশবিস্তার করতে সক্ষম হয় না।
খাবার পচনশীল রোধে প্রিজারভেটিভস খাদ্যবস্তুকে সংরক্ষণ করে কিভাবে
খাবার পচনশীল রোধে আমরা বিভিন্ন রকমের প্রিজারভেটিভ পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি। প্রিজারভেটিভ হচ্ছে খাদ্য সংরক্ষণের একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি যে প্রাকৃতিক পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করে আমরা খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারে অনেকদিন পর্যন্ত। এতে যেমন খাবার ভালো থাকে তেমনি খাবারের গুণগত মান পুষ্টি ও স্বাদ বজায় থাকে এবং বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের হাত থেকে রক্ষা করা যায়। নিচে কিছু প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ সম্পর্কে বলা হল
লবণঃ লবণের দ্বারা খাদ্য সংরক্ষন পদ্ধতি অনেকদিন আগে থেকেই ব্যবহার করা হয়ে আসছে। লবণ খাবার থেকে আদ্রতা বের করতে সাহায্য করে এবং ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
চিনিঃ চিনি খাবারকে ডি হাইডেড করে এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতি করে এতে করে খাবার ভালো থাকে অনেকদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায় খাবার পচন রোধ করা যায়।
ভেষজ এবং মসলাঃ অনেক ভেষজ এবং মসলা পাওয়া যায় যেগুলোতে এন্টি মাইক্রোবিয়াল গুণ বা বৈশিষ্ট্য আছে এগুলো খাবার সংরক্ষণ করার কাজে ব্যবহার করা হয় এবং খাবারকে পচন থেকে রক্ষা করা যায়।
ভিনেগারঃ ভিনেগার একটি প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ বা খাদ্য সংরক্ষণকারী উপাদান এটি খাবারের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে এবং তাদের বৃদ্ধি হতে দেয় না। এই ভিনেগারের মাধ্যমে ও খাবার সংরক্ষণ করা যায় এবং পচন রোধ করা যায়।
সাইট্রাস ফলঃ যে সকল ফলে সাইট্রিক এসিড থাকে সেগুলো কমলা ও লেবু ইত্যাদি ফল খাবারে থাকা ব্যাকটেরিয়া এর বিরুদ্ধে কাজ করে। এ সকল ফল ব্যবহার করেও আমরা খাবার পচন রোধ করতে পারি। এছাড়া আমরা এই সকল প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার সংরক্ষণ করে রাখার পাশাপাশি আরো ফ্রিজে খাবার রেখে, নিম্ন তাপমাত্রায় ও টিন জাত বা প্যাকেটিং করে ও খাবার সংরক্ষণ করতে পারি।
খাদ্য সংরক্ষণে চিনির ভূমিকা সম্পর্কে জানুন
খাদ্য সংরক্ষণে চিনি প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ হিসেবে কাজ করে। চিনি খাবারকে ডিহাইড্রেট করে এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতি করে এবং জীবাণুর ক্রিয়া-কলাপকে বাধা দেয়। গন্ধ, খাবারের রং এবং টেক্সচার ঠিক রেখে আমাদের খাবার সংরক্ষণ ও ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের জ্যাম জেল এবং আচারে যখন চিনি যোগ করা হয় তখন এর স্বাদ আরো বেড়ে যায় এবং খাবারকে কঠিন এবং জেলে রূপান্তরিত করে। এতে করে খাবার অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
লবণ কিভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করে তা বিস্তারিত জানুন
আমরা লবন এর মাধ্যমে ও খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারি। খাবারের লবণ ব্যবহার করলে লবণ খাবার থেকে অতিরিক্ত পানি শোষণ করে নেয় এর আদ্রতা বের করে দেয় । এতে করে ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক এবং অনুজীব ধ্বংস হয়ে যায়। এভাবে আমরা খাবারের লবণ ব্যবহার করার মাধ্যমে খাবার সংরক্ষণ করে রাখতে পারি। এটি একটি প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ পদ্ধতি। এর পদ্ধতিতে খাবার সংরক্ষণ করে রাখলে অনেক দিন খাবার সংরক্ষণ করে রাখা যাবে এবং খাবার ভালো থাকবে।
লেখক এর মন্তব্য
ম্যাক্সিমো ইনফো এখানে খাবার পচনশীল রোধে পিজারভে টিভস খাদ্যবস্তুকে সংরক্ষণ করে কিভাবে এবং খাদ্য পচন রোধ করে কোনটি খাদ্য পচনের কারণ এবং আরো কয়েকটি বিষয় নিয়ে অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছে এখানে। এগুলো পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং খাদ্য কিভাবে সংরক্ষণ করে রাখবেন তা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এই পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকলে আপনারা পরিচিত আত্মীয় বন্ধু সবার সাথে শেয়ার করে দিবেন ভালো লাগলে কমেন্টে জানাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url